রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো এবার যাবার আগে--
তোমার আপন রাগে, তোমার গোপন রাগে,
তোমার তরুণ হাসির অরুণ রাগে
অশ্রুজলের করুণ রাগে॥
রঙ যেন মোর মর্মে লাগে, আমার সকল কর্মে লাগে,
সন্ধ্যাদীপের আগায় লাগে, গভীর রাতের জাগায় লাগে॥
যাবার আগে যাও গো আমায় জাগিয়ে দিয়ে,
রক্তে তোমার চরণ-দোলা লাগিয়ে দিয়ে।
আঁধার নিশার বক্ষে যেমন তারা জাগে,
পাষাণগুহার কক্ষে নিঝর-ধারা জাগে,
মেঘের বুকে যেমন মেঘের মন্দ্র জাগে,
বিশ্ব-নাচের কেন্দ্রে যেমন ছন্দ জাগে,
তেমনি আমায় দোল দিয়ে যাও যাবার পথে আগিয়ে দিয়ে,
কাঁদন-বাঁধন ভাগিয়ে দিয়ে॥
রাগ: পিলু-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৯ ফাল্গুন, ১৩৩৩
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৩ মার্চ, ১৯২৭
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
===========================================
আঁখিজল মুছাইলে জননী--
অসীম স্নেহ তব, ধন্য তুমি গো,
ধন্য ধন্য তব করুণা ॥
অনাথ যে তারে তুমি মুখ তুলে চাহিলে,
মলিন যে তারে বসাইলে পাশে--
তোমার দুয়ার হতে কেহ না ফিরে
যে আসে অমৃতপিয়াসে ॥
দেখেছি আজি তব প্রেমমুখহাসি,
পেয়েছি চরণচ্ছায়া।
চাহি না আর-কিছু-- পুরেছে কামনা,
ঘুচেছে হৃদয়বেদনা ॥
রাগ: রামকেলী
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1291
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1884
স্বরলিপিকার: কাঙ্গালীচরণ সেন
অসীম স্নেহ তব, ধন্য তুমি গো,
ধন্য ধন্য তব করুণা ॥
অনাথ যে তারে তুমি মুখ তুলে চাহিলে,
মলিন যে তারে বসাইলে পাশে--
তোমার দুয়ার হতে কেহ না ফিরে
যে আসে অমৃতপিয়াসে ॥
দেখেছি আজি তব প্রেমমুখহাসি,
পেয়েছি চরণচ্ছায়া।
চাহি না আর-কিছু-- পুরেছে কামনা,
ঘুচেছে হৃদয়বেদনা ॥
রাগ: রামকেলী
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1291
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1884
স্বরলিপিকার: কাঙ্গালীচরণ সেন
=============================================
পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে, আয় রে চলে, আ য় আ য় আয়।
ডালা যে তার ভরেছে আজ পাকা ফসলে, মরি হায় হায় হায়॥
হাওয়ার নেশায় উঠল মেতে দিগ্বধূরা ধানের ক্ষেতে--
রোদের সোনা ছড়িয়ে পড়ে মাটির আঁচলে, মরি হা য় হা য় হায়॥
মাঠের বাঁশি শুনে শুনে আকাশ খুশি হল।
ঘরেতে আজ কে রবে গো, খোলো খোলো দুয়ার খোলো।
আলোর হাসি উঠল জেগে ধানের শিষে শিশির লেগে--
ধরার খুশি ধরে না গো, ওই-যে উথলে, মরি হা য় হা য় হায়॥
রাগ: বিভাস-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): পৌষ, ১৩৩০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1924
স্বরলিপিকার: অনাদিকুমার দস্তিদার
ডালা যে তার ভরেছে আজ পাকা ফসলে, মরি হায় হায় হায়॥
হাওয়ার নেশায় উঠল মেতে দিগ্বধূরা ধানের ক্ষেতে--
রোদের সোনা ছড়িয়ে পড়ে মাটির আঁচলে, মরি হা য় হা য় হায়॥
মাঠের বাঁশি শুনে শুনে আকাশ খুশি হল।
ঘরেতে আজ কে রবে গো, খোলো খোলো দুয়ার খোলো।
আলোর হাসি উঠল জেগে ধানের শিষে শিশির লেগে--
ধরার খুশি ধরে না গো, ওই-যে উথলে, মরি হা য় হা য় হায়॥
রাগ: বিভাস-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): পৌষ, ১৩৩০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1924
স্বরলিপিকার: অনাদিকুমার দস্তিদার
===========================================
ওরে গৃহবাসী খোল্, দ্বার খোল্, লাগল যে দোল।
স্থলে জলে বনতলে লাগল যে দোল।
দ্বার খোল্, দ্বার খোল্॥
রাঙা হাসি রাশি রাশি অশোক পলাশে,
রাঙা নেশা মেঘে মেশা প্রভাত-আকাশে,
নবীন পাতায় লাগে রাঙা হিল্লোল।
দ্বার খোল্, দ্বার খোল্॥
বেণুবন মর্মরে দখিন বাতাসে,
প্রজাপতি দোলে ঘাসে ঘাসে।
মউমাছি ফিরে যাচি ফুলের দখিনা,
পাখায় বাজায় তার ভিখারির বীণা,
মাধবীবিতানে বায়ু গন্ধে বিভোল।
দ্বার খোল্, দ্বার খোল্॥
রাগ: বিভাস-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1337
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1931
স্বরলিপিকার: অনাদিকুমার দস্তিদার
স্থলে জলে বনতলে লাগল যে দোল।
দ্বার খোল্, দ্বার খোল্॥
রাঙা হাসি রাশি রাশি অশোক পলাশে,
রাঙা নেশা মেঘে মেশা প্রভাত-আকাশে,
নবীন পাতায় লাগে রাঙা হিল্লোল।
দ্বার খোল্, দ্বার খোল্॥
বেণুবন মর্মরে দখিন বাতাসে,
প্রজাপতি দোলে ঘাসে ঘাসে।
মউমাছি ফিরে যাচি ফুলের দখিনা,
পাখায় বাজায় তার ভিখারির বীণা,
মাধবীবিতানে বায়ু গন্ধে বিভোল।
দ্বার খোল্, দ্বার খোল্॥
রাগ: বিভাস-বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1337
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1931
স্বরলিপিকার: অনাদিকুমার দস্তিদার
===========================================
রইল বলে রাখলে কারে, হুকুম তোমার ফলবে কবে?
তোমার টানাটানি টিঁকবে না ভাই, রবার যেটা সেটাই রবে॥
যা খুশি তাই করতে পারো গায়ের জোরে রাখ মারো;
যাঁর গায়ে সব ব্যথা বাজে তিনি যা সন সেটাই সবে।
অনেক তোমার টাকাকড়ি, অনেক দড়া অনেক দড়ি,
অনেক অশ্ব অনেক করী -- অনেক তোমার আছে ভবে।
ভাবছ হবে তুমিই যা চাও, জগৎটাকে তুমিই নাচাও,
দেখবে হঠাৎ নয়ন খুলে হয় না যেটা সেটাও হবে।
রাগ: বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৩ চৈত্র, ১৩১৫
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1909
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
তোমার টানাটানি টিঁকবে না ভাই, রবার যেটা সেটাই রবে॥
যা খুশি তাই করতে পারো গায়ের জোরে রাখ মারো;
যাঁর গায়ে সব ব্যথা বাজে তিনি যা সন সেটাই সবে।
অনেক তোমার টাকাকড়ি, অনেক দড়া অনেক দড়ি,
অনেক অশ্ব অনেক করী -- অনেক তোমার আছে ভবে।
ভাবছ হবে তুমিই যা চাও, জগৎটাকে তুমিই নাচাও,
দেখবে হঠাৎ নয়ন খুলে হয় না যেটা সেটাও হবে।
রাগ: বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৩ চৈত্র, ১৩১৫
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1909
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
==============================================
ভরা থাক্ স্মৃতিসুধায় বিদায়ের পাত্রখানি।
মিলনের উৎসবে তায় ফিরায়ে দিয়ো আনি॥
বিষাদের অশ্রুজলে নীরবের মর্মতলে
গোপনে উঠুক ফলে হৃদয়ের নূতন বাণী॥
যে পথে যেতে হবে সে পথে তুমি একা--
নয়নে আঁধার রবে, ধেয়ানে আলোকরেখা।
সারা দিন সঙ্গোপনে সুধারস ঢালবে মনে
পরানের পদ্মবনে বিরহের বীণাপাণি॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৪ বৈশাখ, ১৩৩০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৭ এপ্রিল, ১৯২৩
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
মিলনের উৎসবে তায় ফিরায়ে দিয়ো আনি॥
বিষাদের অশ্রুজলে নীরবের মর্মতলে
গোপনে উঠুক ফলে হৃদয়ের নূতন বাণী॥
যে পথে যেতে হবে সে পথে তুমি একা--
নয়নে আঁধার রবে, ধেয়ানে আলোকরেখা।
সারা দিন সঙ্গোপনে সুধারস ঢালবে মনে
পরানের পদ্মবনে বিরহের বীণাপাণি॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৪ বৈশাখ, ১৩৩০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৭ এপ্রিল, ১৯২৩
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
============================================
লিখন তোমার ধুলায় হয়েছে ধূলি,
হারিয়ে গিয়েছে তোমার আখরগুলি॥
চৈত্ররজনী আজ বসে আছি একা, পুন বুঝি দিল দেখা--
বনে বনে তব লেখনীলীলার রেখা,
নবকিশলয়ে গো কোন্ ভুলে এল ভুলি তোমার পুরানো আখরগুলি॥
মল্লিকা আজি কাননে কাননে কত
সৌরভে-ভরা তোমারি নামের মতো।
কোমল তোমার অঙ্গুলি-ছোঁওয়া বাণী মনে দিল আজি আনি
বিরহের কোন্ ব্যথাভরা লিপিখানি।
মাধবীশাখায় উঠিতেছে দুলি দুলি তোমার পুরানো আখরগুলি॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): চৈত্র, ১৩৩২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1926
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
হারিয়ে গিয়েছে তোমার আখরগুলি॥
চৈত্ররজনী আজ বসে আছি একা, পুন বুঝি দিল দেখা--
বনে বনে তব লেখনীলীলার রেখা,
নবকিশলয়ে গো কোন্ ভুলে এল ভুলি তোমার পুরানো আখরগুলি॥
মল্লিকা আজি কাননে কাননে কত
সৌরভে-ভরা তোমারি নামের মতো।
কোমল তোমার অঙ্গুলি-ছোঁওয়া বাণী মনে দিল আজি আনি
বিরহের কোন্ ব্যথাভরা লিপিখানি।
মাধবীশাখায় উঠিতেছে দুলি দুলি তোমার পুরানো আখরগুলি॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): চৈত্র, ১৩৩২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1926
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
=======================================
আমার মন বলে, 'চাই চা ই, চাই গো-- যারে নাহি পাই গো'।
সকল পাওয়ার মাঝে আমার মনে বেদন বাজে--
'নাই, না ই নাই গো'॥
হারিয়ে যেতে হবে,
আমায় ফিরিয়ে পাব তবে,
সন্ধ্যাতারা যায় যে চলে ভোরের তারায় জাগবে ব'লে--
বলে সে, 'যা ই যা ই যাই গো'॥
রাগ: বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ভাদ্র, ১৩৪০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1933
স্বরলিপিকার: শান্তিদেব ঘোষ
সকল পাওয়ার মাঝে আমার মনে বেদন বাজে--
'নাই, না ই নাই গো'॥
হারিয়ে যেতে হবে,
আমায় ফিরিয়ে পাব তবে,
সন্ধ্যাতারা যায় যে চলে ভোরের তারায় জাগবে ব'লে--
বলে সে, 'যা ই যা ই যাই গো'॥
রাগ: বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ভাদ্র, ১৩৪০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1933
স্বরলিপিকার: শান্তিদেব ঘোষ
===========================================
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রঙ্গরসিকতা
একবার রবীন্দ্রনাথ গুনগুন করে সুর বাঁধছিলেন ,
একবার রবীন্দ্রনাথ গুনগুন করে সুর বাঁধছিলেন ,
কথা বসাচ্ছিলেন এবং এমনিভাবে পায়চারী করতে করতে গান রচনা করছিলেন ।
গান শেষ হতেই ডাক পড়েছিল অমলা দাশের -”অমলা ও অমলা , শিগগির সে শিখে নাও ,
এক্ষুনি ভুলে যাব কিন্তু ।”
মৃনালিনী দেবী হেসে বললেন , “এমন মানুষ আর কখনো দেখেছ অমলা ,
মৃনালিনী দেবী হেসে বললেন , “এমন মানুষ আর কখনো দেখেছ অমলা ,
নিজের দেওয়া সুর নিজে ভুলে যায় ।”
তৎক্ষণাৎ রবীন্দ্রনাথের সপ্রতিভ জবাব , “অসাধারণ মানুষদের সবই অসাধারণ হয় ।
তৎক্ষণাৎ রবীন্দ্রনাথের সপ্রতিভ জবাব , “অসাধারণ মানুষদের সবই অসাধারণ হয় ।
ছোট বৌ চিনলে না তো ।”
===============================================
নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে। ( নয়নের নয়ন ! )
হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে, হৃদয়ে রয়েছ গোপনে। ( হৃদয়বিহারী ! )
বাসনার বশে মন অবিরত ধায় দশ দিশে পাগলের মতো,
স্থির-আঁখি তুমি মরমে সতত জাগিছ শয়নে স্বপনে।
( তোমার বিরাম নাই, তুমি অবিরাম জাগিছ শয়নে স্বপনে।
তোমার নিমেষ নাই, তুমি অনিমেষ জাগিছ শয়নে স্বপনে। )
সবাই ছেড়েছে, নাই যার কেহ, তুমি আছ তার, আছে তব স্নেহ–
নিরাশ্রয় জন পথ যার গেহ সেও আছে তব ভবনে।
( যে পথের ভিখারি সেও আছে তব ভবনে।
যার কেহ কোথাও নেই সেও আছে তব ভবনে। )
তুমি ছাড়া কেহ সাথি নাই আর, সমুখে অনন্ত জীবনবিস্তার–
কালপারাবার করিতেছ পার কেহ নাহি জানে কেমনে।
( তরী বহে নিয়ে যাও কেহ নাহি জানে কেমনে।
জীবনতরী বহে নিয়ে যাও কেহ নাহি জানে কেমনে। )
জানি শুধু তুমি আছ তাই আছি, তুমি প্রাণময় তাই আমি বাঁচি,
যত পাই তোমায় আরো তত যাচি– যত জানি তত জানি নে।
( জেনে শেষ মেলে না–মন হার মানে হে। )
জানি আমি তোমায় পাব নিরন্তর লোক-লোকান্তরে যুগ-যুগান্তর–
তুমি আর আমি মাঝে কেহ নাই, কোনো বাধা নাই ভুবনে।
( তোমার আমার মাঝে কোনো বাধা নাই ভুবনে। )
রাগ: যোগিয়া-কীর্তন
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1293
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1887
=======================================
===============================================
নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে। ( নয়নের নয়ন ! )
হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে, হৃদয়ে রয়েছ গোপনে। ( হৃদয়বিহারী ! )
বাসনার বশে মন অবিরত ধায় দশ দিশে পাগলের মতো,
স্থির-আঁখি তুমি মরমে সতত জাগিছ শয়নে স্বপনে।
( তোমার বিরাম নাই, তুমি অবিরাম জাগিছ শয়নে স্বপনে।
তোমার নিমেষ নাই, তুমি অনিমেষ জাগিছ শয়নে স্বপনে। )
সবাই ছেড়েছে, নাই যার কেহ, তুমি আছ তার, আছে তব স্নেহ–
নিরাশ্রয় জন পথ যার গেহ সেও আছে তব ভবনে।
( যে পথের ভিখারি সেও আছে তব ভবনে।
যার কেহ কোথাও নেই সেও আছে তব ভবনে। )
তুমি ছাড়া কেহ সাথি নাই আর, সমুখে অনন্ত জীবনবিস্তার–
কালপারাবার করিতেছ পার কেহ নাহি জানে কেমনে।
( তরী বহে নিয়ে যাও কেহ নাহি জানে কেমনে।
জীবনতরী বহে নিয়ে যাও কেহ নাহি জানে কেমনে। )
জানি শুধু তুমি আছ তাই আছি, তুমি প্রাণময় তাই আমি বাঁচি,
যত পাই তোমায় আরো তত যাচি– যত জানি তত জানি নে।
( জেনে শেষ মেলে না–মন হার মানে হে। )
জানি আমি তোমায় পাব নিরন্তর লোক-লোকান্তরে যুগ-যুগান্তর–
তুমি আর আমি মাঝে কেহ নাই, কোনো বাধা নাই ভুবনে।
( তোমার আমার মাঝে কোনো বাধা নাই ভুবনে। )
রাগ: যোগিয়া-কীর্তন
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1293
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1887
=======================================
মম মন-উপবনে চলে অভিসারে আঁধার রাতে বিরহিণী।
রক্তে তারি নূপুর বাজে রিনিরিনি॥
দুরু দুরু করে হিয়া, মেঘ ওঠে গরজিয়া,
ঝিল্লি ঝনকে ঝিনিঝিনি॥
মম মন-উপবনে ঝরে বারিধারা, গগনে নাহি শশীতারা।
বিজুলির চমকনে মিলে আলো ক্ষণে ক্ষণে,
ক্ষণে ক্ষণে পথ ভোলে উদাসিনী॥
রাগ: সাহানা
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): কার্তিক, ১৩৪১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1934
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
রক্তে তারি নূপুর বাজে রিনিরিনি॥
দুরু দুরু করে হিয়া, মেঘ ওঠে গরজিয়া,
ঝিল্লি ঝনকে ঝিনিঝিনি॥
মম মন-উপবনে ঝরে বারিধারা, গগনে নাহি শশীতারা।
বিজুলির চমকনে মিলে আলো ক্ষণে ক্ষণে,
ক্ষণে ক্ষণে পথ ভোলে উদাসিনী॥
রাগ: সাহানা
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): কার্তিক, ১৩৪১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1934
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
==========================================
যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙল ঝড়ে
জানি নাই তো তুমি এলে আমার ঘরে ॥
সব যে হয়ে গেল কালো, নিবে গেল দীপের আলো,
আকাশ-পানে হাত বাড়ালেম কাহার তরে?।
অন্ধকারে রইনু পড়ে স্বপন মানি।
ঝড় যে তোমার জয়ধ্বজা তাই কি জানি!
সকালবেলা চেয়ে দেখি, দাঁড়িয়ে আছ তুমি এ কি,
ঘর-ভরা মোর শূন্যতারই বুকের 'পরে ॥
রাগ: বাগেশ্রী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৩ ফাল্গুন, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ৭ মার্চ, ১৯১৪
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
জানি নাই তো তুমি এলে আমার ঘরে ॥
সব যে হয়ে গেল কালো, নিবে গেল দীপের আলো,
আকাশ-পানে হাত বাড়ালেম কাহার তরে?।
অন্ধকারে রইনু পড়ে স্বপন মানি।
ঝড় যে তোমার জয়ধ্বজা তাই কি জানি!
সকালবেলা চেয়ে দেখি, দাঁড়িয়ে আছ তুমি এ কি,
ঘর-ভরা মোর শূন্যতারই বুকের 'পরে ॥
রাগ: বাগেশ্রী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৩ ফাল্গুন, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ৭ মার্চ, ১৯১৪
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
===========================================
সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে, ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা।
সেই স্মৃতিটুকু কভু খনে খনে যেন জাগে মনে, ভুলো না ॥
সেদিন বাতাসে ছিল তুমি জানো-- আমারি মনের প্রলাপ জড়ানো,
আকাশে আকাশে আছিল ছড়ানো তোমার হাসির তুলনা ॥
যেতে যেতে পথে পূর্ণিমারাতে চাঁদ উঠেছিল গগনে।
দেখা হয়েছিল তোমাতে আমাতে কী জানি কী মহা লগনে।
এখন আমার বেলা নাহি আর, বহিব একাকী বিরহের ভার--
বাঁধিনু যে রাখী পরানে তোমার সে রাখী খুলো না, খুলো না ॥
রাগ: পিলু
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৩০ আশ্বিন, ১৩৩৪
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৭ অক্টোবর, ১৯২৭
রচনাস্থান: ব্যাংকক থেকে পিনাং যাবার পথে
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
সেই স্মৃতিটুকু কভু খনে খনে যেন জাগে মনে, ভুলো না ॥
সেদিন বাতাসে ছিল তুমি জানো-- আমারি মনের প্রলাপ জড়ানো,
আকাশে আকাশে আছিল ছড়ানো তোমার হাসির তুলনা ॥
যেতে যেতে পথে পূর্ণিমারাতে চাঁদ উঠেছিল গগনে।
দেখা হয়েছিল তোমাতে আমাতে কী জানি কী মহা লগনে।
এখন আমার বেলা নাহি আর, বহিব একাকী বিরহের ভার--
বাঁধিনু যে রাখী পরানে তোমার সে রাখী খুলো না, খুলো না ॥
রাগ: পিলু
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৩০ আশ্বিন, ১৩৩৪
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৭ অক্টোবর, ১৯২৭
রচনাস্থান: ব্যাংকক থেকে পিনাং যাবার পথে
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
=============================================
জাগরণে যায় বিভাবরী--
আঁখি হতে ঘুম নিল হরি মরি মরি॥
যার লাগি ফিরি একা একা-- আঁখি পিপাসিত, নাহি দেখা,
তারি বাঁশি ওগো তারি বাঁশি তারি বাঁশি বাজে হিয়া ভরি মরি মরি॥
বাণী নাহি, তবু কানে কানে কী যে শুনি তাহা কেবা জানে।
এই হিয়াভরা বেদনাতে, বারি-ছলোছলো আঁখিপাতে,
ছায়া দোলে তারি ছায়া দোলে ছায়া দোলে দিবানিশি ধরি মরি মরি॥
রাগ: বেহাগ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): আশ্বিন, ১৩২৫
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1918
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
আঁখি হতে ঘুম নিল হরি মরি মরি॥
যার লাগি ফিরি একা একা-- আঁখি পিপাসিত, নাহি দেখা,
তারি বাঁশি ওগো তারি বাঁশি তারি বাঁশি বাজে হিয়া ভরি মরি মরি॥
বাণী নাহি, তবু কানে কানে কী যে শুনি তাহা কেবা জানে।
এই হিয়াভরা বেদনাতে, বারি-ছলোছলো আঁখিপাতে,
ছায়া দোলে তারি ছায়া দোলে ছায়া দোলে দিবানিশি ধরি মরি মরি॥
রাগ: বেহাগ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): আশ্বিন, ১৩২৫
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1918
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
==========================================
No comments:
Post a Comment