আমি চঞ্চল হে,
আমি সুদূরের পিয়াসি।
দিন চলে যায়, আমি আনমনে তারি আশা চেয়ে থাকি বাতায়নে--
ওগো, প্রাণে মনে আমি যে তাহার পরশ পাবার প্রয়াসী॥
ওগো সুদূর, বিপুল সুদূর, তুমি যে বাজাও ব্যাকুল বাঁশরি--
মোর ডানা নাই, আছি এক ঠাঁই সে কথা যে যাই পাশরি॥
আমি উন্মনা হে,
হে সুদূর, আমি উদাসী॥
রৌদ্র-মাখানো অলস বেলায় তরুমর্মরে ছায়ার খেলায়
কী মুরতি তব নীল আকাশে নয়নে উঠে গো আভাসি।
হে সুদূর, আমি উদাসী।
ওগো সুদূর, বিপুল সুদূর, তুমি যে বাজাও ব্যাকুল বাঁশরি--
কক্ষে আমার রুদ্ধ দুয়ার সে কথা যে যাই পাশরি॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1309
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1902
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
আমি সুদূরের পিয়াসি।
দিন চলে যায়, আমি আনমনে তারি আশা চেয়ে থাকি বাতায়নে--
ওগো, প্রাণে মনে আমি যে তাহার পরশ পাবার প্রয়াসী॥
ওগো সুদূর, বিপুল সুদূর, তুমি যে বাজাও ব্যাকুল বাঁশরি--
মোর ডানা নাই, আছি এক ঠাঁই সে কথা যে যাই পাশরি॥
আমি উন্মনা হে,
হে সুদূর, আমি উদাসী॥
রৌদ্র-মাখানো অলস বেলায় তরুমর্মরে ছায়ার খেলায়
কী মুরতি তব নীল আকাশে নয়নে উঠে গো আভাসি।
হে সুদূর, আমি উদাসী।
ওগো সুদূর, বিপুল সুদূর, তুমি যে বাজাও ব্যাকুল বাঁশরি--
কক্ষে আমার রুদ্ধ দুয়ার সে কথা যে যাই পাশরি॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1309
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1902
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
================================================
মোদের যেমন খেলা তেমনি যে কাজ জানিস নে কি ভাই।
তাই কাজকে কভু আমরা না ডরাই॥
খেলা মোদের লড়াই করা, খেলা মোদের বাঁচা মরা,
খেলা ছাড়া কিছুই কোথাও নাই॥
খেলতে খেলতে ফুটেছে ফুল, খেলতে খেলতে ফল যে ফলে,
খেলারই ঢেউ জলে স্থলে।
ভয়ের ভীষণ রক্তরাগে খেলার আগুন যখন লাগে
ভাঙাচোরা জ্ব'লে যে হয় ছাই॥
রাগ: খাম্বাজ-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1321
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1915
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
========================================
মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুটি। আহা, হাহা, হা।
আজ আমাদের ছুটি ও ভাই, আজ আমাদের ছুটি। আহা, হাহা, হা ॥
কী করি আজ ভেবে না পাই, পথ হারিয়ে কোন্ বনে যাই,
কোন্ মাঠে যে ছুটে বেড়াই সকল ছেলে জুটি। আহা, হাহা, হা ॥
কেয়া-পাতার নৌকো গড়ে সাজিয়ে দেব ফুলে--
তালদিঘিতে ভাসিয়ে দেব, চলবে দুলে দুলে।
রাখাল ছেলের সঙ্গে ধেনু চরাব আজ বাজিয়ে বেণু,
মাখব গায়ে ফুলের রেণু চাঁপার বনে লুটি। আহা, হাহা, হা ॥
রাগ: বিভাস-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1315
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1908
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
আজ আমাদের ছুটি ও ভাই, আজ আমাদের ছুটি। আহা, হাহা, হা ॥
কী করি আজ ভেবে না পাই, পথ হারিয়ে কোন্ বনে যাই,
কোন্ মাঠে যে ছুটে বেড়াই সকল ছেলে জুটি। আহা, হাহা, হা ॥
কেয়া-পাতার নৌকো গড়ে সাজিয়ে দেব ফুলে--
তালদিঘিতে ভাসিয়ে দেব, চলবে দুলে দুলে।
রাখাল ছেলের সঙ্গে ধেনু চরাব আজ বাজিয়ে বেণু,
মাখব গায়ে ফুলের রেণু চাঁপার বনে লুটি। আহা, হাহা, হা ॥
রাগ: বিভাস-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1315
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1908
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
===========================================
তার হাতে ছিল হাসির ফুলের হার কত রঙে রঙ-করা।
মোর সাথে ছিল দুখের ফলের ভার অশ্রুর রসে ভরা ॥
সহসা আসিল, কহিল সে সুন্দরী 'এসো-না বদল করি'।
মুখপানে তার চাহিলাম, মরি মরি, নিদয়া সে মনোহরা ॥
সে লইল মোর ভরা বাদলের ডালা, চাহিল সকৌতুকে।
আমি লয়ে তার নব ফাগুনের মালা তুলিয়া ধরিনু বুকে।
'মোর হল জয়' যেতে যেতে কয় হেসে, দূরে চলে গেল ত্বরা।
সন্ধ্যায় দেখি তপ্ত দিনের শেষে ফুলগুলি সব ঝরা ॥
রাগ: দেশ-মল্লার
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৪ মাঘ, ১৩৩১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৭ জানুয়ারি, ১৯২৫
রচনাস্থান: দক্ষিন আমেরিকা থেকে ইতালি যাবার পথে
মোর সাথে ছিল দুখের ফলের ভার অশ্রুর রসে ভরা ॥
সহসা আসিল, কহিল সে সুন্দরী 'এসো-না বদল করি'।
মুখপানে তার চাহিলাম, মরি মরি, নিদয়া সে মনোহরা ॥
সে লইল মোর ভরা বাদলের ডালা, চাহিল সকৌতুকে।
আমি লয়ে তার নব ফাগুনের মালা তুলিয়া ধরিনু বুকে।
'মোর হল জয়' যেতে যেতে কয় হেসে, দূরে চলে গেল ত্বরা।
সন্ধ্যায় দেখি তপ্ত দিনের শেষে ফুলগুলি সব ঝরা ॥
রাগ: দেশ-মল্লার
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৪ মাঘ, ১৩৩১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৭ জানুয়ারি, ১৯২৫
রচনাস্থান: দক্ষিন আমেরিকা থেকে ইতালি যাবার পথে
=========================================
কখন দিলে পরায়ে স্বপনে বরণমালা,
ব্যথার মালা ॥
প্রভাতে দেখি জেগে অরুণ মেঘে
বিদায়বাঁশরি বাজে অশ্রু-গালা
গোপনে এসে গেলে, দেখি নাই আঁখি মেলে
আঁধারে দুঃখডোরে বাঁধিলে মোরে,
ভূষণ পরালে বিরহবেদন-ঢালা।
রাগ: পিলু
তাল: ষষ্ঠী
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1337
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1931
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
ব্যথার মালা ॥
প্রভাতে দেখি জেগে অরুণ মেঘে
বিদায়বাঁশরি বাজে অশ্রু-গালা
গোপনে এসে গেলে, দেখি নাই আঁখি মেলে
আঁধারে দুঃখডোরে বাঁধিলে মোরে,
ভূষণ পরালে বিরহবেদন-ঢালা।
রাগ: পিলু
তাল: ষষ্ঠী
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1337
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1931
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
=======================================
রাখো রাখো রে জীবনে জীবনবল্লভে,
প্রাণমনে ধরি রাখো নিবিড় আনন্দবন্ধনে ॥
আলো জ্বালো হৃদয়দীপে অতিনিভৃত অন্তরমাঝে,
আকুলিয়া দাও প্রাণ গন্ধচন্দনে ॥
রাগ: শ্যাম কল্যাণ
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1316
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1910
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রাণমনে ধরি রাখো নিবিড় আনন্দবন্ধনে ॥
আলো জ্বালো হৃদয়দীপে অতিনিভৃত অন্তরমাঝে,
আকুলিয়া দাও প্রাণ গন্ধচন্দনে ॥
রাগ: শ্যাম কল্যাণ
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1316
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1910
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
=======================================
শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে, পড়ুক ঝরে
তোমারি সুরটি আমার মুখের 'পরে, বুকের 'পরে ॥
পুরবের আলোর সাথে পড়ুক প্রাতে দুই নয়ানে--
নিশীথের অন্ধকারে গভীর ধারে পড়ুক প্রাণে।
নিশিদিন এই জীবনের সুখের 'পরে দুখের 'পরে
শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে, পড়ুক ঝরে।
যে শাখায় ফুল ফোটে না, ফল ধরে না একেবারে,
তোমার ওই বাদল-বায়ে দিক জাগায়ে সেই শাখারে।
যা-কিছু জীর্ণ আমার, দীর্ণ আমার, জীবনহারা,
তাহারি স্তরে স্তরে পড়ুক ঝরে সুরের ধারা।
নিশিদিন এই জীবনের তৃষার 'পরে, ভুখের 'পরে
শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে, পড়ুক ঝরে ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৫ ফাল্গুন, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1914
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
তোমারি সুরটি আমার মুখের 'পরে, বুকের 'পরে ॥
পুরবের আলোর সাথে পড়ুক প্রাতে দুই নয়ানে--
নিশীথের অন্ধকারে গভীর ধারে পড়ুক প্রাণে।
নিশিদিন এই জীবনের সুখের 'পরে দুখের 'পরে
শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে, পড়ুক ঝরে।
যে শাখায় ফুল ফোটে না, ফল ধরে না একেবারে,
তোমার ওই বাদল-বায়ে দিক জাগায়ে সেই শাখারে।
যা-কিছু জীর্ণ আমার, দীর্ণ আমার, জীবনহারা,
তাহারি স্তরে স্তরে পড়ুক ঝরে সুরের ধারা।
নিশিদিন এই জীবনের তৃষার 'পরে, ভুখের 'পরে
শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে, পড়ুক ঝরে ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৫ ফাল্গুন, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1914
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
========================================
কার মিলন চাও বিরহী--
তাঁহারে কোথা খুঁজিছ ভব-অরণ্যে
কুটিল জটিল গহনে শান্তিসুখহীন ওরে মন ॥
দেখো দেখো রে চিত্তকমলে চরণপদ্ম বাজে-- হায়!
অমৃতজ্যোতি কিবা সুন্দর ওরে মন ॥
রাগ: শ্রী
তাল: তেওরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1316
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1909
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
তাঁহারে কোথা খুঁজিছ ভব-অরণ্যে
কুটিল জটিল গহনে শান্তিসুখহীন ওরে মন ॥
দেখো দেখো রে চিত্তকমলে চরণপদ্ম বাজে-- হায়!
অমৃতজ্যোতি কিবা সুন্দর ওরে মন ॥
রাগ: শ্রী
তাল: তেওরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1316
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1909
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
==========================================
কোন্ খেলা যে খেলব কখন্ ভাবি বসে সেই কথাটাই--
তোমার আপন খেলার সাথি করো, তা হলে আর ভাবনা তো নাই ॥
শিশির-ভেজা সকালবেলা আজ কি তোমার ছুটির খেলা--
বর্ষণহীন মেঘের মেলা তার সনে মোর মনকে ভাসাই ॥
তোমার নিঠুর খেলা খেলবে যে দিন বাজবে সে দিন ভীষণ ভেরী--
ঘনাবে মেঘ, আঁধার হবে, কাঁদবে হাওয়া আকাশ ঘেরি।
সে দিন যেন তোমার ডাকে ঘরের বাঁধন আর না থাকে--
অকাতরে পরানটাকে প্রলয়দোলায় দোলাতে চাই ॥
রাগ: খাম্বাজ-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৫ ভাদ্র, ১৩২৯
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২২ অগাস্ট, ১৯২২
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: সুভাষ চৌধুরী, অনাদিকুমার দস্তিদার, শান্তিদেব ঘোষ
তোমার আপন খেলার সাথি করো, তা হলে আর ভাবনা তো নাই ॥
শিশির-ভেজা সকালবেলা আজ কি তোমার ছুটির খেলা--
বর্ষণহীন মেঘের মেলা তার সনে মোর মনকে ভাসাই ॥
তোমার নিঠুর খেলা খেলবে যে দিন বাজবে সে দিন ভীষণ ভেরী--
ঘনাবে মেঘ, আঁধার হবে, কাঁদবে হাওয়া আকাশ ঘেরি।
সে দিন যেন তোমার ডাকে ঘরের বাঁধন আর না থাকে--
অকাতরে পরানটাকে প্রলয়দোলায় দোলাতে চাই ॥
রাগ: খাম্বাজ-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৫ ভাদ্র, ১৩২৯
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২২ অগাস্ট, ১৯২২
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: সুভাষ চৌধুরী, অনাদিকুমার দস্তিদার, শান্তিদেব ঘোষ
===========================================
নিশিদিন ভরসা রাখিস, ওরে মন, হবেই হবে।
যদি পণ করে থাকিস সে পণ তোমার রবেই রবে।
ওরে মন, হবেই হবে ॥
পাষাণসমান আছে পড়ে, প্রাণ পেয়ে সে উঠবে ওরে,
আছে যারা বোবার মতন তারাও কথা কবেই কবে ॥
সময় হল, সময় হল-- যে যার আপন বোঝা তোলো রে--
দুঃখ যদি মাথায় ধরিস সে দুঃখ তোর সবেই সবে।
ঘণ্টা যখন উঠবে বেজে দেখবি সবাই আসবে সেজে--
এক সাথে সব যাত্রী যত একই রাস্তা লবেই লবে ॥
রাগ: বিভাস-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1312
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1905
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
যদি পণ করে থাকিস সে পণ তোমার রবেই রবে।
ওরে মন, হবেই হবে ॥
পাষাণসমান আছে পড়ে, প্রাণ পেয়ে সে উঠবে ওরে,
আছে যারা বোবার মতন তারাও কথা কবেই কবে ॥
সময় হল, সময় হল-- যে যার আপন বোঝা তোলো রে--
দুঃখ যদি মাথায় ধরিস সে দুঃখ তোর সবেই সবে।
ঘণ্টা যখন উঠবে বেজে দেখবি সবাই আসবে সেজে--
এক সাথে সব যাত্রী যত একই রাস্তা লবেই লবে ॥
রাগ: বিভাস-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1312
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1905
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
===========================================
গোলাপ ফুল ফুটিয়ে আছে, মধুপ, হোথা যাস নে --
ফুলের মুধু লুটিতে গিয়ে কাঁটার ঘা খাস নে॥
হেথায় বেলা, হোথায় চাঁপা শেফালি হোথা ফুটিয়ে
ওদের কাছে মনের ব্যথা বল্ রে মুখ ফুটিয়ে॥
ভ্রমর কহে, "হেথায় বেলা হোথায় আছে নলিনী --
ওদের কাছে বলিব নাকো আজিও যাহা বলি নি।
মরমে যাহা গোপন আছে গোলাপে তাহা বলিব--
বলিতে যদি জ্বলিতে হয় কাঁটারই ঘায়ে জ্বলিব।'
রাগ: ভৈরবী
তাল: ঝাঁপতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1285
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1878
ফুলের মুধু লুটিতে গিয়ে কাঁটার ঘা খাস নে॥
হেথায় বেলা, হোথায় চাঁপা শেফালি হোথা ফুটিয়ে
ওদের কাছে মনের ব্যথা বল্ রে মুখ ফুটিয়ে॥
ভ্রমর কহে, "হেথায় বেলা হোথায় আছে নলিনী --
ওদের কাছে বলিব নাকো আজিও যাহা বলি নি।
মরমে যাহা গোপন আছে গোলাপে তাহা বলিব--
বলিতে যদি জ্বলিতে হয় কাঁটারই ঘায়ে জ্বলিব।'
রাগ: ভৈরবী
তাল: ঝাঁপতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1285
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1878
========================================
ও যে মানে না মানা।
আঁখি ফিরাইলে বলে, 'না, না, না।'
যত বলি 'নাই রাতি-- মলিন হয়েছে বাতি'
মুখপানে চেয়ে বলে, 'না, না, না।'
বিধুর বিকল হয়ে খেপা পবনে
ফাগুন করিছে হাহা ফুলের বনে।
আমি যত বলি 'তবে এবার যে যেতে হবে'
দুয়ারে দাঁড়ায়ে বলে, 'না, না, না।'
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1316
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1909
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
আঁখি ফিরাইলে বলে, 'না, না, না।'
যত বলি 'নাই রাতি-- মলিন হয়েছে বাতি'
মুখপানে চেয়ে বলে, 'না, না, না।'
বিধুর বিকল হয়ে খেপা পবনে
ফাগুন করিছে হাহা ফুলের বনে।
আমি যত বলি 'তবে এবার যে যেতে হবে'
দুয়ারে দাঁড়ায়ে বলে, 'না, না, না।'
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1316
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1909
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
===========================================
আমার রাত পোহালো শারদ প্রাতে।
বাঁশি, তোমায় দিয়ে যাব কাহার হাতে।
তোমার বুকে বাজল ধ্বনি
বিদায়গাথা, আগমনী, কত যে--
ফাল্গুনে শ্রাবণে, কত প্রভাতে রাতে॥
যে কথা রয় প্রাণের ভিতর অগোচরে
গানে গানে নিয়েছিলে চুরি করে।
সময় যে তার হল গত
নিশিশেষের তারার মতো--
শেষ করে দাও শিউলিফুলের মরণ-সাথে॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1332
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1925
স্বরলিপিকার: অনাদিকুমার দস্তিদার
বাঁশি, তোমায় দিয়ে যাব কাহার হাতে।
তোমার বুকে বাজল ধ্বনি
বিদায়গাথা, আগমনী, কত যে--
ফাল্গুনে শ্রাবণে, কত প্রভাতে রাতে॥
যে কথা রয় প্রাণের ভিতর অগোচরে
গানে গানে নিয়েছিলে চুরি করে।
সময় যে তার হল গত
নিশিশেষের তারার মতো--
শেষ করে দাও শিউলিফুলের মরণ-সাথে॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1332
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1925
স্বরলিপিকার: অনাদিকুমার দস্তিদার
=======================================
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে।
একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো রে ॥
যদি কেউ কথা না কয়, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি সবাই থাকে মুখ ফিরায়ে সবাই করে ভয়--
তবে পরান খুলে
ও তুই মুখ ফুটে তোর মনের কথা একলা বলো রে ॥
যদি সবাই ফিরে যায়, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি গহন পথে যাবার কালে কেউ ফিরে না চায়--
তবে পথের কাঁটা
ও তুই রক্তমাখা চরণতলে একলা দলো রে ॥
যদি আলো না ধরে, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি ঝড়-বাদলে আঁধার রাতে দুয়ার দেয় ঘরে--
তবে বজ্রানলে
আপন বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে নিয়ে একলা জ্বলো রে ॥
রাগ: বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1312
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1905
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো রে ॥
যদি কেউ কথা না কয়, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি সবাই থাকে মুখ ফিরায়ে সবাই করে ভয়--
তবে পরান খুলে
ও তুই মুখ ফুটে তোর মনের কথা একলা বলো রে ॥
যদি সবাই ফিরে যায়, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি গহন পথে যাবার কালে কেউ ফিরে না চায়--
তবে পথের কাঁটা
ও তুই রক্তমাখা চরণতলে একলা দলো রে ॥
যদি আলো না ধরে, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি ঝড়-বাদলে আঁধার রাতে দুয়ার দেয় ঘরে--
তবে বজ্রানলে
আপন বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে নিয়ে একলা জ্বলো রে ॥
রাগ: বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1312
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1905
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
=============================================
তুমি, নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে॥
তব, পূণ্য-কিরণ দিয়ে যাক্, মোর মোহ-কালিমা ঘুচায়ে।
লক্ষ্য-শূন্য লক্ষ বাসনা ছুটিছে গভীর আঁধারে,
জানি না কখন ডুবে যাবে কোন্ অকুল-গরল-পাথারে!
প্রভু, বিশ্ব-বিপদহন্তা, তুমি দাঁড়াও, রুধিয়া পন্থা;
তব, শ্রীচরণ তলে নিয়ে এস, মোর মত্ত-বাসনা গুছায়ে!
আছ, অনল-অনিলে, চিরনভোনীলে, ভূধরসলিলে, গহনে;
আছ, বিটপীলতায়, জলদের গায়, শশীতারকায় তপনে।
আমি, নয়নে বসন বাঁধিয়া, ব’সে, আঁধারে মরিগো কাঁদিয়া;
আমি, দেখি নাই কিছু, বুঝি নাই কিছু, দাও হে দেখায়ে বুঝায়ে।
তব, পূণ্য-কিরণ দিয়ে যাক্, মোর মোহ-কালিমা ঘুচায়ে।
লক্ষ্য-শূন্য লক্ষ বাসনা ছুটিছে গভীর আঁধারে,
জানি না কখন ডুবে যাবে কোন্ অকুল-গরল-পাথারে!
প্রভু, বিশ্ব-বিপদহন্তা, তুমি দাঁড়াও, রুধিয়া পন্থা;
তব, শ্রীচরণ তলে নিয়ে এস, মোর মত্ত-বাসনা গুছায়ে!
আছ, অনল-অনিলে, চিরনভোনীলে, ভূধরসলিলে, গহনে;
আছ, বিটপীলতায়, জলদের গায়, শশীতারকায় তপনে।
আমি, নয়নে বসন বাঁধিয়া, ব’সে, আঁধারে মরিগো কাঁদিয়া;
আমি, দেখি নাই কিছু, বুঝি নাই কিছু, দাও হে দেখায়ে বুঝায়ে।
================================================
সখী, ভাবনা কাহারে বলে। সখী, যাতনা কাহারে বলে ।
তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ‘ভালোবাসা’ ‘ভালোবাসা’—
সখী, ভালোবাসা কারে কয়! সে কি কেবলই যাতনাময় ।
সে কি কেবলই চোখের জল? সে কি কেবলই দুখের শ্বাস ?
লোকে তবে করে কী সুখেরই তরে এমন দুখের আশ ।
আমার চোখে তো সকলই শোভন,
সকলই নবীন, সকলই বিমল, সুনীল আকাশ, শ্যামল কানন,
বিশদ জোছনা, কুসুম কোমল— সকলই আমার মতো ।
তারা কেবলই হাসে, কেবলই গায়, হাসিয়া খেলিয়া মরিতে চায়—
না জানে বেদন, না জানে রোদন, না জানে সাধের যাতনা যত ।
ফুল সে হাসিতে হাসিতে ঝরে, জোছনা হাসিয়া মিলায়ে যায়,
হাসিতে হাসিতে আলোকসাগরে আকাশের তারা তেয়াগে কায় ।
আমার মতন সুখী কে আছে। আয় সখী, আয় আমার কাছে—
সুখী হৃদয়ের সুখের গান শুনিয়া তোদের জুড়াবে প্রাণ ।
প্রতিদিন যদি কাঁদিবি কেবল একদিন নয় হাসিবি তোরা—
একদিন নয় বিষাদ ভুলিয়া সকলে মিলিয়া গাহিব মোরা।।
রাগ: বেহাগ-খাম্বাজ-বাউল
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1287
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1881
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ‘ভালোবাসা’ ‘ভালোবাসা’—
সখী, ভালোবাসা কারে কয়! সে কি কেবলই যাতনাময় ।
সে কি কেবলই চোখের জল? সে কি কেবলই দুখের শ্বাস ?
লোকে তবে করে কী সুখেরই তরে এমন দুখের আশ ।
আমার চোখে তো সকলই শোভন,
সকলই নবীন, সকলই বিমল, সুনীল আকাশ, শ্যামল কানন,
বিশদ জোছনা, কুসুম কোমল— সকলই আমার মতো ।
তারা কেবলই হাসে, কেবলই গায়, হাসিয়া খেলিয়া মরিতে চায়—
না জানে বেদন, না জানে রোদন, না জানে সাধের যাতনা যত ।
ফুল সে হাসিতে হাসিতে ঝরে, জোছনা হাসিয়া মিলায়ে যায়,
হাসিতে হাসিতে আলোকসাগরে আকাশের তারা তেয়াগে কায় ।
আমার মতন সুখী কে আছে। আয় সখী, আয় আমার কাছে—
সুখী হৃদয়ের সুখের গান শুনিয়া তোদের জুড়াবে প্রাণ ।
প্রতিদিন যদি কাঁদিবি কেবল একদিন নয় হাসিবি তোরা—
একদিন নয় বিষাদ ভুলিয়া সকলে মিলিয়া গাহিব মোরা।।
রাগ: বেহাগ-খাম্বাজ-বাউল
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1287
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1881
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
=========================================