Wednesday 7 August 2013

~~আমার সারাবেলা~~

প্রতিটা রাত কাটে, 
সুন্দর একটা ভোরের আশায়.
প্রতিটা দিন কাটে, 
হাজার স্বপ্ন বোনার নেশায়.
প্রতিটা অলস দুপুর কাটে, 
তোমার অপেক্ষায়.
প্রতিটা বিকাল কাটে, 
তোমায় না পাওয়ার ব্যাথায়.
প্রতিটা স্বপ্ন বুনি তোমায় ঘিরে,
যদি ও বা জানি তুমি আসবে না ফিরে।
===============================================
~~অনেক দূরের পাখিরা ~~ 

এই সেই ক্লান্ত বিকেলের ছায়া ঘেরা পথ,
যার ধুলোয় আমরা হেঁটে যাব
হাজার দরজার বিপরীতে এক সর্পের সন্ধানে। 
যে তার সব সৌন্দর্য্য দিয়ে এক মৃত্যুর দ্বীপ সাজিয়ে রাখবে,
সপ্তসাগরে পূর্ণ জোয়ারের শেষ তিমিরে।
আগামী সকাল এক ভিন্ন জন্ম,
অন্য কোনো নামে অন্য কোনো নগরে,
সেখানে বন্দুক ঘেরা রাজপথের শিকল হারাবে না জানি,
কিন্তু অনেক দূরের পাখিরা
এক ঝাপসা বিকেলের সীমান্ত পেরিয়ে,
না দেখা রাত্রির স্বপ্নে বিভোর হবে।
========================================
~~প্রেমে ও অপ্রেম~~


জ্বর মাপার যন্ত্র থার্মোমিটারের মতো 
ভালবাসা পরিমাপের একটা সূক্ষ্ম যন্ত্র
আমার রয়েছে এটা জানাতেই অনেক কাছের
মানুষের মুখ কেমন যেন হয়ে গেল, 
সবচেয়ে দেখবার মতো হল
একদা কিছুদিন বসবাস করেছিলাম 
যে রমণীটির সাথে ...
মাংস ওয়ালা থেকে পান বিক্রেতা
অফিসের সহকর্মী থেকে ছেলেবেলার বন্ধু
অনেকেই সহাস্যে এগিয়ে এলো
এবং একে একে তারা সবাই
ভালবাসার এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হল,
শুধু যে নারীটির সাথে একদা
ভালবাসা বিনিময় করেছিলাম
শুধু যে রমণীটির সাথে একদা
কিছুদিন বসবাস করেছিলাম
অনিন্দ্য ভালবাসায়
শুধু এরাই দ্বিধায় পরে গেল-
আমার মতো দ্বিধায়,
নারী পুরুষের প্রেম এমনি ....দ্বিধার মতো !!
============================================
~~প্রতিঘাত~~

আমাকে আঘাত করা অতো সহজ নয়।
জলোচ্ছাসের তীব্র ঝাপটাতেও
আমি টিকে থাকতে পারি;
হয়তো বিধ্বস্ত হই,
বিন্যস্ত চুলগুলো এলোমেলো হয়ে যায়-
কিন্তু নতুন সূর্যের আগমনের সাথে সাথে
জেনো আবারও প্রাণটা খুলে উঠি হেসে।

টেবিলের ড্রয়ারে রাখা একটা কাল্পনিক ছোট্ট শিশি
তাতে ভরে রেখেছি আমার অফুরান প্রাণশক্তি।
ঘাসফুলে, চায়ের কাপে, মায়ের নরম হাসিতে,
প্রতিবারে পাই আমি এক নতুন অর্থ খুঁজে;
আর কেউ কি পারবে আমায় এমনি রাখতে বেঁধে?
এভাবেই রোজ এঁকে চলবো আমার ভালোবাসার বলয়
আগুনে পুড়ে পুড়েই তো সোনা খাঁটি হয়!
=========================================
~~ক্যালেন্ডলা রাত~~

রাতগুলো কষ্টের ক্যালেন্ডলা
যন্ত্রণার জমাটবদ্ধ কালো মেঘ;
সীমাহীন দীর্ঘশ্বাস জুরে শূন্যতার রোদন
শুধু স্মৃতির দর্পণে উড়ে চলে রংগীন ঘুড়ি।

তবুও চাদের সাথে মিতালির নামে হরদম মুকাবিনয়;
তবুও তারাদের সাথে চলে
গল্প-কবিতা-গান।

আজকাল বড় বেশি জানতে ইচ্ছে করে-
তুমিও কি আমার মত রাত্রি প্রেমিক?
তুমিও কি জেগে থাকো অনন্ত রাত?
=============================================
~~মৃত্যু, ঈশ্বর আর তার ওয়েলকাম টিউন~~


চেতনা আমার বধ্যভুমি;প্রেতপুরীতে হৃদয় করে বসবাস
পায়ের নিচে মুমূর্ষ মাটি, ছড়ানো ছিটানো নিরাশার ঘাস
মাঝে মাঝে আজ্রাইল সাহেব গোপনে করে যান দেখা
তিনি বলেন "কষ্ট করো বন্ধু,এখনো হইনি মৃত্যু লেখা
কিছুই হবে না যদি না পাই ঈশরের কাছ থেকে মৃত্যুর অর্ডার"
তারপর তিনি পার হয়ে গেলেন পৃথিবী আর ইন্দ্রজালের বর্ডার।
আমি একা অচেতন মোবাইলে ট্রাই করি ঈশ্বর আছেন কিনা
কেউ ধরে না ফোন;শুধু একটা ওয়েলকাম টিউন বাজে
অলীক সুরের;ডুবে যাই গানের কথার পবিত্র রহস্য মাঝে
"মৃত্যু তো শান্তি,শান্তি আমি দেই না কাউকে কষ্ট বিনা"
===========================================
~~হঠাৎ তোমার জন্য মন খারাপ~~


সুপারি বাগানে বাতাস আর আগুন লেগেছে নিমবনে
সবাই কি ভালো থাকে সবসময় – না, জানে সবাই
মৃত্তিকার মৃত্যু হলে পরে কাঁদে এই বুক
রেলগাড়ি ঝমাঝম পা পিছলে আলুর দম, 
তারপর না জানা কারণেই ভালো লাগে বৃষ্টি- 
রিমঝিম বৃষ্টি আর ঝিম ধরা ভোরের আকাশ,
সকালের নাস্তায় তুমুল বিস্বাদ – পরে 
চায়ের কাপে মন সাঁতরিয়ে ওঠে পাড়ে, 
তুমি যখন রবীন্দ্র সঙ্গীত শোন ঐ ঘরে
অন্তত তার সুরটুকু না ভেসে আসুক
বিবাগী বাতাসে এতো দূরে,
আমি ওস্তাদ জাকির হোসেনের তবলার তালে পুড়ে পুড়ে শেষ হই
তেরে কেটে থা...... চাটি মেরে যা...... ।

সবাই কি ভালো থাকে সবসময় – না, জানে সবাই
কেন জানেনা ব্যথা জাগানিয়া একজন শুধু ।
==========================================
~~আঁধার কথা কয়~~


আমার বন্ধু নির্জন কালো আঁধার-
সে আলতো করে ছুঁয়ে থাকে আমায়,
আরেক বন্ধু ব্যালকনির গ্রিলে বসা চড়াই
একটু পরে পরে সে ডেকে যায়।

বন্ধু হয়েছে এখন টুকটুকে লালরঙা
কেবলই ছুটে বেড়ানো দুটো মাছ 
গোল কাঁচের জারের গায়ে প্রতিদিন 
পরম যত্নে কেউ রাখে হাত।

ঝিঁঝিঁ ডাকে না অনেকদিন হলো
এখন রাতের শব্দ বলতে
শুধুই নাইটগার্ডের বাঁশি।
আমিও তো আরেক নাইটগার্ড;
দিনরাত এই জীবনের সুরগুলো
কেবলই পাহারা দিয়ে রাখি।
===========================================
~~নাগরিক কাক~~

তোমাদের এই শহরে কাকের পাশাপাশি যুগলদের সংখ্যা বাড়ে, 
গাছের উপরে কাকদের মিলন মেলা আর নিচে তরুণ যুগলদের......।।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা গা ঘেঁষে তারা নিবিড়তা বোঝার চেষ্টা করে, 
হেডফোন এর দুই প্রান্ত দুই কানে গিয়ে ভালবাসা উগলে দেয়।
  তারা একে অন্যতে হয় নিমগ্ন। কফিশপে ভীড় জমে,
 এক কাপে দু ঠোঁটের প্রান্ত মিলে একাকার হয়, 
আপেক্ষিক সম্পর্ক তাদের কফির মতই কড়া হতে থাকে।
 রিকশা,সি এন জি তে ভালবাসা বাড়ে,
 রিকশা'র সিট সংকীর্ণ হলে ভালবাসা আরও বেশি হয়... 
রোদ বৃষ্টি'র অজুহাতে হুড তুলে তারা সব মানুষের ভিড়ে আলাদা হয়ে থাকতে চায়।
 কাক গুলো নির্বিকার চেয়ে দ্যাখে, 
সন্ধ্যা নামলে তারা ঘরমুখি হয়, অথচ যুগল দের ক্লান্তি আসে না।
একে অন্যের চোখে দুনিয়া আর বুকে স্বর্গ খুঁজে পায়।
সন্ধ্যা আমার আকাশেও নামে, আমি চোখে দেখি দুনিয়ার জঞ্জাল,
 তাদের সুখ দেখি না, আমার ফুসফুসে নিকোটিন প্রশান্তি দেওয়ার চেষ্টা করে,
 কফি'র কাপে আমার হাত যায় না, 
নিবিড়তা আমার বোঝা হয় না,
 শেষমেশ কাকের মতো নির্লিপ্ত থাকার চেষ্টা করি,
 বাজেট এর আগে সিগারেটের দাম বাড়লে ছেড়ে দেবার পণ করি।
 যুগলদের বাহু বন্ধনের মতো সিগারেটের সাথে আমার বন্ধন মজবুত হয়।
যুগলদের ঘরের মন্ত্রি মিনিস্টার তাদের সন্তানদের বিয়ের বাজেট করে, 
তাদের সম্পর্কে চিড় ধরে, 
একে অন্যের সাহচার্য্য ছেড়ে নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তুত হয়।
 যুগলদের ফোনে ব্যাস্ততা বাড়ে,
 আমার সিগারেটের ধোঁয়ার মতো তাদের উদ্বায়ী ভালবাসা মিলে যেতে থাকে।
হেডফোনে বিরহ সঙ্গীত বাজতে থাকে, 
আমি তখন নিজেকে নিয়ে চিন্তা করি। 
সঙ্গী হারানো কাক গুলো নিরবে ভিড় করে আমার পাশে।
 আমি ও কাকগুলো মিলে জীবনের বাস্তবতা বোঝার চেষ্টা করি গভীর নিমগ্নতায়, 
পাশ দিয়েই দ্রুত বেগে হুড তোলা রিক্সা চলে যেতে থাকে............
==============================================

~~শেষরাত্রি~~

এই রাত্রির শেষ দেখবো বলে
জোনাক-চোখ মেলে থাকি,
ফ্যানের অবিরাম যান্ত্রিক শব্দে 
জেগে থাকা নিশ্চুপ একাকী।

প্রহর গুণি একে একে
কখন সূর্যটা ওঠে;
মূর্ছনার ফাঁকে ফাঁকে
অজস্র চিন্তা আসে।

কেমন করে গায়
কেমন করে চায়
লুকোনো ভোরের পাখি?
আমি দেখতে না পাই
তবু ছবিটা রঙতুলিতে
মনে মনেই আঁকি।
==============================================
~~সুশীল সুধী~~

নিখুত সৌন্দর্যবোধ আমাকে ভাবায় না তেমন, উপেক্ষা করে, চোখের আড়ালে চোখ
যে পরিচিত দৃশ্য দেখে বিভ্রান্ত হয় না, সে নুয়ে তাকায় মাটির দিকে, বলে দৃশ্যান্তরে-
লুকানো আমি-তুমি বিভেদে ক্ষুধাময় সভ্যতাবোধের কথা, বলে অবিশ্বাস্য-- 
কারসাজিতে ভ্রমাক্রান্ত নীতিকথা

বঞ্চিত যাদের লাশ পড়ে আছে কঙ্কাল সফেদ
মহাবানীর চাপে পিষ্ঠ অমানুষের সামাজিকতা বিলাসে, তাঁদের কথা বলা নাই,
বলা নাই যারা মরে গেছে মায়ের কষ্ট দেখে দেখে মুক্তচেতনার কাফনে জড়িয়ে
তাঁদের নগ্ন দেহ পড়ে থাকে -মানুষ তোমাদের চোখের কোণে,
এক ফোঁটা জল নাই, এক ফোঁটা মনুষত্ব্য।।
============================================
~~লোচনলিপির গোপন পাঠ~~


সারি সারি চোখের ভাষা-
অবলীলায় পড়তে পারি;
হঠাৎ কারোর চঞ্চলতা,
দুষ্টু চোখের মিষ্টি হাসি,
আড়ালে তার ছাপিয়ে থাকা-
স্পষ্ট কিছু কষ্ট আমি-
খুব সহজে বুঝতে পারি!
হাতের মুঠোয় হাত রেখে কেউ-
বলেই ফেলে ‘ভালোবাসি’!
পাঠ করে যাই তার দু’চোখে-
অন্য কিছু সর্বনাশী!
জলের ফোঁটা গোপন রেখে-
অচেনা কেউ দারুণ হাসে;
আমি ঠিকই পড়তে পারি-
কেমন করে ওই দুটো চোখ-
নোনতা জলে কেমন ভাসে।
কারোর চোখে ডায়রী থাকে,
গোপন কথায় নানান লেখা;
ওসব আমি পড়তে জানি,
গোপন যতোই হোক না গোপন-
আমি সবই পড়তে জানি।
মধুর ভেলায় ভাসতে গিয়ে-
হঠাৎ কারো ইচ্ছে জাগে-
জলের তলে ডুবতে একা!
ওই কথাটাও গোপন কথা,
তবু আমি ঠিকই বুঝি;
হাজার নারীর চোখের লিপি-
খুব নীরবে পাঠ করেছি,
গোপন অনেক যন্ত্রণাকে
রাখছে পুষে খুব ছলনায়,
অষ্টপ্রহর জ্বলছে সেসব-
বেদনভরা তপ্ত জলে।
আবার কারো চোখের তারায়-
বিন্দুখানেক ভালোবাসা!
সবই বুঝি, আমিও খুঁজি-
তবু ভাবি-
বাস্তবতা কঠিন ভীষণ;
সবার ওসব সয় না প্রাণে,
আমারই বা সইবে কেনো!
বুকপকেটে বন্দি রেখে স্বপ্নভরা ভালোবাসা,
এখন আমার-
খুব সাধারণ বেঁচে থাকার একটু আশা।
===============================================
~~স্বপ্নের খেরোখাতা~~


অনুভূতির খাতা বেড়ে চলে ক্রমে,
কষ্টগুলো চাপা পড়ে পড়ে যায় জমে;
আনন্দগুলো ধরে রাখতে চায় এই বুক,
স্মৃতির পাতায় এঁকে চলে হৃদয়ের সুখ।

চোখদুটো আচমকাই স্বপ্ন দেখে ফেলে
ভীরু মনটাকে রেখে অনেকদূর যায় চলে,
হঠাত্‍ই আবার মধুর ঘুমটা ভাঙে,
না পাওয়ার বেদনাগুলো শুধু এ মনটা জানে।

আসমানী আকাশের নিচে, হায়,
আমাদের রোজকার বাঁধন
তবুও তো বড়ো অবুঝই থেকে যায়!
========================================
~~দূরবীন~~

দূরবীনে চোখ রেখে দেখেছো? 
কদর্য ছবিও মাধুর্য তাতে ছড়ায়। 
যতো বেশি কাছ থেকে দেখা, 
ততোই খুঁতগুলোর স্পষ্ট হয়ে ওঠা।

তবু সবাই কেনো কাছে ডাকতে চায়?
ওরা বুঝি জানে না, কাছে এলে
চেনা মানুষটাও অচেনা হয়ে যায়? 

ভালোবাসো?
তবে দূর থেকেই তাকে দ্যাখো কাছে যেয়ো না, কিছু চেয়ো না
দু'ফোঁটা শিশির ঝরুক তবু
প্রেমের অথই সাগরে সে কিছুই না।
============================================
~~নগরছায়া ~~

এই মধ্যদুপুরে গিটারের মন খারাপ,
জানালাবিলাসে বিষণ্ন চোখ...
আহা রে, এলোমেলো টুংটাং!
ছয়টি তারে হাঁটি হাঁটি পা পা-
অলস আঙুল...
রোদ-ঝলসানো ভাবনার বসতি!

আবোল তাবোল এফএম,
ফ্লোরে গোলচক্কর গা ছাড়া ছাড়া...
নগরে নির্বাসিত প্রাণের কবিতা-
অলস ঘুমায় তুরুপ তাসের নিচে!
=========================================
~~তুমি সমগ্র-২~~


তুমি যেই শহরে থাকো সেই শহরটা ক্রমশই প্রিয় হয়ে উঠছে, 
শহরটা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়া শুরু করেছি আমি 
খোঁজ নিতে শুরু করেছি তার মানুষ জন, দর্শনীয় স্থান
খেলার মাঠ, গ্রেভিয়ারড, শ্মশান এমনকি কাঁচা বাজারেরও। 
তুমি যেই শহরে থাকো সেই শহরটা প্রিয় হয়ে উঠছে ইদানীং। 
গুগল ম্যাপ ঘেঁটে ঘেঁটে আমি প্রতিদিন সেখানে যাই
ভাবি এইখানে আহা এখানকার কোন খানে তুমি আছো 
হাসছ, কাঁদছ, প্রকাশ করছ তোমার অনুভূতি প্রিয় বন্ধুদের সাথে,
সন্ধ্যা হলে পরে কোন থিয়েটারে অথবা কোন শপিং মলে তুমি ।
সেদিন উইকিপিডিয়া ঘেঁটে অনেক তথ্য বের করলাম শহরটার-
বোধ করি তুমিও তা জানবেনা, জানেনা শহরবাসী অনেকেই
ওরা অনেক না জানা তথ্য সুন্দর করে দিয়ে থাকে,
ব্রিটিশ আমলে অ্যান্ডারসন বলে একটা লোক ছিল, সে ই এই শহরের...
আচ্ছা যাও পাগলামি মনে হচ্ছে, আর বলবনা ।
আসলে তোমাকে ভালোবেসে আমি ভালবেসে ফেলেছি সমগ্র তোমার।
অযতনে ফেলে দেয়া একটি বাদামের খোসা
অথবা তুমি যেই রিকশায় চড়েছ একদিন
সেই রিকশাওয়ালাকেও আমার অতীব বন্ধু মনে হয় এখন ।
সমগ্র মানে তো তুমি জান – তার আর বাকি নেই কিছু ।
===========================================
~~আকাশের গায়ে দিনলিপি~~


রাজকীয় রাতের উঠোনে-
এলোমেলো পাতাঝরা দেখি,
বিধ্বস্ত আকাশের কাছে যাই,
নীরব কান্নার কারণ খুঁজি;

ঘাসে ঘাসে শিশিরের ঘাম-
লিখে রাখে শুধু তোমারই নাম,
প্রতীক্ষার ডায়েরি লিখে লিখে-
কেটে যায় অজস্র রাত!

শেষ পৃষ্ঠাটি লিখা শেষ হয়ে গেলে-
আকাশের গায়ে চুপিচুপি লিখে দেবো,
‘তোমাকেই ভালোবাসি অনন্তকাল...’
===========================================
~~চাষাবাদ~~


চোখের ভেতর বাস করে যে,
বুকের ভেতর নেই কেনো?
রাতদুপুরের স্বপনবেলায়-
দিচ্ছে হানা সেই কেনো?

কে আসলে সেই মানবী-
শুধাও যদি- জবাব নেই,
অনেক আছে বুকের ভেতর-
ভালোবাসার অভাব নেই!

ভালোবাসা চাষ করি তাই-
হৃদয়খামার উর্বরা,
হৃদয়বাঁশির খুব গহিনে-
নানান প্রেমের সুর ভরা!
======================================
~~একটি দুর্ঘটনার কাব্য~~


বাসের হাতলে আমার এক হাত, পা-দানিতে এক পা
এক পা মাটিতে, অন্য হাত শূন্যে- বাসে উঠছি
বাসটা হঠাৎ গতি পেল খুব- একটা খুব দৌড়ানোর চেষ্টা
হাতল ছাড়বো... পা-দানি ছাড়বো... নাকি মাটি ছাড়বো...

দশমিক শূন্য শূন্য পাঁচ সেকেন্ড

ছেড়ে দিলাম হাত - মানে পারছিলাম না আর- চরম গতি তো
পতনের শব্দ, চামড়া জ্বলে যাওয়া অনুভূতি- গড়িয়ে কিছুদূর
দাঁতে মুখে বাড়ি- আহ বাঁচাও,
তখনই একটা স্কুটারের আমার পায়ের উপর দিয়েই চলে যেতে হল
হাড় ভাঙ্গার মটঠাস শব্দ
তীব্র যন্ত্রণা- ঝাপসা চারিদিক
লোকেদের হইচই
আহারে... কার কি হলরে... ধর ধর...
কাকে ধরছে... আমাকে ? বাসকে ? স্কুটারকে ? না শুধুই সশব্দ শব্দ উচ্চারিত
লাল রক্তজবার রঙে তরলের ধারা, অচেতন মুহূর্ত...
কি হচ্ছে এই সব???

ছেলেটির প্রিয় মুখ

ডাক ছেড়ে কাঁদবে তুমি জানি

আরও আরও কিছু মুখ যায় আর আসে-
বিষণ্ণ প্রিয় মুখ গুলি...

আহা, সকালে তোমাকে আর একটু ছুঁয়ে দিলাম না ভালবেসে ...!

জানিনা, জানিনা কি হচ্ছে এইসব
কি হবে এর পরে,
কান্নার চেয়েও বিধুর দীর্ঘশ্বাস ঝরে পড়ে...!!
=============================================
~~নিশিকাব্য~~


বেসামাল রাত ধেয়ে চলে রৌদ্রের পানে,
তবু এই আঁধার দাগ কেটে যায় মনে;
ক্লান্তিময় শরীর কোমল বিছানায় এলিয়ে পড়ে,
তবু এই তিমির আমায় ভীষণ মুগ্ধ করে। 

দূরে কোথাও কেউ হয়তো মুখ লুকায় লাজে,
তবু এই নীরবতা সুর হয়ে কানে বাজে;
সকাল হতে বাকি নেই বেশি- মনে পড়ে কাকের ডাকে,
তবু এই প্রতীক্ষা আমায় অনন্তকাল জাগিয়ে রাখে।

জোনাকিটা উড়ে যেতে যেতে তারা হয়ে যায়,
তবু এই অমানিশা কেটে যায় বিষণ্ণতায়;
অবিরাম মালা গেঁথে চলে ছেঁড়া স্বপ্নেরা,
তবু এই শুন্যতা থাকুক আমার হৃদয়ভরা।
===========================================

~~অকবিতা~~


ইচ্ছে হলেই উজান পানে যায় কি আর পথ চলা
অনেক কথা ছিল জমে হয়নি আজও তোমায় বলা।
চেপে রাখা ভালোবাসা ঠোঁটের কাছের গান
পারেনি ছুঁতে তোমার দেহ, তোমার মন-প্রান।
তোমার শরীর জড়িয়ে ছিল কোমল কোন চাদর
উজার করেছি অজস্র মাইল পেতে তোমার আদর।
কাছে যত চাই যে তোমায়,ঠেলো তত দূরে
ইচ্ছে করে, ফিনিক্স হয়ে ভিন গাঁয়ে যাই উড়ে।
সকাল হলেই সূর্যমুখী তোমার ঠোঁটে ফোটে,
প্রেম ভিখারি দাঁড়িয়ে থাকি যদি কিছু জোটে।
উদাস দুপুর ক্লান্ত হরিণ তোমাতে প্রাণ পায়,
তৃষ্ণার্ত পথিক বসে থাকে বেলা যে চলে যায়।
রাত হলেই আকাশ দেখো,জ্যোৎস্না ছুঁয়ে যায়,
আমার আকাশ মেঘলা থাকে কেউ না তারে চায়।
ভোরের শিশির তুমি'ই ঝরাও তুমিই ফোঁটাও আলো
ছায়া হয়ে পাশে আছি যদি কখনও বাসো ভালো।
==============================================
~~প্রিয় মানুষ~~


আমরা কি চিনি প্রিয় মানুষটিকে ?
জানি প্রিয় মানুষটি সম্বন্ধে ?
হ্যাঁ,যে মানুষটির কথা যৌক্তিক মনে করিনা,
সে মানুষটি আমাদের প্রিয়।
যে মানুষটির হাসি আমরা অনেক সময় কেবল ন্যাকামো মনে করি,
সে মানুষটি আমাদের প্রিয়।
কখনো কখনো যাঁকে আমরা ষড়যন্ত্রকারী মনে করি 
সে মানুষটি আমাদের প্রিয়।
কিন্তু যখন মানুষটি প্রিয় হয় তখন খুব দেরী হয়ে যায়।
তখন ঐ প্রিয় মানুষ আর কথা বলতে চায়না।
তখন আর মানুষটি হাসে না।
শক্ত,শীতল দেহটি তখন প্রস্তুত,
সাজানো খাটিয়ায় চড়ার, মাটির তলে যাওয়ার বা অগ্নুৎপাতে জ্বলার।
তখন ইচ্ছে হয় না,
এক পলক আপন মানুষদের দেখি,কান পেতে একটু শুনি মানুষগুলোর বুক ফাটা আহাজারি।
শোকের মাতমে চলে যায় মানুষটি এপার থেকে ওপারে,দূর বহুদূরে।
এরপর শুরু হয়
প্রিয় মানুষটির স্মৃতিচারণ,
চোখের পলকে ভেসে ওঠে
প্রিয় মানুষের হাসি বা প্রিয় মুহূর্তগুলো।
থাকে না ঐ প্রিয় মানুষটি,
জীবিত থাকতেও যে মানুষটি প্রিয় হয়নি,
জীবিত থাকতেও যে মানুষটি জীবিত ছিল অনেক অপ্রিয়তার মাঝে।
তাই অন্তিম কালে চরণ তালু দেখিয়ে চলে যায় দূর বহুদূরে।
বলে যায় না, কোথায় তাঁর শেষ যাত্রা।
=============================================
~~প্রলাপ~~


যে রাতে আমি মরার জন্যে বেঁচে থাকব,
শেষ বারের মত হাত ধরবে পাপ,
চোখ দেখবে কলংক আর দেনাপাওনার হিসেব,
চুপ করে জানালা খুলে দিও,
বেহিসাবি অন্ধকারে জ্যোৎস্না ফেলে দিও,
সুখীমুখ কিংবা কান্না যা ইচ্ছে হয় করো,
শুধু আমার চোখ থেকে চোখ ফিরিয়ে রেখো।
=======================================
~~যুক্তি~~

হাত বাড়ালেই নাকি সুখ পাওয়া যায়,
কিংবা নারীর ধমনী..
হাত বাড়ালেই নাকি সুখ পাওয়া যায়
কিংবা নারীর ধমনী,
সুখের খোঁজে হাতড়ে এলাম কত
শহর, জাতি, উপজাতি।
দেহ এবং মন নিয়ে তো তর্ক হল বিস্তর।
যারা কিছু পায়নি, যাদের কিছু হয়নি,
তাদেরই কেউ বলল আফসোস, কেউ হয়রানি।
যারা সব পেয়েছে, হারিয়েছে, আবারও পেয়েছে,
শুধু তারাই জানলো...
নারীর মন এক দেহ অনেক।।
==============================================
~~পূর্ণতা মানে সব খানি পাওয়া~~

যে শব্দ গুলি ধূসর ও বিচ্ছিন্ন ছিল
সেই শব্দ গুলি বাক্যে পরিণত হয়ে
মেয়েটির মনে ঢুকতে থাকলো যেন 
ইত্তেফাক ছাপা হচ্ছে আর কে মিশন রোডে, 
মেয়েটি তখন রাত জাগা ক্লান্তি ভুলে
পুনরায় স্নান সেরে ভিজে চুলে বারান্দায়
দুচোখে সোনালি সোনালি রোদ আঙ্গিনায়
এপাশে ওপাশে শীতল পাটির মতো। 

ছেলেটি শাহবাগ মোড় থেকে
এক মুঠো দোলন চাঁপার সাথে
এক মাথা প্রচণ্ড রোদ নিয়ে –
ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল ঢঙ্গে
হাঁটতে হাঁটতে এ শহর ও শহর
হাঁটতে হাঁটতে এ গাঁয়ে ও গাঁয়ে।

তখনও মেয়েটি মৃদু হাসি মুখে
আর তার চায়ের কাপের মাঝে
হাসন রাজার সাথে জর্জ মাইকেল
হাকালুকি হাওরের জলের মতো
ছলকে ছলকে ওঠে-ছলকে ছলকে ওঠে
ভুল বুঝাবুঝির হবে অবসান-সে জেনে গেছে আগেই।
============================================
~~নিষিদ্ধ দূরবীন~~

ক্যামেরার আলো পবিত্রতা পায় উলঙ্গ সুন্দরির হাঁসিতে
শত শত সুশিলের অভিশাপ জমে পতিতার পাপিষ্ঠ আধারে।
প্রেমের ইশতেহার অনুযায়ী প্প্রেমিকার ঠোঁটে জমে চুম্বনের লালা
শুধু বাহারি কবিতাভরা স্তনের ভিতর হাসে বিস্বাসঘাতক সিফিলিস।

পাজেরো বা মারসিডিজে দৌড়ে চলে পুজিবাদি বিত্ত ও বৈভব
নামিদামি রেস্তোরাতে চলে মহা উৎসাহে মহাভোজ।
দিন শেষে টোকাইয়ের পলিথিন ভরে ওঠে শুধুই বিদীর্ণ স্বপ্নে
শ্রমিকেরা মরে পরে থাকে যেন হাবিয়ার আগুনে পোরা বেওয়ারিশ লাশ
সিমেন্ট,রড প্রভৃতি সুবিধাবাদি দেবতার ধ্বংসস্তুপের নিচে
গারমেনটস এর শেলাই মেশিন চালিয়ে যায় অবচেতন ঘর্মাক্ত চেতনা।

সুদখোর ব্যবসায়ী এতিমখানায় টাকা দিয়ে সাঁজে দানবীর
নিষ্পাপ এতিমদের ইফতারে জোটে কিছু শয়তানি রোজগার।

নিয়মিত সিজদায় কপালে পরে গেছে পবিত্র ঈমানের চিহ্ন
নামাজ শেষেই অর্থের কাছে ঈমান হয়ে যায় বিক্রি
আল্লাহকে বেমালুম ভুলে সততাকে ফাসি দিয়ে মেরে ফেলেন
মন্ত্রনালয়ের লাল ফিতার দৌরাত্মে ইমানদার আমলা।

পরাজিত জীবনের মলমুত্রে ভেসে চলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রান
লাল সবুজের পতাকা নিয়ে গাড়িতে চলে বেরায় ঘৃণিত রাজাকার।
শহিদের আত্মা ফেরারি ঘুরে ফিরে বধ্যভুমিতে
শেষ বিচার না পেয়ে বেহেশত যে হয়ে আছে হাবিয়া দোযখ ।

পঁচাত্তর বার বার হেসে চলে নির্বাক একাত্তরের মুখে
সৎ মানুষেরা লুকিয়ে বেরায় স্বার্থের নপুংশুক কনডমে
ধারমিকেরা চুশে যান শয়তানের থুতু ভরা তেতুল
ভয়াবহ কালরাত্রির অমাবশ্যা শীঘ্রই সমাগত
ঈশ্বর আসমানে খেলেন কোলাভেরি,
ফেরেস্থারা মৃত ।
===========================================
~~হঠাৎ তোমার জন্য মন খারাপ~~


সুপারি বাগানে বাতাস আর আগুন লেগেছে নিমবনে
সবাই কি ভালো থাকে সবসময় – না, জানে সবাই
মৃত্তিকার মৃত্যু হলে পরে কাঁদে এই বুক
রেলগাড়ি ঝমাঝম পা পিছলে আলুর দম, 
তারপর না জানা কারণেই ভালো লাগে বৃষ্টি- 
রিমঝিম বৃষ্টি আর ঝিম ধরা ভোরের আকাশ,
সকালের নাস্তায় তুমুল বিস্বাদ – পরে 
চায়ের কাপে মন সাঁতরিয়ে ওঠে পাড়ে, 
তুমি যখন রবীন্দ্র সঙ্গীত শোন ঐ ঘরে
অন্তত তার সুরটুকু না ভেসে আসুক
বিবাগী বাতাসে এতো দূরে,
আমি ওস্তাদ জাকির হোসেনের তবলার তালে পুড়ে পুড়ে শেষ হই
তেরে কেটে থা...... চাটি মেরে যা...... ।

সবাই কি ভালো থাকে সবসময় – না, জানে সবাই
কেন জানেনা ব্যথা জাগানিয়া একজন শুধু ।
================================================
~~এশার আযান, লক্ষ্মীবাজার ও কিছু ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া ~~


বেহায়া রাত্রির দেহতে মায়াবি আঙুল চালনা করে চলে
এশার আযান। ধীরে ধীরে রাত্রি সতী হয়ে ওঠে ।
বোরখার আধারে ঢেকে যায় যেন সব মনুষ্য কলুষ।

নন্দলাল দত্ত লেনে
হস্তমৈথুনে ব্যস্ত ছেলেটা সহসা অজুতে ব্যস্ত হয়ে পরে
সেও যায় দাড়িয়ে জামাতের সহিত। দুর্বোধ্য পবিত্র ভাষা
আর সুবোধ্য চটির গল্প এক সাথে খায় ঘুরপাক
কে এফ সি-তে
প্রেমিক যুগলের আলাপচারিতা হঠাৎ থেমে যায়।
বেড়ে যায় যেন দেহের দূরত্ব। ওড়না দিয়ে
মাথা ঢাকে তরুনি।তরুনটি অলীক কারনে হয়ে ওঠে
অনুতপ্ত। প্রেমিকার চুম্বনের আর পাপের স্বর্গ নরক মিশ্রিত
ভাঙা স্বরে সে অর্ডার দেয় দু কাপ কফির।

প্যারিদাস রোডে
দৈনিক পরিহাসে হতাশ রিক্সাওয়ালার চোখ আশাতে উজ্জ্বল হয়
যেন তার দীন কাস্টমার সিটে বসেছেন স্বয়ং ঈশ্বর ।

বুদ্ধের দোকানের গলিতে
পরে থাকা মাতালটা মদের বোতল ছেড়ে এক নজর
রাত্রির আধারে সন্ধান করে উৎসাহে হারানো কিছুর ।

ধীরে ধীরে আযানের ধ্বনি মরে যায় । রাত্রি বোরখা খুলে ফেলে।
ছেলেটা নামায শেষ করে ব্যস্ত হয় আবার সানি লিওনে ।
তরুনটি ধরে বসে তরুনির হাত ।খসে পড়ে মাথার ওড়না ।
রিক্সাওয়ালার মন বলে ওঠে “শালা দুনিয়াটা বাটপার ।
সন্ধানে ব্যর্থ মাতাল ফের ঢোক গেলে চোলাই মদের।
আর আমি বাংলাবাজারে দ্বিধাশেষে তাফহিমুল কোরানকে পাশ ঠেলে
কিনে হাতে তুলে নেই হুমায়ুন আজাদের “নারী”।
==========================================
~~দ্রোহের আর্তনাদ~~


গঙ্গা-যমুনা–পদ্মা দিয়ে আজ
রক্তের স্রোত বহমান ।
ধর্মান্ধতার কালোমেঘ গ্রাস করেছে
নির্ভেজাল-শান্ত-আকাশের সীমানা,
বাঙালী আজ নল ঘুরিয়ে দিয়েছে
বাঙালীর বুকেই ; বাতাসে ভাসছে-
শত্রুর বাংলা বিজয়ের ঘোষনা ।

পলাশীর খেদ মেটানো একাত্তোরের বীরভূমি
আজ লাশের ভাগার ।
রাজনীতির মঞ্চে ফাঁসির দড়ি গলায়
দাঁড়িয়ে আছে দেশপ্রেম,
অপেক্ষা শুধু তরুণের-
মিথ্যা-মিছিলে, সস্তা-শ্লোগানে
করবে বলে তার সৎকার ।

জাতির গর্ব-মুকুট ছিনিয়ে নিতে গিয়ে
একদা নির্বাসিত হয়ে ছিলো যে শকুন,
আজ সেই মুকুট, তার মাথায়
মির্জাফরের মতো শোভা পায় !
হারায়, বাঙালী তার আত্মপরিচয় হারায় ,
লুটায়, রক্তে কেনা সবুজ পতাকা ধূলায় লূটায় ।

সংস্কৃতির উন্মুক্ত জনসভায়
আজন্ম লালিত স্বদেশই যখন
মূর্তিমান গ্রেনেড হয়ে দাঁড়ায়,
স্বাধীনতা, সাম্য আর ভালবাসা তখন,
বাংলাদেশ ছেড়ে, অন্য কোন গ্রহে
তাদের গতিপথ খুঁজে পায় ।
==========================================
~~মানুষঘুড়ির মন আকাশে~~


মানুষগুলো খুব চিন্তিত মুখে বসে আছে
চেনা মুখ নেই, চেনা মুখছবি;
কার মুখ চেয়ে-
কে চেয়ে আছে পরিচিতের আড়ালে?

বিনিময় প্রথা-পত্রে যার যার নাম আছে
কারো পরিচয় নেই নামে

নামহীনদের মূলতঃ বিলিয়ে দেয়া হয় না
কোনো হাসি-কান্না,
নতুন কোনো সংবাদ, কিংবা,
বুকের ভেতরে জমে জমে উঠা হাহাকার

ভীত সন্ত্রস্থ মানুষগুলো ছেড়া ঘুড়ি
রংবেরঙ্গের ঘুড়ি
ঘুরে
ঘুরে
কার ঘর ঠিকানা শুধু উড়ে যাওয়া
মৃদুমন্দ বাতাসে ফুরফুরে হারিয়ে যাওয়া

মানুষগুলো বেঁচে থাকে হাসিমুখেই প্রাণহীন
চোখেরা শুধু- চেয়ে থাকে সীমাবদ্ধ দৃষ্টি দূরে।।
 ===========================================

~~স্মৃতিগুলো ~~


এতো স্মৃতি বলো কোথা রাখি |
ভাঙ্গা বাড়িটার ধুলো জঞ্জাল 
বুক ভরে যারা ছিল এতকাল ,
কোথা রাখি বলো এত প্রিয়নাম 
যার পাশাপাশি একদা ছিলাম,
এতো স্মৃতি বলো কোথা রাখি |

কিছু ভালবাসা কিছু অবহেলা
কোনটা পকৃত কোনোটা বা খেলা,
বুনো ঝাওবিথী উদাসীন ডানা
মায়াবী রাখাল নদী চিরচেনা,
কাকে বলি বলো এতো সব কথা,
কোথা রাখি....
এতো স্মৃতি বলো কোথা রাখি|

স্মৃতিগুলো সব মনে পরে যায়
কথাগুলো সব আবছায়ায় মিলায়,
সময়ের সাথে যেন সবই হারায়
একা বসে শুধু জীবনের ছবি পাই,
কাকে দেখাই এতো সব ব্যথা
কাউকে যে আজ খুঁজে না পাই,

কোথা রাখি....
এতো স্মৃতি বলো কোথা রাখি |
===========================================
~~কামদুনি~~

মেয়েটি কলেজের ছাত্রী
মেয়েটি পথ হাঁটে রোজদিন
মেয়েটির মা বাপ আনপড়
অপুষ্টি উপবাসে সঙ্গিন।
মেয়েটি লেখাপড়া শিখবেই
অদূরে নগরের মায়াডাক
যে নগর জেগে আছে রেনেসাঁস
এ গাঁয়ে বীণাপাণি ঘুম যাক।

মেয়েটি কলেজের ছাত্রী
দুচোখে স্বপনের ইমারত
আরো সে পড়বে, পড়বেই
পড়াবে, পড়বে সে যুগপৎ।
যে আলোক চিনে দেয় অক্ষর
সে আলোয় মেয়েটিকে ধর্ষণ
ছিলোনা সংজ্ঞায় , আঘাতে
সেদিন মেঘ - ভাঙা বর্ষণ।

মেয়েকে চিরে জরা রাক্ষস
পশুও এর চেয়ে দয়াময়
এ কোন রাত্রির কথা ভাস
সময় বোঝে কি এ সংশয়!
এবার দাম আর দস্তুর
কিশোরী নিলামের পাটাতে
এবার লাশ নিয়ে মেধা-বাদ
কে কাকে পথে নেবে হাঁটাতে!

ও কবি ও গায়ক আঁকিয়ে
মোমবাতি জ্বালো সুতো পাকিয়ে।
===========================================
~~শহীদ দুঃখগুলো~~

তুমি এবং তোমার প্রেম মরে গিয়েছ বেশ ক'দিন হল
গৌতম বুদ্ধের মত শান্তিপ্রিয় বলেই হয়ত
তোমার কবরে হিয়ে চালাইনি স্মৃতির কোদাল
খুঁড়িয়ে উঠিয়ে আনিনি মৃত প্রেমের হাঁড়গোড় ।

স্বাভাবিক ঘটনাতে ঈশ্বর সন্তুষ্ট নন বলেই হয়ত 
আজ এই সন্ধ্যার আধারে দেখা হয়ে গেল
নাস্তিকের সামনে ঈশ্বর দেখালেন কিছু অলীক ম্যাজিক
তুমি জানতে চাইলে "কেমন আছো ,ভাল তো ?"

নিঃসঙ্গ দুঃখগুলো ক্রমাগত হল জড়ো হৃদয়ের একলা প্রান্তরে
প্রতিটি দুঃখের হাতে ব্যানার, ফেস্টুন , প্ল্যাকার্ড, পতাকা
মুহুর্মুহু কেপে উঠলো নীরব হৃদয় দুঃখদের চিৎকারে।
বেশ তাড়াহুড়ো করে মস্তিষ্ক পাঠিয়ে দিলো কয়েক প্লাটুন
যুক্তিতে সশস্ত্র দুঃখ পুলিশ ।
দুঃখদের রক্তে ভিজে গেলো হৃদয়ের রাজপথ
ঠোঁটে প্রতিষ্ঠিত হল সুখের আবহমান সামাজিক কথামালা
"ভাল আছি,আমি বেশ ভাল আছি"

অতঃপর তুমি আবার হারিয়ে গেলে পৃথিবীর অলঙ্ঘ্য নিয়মের কবরে
সন্ধ্যার আধারে তোমার ছায়া মিলিয়ে যাবার পরেও
শহীদ দুঃখেরা হৃদয়ে আমার করছিলো আনাগোনা
"ভালো নেই, আমি ভালো নেই" বলে করছিলো চিৎকার ।
===========================================
~~আর কিছু নয়~~

দেখেও না দেখার ভান শুরু করেছি শেষ শ্রাবণে,
 এরপরমাত্র কয়েকটি সপ্তাহ, 
তোমার চোখের কোনা, তোমারবিরক্তি 
তোমার বুঝে যাওয়া আমার অসভ্যতা। 
কি দারুণ তোমার নিষ্ঠুরতা। 
বেলা হয়ে যায় তবু আমার শখ মরে না,
কি আজব কি গজব,
দেখ আমার চোখ সরে না।

একটু সময় করে ভেব,
একদিন তোমারও পরবে ছানি,
সময় থাকতেই হোক না তবে,
চোখের উপর চোখের দাবি।
==========================================
~~দ্যা ডে অফ জাজমেন্ট~~


অন্য প্রান্ত হতে আমিও মহাশূন্যে 
যুদ্ধ ও শান্তি – আগে যুদ্ধ পরে শান্তি 
চাঁদমারি থেকে বন্দুকের ধিমা ধিমা শব্দে বুকে শিহরণ জাগে, 
বইখাতা থাকুক বাক্সবন্দী 
শিখে গেছি আমি জীবনের সমস্ত শব্দাবলী- 
দেড়লক্ষ শব্দ হতে বেঁছে নিয়েছি আমার যা প্রয়োজন; 
সমবণ্টণই শেষ কথা-আর কোন তন্ত্র বুঝিনা আমি; 
বেচতে থাকো তুমি - ও প্রিয় মাতৃভূমি
ধর্ম – দেশ – স্বাধীনতা - গণতন্ত্র - মুক্তিযুদ্ধ যত......
দড়ির দুই প্রান্ত টেনে মিছে মিছি হাত লাল কেন ......!?
এবার বন্দুকের ধিমা ধিমা শব্দে বুকে শিহরণ জাগে
বন্দুকের ধিমা ধিমা শব্দে বুকে খু-উ-ব শিহরণ জাগে বন্ধু ।
============================================ 
~~নারী~~

আঁধারে আঁধারে কেটে যাচ্ছিলো জীবন।
রাতের শেষার্ধের মধ্যভাগের শেষ ভাগে
যখন মসজিদের মাইকের শব্দ জেগে উঠে,
জাগিয়ে দেয় ভোরের আলোকে
তখন বিভ্রান্ত এই আমি
ঘুমিয়ে কাটিয়েছি দিনের আলোয়।
এক দিন ভোর নেমে এলো
দেখি সূর্যের ন্যায় যুবতীর মুখ
ভীষণ ক্লান্ত আমি, তবুও মুগ্ধ হয়ে চেয়ে ছিলাম তার নয়নে।
আলোতে আলোতে ভরে গেলো জীবন
যেই শাড়ির আঁচল উড়িয়েছে, মনে হলো স্বাধীনতার পতাকা আমার!
কে যেন বলে উঠলো নারী তুমি মহান।
আমি তার মাঝে দেখেছি তপ্ত রোদ্দুর
দেখেছি বিকালের নরম রোদ,
দেখেছি বুকের মাঝে বয়ে চলা এক নদী
দু’ধারে সবুজের মেলা, অজস্র ফুল ফোঁটা।
দেখেছি শ্রাবণ-আষাঢ়, বর্ষায় কদমের বাগান।
তার মাঝে দেখেছি গৃহত্যাগী জ্যোৎস্না, জোনাকির মেলা
শুনেছি রাত জাগা পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দ।
হঠাৎ ঘুম জড়িয়ে আসে
দেখি হাজারো রাতের জমাট এক অন্ধকারে দাড়িয়ে আছি আমি,
শুধু এক টুকরো ঝলমলে আলো তুমি!
হে ভালোবাসা আমাকে কাছে টেনে জড়িয়ে রেখো
আমি আর হতে চাই-না
একটা আঁধার কালো রাত।।
============================================
~~~সেরেঞ~~~

সিতুই ডাঙার সোনকা সরেন জুম খাটতে গেল,
চাষের কাজে কেউ গেল,কেউ ধানকলে পাটকলে
হারিন গেল সিতুই ডাঙার মারার বোঙার থান
হারিন গেল রুপান- সেরেঞ – কালো দিঘির জলে
রুপান বলে ‘যাস না কুরি-নডে হিজুমে
ওঁকাতে বাঙ চলা কানা – নডে হিজুমে
খেজারি আর দাকা জুম হে – কি হবে তুর ট্যাঁকায়
ঘর বাঁধবো সিতুই ডাঙায় , সাঙা করবো তুম হে-‘

সেরেঞ ছেড়ে , রুপান ছেড়ে ,ছেড়ে সিতুই ডাঙা
সোনকা গেল জন খাটতে প্যাটের বড়ো দায়
লগদা লগদ পয়সা মিলে , মাথায় ফুলেল ত্যাল
সিতুই ডাঙার কালো কোকিল হারালো সংখ্যায়
সেরেঞ এখন সাইরেন হয় , বাজে কলের বাঁশি
পাথর কাটা কলের ধোঁয়ায় বুকে ঘুনের বাসা
প্যাটের মধ্যে সাদা ছেলে – দুচোখ পুড়া ছাই
জাত লিয়েছে , ধরম লিলে লদী কীর্তিনাশা –

সোনকা আবার ফিরছে গাঁয়ে সিতুই ডাঙার কোলে
রাঙা মাটি – রাধাচূড়া – মহুল গাছের ছায়ায়
আজ ও যেথায় অপেক্ষাতে রুপান টুডুর সেরেঞ
কোলের ছেলে সঙ্গে ফেরে কালো মাটির দাওয়ায়
বাদনা আবার জমবে গাঁয়ে মাদলে নিমফুলে
বাহা হবে , দং – কারাম – লাগড়ে – সোহরায়
সোনকা – রুপার সাঙা হবে , লতুন রাঙা সেরেঞ

প্রেম খুঁজোনা সংশয়ে, প্রেম খুঁজো এ আস্থায় ।
সিতুই ডাঙা – ভুবন ডাঙার চিরন্তনী বহে
“এসেছো প্রেম এসেছো আজ কী মহা সমারোহে…………”
==============================================
 ~~সম্পর্ক~~


সেদিন একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে তোমার সাথে আমার কথোপকথন দেখে আমার অনেক বন্ধুরাই তোমার সাথে আমার সম্পর্ক নিয়ে কথা বলল । মানে তুমি আমার কি হও, প্রতিবেশী নাকি আত্মীয়, আত্মীয় হলে কি ধরনের ইত্যাদি ।

তুমি আমার আত্মীয় - এটা বলতেই তারপর কেমন আত্মীয়, কোনকোন দিক থেকে, মাতার না পিতার দিকের- এই সব ইত্যাদি ।

কাউকেই আমি বুঝাতে পাড়লাম না কোন সম্পর্কেই এই সম্পর্ক নির্ধারণ করা সম্ভব নয় । এই সম্পর্কের দাবী এমন যে আমি অবলীলায় তোমার স্থাবর অস্থাবর সব সম্পত্তি ভোগ করতে পারি – তুমিও পার তা । আইন দ্বারা রক্তের সম্পর্কে যে সম্পত্তি বিলি বণ্টনের ব্যবস্থা করা আছে অথবা সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে যত অধিকার/ 
দায়িত্বের কথা আছে তার থেকেও সম্পূর্ণ পৃথক অথবা অন্য ভাবে বললে সব সম্পর্কের সারমর্ম এইখানে আছে ।

আমি অবলীলায় এই সম্পর্ক ছেড়ে যেতে পারি অথবা যে কোন সময় তা দাবী করতে পারি শুধু একটা টকটকে লাল তাজা গোলাপের বিনিময়ে । 
=============================================

~~লিখে রেখো ~~

ভালোবেসে বলো ভালোবাসো।
তারপর যুগল চোখে চেয়ে রবো
বিন্দু থেকে সিন্ধু হবো
পরিপূর্ণ হবো
পরিশুদ্ধ হবো।
পিছে ফেলে পিছুটান
ধুয়ে মুছে সকল ক্লান্তি,
ভালোবাসা জমা দিব
তোমার হৃদয়ের কোষাগারে।
শুনো তোমাকে বলি, ইচ্ছে হলে বাধিয়ে নিয়ো
মোটা মলাটের উপর লিখে রেখো--
ভালোবাসা
==========================================
~~এল এস ডি ভরা বাস্তবতা~~

জন্ডিসের হলুদ ব্যথার রঙ ছড়ায় বিকারগ্রস্ত চাঁদ
শোকাহত নক্ষত্রের চোখ থেকে ঝরে পড়ে অশ্রুমাখা আলো
বস্তির সুখ দুঃখের খিস্তি খেউরে ব্যাকগ্রাউন্ড সঙ্গীত বাজিয়ে চলে
ফেরারি রিক্সার ক্রিং ক্রিং ।

সমাজের কারাগারে যাবজ্জীবন দণ্ড কাটায়
নিম্ন মধ্যবিত্ত কিছু পুতুলের সংসার ।
বুড়িগঙ্গার নোংরা জলে ভাসে বিশ্বজিতের বিবাগী ছাই
রাতের আধারে উসাইন বোল্টের মত দৌড়ায় লিমন
সাজানো আদালতে তোমার আর আমার নামে
হুলিয়া জারি করে দেন মহামান্য আদালত ।
যেকোনো সময় দরোজায় ঠক ঠক করবে ঠোলাবাহিনি ।

ভয় নেই প্রিয়তমা,
রাস্তায় দেখা হয়ে গেলো বৃদ্ধ জীবনানন্দের সাথে
তার হাতে এল এস ডির আধভরতি বোতল
হাতে শুধু একটা ছেড়া কাগজ।
না , কোন কবিতা নয়,তাতে শুধু লেখা
"কালো প্রথা নয় , সবুজ শান্তি চাই"

ভয় নেই প্রিয়তমা
জীবনানন্দকে নিয়ে ফিরছি ঘরে
ব্যাটা ঠোলা কি করবে দেখা যাবে।
আধারে যখন জ্বলবে দেহ থেকে তোমার তেজস্ক্রিয় আলো
ভণ্ড আলখেল্লার দেয়াল ধসে পরবে প্রেমের পাথরে
ঘরভরতি হয়ে উঠবে বিদ্রোহী সিগারেটের ধোঁয়ায়
তুমি আমি একসাথে খাব হৃদয়ের গাছে ফলা গন্ধম।

হয়ত পুলিশ আসবে , ভয় পেয়ো না
জীবনানন্দ জেগে থাকবে সারারাত দরজার ওপাশে।
পুলিশ যদি এসেই পরে তবে ঘুষ হিসেবে
জীবনানন্দ শেয়ার করে দিবে কিছু কাব্যিক এল এস ডি
শয়তানের আশীর্বাদে সূচনা ঘটবে এল এস ডি ভরা বাস্তবতার
পাঁচশ টাকার নোট ভেবে ওসি পকেটে পুরে নিবেন সেই চিরকুট
যাতে লেখা "আমি পুজিবাদ নয় , প্রেমের পক্ষ নিলাম "
সারারাত্রি আমাদের বিশুদ্ধ নগ্নতার পাশেই
জীবনানন্দের সাথে আকাশের দিকে উদাস তাকিয়ে থাকবে
সারা সূত্রাপুর পুলিশবাহিনি।

আকাশ থেকে দেবতারা ছড়িয়ে দেবেন কিছু অলৌকিক ছাই
মহাকালের রেডিওতে বাজবে সারারাত "বনলতা সেন'
অথবা বাজবে "তুমি যে আছো তাই আমি পথে হেটে যাই
হেটে হেটে বহুদূর,বহুদূর যেতে চাই"
=============================================
~~অপেক্ষা~~

একটা ফোন না ম্যাসেজ না 
কোন খোঁজ খবর নাই তোমার
একেবারেই লাপাত্তা
হাওয়ায় হাওয়ায় ঘুরছ ইদানীং......

বেল’র শব্দের দিকে
কড়া নাড়ার খটাখট শব্দের প্রতীক্ষাতে
ডাক আসে না এখন আর তবু ডাকপিয়নের ডাক শুনলে
মোবাইলের রিং বাজলে কিংবা
এসএমএস এর বিপ বিপ শব্দ হলে
মনে হয় এই বুঝি তুমি......

চোখ বুজা তবু চোখ খোলা
ইচ্ছা অন্ধকারে সারাটা দুপুর
টাওয়ারে টাওয়ারে কত বার্তা
শাহবাগে বন্ধু আগুন লেগেছে-
তবু আসো,
এতো আকাঙ্ক্ষাকে
অহেতুক পৌরুষে পৌরুষে অবহেলা করো না-
আমি সব ছেড়ে ছুড়ে ডুকরে কেঁদে উঠবো -অরূপ,
এই বলে রাখলাম তোমাকে ......!!!!
=============================================
~~কলিযুগের কবিতা~~

প্রিয়তমা,বড় আকাল এখন
পাপের নেশায় ঈশ্বর করেছে শয়তানের সাথে শান্তিচুক্তি
শয়তান-ঈশ্বরের যৌথ দল আজ অসহায় মানবতার মুখোমুখি ।

একাকি পরস্ত্রীর সাথে রাত কাটিয়ে বড় সহজেই বলে ফেলি তোমাকে
"স্বপ্নে কাল তোমাকে দেখেছি।"
তুমিও পরপুরুষের কাছে দেহ দিয়ে এসে বলো
"দেখো তোমার জন্য সেজে এসেছি ।

বড় আকাল আজ প্রিয়তমা
প্রিয়তমা শব্দটার ভিতরেই ঢুকে গেছে
পতিতালয়ের নষ্ট ঘ্রাণ।
আর ঈশ্বর আর শয়তান মানেই হলো
একটা রাজনৈতিক ঐক্যজোট ।
=============================================
~~স্বাধীনতা~~

স্বাধীনতা মানে এক
রোদ্দুর টান
স্বাধীনতা মানে নীল
আকাশের গান

স্বাধীনতা স্বপ্নের
নীল ঘুমপরি
স্বাধীনতা পাখিদের
এই ওড়াউড়ি

মায়ের আঁচল ঘিরে
উত্তাপ গুলো
পিতা পিতামহদের
পবিত্র ধুলো

স্বাধীনতা রবিবাবু
কবি নজরুল
শীতের আগুন আর
ভোরের বকুল

স্বাধীনতা গুলিস্তাঁ
হাম বুলবুল
ফাগুনের ভরা গাছ
আমের মুকুল

নদীর স্রোতের মত
‘সন্ধ্যার’ গান
‘লতা’র বিতান জুড়ে
সুরের বাগান

স্বাধীনতা আমাদের
ইচ্ছে নদী
পাল তুলে সাদা মেঘ
হারায় যদি

স্বাধীনতা ঠাকুমার
নীল প্রশ্রয়
বাবার বকুনি আর
প্রতিদিন জয়

স্বাধীনতা আমাদের
সেরা অধিকার
স্বাধীনতা মিলনের
সম পরিবার

স্বাধীনতা এদেশের
জন-গণ –মন
স্বাধীনতা দিবসে
সুরের মাতন
========================================
~~আমি মানুষ বলছি~~

বিশ্বাস তুমি ঘুম ভেঙ্গে উঠে দাঁড়াও প্রাচীন আকাশে রক্তলাল

প্রথম আলো ছায়া থেকে জন্মেছে, কুন্ডুলি পাকানো ধোঁয়া থেকে জন্মেছে;
জগতের অহমভারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেলেও ঘুরছে তারা সকলে
এক ঘোরে
ঘুরছে এক ঘোরে

নিজের মতোন থাকতে পারে না কেউই, 
নিজের ছায়া নিজেকে ছেড়ে যায় অন্ধকারে; অথচ, কি সাবলীল আলো ভয় পাওয়া
আমাদের বিবেক প্রশ্ন জর্জরিত হতে থাকে আমাদেরই চোখের সামনে নিয়ত

কে ঘুরছে কার চারপাশে? অন্ধকারে মূলতঃ কেউই নাই আমিহীন পোশাকে,
নিউরনে তীব্র শুধুই ঝলসে যাওয়া একাকীত্বের ভয় ভেঙ্গে ভেঙ্গে পরা বুকে

গতিহীনতার ছন্দে বিভ্রান্ত স্বচ্ছন্দে মেনে নিতে পারে অমানুষের কারখানা,
ফুলেল সমাধি আর মৃতজন্মে সাধু; দ্বিখন্ডিত মস্তকে এ সবই মাথা পেতে নেয়া
আমাদের কাঁধের ভারে নুয়ে পরে মহান নৈরাজ্যের স্মৃতি-

কেউ নেই...
================================================
~~স্বপ্নচুরি~~

মুখটি এমন গোমড়া কেন
কি হয়েছে সোনা?
ঘুম হয়নি কেউ বকেছে?
মশার আনাগোনা?
খাটের থেকে নামতে গিয়ে
মচকালো ডান পা কি?
পড়তে তুমি বসোনি
তাই বকেছে বৈশাখী?
ঝলমলে এই সকালবেলা
মেঘ কেন তোর মুখে
হাঁড়ি মুখো বলবে যে গো
গাঁ শুদ্ধু নিন্দুকে
পড়ছো নাকো খেলছো নাকো
মুখ যে মাছের ঝুড়ি
“কাঁদব না মা
রাত্রে আমার স্বপ্ন গেছে চুরি”
==========================================

~~রক্তকরবীর ব্যথা ~~


পৃথিবীতে তো কতো দিনই কাটালাম;
আজও ঠিক তেমনি একটা দিন, 
তবুও তো তাকে হারিয়ে দিলাম
গৌরবের দেহে ফোটালাম আলপিন।

জানি না কীভাবে রয়ে যাই অবিচল-
এতো অপমান সয়েও কেন পাইনা দুঃখ?
বুঝেছি তার হৃদয়টা এখনও দুর্বল
তাই সে হবে না প্রজাপতির আরেক পক্ষ।

আমি আবার ভালো থাকায় ফিরে যাই,
অপেক্ষার প্রহরগুলো আবার তাহলে ফুরাই,
চলতে চলতে দেখবো আর তো সময় নাই
সে এসে বলবে যখন 'তোমাকে চাই'।
=========================================

No comments:

Post a Comment