Monday 5 August 2013


~~ইচ্ছে করলেই হয়~~
 




শিশুদের জন্য বর্ণমালা
খুব কঠিন কিছু নয়, 
শিশুদের বর্ণমালা শেখানো 
ইচ্ছে করলেই হয়।

বর্ণমালা শেখাতে পারেন, 
বিভিন্ন রকম উপকরণে, 
বইসহ নানা উপকরণ
আছে সব খানে।

সহজেই শিশুকে বর্ণমালা শেখানো 
উপায় নিয়ে ভাবনা কেন তবে, 
মাতৃভাষার বর্ণ শেখার আনন্দই আলাদা 
ছোটরা আনন্দ পায় বর্ণ শিখতে।

শেখানোর পদ্ধতিকে তাদের মনের
উপযোগী করে তোলা যায়, তাই
বাবা-মাকে অবশ্যই কষ্ট করতে হবে 
শেখানোর পদ্ধতি বয়সের উপযোগী চাই। 

তারা মজা করে শিখতে পারে
সহজেই শেখাতে পারেন, তবে,
হাসতে হাসতে শিখেও যাবে অ আ ই
ভালো একটি তারা বই হাতে পেলে। 

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বর্ণ পরিচয়
সীতানাথ বসাকের আদর্শলিপি,সরল বর্ণপরিচয়, 
রামসুন্দর বসাকের আদি বাল্যশিক্ষা 
মদনমোহন তর্কালঙ্কারের শিশু শিক্ষা সহজ হয়।।
=============================================

~~এক সময় হয়তো~~

 

অবচেতন তাড়নাচালিত তারা
কোন শোধবোধ নেই আমার-
তুমি হিংস্র কুতকুতে দুই চোখ তোমার
এখনো কি গেঁথে আছে তোমার পিঠে ?
হয়তো আছে-নেই, জানা নেই আমার।

তুমি আর কত অনুসরণ করবে আমাকে ?
তুমি আমার সামনে আসো না!
অথচ আমার বঙ্কিম গ্রীবায় তুমি,
তোমার শ্বাস-প্রশ্বাসের ঢেউ টের পাওয়া যায়-
তোমার বলিষ্ট উচ্চারণের মধ্যে
এক রকম মোলায়েম লিরিক খেলা করে।

তোমার গ্রীবা বে অব বেঙ্গলের সৈকতের মতো,
আমার কামনার তরঙ্গ ঝাঁপিয়ে পড়তে চায়-
বুঝলে বাঙালি বালিকা-
তোমার গোপন-মোহন লিরিক এখন
অস্পষ্ট দিগন্তের মতোই ধূসর।

বার বার ঠিকানা বদলাতে হয়েছে আমাকে,
নিজের পুরে অস্তিত্বকে ছোট করতে করতে-
শুকনো কাঠিটিকেই জীবনের অনুষঙ্গ মেনেছি
আমি এলোমেলো পা ফেলছি-
অন্ধ হয়ে গেলে কেমন হয়?

অন্ধরা তো আগে-পিছে , ডানে-বায়ে কিছুই দেখে না-
তাতে তো তাদের কিছু যায়-আসে না-
দেখ আমি অন্ধই হয়ে গেলাম-
কাঠিটি নাক বরাবর রাখতে পারি না-
একবার ডানে যায় তো আরেকবার বামে,
এক সময় হয়তো শূন্যতায় মিলিয়ে যাবো-
এটিই আমার জন্য এ মুহূর্তে শত ভাগ স্বাভাবিক।
==================================================

~~কবিতা এগিয়ে যায়~~

 
বেহুঁশ হয়ে গেলাম
ভাবতে ভাবতে কী যে
বাতাসের হাসিতে আর
কাশফুলে চোখ মেলে।
ঘাসে ঘাসে বাতাসের হাসি,
কবিতা ফুটেছে কাশফুলে-
হাজার রঙের ভেলা ভাসছিল
প্রেমের জরোজরো উন্মান মেঘদলে।
অল্প অল্প সকাল প্রাতঃভোরে
হাঁটছে লাল মোরামের পথে
লুকনো স্বপ্নের ভারে রোগা বুক
দুরু দুরু দ্বন্দের দৈরথে।
মোলায়েম শব্দের গীততরঙ্গ
শেষ শীতের প্রান্তরে-
প্রকৃতির পোশাকে মেকি মুক্তোরা
ঝলমল করে বসন্তে।
উষ্ণীষে ঝুটো হিরে
চাঁদবদনী মেয়েটা এ সময়
প্রাতঃভ্রমণে সূর্য পূজার ছলে
যাকে খোঁজে,
সেও চোরাচোখে প্রেম পাঠ করে
কিশোরীর খোলা চুলে।
শিশির জমেছে ঘাসে,
শিউলিরা ঝরে আছে,
পাতায় পাতায় কবিতা-
লতার কলম লেখে
লাল পাতা নীল পাতা
প্রণয়ের কথকতা-
রমণীখাতার শাদা পৃষ্ঠারা
ওঠে পুরুষ রেখায়
বিজনে সৃজনে
কত জল পড়ে পাতা নড়ে’
কবির কবিতা এগিয়ে যায়
কবিতার উদ্যানে শত ফুল ফোটে
ভুল ফোটে মোহন মায়ায়।
===============================================
~~কবি।~~

ভুল বসন্তে প্রতিদিন
প্রানের মানুষেরা ফুঁ দিয়ে দিয়ে
দরজার কড়া নাড়ে
আমি তখন মৌন থাকি
মৌনতাই আমার ব্যক্তিগত
পুঁজি হয়ে জাগতিক
পাখি সম্মেলনে ঘুরে বেড়ায়
আমি
কবির সংসার দেখি
কবি ভোজ দেখি
কবির বুক ঘেসে নদী বয়ে যায়
আলো ডানায় আবৃত হয়
জীবনের অনুতাপগুলি
কবি খুব একা হয়ে পড়ে
খাবার প্লেট খুঁজে পায় না
জলের গ্লাস খুঁজে পায় না
ক্ষুদা মরে গেলে
এক ঝাঁক পাখির সাথে কবি
ইশ্বরের কাছে যায়
ইশ্বর কবিকে খাদ্যের তালিকা
দেখায়।
===============================================
~~কাব্য-কণা~~

মৃত্তিকা তার প্রাণের আকুতি, বীজ কে বলে চুপি
অংকুর সে বারতা প্ত্র পুষ্পে বিলায় প্রাণ খুলি!!
=========================================

পাখির রৌদ্র গন্ধ ডানায়, 
সাঁঝের আঁচল ছায় 
বাঙময় নীরবতায় 
দু-প্রাণের কোমলতায় 
বনলতা আজো,
 জীবন-আনন্দে আপনি সুধা ছড়ায়!! 
=============================================
~~তুমি না থাকলে~~

 
কবিতার নাগালে ছন্দ,তেমনি 
মনের নাগালে তুমি
তুমি না থাকলে আমি অকেজো
আমি পঙ্গুর মতো অসপতু
আমি পথ হারাই অবুঝ বালকের মতো,
মত পাল্টাই নিত্য
অদূরদর্শী রাজনীতিকের মতো ।
নিত্য মনের নাগালে তুমি না থাকলে
চারদিকে খরার শ্রবণ,
বসে না কিছুতে মন,
না খামারে না কাব্যভাবনায় ?
ফুলের ভিতরে সুরভী
তেমনি আমার ভিতরে তুমি।
তুমি না থাকলে হতাশায়,
মনটা বুড়িয়ে যায়-
মানব সেবায় বেজায় অনাগ্রহ,
মানুষের সঙ্গে এড়িয়ে বিমূর্ত
একার ভুবনে ধসের ঝুঁকি নিয়ে থাকি।
কত আর কত কাল
মাঝির নাগালে হাল
তেমনি আমার পোক্ত হালে
তুমি হাত না রাখলে
কাব্যভাবনায় নানাভাবে কষ্ট
পথের গন্তব্যে দিকভ্রষ্ট।
সন্ধ্যাকালে শুকতারা
তেমনি আমার চক্রবালে
তুমি না থাকলে দিশেহারা,
নিমজ্জিত মন অন্ধকারে।।
===========================================
~~এরই নাম ভালোবাসা।~~

 
ঘুম ভাঙল টোনাটুনির ডাকাডাকিতে
আমি যেন অপেক্ষাতেই থাকি,
কখন ওরা ডাকবে চোখ মেলে থাকি
জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি।
ডালিমগাছে টোনাটুনি খুনসুটিতে মেতেছে
কী যে ভালো লাগে! টোনাটুনিদের খেলা
দুজনেই ফুড়ুৎ করে উড়ে ডালিমগাছে
জবাগাছে থেকে আবার আসে ডালিমগাছে
গল্প করে নিজেদের ভাষায়,
আনন্দ করে, সময় কাটায়!
বাসা ছিল শুধু ডালিমগাছে; টুনির বাসা
জবাগাছে একটা টোনা এসে বসছে,
একটুবসেই বসে উড়ে যাচ্ছে।
আবার আসছে ডালিম গাছে
টুনির বাসার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে
আবার উড়ে যাচ্ছে।
টোনাটা টুনির কাছে বসছে
নিজেদের মধ্যে কী যেন কথা বলছে
আনন্দের আতিশয্যে ফুড়ুৎ করে উড়ছে।
টোনা কোথায় যেন উড়ে যায়
খাবার নিয়ে ফিরে আয়
ঠোঁটে খাবার।
ঠোঁটে করে তুলে দেয় টুনির মুখে! আহা!
কী অপার্থিব দৃশ্য!
কষ্ট করে খাবার এনে টুনির মুখে দেয়
খাইয়েই যেন টোনার অপার আনন্দ!বুকে নেয়।
বিছানায় বসে জানালা খুলি-
ওদের ভালোবাসার সাক্ষী হতে,
পূর্ণতা দেখতে চেয়ে থাকি, অপেক্ষা করি।
খুব বেশি বিস্ময়কর লেগেছিল একদিন,
দেখলাম জবাগাছের টোনাটা ডালিমগাছে যেদিন
টুনির বাসায় পুরোপুরিভাবে সংসার করছে!
বুঝলাম, ওদের চূড়ান্ত মিল হয়েছে।
অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
হঠাৎ একদিন দেখি,
টোনাটুনির বাসা থেকে তুলতুলে দুটি সুন্দর বাচ্চা
বাসার দরজা দিয়ে মাথা বের করে
টিউ...টিউ...করছে।
টোনাটুনি দুটি গর্বিত ভঙ্গিতে আনন্দে আত্মহারা
ডালিমগাছময় ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে উড়ে বেড়াচ্ছে
আর কী যেন বলছে ওদের ভাষায়
চোখে পানি এসে গেল ওদের আনন্দ দেখে
এরই নাম সংসার! এরই নাম ভালোবাসা।
=============================================
~~শ্যামলা গায়ে~~

 
শাড়ি পরে আয়নার সামনে
নিজেই নিজেকে যেন চিনতে পারছে না
নীল জামদানিতে তাকে চমৎকার লাগছে
কপালে যত্নে লাল পাথরের টিপ,
বসাল সে চোখে কাজল, শ্যামলা গায়ে
কাজলটা অদ্ভুত সুন্দর লাগছে,
আয়নার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসল,
হেসে যেন নিজেকে অভয় দেওয়ার চেষ্টা।।
============================================

~~সদ্য যুবক আমি~~

 
বারবার মনে পড়ে যায় তোমাকে
একা একা কাটেনা দিন এ বসন্তে
বোধ করার সুযোগ পায়নি অভাবটা
মুগ্ধ চোখে দেখবো আমার ভালবাসা।

সেদিনও ছিল এমন মাতাল হাওয়া,
উদাসীন মুহূর্তে মন কেমন করা
আমার ঘরে তুমি এলে সহসা,
ছিলে টুকটুকে লাল শাড়ী পরা।

চোখ ফেরানো সহজ ছিল না
কপালে লাল বড় টিপ আহা!
ঝলসে যাচ্ছিল আমার ঘরটা
তোমার রূপ ছটায় ব্যাকুলতা।

এলাম তোমার কাছে তোমার ঘরে
আর কখনও যাবো না ফিরে
ভীত সন্ত্রস্ত কেন হলে তুমি?
রাখবে কোথায় আমি কী জানি!

সদ্য যুবক আমি কণামাত্র নেই
তবুও ভালবেসেছিলাম তোমায়
বুঝলে না আমার অসহায়তা
জলে চোখ ভরে দিলে আমায়।

বন্ধ করে এসেছি ফেরার সব রাস্তা
কৃষ্ণচূড়ার গাছের নীচে শেষ দেখা
দেখ প্রকৃতিতে যেন আগুন লেগেছে
গোটা আকাশ লাল বসন্ত বাতাসে।
==============================================

~~‘সেফটিপিন’~~

 
আধুনিক সভ্যতার অন্যতম
দারুণ প্রয়োজনীয় একটি বস্তু
নাম তার সেফটিপিন।

নানা রকমের ব্যবহার
কাপড়ের সঙ্গে প্রেম তার
মেয়েদের প্রয়োজন প্রতিদিন।

মেয়েরা শাড়ি পরে
আঁচল পরিপাটি করে
আটকে রাখতে সেফটিপিন।

কামিজের সঙ্গে ওড়না আটকানো
আরও নানান কাজে ব্যবহার
ছোট বড় সেফটিপিন।

মহামূল্যবান বস্তুটির উদ্ভব কে
ওয়াল্টার হান্ট এক আমেরিকান
তৈরি করেছিলেন সেফটিপিন।
===============================================

~~অচেনা ফুলের গন্ধ~~

ভেবো না তোমরা
আমি এক দৌড়ে পৌঁছে যাবো
এক দৌড়ে রৌদ্র ছোঁব
দেখতেই পারছো বৃষ্টির দিনগুলি
রৌদ্র বন্দনায় ট্রেনের সাথে
ছুটছে
দরজা খুললেই ঘর ভরে যায়
মাছের গন্ধে
তখন আত্মার ভিতর চকচক
করে জাগতিক আয়না
আমি সেই আয়নায় পৃথিবী দেখি
আর নিজের লভ্যাংশ হিসেব করে
জুয়ারীর মতো লুকিয়ে লুকিয়ে
হাসি
তোমরা কি জানো
এখন প্রতিদিন পর্দায় লেগে থাকে
রাত্রির আলো এবং
অচেনা ফুলের গন্ধ উঠোনে দাঁড়িয়ে
আমাকেই ডাকে …
============================================

~~আমার মেঘ তুমি~~

শ্মশানে শ্মশানে ফাগুনের গান
আগুন হয়ে জ্বলে
কপালে তোমার সূর্য আঁক
টিপ আঁকার ছলে
সেই আলোতেই দগ্ধ আমি
চিত্তে মরুভূমি
প্রাণের গহীনে এক খণ্ড বৃষ্টি দিও
আমার মেঘ তুমি।
============================================

~~চাঁদ আজ অসহায়~~
 

অমরাবতীর তীর ছুঁয়ে স্বর্ণরেণু পালকে মেখে 
ভেসে আসছে বর্ণিল প্রজাপতি আর ভ্রমরের ঝাঁক,
আজ দিবস রজনী ভালোবাসা ভালোবাসার ডাক,
বিশ্ব ভালোবাসা আজ সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে।
যত গোপনে ভালোবাসি প্রাণ ভরিয়া তোমাকে,
প্রাণ ভরিয়া উঠে প্রভাতে শোভাতে,
কালো মেঘে অরুণ-আলো লেগেছে
মাধুরী উঠেছে জেগেছে প্রভাতে।
আজ গহীনের ভালোবাসা প্রকাশ কিভাবে?
ভালোবাসারও নাকি কেমিস্ট্র আছে!
ক্রিয়া-বিক্রিয়া, পরিস্রাবণ-ছাঁকন আরও কত কি?
জারণ-বিজারণও নেহাত্ কম নয়,
এভারেস্টের মতো আইসফলও আছে,
পা পিছলালে নিশ্চিত মৃত্যুর শীতল স্পর্শ-
এর সাথে আলিঙ্গন তার পর?
যোজন যোজন দূরত্বে হারিয়ে যাওয়ার ভয় আছে
না, মৃত্যুর এত দু:সাহস আমার নেই, নেই
বক্ষ পিঞ্জর থেকে তোমাকে ছিনিয়ে নেয়ার মতো।
নির্ঘুম রাতের সাথে চোখের বারিধারার সখ্যতা-
বেশ জমে উঠেছে ভালোবাসা এই দিনে,
এসব এখন অভ্যাসে পরিণত! জান কী?
হৃদয় অন্ত:পুরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে নি:শব্দে অহরহ,
রক্তক্ষরণ থামাতে পরাস্ত অনুচক্রিকারা,
জ্বলন্ত সিগারেটের নিকোটিন, ক্ষণিকের জন্য;
অশান্ত মনকে সাত্ত্বনা দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা!
ভালোই বন্ধুত্ব হয়েছিল তোমার আমার,
যেন তামাকের আগুনের ফুলকির সাথে।
তুমি কিছু মনে কর না এ আমার মিথ্যে বাহানা
মনে করবেই বা কেন? গোধূলি লগ্নে অযতা,
এসবের জন্য কোনভাবে দায়ী নও তুমি!
ভাগ্যের নিমর্মতা আমার দুর্বল জায়গায়-
ভোঁতা জং ধরা ছুরি দিয়ে খোঁচিয়ে বেড়ায়।
তবুও হূদয়ের বাম প্রকোষ্ঠে তুমি আছ,
মিলি সেকেন্ডের জন্যেও তোমাকে কখনো ভুলিনি
ঐ দূর গগনের চাঁদের বুকে তোমার মায়াবী মুখ খানি
দেখি আর ভাবি ফেলে আসা দিনগুলোর কথা,
নিঃসন্দেহে তুমি ছিলে ভাল,সুন্দরী, অপরূপা।
বুকের আগল খুলে বলার দিন আজ,
চিরচেনা প্রাণের বসন্ত নতুন রঙ দিয়েছে আজ,
তুমি আজ আবার এসেছ ভালোবাসা দিবসের ছোঁয়ায়,
আলোক ছটার কাছে আত্মসর্ম্পণ চাঁদ আজ অসহায়।।
============================================

~~ভালোবাসার রঙিন স্মৃতি~~

 
এখন ফাগুন মাস এসেছে বসন্ত 
ফাগুনের মোহনায় ভালোবাসার নোঙর
ভালোবাসা মধুর, ভালোবাসা যাতনাময়
তবু সবাই ভালোবাসার কাঙাল
প্রথম ভালোবাসার রঙিন স্মৃতি
এখনো ভুলিনি।

বন্ধুরা আমাকে লাজুক জানত
স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে যখন কলেজে উঠেছি
তখন বাণিজ্য বিভাগে পড়ি,
হিসাববিজ্ঞান প্রাইভেট পড়তাম
ছেলেমেয়ে একসঙ্গে ।

স্যারের বাসায়ই একটা মেয়েকে
আমার ভালো লাগতো,
কিন্তু লাজুক স্বভাবের কারণে
সাহস করে বলতে পারতাম না।

আমি একটি কৌশল করি-
প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময়
ইচ্ছা করেই আমি কলম নিতাম না,
প্রতিদিনই সে আমাকে কলম দিত
একদিন খাতা নিতে ভুলে গেলাম
এরপর সে আমাকে খাতাও দিলো।

খাতার ভেতর একটি চিঠি লিখে দেয়
চিটির সাথে বিশ্ব ভালবাসা দিবসে
একটি লাল গোলাপ ও দেয়,
তখন জানতে পারলাম, সেও আমাকে ভালোবাসে
তার কাছ থেকে চিঠিটি পাওয়ার পর
আমি বেশ নার্ভাস হয়ে যাই।

এরপর আর কোনো দিন তার দিকে তাকাইনি
এমনকি প্রেমের এই চিঠি পাওয়ার পর থেকে
আমি আর খাতা কলম নিতে কখনো ভুলিনি।

শুনেছি মেয়েদের কেউ প্রেমের প্রস্তাব দিলে
মেয়েরা তা মা-বাবার কাছে বলে দেয়
আমার সে রকম কিছু হয়নি,
কিন্তু বাসার সবার ভয়ে আমি প্রায়ই বাথরুমে বসে
সেই মেয়েটির প্রেমের চিঠিটি পড়তাম।
আর মনে মনে খুব হাসতাম।।
==========================================

~~( হ্যাপি ভ্যালেনটাইন'স ডে )~~

ভালবাসা নিষ্কলংঙ্ক চির উজ্জ্বীবিত


ভালবাসা তুমি আছো বলেই আজো অবক্ষয় অধরা পৃথিবী
ভালবাসা তুমি আছো বলেই আজো স্বপ্ন রঙিন ঝোঁনাকি !
ভালবাসা জানি তোমার সানিধ্যে বেঁচে থাকবে মানব প্রীতি
ভালবাসা তুমি সত্যিই অপার মহিমান্বিত স্বগর্ীয় মহাজ্যোতি ।

ভালবাসা আমি কি তোমায় কখনো ভালবাসতে পেড়েছি?
ভালবাসা বলে দাওনা আমি কি কারো ভালবাসা পেয়েছি?
ভালবাসা তোমার তুলনা শুধুই তুমি এতটুকু জেনেছি !
ভালবাসা তোমার স্পশর্ে বিশুদ্ধ হয় জানি বিমূতর্ রাত্রি ।

ভালবাসা তোমাকে সমস্বরে শতবর্ষরের সাদর সম্ভাসন !
ভালবাসা তুমি ১৪ ই ফেব্রুয়ারীর অনূঢ় তরুণ তরুণীর
তারা ঝরা স্ফূর্তির বিরল ছাঁয়াবীথির আয়োজন_____
ভালবাসা তুমি নিষ্কলংঙ্ক চির উজ্জ্বীবিত অক্ষয় অম্লান ।
============================================

~~আজ ভালবাসা দিবস~~


 
মানবজীবনের ভালবাসা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। 
পৃথিবীর সব দেশের শিল্পে সাহিত্যে ভালবাসার বন্দনা সম্ভবত সর্বাধিক হয়েছে। অর্থ্যাৎ মানবজীবনের সর্বত্রই ভালবাসা শব্দটি জয়-জয়কার। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন্স ডে থেকে সমকালের ভালবাসা দিবস কথাটির প্রচলন ঘটেছে। মূলত এ দিনটি প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে একটি উৎসবমুখর দিন হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। অবশ্য ভালবাসার বহিঃপ্রকাশের বিষয়টি আদিলগ্ন থেকেই বিদ্যমান ছিল। তবে বিশেষ দিনে (সেন্ট ভ্যালেন্টাইন্স ডে) ভালবাসা বহিঃপ্রকাশের রীতি কয়েক শত বছর আগে পশ্চিমাদের মধ্যে দেখা দেয়। আমাদের দেশে ভালবাসা দিবস কথাটির প্রচলন খুব অল্প দিনের। নব্বই দশকের শুরুতে ভালবাসা দিবস সংস্কৃতির প্রচলন ঘটে। তবে ভালবাসা একটি চিরকালীন ও হৃদয়ঘটিত বিষয় হওয়ায় এ স্বল্প সময়ের মধ্যে এ দেশেও তরুণ-তরুণীদের মধ্যে দিবসটি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। এখন ঘটা করেই প্রতি বছর বাংলাদেশেও পশ্চিমা সংস্কৃতির এ দিবসটি পালিত হচ্ছে। 
অতএব, ভালবাসা প্রকাশের জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি নিদির্ষ্ট একটি দিন। এ দিনে হৃদয় মন উজার করে স্নেহ-মমতা, প্রেম-প্রীতি, দিয়ে অন্য ব্যক্তিটিকে বরণ করে নেয়া হয়। ভালবাসা দিবসের এ ভালবাসা শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার জন্যই নয় বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন, পিতা-মাতা, ভাই-বোন সবার সঙ্গেই হৃদয় উৎসারিত ভালবাসার মহান ঔদার্য্যে আপন করে নেওয়া দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ দিনে ভালবাসর পাত্র-পাত্রী তথা আপনজনের মধ্যে কার্ড, চকলেট, ফুল, মোবাইল মেসেজ, মিসকল কিংবা অন্য কোন উপহারসমগ্রী আদান-প্রদান হয়।
ঐতিহাসিক বিচার বিশ্লেষণে দেখা যায় ভালবাসা দিবস নিয়ে নানা ধরনের কথার প্রচলন রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন ঘটনা পরষ্পরায় ইতিহাসের নিরিখে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য কাহিনীটি হচ্ছে-ভ্যালেন্টাইন নামে একজন রোমান পাদ্রি, যিনি পেশায় একজন ডাক্তার ছিলেন। উল্লেখ্য, সে সময়ে রোমানদের মধ্যে দেব-দেবীর পূজা ছিল মুখ্য বিষয়। রোমানরা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ছিল না।এ সময় ভ্যালেন্টাইন ২৭০ খ্রিস্টাব্দে সেখানে খ্রিস্টান ধর্মের প্রচার শুরু করেন।রোমের সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস এ বিষয়টি মেনে নিতে না পারায় সম্রাট খ্রিস্টধর্ম প্রচার করার অপরাধে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেছিলেন।ভ্যালেন্টাইন যখন কারাগারে বন্দি তখন ছোট ছেলেমেয়েরা তাকে ভালবাসার কথা জানিয়ে তার উদ্দেশ্যে চিঠি ছুরে মারত।এছাড়া কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় ভ্যালেন্টাইন জেলারের অন্ধ মেয়ের চিকিৎসা করেন। 
তার চিকিৎসায় মেয়েটি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। এর পর থেকে মেয়েটির সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। মৃত্যু দন্ডাদেশ কার্যকর করার আগ মুহুর্তে ভ্যালেন্টাইন জেলারের কাছ থেকে এক টুকরো কাগজ ও কলম চেয়ে নিয়ে ওই মেয়েটির উদ্দেশ্যে একটি পত্র লিখেছিলেন। যে পত্রের শেষে তিনি লিখেছিলেন Love From Your Valentine. শোনা যায় ভালবাসর এ অমর ঘটনাটি স্মরণীয় করে রাখতে পরবর্তী সময়ে পোপ প্রথম জুলিয়াস ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন্স ডে হিসেবে ঘোষণা করেন। ভালবাসা দিবস সম্পর্কে আরও কিছু প্রচলন রয়েছে। ইতিহাসে রয়েছে আরও একজন সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নাম। রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস যুদ্ধের জন্য সৈন্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে যুবকদের বিয়ে করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্ত ভ্যালেন্টাইন নামের এক যুবক সম্রাটের এ আদেশ উপেক্ষা করে এক সুন্দরী যুবতীকে ভালবেসে বিয়ে করেন। নিষেজ্ঞা অমান্য করার কারণে সম্রাট তার মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করেন। তারপর হঠাৎ একদিন রোমানেই ভ্যালেন্টাইন ডের প্রচলন শুরু হয়ে যায়। এ দিনে তরুণ-তরুণীরা কাগজে নাম লিখে একটি বক্সের ভেতরে রেখে লটারির মাধ্যমে তাদের পছন্দের পুরুষের নাম লিখে কাদা মিশিয়ে পানিতে ছুড়ে মারত। যার নামে কাগজ প্রথমে ভেসে উঠত সেই হতো প্রকৃত প্রেমিক। ঘোড়শ শতাব্দী থেকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে কার্ড ও বিভিন্ন ধরনের উপহারসামগ্রী আদান-প্রদানের রীতি শুরু হয়। কিন্তু Encyclopedia Britannica (৫ম সংস্করণ) অনুসারে ১৪ ফেব্রুয়ারী প্রেমিক-প্রেমিকদের উৎসবের দিন হিসেবে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র সঙ্গে এ ধরণের কোন কাহিনীর কথা উল্লেখ নেই, বরং ওখানে বলা হয়েছে, রোমানদের লুপারক্যলিয়া উৎসবের সঙ্গে এ দিনটির হয়ত কোন সম্পর্ক থাকতে পারে। লুপারক্যালিয়ায় এ উৎসব ১৫ ফেব্রুয়ারি পালিত হতো। আর তা পালন করা হতো বসন্ত উৎসব হিসেবে। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ অব্দের দিকে রোমান ওই দেবতা লুপার কাসের উদ্দেশ্যে তরুণ-তরুণীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানটি আনন্দ-উল্লাসে ভরপুর ছিল। তরুন-তরুণীদের মধ্যে নেমড্রইং একটি জনপ্রিয় রীতি ছিল। লুপারক্যালিয়া উৎসবের শুরুতেই রোমান মেয়েদের নাম কাগজের চিরকুটে লিখে রেখ দেয়া হতো একটি জারে। সদ্য বয়ঃপ্রাপ্ত প্রত্যেক তরুণ টেনে নিত একটি করে চিরকুট। আর চিরকুটে লেখা নামের মেয়েটি এক বছরের জন্য হয়ে যেত ছেলটির হৃদয়ের সঙ্গী। এভাবেই ভালবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইনডের সূত্রপাত ঘটে।
পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এখন আনন্দময় পরিবেশে ভ্যালেন্টাইন্স ডে বা ভালবাসা দিবস পালিত হয়। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র বড়দের পাশাপাশি শিশু-কিশোররাও তাদের বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র শুভেচ্ছা বিনিময় করে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও আয়োজন করে ক্লাসরুম পার্টির। নিজেদের তৈরি করা সব ভ্যালেন্টাইন্স কার্ড রেখে দেয় একটি বক্সে। দিনের শেষে শিক্ষক অথবা একজন শিক্ষার্থী কার্ডগুলো বিলি করে। অনেক সময় ছাত্রছাত্রীরা রঙিন কাগজ, ওয়াল পেপার এবং পত্র-পত্রিকার ছবি দিয়ে তৈরি করে ভ্যালেন্টাইন্স কার্ড। নিজের হাতের তৈরি সবচেয়ে সুন্দর কার্ড শিশু-কিশোররা তদের মা-বাবা, দাদা-দাদী, নানা-নানী কিংবা শিক্ষকদের উপহার দেয়। বড়রা তাদের মনের মানুষকে ফুল, ক্যান্ডির বক্স অথবা এ যুগে মোবাইলের মাধ্যমে মেসেজ পাঠিয়ে শুভেচ্ছা দিয়ে থাকে। ভালবাসা দিবস একটি অনন্ত, অনাবিল ও চিরস্থায়ী বিষয়। কিন্তু বর্তমানে মানুষ ভালবাসার মহান আদর্শ ভুলে হিংসা জিঘাংসায় মত্ত হয় উঠেছে। সুন্দর এ পৃথিবীতে শান্তির অবিরল ধরা স্নিগ্ধ করে তুলতে হলে ফের মানুষের মধ্যে ভালবাসার বোধ জাগ্রত করতে হবে। এজন্য আমাদের সহমর্মিতা বোধ, স্নেহ-মমতা, বিশ্বস্বতা-সততা প্রভৃতি মানবিক গুণাবলির চর্চা করতে হবে। ভালবাসা দিবসের শিক্ষা থেকে একে অন্যের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন, ছোটদের প্রতি স্নেহ-মমতা, ব্যক্তিগত বিশ্বস্ততা-সততার মাধ্যমে অন্যের ও নিজের গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি করতে হবে। সর্বোপরি কথা ও কাজের মাধ্যমে সুন্দর রুচি ও মানসিকতার পরিচয় দিতে হবে। মানব জীবনে ভালবাসা নানা মত্রিক, একেক জনের জীবনে এ ভালবাসা বা প্রেমাবাগের বহিঃপ্রকাশ বিভিন্ন ধরণের। আধুনিক যন্ত্রযুগে প্রতিবেশ পৃথিবীতে মানবজীবন প্রতিনিয়ত জটিলতার ঘুর্ণাবর্তে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে। প্রতিদিনের সংঘাত, সংঘর্ষ হানাহানি আর হিংসা- প্রতিহিংসা আমাদের সমাজ জীবনকে অস্থির করে তুলছে। বর্তমান ক্রান্তিকালে একমাত্র ভালবাসার চর্চাই আমাদের সমাজজীবনের সংঘাত-সংঘর্ষ হানাহানি দূর করতে পারে। তাই একটি দিনের জন্যে হলেও কিংবা পশ্চিমা সংস্কৃতি থেকে আগত সংস্কৃতি হলেও ভালবাসা দিবস আমাদের স্বতঃস্ফূর্ত ভালবাসা প্রকাশের মধ্যে দিয়ে যদি ভালবাসার মহান আদর্শকে সারা বছর সমাজজীবনে চর্চা করা যায়, তাহলে হয়ত সত্যিই একদিন স্বপ্ন-শান্তিময় পৃথিবী পাবে আমদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।।
======================================================

~~মেঘলা বারান্দায়~~

টেনশন কাটাতে
মাঠের হাওয়াগুলোকে
ডেকে আনি
তখন জীবনের সমকোনে এসে
উদাস চড়ূই ডেকে যায়

আদিম অক্ষরের বুকে উত্তাপ বাড়ে
সময় বসে থাকে না
অলৌকিক অক্সিজেনের নিকটে গিয়ে
কেউ কেউ বেলা কাটায়
সবুজ ইচ্ছের মতো আলোর সাময়িক
দুরত্বগুলো নিজে নিজেই রচিত হয় আমার চোখের
ভিতর
আমি জানি না
স্মৃতিময় পথ ভুলে কে কে আসে যায়
মেঘলা বারান্দায়।
================================================
~~নীল গোলাপের ঘ্রাণ~~

প্রহরেরা খসে খসে দিন ফুরায় 
ফুরায় যৌবন চায়ের কাপে
ছাপে রেখে যাও বাচার আশা
ভাষায় তাই বড্ড ব্যকুলতা
আকুলতার দোহাই বোঝে না তবু আমার শহর,
বহরে বহরে ছুটে চলা ব্যস্ত মানুষ
ফানুসের গল্প আঁকে
ফাঁকে পড়ে থাকে শুধু প্রাণের কথা
ব্যথ্যার অনুরাগে
বিরাগের ভাষা বোঝো তুমি খুব বড্ড অভিমানে
অভিযানে থাকে তবু সূর্য রেখা তোমার মুখপানে
সেইখানে তুমি চিরকাল দারুণ সবুজ
অবুঝ আমার চোখে
বুকের ব্যাথায় দগ্ধ প্রলাপ আলাপ হলে পরে;
ডুব দিয়ে দেখি মন পবনের ঘরে নীল গোলাপের ঘ্রাণ
তোমাতেই রয়ে গেছে বাঁধা আমার প্রাণের গান ।। 

================================================

~~ফাল্গুনের এই শুভ ক্ষণে~~


 
সবাইকে শুভেচ্ছা নবজাগরণের নব বসন্তে
ফাল্গুনের এই শুভ ক্ষণে,রঙ লাগুক প্রাণে প্রাণে
'ফাগুনের ঝিরিঝিরি হাওয়া, রক্তিম পলাশ, শিমুল, কাঞ্চন
প্রকৃতিতে আজ ফাগুনের ছোঁয়া, আগুনরাঙা বসন্তের সুর।

হাজার বছরের সংস্কৃতির অপূর্ব এক সেতুবন্ধন
একই শব্দ, একই ভালোবাসা প্রতিফলিত
বাঙালীর মুখে, যুগে যুগে একই সুরে
আজি এ বসন্তে এত ফুল ফোটে।

প্রকৃতিতে এলো ঋতুরাজ বসন্ত আজ
ঋতুরাজ বসন্তদেবের রাজশিক অভিষেক আজ
অনেকটা ভিন্ন আবহে প্রকৃতিতে এবার বসন্ত এসেছে
সর্বত্র বসন্তের চিহ্ন বিরাজমান।

শীতের জরা-জীর্ণতা কাটিয়ে
রঙময় হয়ে উঠেছে প্রকৃতির রাজ্য
নানা ফুলের বাহারি সাজ চলছে
রঙ্গীন চিত্রময়তার অফুরাণ হাতছানি সেখানে
এই হাতছানিতে উন্মন হয় তরুণপ্রাণ।

ইট-পাথরের খাঁচা থেকে বের হয়ে
দলে দলে মানুষ অভিমুখী
চারুকলা বকুলতলা আর বিবিধ উদ্যানে
প্রকৃতির সাহচর্য্য পেতে ব্যকুল হয়ে ওঠে যেন সবাই।

সেই প্রান্তরে আজ বসন্ত! ফলে-
বসন্তের রঙও বড় ব্যস্ত হয়ে উঠেছে
সেই ব্যস্ততায় ধরা দিয়ে
তারুণ্যের স্রোত হাজার গুনে পরিণত হয়েছে! ফলে-
তারুণ্য জ্বলে উঠছে স্ফূলিঙ্গের মতো।

গাছে গাছে চিক চিক করছে নতুন কচি পাতা
স্নিগ্ধ সবুজাভ অভিব্যক্তিবাদিতা ছড়িয়ে যাচ্ছে দিগন্তব্যাপি
প্রকৃতির সবুজের সাথে ফুলের রঙের মিশেলে
এক অনিন্দ্য কম্পোজিশন
কম্পোজিশের বিভ্রমে বাতাসের লয়ে এসেছে পরিবর্তন,
শিমুল ফুটেছে, পলাশ ফুটেছে
কৃষ্ণচূড়া আর রাধাচূড়ার যুগল প্রস্তুতি চলছে।

সামনে আরেক ঐতিহাসিক দিবসের কথা জানে প্রকৃতিও
কৃষ্ণচূড়া রক্তজবারাই তো রঙের ছটা ছড়িয়ে দেয়
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মৃতির ওপর
সব মিলিয়ে দারুন চকিত ব্যস্ততা বসন্তের।।
===============================================

ভাংচূড়ের বর্ণময় বর্ণনা নিয়ে
পাখিগুলো উড়ে যায়
আকাশের দিকে
জিকিরে ভাসতে থাকে অসহায় মানুষের
অলৌকিক আদালত
তখন ব্যাক্তিগত মহাশূণ্যে আমি খুব
একা হয়ে পড়ি
অস্তিত্বহীন স্বত্তাগুলো একে একে
চলে যায়
সব সুর থেমে যেতে থাকে
এবং জলে স্থলে বাজে সময়ের
আন্তরিক এবাদত।
==============================================

~~ফুটছে রক্ত শিমুল-পলাশ~~

 
আজ ফাল্গুনের প্রথম দিনে
ফুল ফুটেছে কত ফুল আজি বসন্তে।
মন হয়েছে উত্তাল, বাঁধনহারা
শীতের রিক্ততা ভুলিয়ে ফাগুনের ছোঁয়া।

আগুনরাঙা বসন্তের সুর গাছে গাছে
ফুটছে রক্ত শিমুল-পলাশ,
কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, নাগলিঙ্গম!ওই দূর
শোনা যায় কোকিলের কুহু কুহু সুর।

বসন্ত বাতাস দিয়েছে দোলা সব মনে প্রাণে
সাজছে সাজনি বাসন্তি সাজে আপন মনে
বসছে বাসন্তি মেলা; এখানে ওখানে
হচ্ছে হই হুল্লুর, আরো কত কি!কে জানে।

বসন্তরাণীর আগমনে মাতল সবুজ-শ্যামল
কবি মনে নতুন নতুন কত যে পঙক্তির খেলা,
আগুন রাঙা এ ফাগুনে প্রকৃতিতে শুধুই উচ্ছ্বাসের রঙ
রঙ ছড়ালো তরুণ প্রাণে, প্রাণের টানে টানে।

প্রকৃতির স্বাভাব নিয়মে মন বুকে নিয়ে স্বর্গের সুখ
মন হয়েছে উত্তাল, বাঁধনহারা
বসন্ত নিয়ে যেন উচ্ছ্বাসের শেষ নেই
বসন্ত নিয়ে মনের কথা ফুলে ফুলে বুঝে নেই।

ফাগুনের ঝিরিঝিরি হাওয়া প্রাণে প্রাণে
রক্তিম পলাশ, শিমুল, কাঞ্চন পারিজাত,
মাধবী, গামারী আর মৃদু গাঁদার বৃক্ষে
ছোট ছোট ফুলের বর্ণিল রূপের হাসি চারদিকে।

বসন্ত ঋতু অন্য রকম লাগে, লাগে টেম টেম
বসন্ত এসেই চাঙ্গা করে মন চাঙ্গা করে প্রেম,
বসন্তের প্রথম সকালে বাসন্তি রঙা শাড়ি, কপালে টিপ পড়া,
হাতে চুড়ি, পায়ে নূপুর, খোঁপায় গাঁদা ফুল জড়িয়ে বেরিয়ে পড়া।

কিন্তু বসন্ত যে আরো একটু বেশি রঙ্গিন
সংস্কৃতির অপূর্ব এক সেতুবন্ধন সে যে চিরদিন,
যুবক-যুবতির মাঝে অন্যরকম অনুভূতি
অভিন্ন করেছে এই ঋতুরাজ বসন্ত মানবতার সিঁড়ি।।
==============================================

~~স্বাগত বসন্ত~~

একি বসন্ত!হল অশান্ত,বন-বনান্ত, পুষ্পিত হে!!
প্রেম অনন্ত, হল প্রশান্ত, চিত-চঞ্চল, জাগ্রত হে!!
==========================================

~~আমাদের পতাকা~~

ধৈর‍্যের ব্যাখ্যায়
আকাশের দিকে হাত তুলে
সকলেই আজ ঐক্যবদ্ধ
সকলেই আজ বিচার চায়
শাহবাগের বিস্তৃত বাতাস
ছায়াবুকে হেঁটে যায়
বাংলার নানা নগরে…

পোড়া বসন্তে কুয়াশাগুলো
চোখ তুলে চায়
এবং তৃষ্না ছড়ানো অন্ধকার
শাহবাগের সবুজ চত্বরে প্রজন্মের
কাছে
আত্মসমর্পণ করে
রৌদ্রতাপে মানুষের মাথাগুলো
ভাগাভাগি করে
সীমিত অক্সিজেন
শরীরে বিভত্স দাগ নিয়ে
আজও এদেশের আকাশে
নিজস্ব চেতনায়
আমাদের পতাকা ওড়ে ।
=============================================

~~এলোরে বসন্ত~~


 
বসন্তের ফুলে গাঁথ বন্ধুর তরে ফুলের মালা,
দখিনা আগুন লাগলো প্রাণে ফাগুন জ্বালা।
মনে যৌবনে উঠেছে ঢেউ আকাশে পাতালে,
মূরতি ধরিয়া জাগিয়া উঠবে নাচের তালে।
বসন্তের দখিনা হাওয়া মানব মনেতে,
প্রকৃতি সবখানে বয়ে যাবে পরম হরসে।
মাতাবে আপন মোহে অন্তরের ঢেউ,
ভালোবাসায় ঝঙ্কার আনবে কেউ কেউ।
আসছে বসন্ত, আসছে পহেলা ফাগুন,
বসন্ত মানে সুন্দরের জাগরণ দখিনা আগুন।
নবীনের আগমন সোনালী আলো,
চিরায়ত সুন্দর, ভালোবাসা, আশার আলো।
প্রাচীন চর্যাপদে পাওয়া যৌবনের প্রতীক এ বসন্ত,
বসন্তের আগমনে মম হৃদয় পুলকিত আন্দোলিত।
কবিরা আকাশে চোখ মেলে তাকায়,
যেন জ্বলে ওঠে আলো চোখের পাতায়।
বসন্তের বন্দনা করে একটি ছত্রও লেখেননা-
এমন বাঙালি কবি খুঁজে পাওয়া যাবে না।
প্রাচীন চর্যাপদে পাওয়া বসন্তকে-
আরও ঋদ্ধ করেছেন কবি কবিতাতে।
প্রকৃতিকে চ্যালেঞ্জ করে কেউ রয়নি কান্ত,
ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক, এলোরে বসন্ত।
বসন্ত যে নতুন জীবনের বার্তাবাহক,
জাতিতে জাতিতে আয়োজন হবে, হবে উৎসব।।
============================================

~~আমি বৃষ্টি থাকবো~~

 
খুশিতে নাচতে নাচতে
বেরিয়ে পড়ল বৃষ্টি,
আমার রূপে বলবে কি আর
আমি এমনই সৃষ্টি।
ওই কালো কেশ তোমার
পবনে উড়াও যখন,
চেয়ে দেখি পাহাড়, নদী,
দিগন্ত, সাগর, বন।
কোনো কিছুই বাদ দেইনি
লোকালয়, হাটবাজার,
সব খানে ঘুরে বেড়াচ্ছি
সুখ-দুঃখ দেখছি সবার।
দুই পায়ে দু’শ নূপুরের শব্দ
আমারি অনুরাগে জড়ানো,
মনে দোলা দিয়ে মুছেদেই
কষ্ট বুকেতে যার জমানো।
পাহাড়, নদী, সাগর, আর
বন জঙ্গল ঘুরছি,
সুযোগ পেলেই ঝরঝর করে
আমি শুথু ঝরছি।
যাদের মনে দোলা দেই
তাদের কাছেই আসি,
তারা আমায় খুব বেশি
ভালোবাসে বার মাসি।
যাদের মনে বৃষ্টি কভু
দোলা দেয় না কোন দিন,
তারা যেন বৃষ্টি, বর্ষা কিছুই
ভালোবাসে না কোনদিন।
বড্ড বিরক্তি নিয়ে
কেউ বলে ফেলে,
আবার এলে বৃষ্টি!
তুমি কোন দলে?
মেঘের ডাকে আসে মেঘ
লইয়া ঝড় বাদল,
মনের ডাকে ছোটেনা বন্ধু
হইয়া মোর পাগল।
আমি বৃষ্টি থাকবো গো
সারা জীবন আসবো,
এই তো আমার কাজ
তোমায় ভিজিয়ে হাঁসবো।
..........বৃষ্টির শেষ পর্ব
=========================================

~~নষ্ট চাঁদের আলো~~
 

দেখলাম দ্বিধান্বিত বিকেলে
আর কোনো কিছুই গোপন নাই
ইতিহাসের কাছাকাছি এসে
লাজুক রক্ত
তাকিয়ে আছে শূন্যের দিকে
শুধু মরা পাখি আর পাখি
নষ্ট চাঁদের আলো
বিতর্কিত বাতাসের ভিতর
শেষ ঘন্টা বাজিয়ে যায়
সব গল্প জানে না গাছপালা
তাই বুকের পাঁজর বাজে
ব্যেথিত গিটারের মতো
কলিসিয়ামের গল্প জানে
বাষ্প ও বাতাস আর জানে
পৃথিবীর অস্রযন্ত্রগুলোর বিরুদ্ধ মন
আজ পৃথিবী জুড়ে
নিরাপদ রাক্ষুসী ছায়ার নীচে
যারা জেগে আছে তারা ওরাই
আর রান্নার গন্ধে যারা ঘুমিয়ে গেছে
তারা আমরাই।
==========================================

এখন দাঁড়াতে হবে নিজস্ব সাহসে,
সিংহের হুঙ্কারে জানাতে হবে,
 আমি আছি।
=============================================
~~দুনিয়াটা ঘুরে এসো~~


 
বেচারা গ্রীষ্ম এসেই তাড়া হুরা,
হইচই না করে থাকতে পারে না।
প্রথম দিনই কালবৈশাখীকে খবর দিল সে,
দাওয়াত পেয়ে আর কি দেরি কালবৈশাখী করে?
শোঁ শোঁ শব্দে গর্জনে ছুটে এল,
কালবৈশাখী একা নয় বৃষ্টিও এল।
বৃষ্টিকে দেখে খুব রেগে গেল গ্রীষ্ম।
বল, তোকে কে আসতে দিল?
কেউ না আমিই এলাম নিজে থেকে,
গ্রীষ্ম রেগে বলে, কেন এসেছিস তাহলে?
বৃষ্টি বলে আমার দাদা মেঘও এসেছেন?
গ্রীষ্ম বলে, কী অবাক কথা?বল দেখি!
তোর দাদা এলে তোরও আসতে হবে নাকি?
ভাগ বলছি।
নইলে এই কালবৈশাখীকে দিয়ে
এমন চড়-থাপড় খাওয়াব,
তখন আর পালাতেও পারবি না।
বেচারা বৃষ্টি ফিরে গেল।
বেশ অভিমান নিয়েই ফিরে গেল।
ঠিক করল কেউ না ডাকলে আর আসবেই না।
গ্রীষ্ম শেষ হয়েছে।
পৃথিবীটা এখন বর্ষার কাছে।
আর বর্ষা মানেই তো বৃষ্টি।
বর্ষা এসেছে সে-ই কবে।
তবু দেখা নেই বৃষ্টির।
মেঘ অবশ্য মাঝেমধ্যে ঘুরে বেড়ায় আকাশে।
একদিন মেঘকে বলেই বসল বর্ষা,
একা একা আসো,
তোমার নাতনিটাকে নিয়ে আসতে পারো না?
দাদা মেঘ বলল, ও রাগ করেছে।
ডাকলে আসবে না।
বর্ষা অবাক হয়ে বলল, রাগ হয়েছে?
কার ওপর? ঠিক আছে, কালই ওকে নিয়ে এসো।
পরদিন বৃষ্টি এসে হাজির।
ঠক-ঠক-ঠক। কড়া নাড়ল বর্ষার দরজায়।
বর্ষা তো দরজা খুলে অবাক। চেঁচিয়ে উঠল, বৃষ্টি।
এত দিনে বুঝি এই খালার কথা মনে পড়েছে।
তারপর?
তারপর বৃষ্টির দুই পায়ে ২০০ নূপুর পরিয়ে দিয়ে
খালা বর্ষা বলল,
যা-ও তো এবার, দুনিয়াটা ঘুরে এসো।
ব্যস। খুশিতে নাচতে নাচতে বেরিয়ে পড়ল বৃষ্টি।
==============================================



No comments:

Post a Comment