জানি তোমার অজানা নাহি গো কী আছে আমার মনে।
আমি গোপন করিতে চাহি গো, ধরা পড়ে দুনয়নে॥
কী বলিতে পাছে কি বলি
তাই দূরে চলে যাই কেবলই,
পথপাশে দিন বাহি গো--
তুমি দেখে যাও আঁখিকোণে কী আছে আমার মনে॥
চিরনিশীথতিমির গহনে আছে মোর পূজাবেদী--
চকিত হাসির দহনে সে তিমির দাও ভেদি।
বিজন দিবস-রাতিয়া
কাটে ধেয়ানের মালা গাঁথিয়া,
আনমনে গান গাহি গো--
তুমি শুনে যাও খনে খনে কী আছে আমার মনে॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৬ ফাল্গুন, ১৩৩২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৬
রচনাস্থান: আগরতলা থেকে কলকাতার পথে
স্বরলিপিকার: রমা মজুমদার
===========================================
জাগে নাথ জোছনারাতে--
জাগো, রে অন্তর, জাগো ॥
তাঁহারি পানে চাহো মুগ্ধপ্রাণে
নিমেষহারা আঁখিপাতে ॥
নীরব চন্দ্রমা নীরব তারা নীরব গীতরসে হল হারা--
জাগে বসুন্ধরা, অম্বর জাগে রে--
জাগে রে সুন্দর সাথে ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: ধামার
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1316
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1910
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
জাগো, রে অন্তর, জাগো ॥
তাঁহারি পানে চাহো মুগ্ধপ্রাণে
নিমেষহারা আঁখিপাতে ॥
নীরব চন্দ্রমা নীরব তারা নীরব গীতরসে হল হারা--
জাগে বসুন্ধরা, অম্বর জাগে রে--
জাগে রে সুন্দর সাথে ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: ধামার
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1316
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1910
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
==========================================
রুদ্রবেশে কেমন খেলা, কালো মেঘের ভ্রূকুটি!
সন্ধ্যাকাশের বক্ষ যে ওই বজ্রবাণে যায় টুটি ॥
সুন্দর হে, তোমার চেয়ে ফুল ছিল সব শাখা ছেয়ে,
ঝড়ের বেগে আঘাত লেগে ধুলায় তারা যায় লুটি ॥
মিলনদিনে হঠাৎ কেন লুকাও তোমার মাধুরী!
ভীরুকে ভয় দেখাতে চাও, একি দারুণ চাতুরী!
যদি তোমার কঠিন ঘায়ে বাঁধন দিতে চাও ঘুচায়ে,
কঠোর বলে টেনে নিয়ে বক্ষে তোমার দাও ছুটি ॥
রাগ: খাম্বাজ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৬ ফাল্গুন, ১৩৩১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১০ মার্চ, ১৯২৫
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
সন্ধ্যাকাশের বক্ষ যে ওই বজ্রবাণে যায় টুটি ॥
সুন্দর হে, তোমার চেয়ে ফুল ছিল সব শাখা ছেয়ে,
ঝড়ের বেগে আঘাত লেগে ধুলায় তারা যায় লুটি ॥
মিলনদিনে হঠাৎ কেন লুকাও তোমার মাধুরী!
ভীরুকে ভয় দেখাতে চাও, একি দারুণ চাতুরী!
যদি তোমার কঠিন ঘায়ে বাঁধন দিতে চাও ঘুচায়ে,
কঠোর বলে টেনে নিয়ে বক্ষে তোমার দাও ছুটি ॥
রাগ: খাম্বাজ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৬ ফাল্গুন, ১৩৩১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১০ মার্চ, ১৯২৫
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
============================================
যা হবার তা হবে।
যে আমারে কাঁদায় সে কি অমনি ছেড়ে রবে?।
পথ হতে যে ভুলিয়ে আনে পথ যে কোথায় সেই তা জানে,
ঘর যে ছাড়ায় হাত সে বাড়ায়-- সেই তো ঘরে লবে ॥
রাগ: খাম্বাজ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1318
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1911
স্বরলিপিকার: সুধীরচন্দ্র কর
যে আমারে কাঁদায় সে কি অমনি ছেড়ে রবে?।
পথ হতে যে ভুলিয়ে আনে পথ যে কোথায় সেই তা জানে,
ঘর যে ছাড়ায় হাত সে বাড়ায়-- সেই তো ঘরে লবে ॥
রাগ: খাম্বাজ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1318
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1911
স্বরলিপিকার: সুধীরচন্দ্র কর
=========================================
সখী, বহে গেল বেলা, শুধু হাসিখেলা,
এ কি আর ভালো লাগে!
আকুল তিয়াষ, প্রেমের পিয়াস,
প্রাণে কেন নাহি জাগে!
কবে আর হবে থাকিতে জীবন
আঁখিতে আঁখিতে মদির মিলন,
মধুর হুতাশে মধুর দহন,
নিত-নব অনুরাগে।
তরল কোমল নয়নের জল
নয়নে উঠিবে ভাসি।
সে বিষাদ-নীরে নিবে যাবে ধীরে
প্রখর চপল হাসি।
উদাস নিশ্বাস আকুলি উঠিবে,
আশা-নিরাশায় পরান টুটিবে,
মরমের আলো কপোলে ফুটিবে,
শরম-অরুণ-রাগে।
রাগ: বিলাবল-কীর্তন
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): অগ্রহায়ণ, ১২৯৫
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1888
রচনাস্থান: কলকাতা, দার্জিলিং
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর
এ কি আর ভালো লাগে!
আকুল তিয়াষ, প্রেমের পিয়াস,
প্রাণে কেন নাহি জাগে!
কবে আর হবে থাকিতে জীবন
আঁখিতে আঁখিতে মদির মিলন,
মধুর হুতাশে মধুর দহন,
নিত-নব অনুরাগে।
তরল কোমল নয়নের জল
নয়নে উঠিবে ভাসি।
সে বিষাদ-নীরে নিবে যাবে ধীরে
প্রখর চপল হাসি।
উদাস নিশ্বাস আকুলি উঠিবে,
আশা-নিরাশায় পরান টুটিবে,
মরমের আলো কপোলে ফুটিবে,
শরম-অরুণ-রাগে।
রাগ: বিলাবল-কীর্তন
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): অগ্রহায়ণ, ১২৯৫
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1888
রচনাস্থান: কলকাতা, দার্জিলিং
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর
============================================
গান আমার যায় ভেসে যায়----
চাস্ নে ফিরে, দে তারে বিদায়॥
সে যে দখিনহাওয়ায় মুকুল ঝরা, ধুলার আঁচল হেলায় ভরা,
সে যে শিশির-ফোঁটার মালা গাঁথা বনের আঙিনায়॥
কাঁদন-হাসির আলোছায়া সারা অলস বেলা--
মেঘের গায়ে রঙের মায়া, খেলার পরে খেলা।
ভুলে-যাওয়ার বোঝাই ভরি গেল চলে কতই তরী--
উজান বায়ে ফেরে যদি কে রয় সে আশায়॥
রাগ: বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৮ আষাঢ়, ১৩৩২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২ জুলাই, ১৯২৫
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
চাস্ নে ফিরে, দে তারে বিদায়॥
সে যে দখিনহাওয়ায় মুকুল ঝরা, ধুলার আঁচল হেলায় ভরা,
সে যে শিশির-ফোঁটার মালা গাঁথা বনের আঙিনায়॥
কাঁদন-হাসির আলোছায়া সারা অলস বেলা--
মেঘের গায়ে রঙের মায়া, খেলার পরে খেলা।
ভুলে-যাওয়ার বোঝাই ভরি গেল চলে কতই তরী--
উজান বায়ে ফেরে যদি কে রয় সে আশায়॥
রাগ: বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৮ আষাঢ়, ১৩৩২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২ জুলাই, ১৯২৫
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
============================================
দে তোরা আমায় নূতন ক'রে দে নূতন আভরণে॥
হেমন্তের অভিসম্পাতে রিক্ত অকিঞ্চন কাননভূমি,
বসন্তে হোক দৈন্যবিমোচন নব লাবণ্যধনে।
শূন্য শাখা লজ্জা ভুলে যাক পল্লব-আবরণে॥
বাজুক প্রেমের মায়ামন্ত্রে
পুলকিত প্রাণের বীণাযন্ত্রে
চিরসুন্দরের অভিবন্দনা।
আনন্দচঞ্চল নৃত্য অঙ্গে অঙ্গে বহে যাক হিল্লোলে হিল্লোলে,
যৌবন পাক সম্মান বাঞ্ছিতসম্মিলনে॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ফাল্গুন ১৩৪২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৬
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
হেমন্তের অভিসম্পাতে রিক্ত অকিঞ্চন কাননভূমি,
বসন্তে হোক দৈন্যবিমোচন নব লাবণ্যধনে।
শূন্য শাখা লজ্জা ভুলে যাক পল্লব-আবরণে॥
বাজুক প্রেমের মায়ামন্ত্রে
পুলকিত প্রাণের বীণাযন্ত্রে
চিরসুন্দরের অভিবন্দনা।
আনন্দচঞ্চল নৃত্য অঙ্গে অঙ্গে বহে যাক হিল্লোলে হিল্লোলে,
যৌবন পাক সম্মান বাঞ্ছিতসম্মিলনে॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ফাল্গুন ১৩৪২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৬
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
============================================
একি আকুলতা ভুবনে! একি চঞ্চলতা পবনে॥
একি মধুরমদির রসরাশি আজি শূন্যতলে চলে ভাসি,
ঝরে চন্দ্রকরে একি হাসি, ফুল- গন্ধ লুটে গগনে॥
একি প্রাণভরা অনুরাগে আজি বিশ্বজগতজন জাগে,
আজি নিখিল নীলগগনে সুখ- পরশ কোথা হতে লাগে।
সুখে শিহরে সকল বনরাজি, উঠে মোহনবাঁশরি বাজি,
হেরো পূর্ণবিকশিত আজি মম অন্তর সুন্দর স্বপনে॥
রাগ: বাহার
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৬ কার্তিক, ১৩০২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1895
রচনাস্থান: জোড়াসাঁকো
স্বরলিপিকার: জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, ইন্দিরা দেবী
একি মধুরমদির রসরাশি আজি শূন্যতলে চলে ভাসি,
ঝরে চন্দ্রকরে একি হাসি, ফুল- গন্ধ লুটে গগনে॥
একি প্রাণভরা অনুরাগে আজি বিশ্বজগতজন জাগে,
আজি নিখিল নীলগগনে সুখ- পরশ কোথা হতে লাগে।
সুখে শিহরে সকল বনরাজি, উঠে মোহনবাঁশরি বাজি,
হেরো পূর্ণবিকশিত আজি মম অন্তর সুন্দর স্বপনে॥
রাগ: বাহার
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৬ কার্তিক, ১৩০২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1895
রচনাস্থান: জোড়াসাঁকো
স্বরলিপিকার: জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, ইন্দিরা দেবী
===========================================
চৈত্রপবনে মন চিত্তবনে বাণীমঞ্জরী সঞ্চলিতা
ওগো ললিতা
যদি বিজনে দিন বহে যায় খর তপনে ঝরে পড়ে হায়
অনাদরে হবে ধূলিদলিতা
ওগো ললিতা ॥
তোমার লাগিয়া আছি পথ চাহি-- বুঝি বেলা আর নাহি নাহি।
বনছায়াতে তারে দেখা দাও, করুণ হাতে তুলে নিয়ে যাও--
কণ্ঠাহারে করো সঙ্কলিতা
ওগো ললিতা ॥
রাগ: কাফি-খাম্বাজ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1332
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1925
ওগো ললিতা
যদি বিজনে দিন বহে যায় খর তপনে ঝরে পড়ে হায়
অনাদরে হবে ধূলিদলিতা
ওগো ললিতা ॥
তোমার লাগিয়া আছি পথ চাহি-- বুঝি বেলা আর নাহি নাহি।
বনছায়াতে তারে দেখা দাও, করুণ হাতে তুলে নিয়ে যাও--
কণ্ঠাহারে করো সঙ্কলিতা
ওগো ললিতা ॥
রাগ: কাফি-খাম্বাজ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1332
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1925
===========================================
আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে
বসন্তের এই মাতাল সমীরণে ॥
যাব না গো যাব না যে, রইনু পড়ে ঘরের মাঝে--
এই নিরালায় রব আপন কোণে।
যাব না এই মাতাল সমীরণে ॥
আমার এ ঘর বহু যতন ক'রে
ধুতে হবে মুছতে হবে মোরে।
আমারে যে জাগতে হবে, কী জানি সে আসবে কবে
যদি আমায় পড়ে তাহার মনে
বসন্তের এই মাতাল সমীরণে ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: তেওরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২২ চৈত্র, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1914
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
বসন্তের এই মাতাল সমীরণে ॥
যাব না গো যাব না যে, রইনু পড়ে ঘরের মাঝে--
এই নিরালায় রব আপন কোণে।
যাব না এই মাতাল সমীরণে ॥
আমার এ ঘর বহু যতন ক'রে
ধুতে হবে মুছতে হবে মোরে।
আমারে যে জাগতে হবে, কী জানি সে আসবে কবে
যদি আমায় পড়ে তাহার মনে
বসন্তের এই মাতাল সমীরণে ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: তেওরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২২ চৈত্র, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1914
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
==============================================
শাঙনগগনে ঘোর ঘনঘটা, নিশীথযামিনী রে।
কুঞ্জপথে, সখি, কৈসে যাওব অবলা কামিনী রে।
উন্মদ পবনে যমুনা তর্জিত, ঘন ঘন গর্জিত মেহ।
দমকত বিদ্যুত, পথতরু লুন্ঠিত, থরহর কম্পিত দেহ
ঘন ঘন রিম্ ঝিম্ রিম্ ঝিম্ রিম্ ঝিম্ বরখত নীরদপুঞ্জ।
শাল-পিয়ালে তাল-তমালে নিবিড়তিমিরময় কুঞ্জ।
কহ রে সজনী, এ দুরুযোগে কুঞ্জে নিরদয় কান
দারুণ বাঁশী কাহ বজায়ত সকরুণ রাধা নাম।
মোতিম হারে বেশ বনা দে, সীঁথি লগা দে ভালে।
উরহি বিলুন্ঠিত লোল চিকুর মম বাঁধহ চম্পকমালে।
গহন রয়নমে ন যাও, বালা, নওলকিশোরক পাশ।
গরজে ঘন ঘন, বহু ডর পাওব, কহে ভানু তব দাস।
রাগ: পিলু-মল্লার
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): আশ্বিন, ১২৮৪
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1878
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
কুঞ্জপথে, সখি, কৈসে যাওব অবলা কামিনী রে।
উন্মদ পবনে যমুনা তর্জিত, ঘন ঘন গর্জিত মেহ।
দমকত বিদ্যুত, পথতরু লুন্ঠিত, থরহর কম্পিত দেহ
ঘন ঘন রিম্ ঝিম্ রিম্ ঝিম্ রিম্ ঝিম্ বরখত নীরদপুঞ্জ।
শাল-পিয়ালে তাল-তমালে নিবিড়তিমিরময় কুঞ্জ।
কহ রে সজনী, এ দুরুযোগে কুঞ্জে নিরদয় কান
দারুণ বাঁশী কাহ বজায়ত সকরুণ রাধা নাম।
মোতিম হারে বেশ বনা দে, সীঁথি লগা দে ভালে।
উরহি বিলুন্ঠিত লোল চিকুর মম বাঁধহ চম্পকমালে।
গহন রয়নমে ন যাও, বালা, নওলকিশোরক পাশ।
গরজে ঘন ঘন, বহু ডর পাওব, কহে ভানু তব দাস।
রাগ: পিলু-মল্লার
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): আশ্বিন, ১২৮৪
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1878
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
==============================================
এই তো ভালো লেগেছিল আলোর নাচন পাতায় পাতায়।
শালের বনে খ্যাপা হাওয়া, এই তো আমার মনকে মাতায়।
রাঙা মাটির রাস্তা বেয়ে হাটের পথিক চলে ধেয়ে,
ছোটো মেয়ে ধুলায় বসে খেলার ডালি একলা সাজায়--
সামনে চেয়ে এই যা দেখি চোখে আমার বীণা বাজায়॥
আমার এ যে বাঁশের বাঁশি, মাঠের সুরে আমার সাধন।
আমার মনকে বেঁধেছে রে এই ধরণীর মাটির বাঁধন।
নীল আকাশের আলোর ধারা পান করেছে নতুন যারা
সেই ছেলেদের চোখের চাওয়া নিয়েছি মোর দু চোখ পুরে--
আমার বীণায় সুর বেঁধেছি ওদের কচি গলার সুরে॥
দূরে যাবার খেয়াল হলে সবাই মোরে ঘিরে থামায়--
গাঁয়ের আকাশ সজনে ফুলের হাতছানিতে ডাকে আমায়।
ফুরায় নি, ভাই, কাছের সুধা, নাই যে রে তাই দূরের ক্ষুধা--
এই-যে এ-সব ছোটোখাটো পাই নি এদের কূলকিনারা।
তুচ্ছ দিনের গানের পালা আজও আমার হয় নি সারা ॥
লাগল ভালো, মন ভোলালো, এই কথাটাই গেয়ে বেড়াই--
দিনে রাতে সময় কোথা, কাজের কথা তাই তো এড়াই।
মজেছে মন, মজল আঁখি-- মিথ্যে আমায় ডাকাডাকি--
ওদের আছে অনেক আশা, ওরা করুক অনেক জড়ো--
আমি কেবল গেয়ে বেড়াই, চাই নে হতে আরো বড়ো ॥
রাগ: বাউল
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৬ চৈত্র, ১৩২২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ৮ এপ্রিল, ১৯১৬
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
শালের বনে খ্যাপা হাওয়া, এই তো আমার মনকে মাতায়।
রাঙা মাটির রাস্তা বেয়ে হাটের পথিক চলে ধেয়ে,
ছোটো মেয়ে ধুলায় বসে খেলার ডালি একলা সাজায়--
সামনে চেয়ে এই যা দেখি চোখে আমার বীণা বাজায়॥
আমার এ যে বাঁশের বাঁশি, মাঠের সুরে আমার সাধন।
আমার মনকে বেঁধেছে রে এই ধরণীর মাটির বাঁধন।
নীল আকাশের আলোর ধারা পান করেছে নতুন যারা
সেই ছেলেদের চোখের চাওয়া নিয়েছি মোর দু চোখ পুরে--
আমার বীণায় সুর বেঁধেছি ওদের কচি গলার সুরে॥
দূরে যাবার খেয়াল হলে সবাই মোরে ঘিরে থামায়--
গাঁয়ের আকাশ সজনে ফুলের হাতছানিতে ডাকে আমায়।
ফুরায় নি, ভাই, কাছের সুধা, নাই যে রে তাই দূরের ক্ষুধা--
এই-যে এ-সব ছোটোখাটো পাই নি এদের কূলকিনারা।
তুচ্ছ দিনের গানের পালা আজও আমার হয় নি সারা ॥
লাগল ভালো, মন ভোলালো, এই কথাটাই গেয়ে বেড়াই--
দিনে রাতে সময় কোথা, কাজের কথা তাই তো এড়াই।
মজেছে মন, মজল আঁখি-- মিথ্যে আমায় ডাকাডাকি--
ওদের আছে অনেক আশা, ওরা করুক অনেক জড়ো--
আমি কেবল গেয়ে বেড়াই, চাই নে হতে আরো বড়ো ॥
রাগ: বাউল
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৬ চৈত্র, ১৩২২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ৮ এপ্রিল, ১৯১৬
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
========================================
বলো সখী, বলো তারি নাম
আমার কানে কানে
যে-নাম বাজে তোমার বীণার
তানে তানে॥
বসন্তবাতাসে বনবীথিকায়
সে-নাম মিলে যাবে,
বিরহীবিহঙ্গকলগীতিকায়
সে নাম মদির হবে যে বকুলঘ্রাণে॥
নাহয় সখীদের মুখে মুখে
সে নাম দোলা খাবে সকৌতুকে।
পূর্ণিমারাতে একা যবে
অকারণে মন উতলা হবে
সে-নাম শুনাইব গানে গানে॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1345
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1939
স্বরলিপিকার: শান্তিদেব ঘোষ
আমার কানে কানে
যে-নাম বাজে তোমার বীণার
তানে তানে॥
বসন্তবাতাসে বনবীথিকায়
সে-নাম মিলে যাবে,
বিরহীবিহঙ্গকলগীতিকায়
সে নাম মদির হবে যে বকুলঘ্রাণে॥
নাহয় সখীদের মুখে মুখে
সে নাম দোলা খাবে সকৌতুকে।
পূর্ণিমারাতে একা যবে
অকারণে মন উতলা হবে
সে-নাম শুনাইব গানে গানে॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1345
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1939
স্বরলিপিকার: শান্তিদেব ঘোষ
=========================================
আজি যে রজনী যায় ফিরাইব তায় কেমনে।
নয়নের জল ঝরিছে বিফল নয়নে॥
এ বেশভূষণ লহো সখী, লহো, এ কুসুমমালা হয়েছে অসহ--
এমন যামিনী কাটিল বিরহশয়নে॥
আমি বৃথা অভিসারে এ যমুনাপারে এসেছি,
বহি বৃথা মন-আশা এত ভালোবাসা বেসেছি।
শেষে নিশিশেষে বদন মলিন, ক্লান্তচরণ, মন উদাসীন,
ফিরিয়া চলেছি কোন্ সুখহীন ভবনে॥
ওগো ভোলা ভালো তবে, কাঁদিয়া কী হবে মিছে আর।
যদি যেতে হল হায় প্রাণ কেন চায় পিছে আর।
কুঞ্জদুয়ারে অবোধের মতো রজনীপ্রভাতে বসে রব কত--
এবারের মতো বসন্ত গত জীবনে॥
রাগ: ভৈরবী-কীর্তন
তাল: রূপকড়া
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৬ আষাঢ়, ১৩০০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৯ জুন, ১৮৯৩
রচনাস্থান: শিলাইদহ
নয়নের জল ঝরিছে বিফল নয়নে॥
এ বেশভূষণ লহো সখী, লহো, এ কুসুমমালা হয়েছে অসহ--
এমন যামিনী কাটিল বিরহশয়নে॥
আমি বৃথা অভিসারে এ যমুনাপারে এসেছি,
বহি বৃথা মন-আশা এত ভালোবাসা বেসেছি।
শেষে নিশিশেষে বদন মলিন, ক্লান্তচরণ, মন উদাসীন,
ফিরিয়া চলেছি কোন্ সুখহীন ভবনে॥
ওগো ভোলা ভালো তবে, কাঁদিয়া কী হবে মিছে আর।
যদি যেতে হল হায় প্রাণ কেন চায় পিছে আর।
কুঞ্জদুয়ারে অবোধের মতো রজনীপ্রভাতে বসে রব কত--
এবারের মতো বসন্ত গত জীবনে॥
রাগ: ভৈরবী-কীর্তন
তাল: রূপকড়া
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৬ আষাঢ়, ১৩০০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৯ জুন, ১৮৯৩
রচনাস্থান: শিলাইদহ
==============================================
আমার মনের মাঝে যে গান বাজে শুনতে কি পাও গো
আমার চোখের 'পরে আভাস দিয়ে যখনি যাও গো ॥
রবির কিরণ নেয় যে টানি ফুলের বুকের শিশিরখানি,
আমার প্রাণের সে গান তুমি তেমনি কি নাও গো ॥
আমার উদাস হৃদয় যখন আসে বাহির-পানে
আপনাকে যে দেয় ধরা সে সকলখানে।
কচি পাতা প্রথম প্রাতে কী কথা কয় আলোর সাথে,
আমার মনের আপন কথা বলে যে তাও গো ॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা বা খেমটা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1328
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1921
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
আমার চোখের 'পরে আভাস দিয়ে যখনি যাও গো ॥
রবির কিরণ নেয় যে টানি ফুলের বুকের শিশিরখানি,
আমার প্রাণের সে গান তুমি তেমনি কি নাও গো ॥
আমার উদাস হৃদয় যখন আসে বাহির-পানে
আপনাকে যে দেয় ধরা সে সকলখানে।
কচি পাতা প্রথম প্রাতে কী কথা কয় আলোর সাথে,
আমার মনের আপন কথা বলে যে তাও গো ॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা বা খেমটা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1328
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1921
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
============================================
No comments:
Post a Comment