Monday 5 August 2013



~~তবেই তো সখী~~
 
ও কি কথা হলো সখী
লুকালে যে সানন্দা মুখ৷
বসন্ত ফুরালে বসন্ত যে নামে
তবেই তো সে আনন্দ সুখ৷৷

গোলাপ ফুলের রং সে সখী
কাঁটা পাতা ভালবাসা ৷
রক্ত ঝরালে রক্ত যে নামে
তবেই তো সে আশা নিরাশা ৷৷

দু এক কলি রবি ঠাকুরের
গানে’ই তবে যে অন্তঃসুখ ৷
মনের দুঃখ সুখের দুঃখ
তবেই তো সে দুখ বেরুখ ৷৷

বুকের ব্লুটুথ খুলে রাখো সখী
জীবন ভাঙ্গে এলোমেলো ৷
বৃষ্টি আকাশে সৃষ্টি যে নামে
তবেই তো সে অশ্রু টলোমলো ৷৷

এস-এম-এস শত পাঠানো সে সখী
মনের দেশ যে নিরুদ্দেশ ৷
গদ্যে পদ্যে মিলেমিশে থাক
তবেই তো সে ফুলের দেশ ৷৷

কিছু কথা কিছু ব্যথা সখী
রোজ থাকে প্রায় না বলা ৷
মন পড়ে থাকে মনের গোড়ায়
তবেই তো সে সখী অবলা ৷৷

ভালবাসা যাচে নিক্তি আকাশে
তারারা যে লক্ষ্যহীন ৷
বাতাস শুধালে চুপিচুপি এসে
তবেই তো সে শ্রেষ্ট দিন ৷৷

কতবার ভাবা কতবার সখী
কত কথা ঠোঁট ছোঁয়া ৷
বেলার আবেশে বেদনা নিবাসে
তবেই তো সে প্রেম পাওয়া ৷৷
==============================================
যে আমাকে চেনে নাই,
 আমি তাকে চিনি ! 

চিনি নাই তাঁকে, 
যে চেনে এ আমাকে !
============================================
আমার বাসায় এক ধাড়ি ইঁদুার--
একত্রে এক ঘরে থাকি।
প্রতি দিন দেখা হয়--
মায়া জন্মে না।
============================================
‘‘~~তুমি আসো নাই~~’’

বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতে এখনও রাস্তায়
বেরোই, একাই ভিজি।
চোখের ওপর
নীলবৃষ্টি ঝাপটা দিয়ে যায়।
অতৃপ্ত হৃদের তপ্ত বালুচর;
তাতে শীতলতা স্পর্শও করেনা। সে বৃষ্টিতে একসাথে ভিজব,
একসাথে হাঁটব বলে অপেক্ষায় থাকি;
তোমার অপেক্ষায়।
কিন্তু,
তুমি আসো নাই।

কদম ফুল; বেশি না, মাত্র দুটা।
কুড়াই না; তাতে আঘাতের দাগ
থাকে বলে।
প্রতিদিন ভোরে গাছ থেকে পেড়ে আনি;
সবার অগোচরে।
দিন শেষে রুগ্ন ফুলদুটির দিকে মৃতদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি;
তোমার অপেক্ষায়।
কিন্তু,
তুমি আসো নাই।

আনকোরা কাগজ, তাতে মূর্ত হবে ছবি;
কিছু এলোমেলো শব্দের
অগোছালো স্থিতি৷
ভুলগুলো আছড়ে পড়ে, নিঃশব্দে,
হিংসায়৷
সন্ত্রস্ত মায়া অপেক্ষায় থাকে; তোমার অপেক্ষায়৷
কিন্তু,
তুমি আসো নাই৷

কিছু খেয়ালী ভাবনা; নিষ্প্রভ, আবেগী,
অচঞ্চল৷
নিষ্প্রাণ চেতন-এ স্থান পেতে চায়৷
অযথার্থ মুহুর্তের বেআক্কেলে দাবি;
অপূর্ণতার বেদনায় বিসর্জিত হয়৷
বুভূক্ষু আশাগুলো অপেক্ষায় থাকে; তোমার অপেক্ষায়৷
কিন্তু,
তুমি আসো নাই৷
===========================================

সালঃ ২০৫৩ 
সময়ঃ রাত ১ টা।
অনেক দিন পর ফেইসবুকে লগিনকরলাম।
গত কয়েক টা মাস ফেইসবুকে ছিলাম না।
হাসপাতাল এর বেড এ শুয়ে ছিলাম।
বেডে শুয়ে ভাবতেছিলাম আবার কি ফিরে আসতে পারবো কিনা।
এখন আর ফেইসবুকের পুরোনো বন্ধুদের
কে পাই
না ,অনেকে মারা গেছে অথবা অনেক
ফেইসবুক ব্যবহার করা ছেড়ে দিয়েছে।
আমি মাঝে মাঝে না এসে পারি না। অনেক দিন এর নেশা তো তাই চাইলে ও
ছাড়তে পারিনা , লগিন করে ই
খুজতে থাকি অনেক কে কিন্তুপাই
না তেমন কাওকে।
ছেলে মেয়ে গুলো দেশের বাইরে, অনেক
বলে ও তাদের কে রাখতে পারলাম না। ওরা ও আমাকে আর আমার wife
কে চলে যেতে বলে কিন্তু আমিযাই না ।
আসলে যেতে চাই না আমি, কারনএই
দেশের মাটি তে ই শেষ নিঃশ্বাস
টা ত্যাগ করতে চাই।
ফেইসবুক এখন অনেক বদলে গেছে। মাঝে মাঝে আমার ছেলে মেয়েদের
সাথে চ্যাট হয়। ওরা ও অনেক ব্যাস্ত এখন।।
আমাদের সময়ের ফেইসবুক সেলিব্রেটিদের
মাঝে এখন আর তেমন কাওকে পাইনা।
দুই এক জন বেঁচে আছেন। কিন্তু ওনারা এখন
আর ফেইসবুকে লিখেন না । বই বের করেন প্রতি বছর একটা করে।
ফেইসবুকে আজ কে লগিন করে ই সেই
২০১২-২০১৩ সালের টাইম লাইন
টা দেখলাম।
কি না ছিলো আমাদের সময়ে। যখন তরুন
ছিলাম। সারা দিন ই পড়ে থাকতাম।
চ্যাটিং ফ্ল্যাটিং কত কি ইনা করতাম ।
তবে আমি খুব একটা ফ্ল্যাটিংকরতাম না
অন্য ফ্রেন্ডদের টাইম লাইনে ঘুরে আসলাম।
মনে মন হাসলাম , আবার কাঁদলাম ও ।
আসলে কি অনেকে আর আমাদের মাঝে নেই।
এখন ফ্রেন্ডলিস্ট খুজতে গিয়ে আর
একটা জিনিস চোখে পড়লো।
সেটা হলো ফেইসবুক কে এখন অনেক বড়
কবরস্থান মনে হচ্ছে। কারন অনেকে যে আর
বেছে নেই, কিন্তু তাদের আইডি গুলো এখন ও আছে।
লিখতে লিখতে চোখের
পাতা ভারী হয়ে আসছে। এক দিনআমি ও
এই ভাবে চলে যাবো । আমার
আইডী হয়তো বা ডিএক্টিভেট করা হবে না
কেও হয়তো খোজ ও করবে না আমাকে।

আজ থেকে ৪০ বছর পরে হয়ত এমনই
একটা স্ট্যাটাস দিব আমার ওয়ালে।
হয়ত কেও পড়বে না। বুড়ো হয়ে যাবো তো ,
আমার ফ্রেন্ড লিস্ট এর অনেক
হয়তো থাকবে না সেই দিন
ফেইসবুকে,বয়সের কারনে হারিয়ে যাবে।।

==============================================
~~কাব্য-কণা ~~

চাঁদের নবীন বারতা নিয়ে, জোছনা নামিল ধরায়,
পত্র-পুষ্প সম্ভািষল! যাবত হৃদয় কুলায় !
============================================
~~সিথির সিঁদুঁর অক্ষয় হোক~~ 

সে অনেকদিন আগের কথা-
ঠাকুরদার সংসারে এলেন ঠাকমা বধুঁবেশে
বিয়ে বিয়ে খেলা -
কাতান শাড়ী, জড়োয়া গয়না
ছোট্টদেহে জড়িয়ে আছে কতো না মায়ায়।

পাঁজি দেখে শুভলগ্ন শ্রী শ্রী প্রজাপতেয় নমঃ
বুড়ো পুরোহিত পড়ে যায় মন্ত্র-
'যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম'।
বালিকাবঁধু বুঝে কি এ সব ভড়ংফড়ং!
ছোট্ট মন বুঝো নেয় তবু পড়েছে আজ সে সাতপাঁকে বাঁধা।
'মিনসেটা কেমন হবে বুঝে সে কি করে!'

শেষ হয়ে গেলে সম্প্রদান পালা -
বাবা, জ্যাঠা, আর কুলগুরু করে যায় আশীর্বাদ
'সিথির সিঁদুর অক্ষয় হোক, মা'
ছোট্ট শিশু বুঝে কি করে সিঁদুরের এই ছল!

আঙ্গিনায় বয়ে যাওয়া খোলা হাওয়া মর্মে ওঠে কেঁদে
নিঃশব্দ ক্ষোভে চুপিচুপি করে যায় স্বগোতক্তি -
'সিথির সিঁদুর অক্ষয় হোক!'
বলিহারি তোদের আশীর্বাদ -
বালিকা তুমি মরো আগে কর্তাকে জিন্দা রেখে!'

নারী দুঃখে পাথর ভগবান ফেলে কি দীর্ঘ্যশ্বাস।

===========================================
~~স্বপ্নেরা আজো খেলা করে~~

জীয়ল মাছ স্বপ্নেরা করে দাপাদাপি। 
সময়ের ঝাপ্টায় দোল খায়। 
স্বপ্নদেয়ালে লাগে কি শ্যাওলা!

বালক দেখে স্বপ্ন।
 লৌহজং বুকে কোশা ভাসিয়ে ঢেউয়ের তালে পৌঁছে যাবে সাগর মোহনায়।
 বালক হারিয়ে গেছে সেই কবে।
 কুমারী স্বপ্নটুকু রয়ে গেছে বিষণ্ন ভাটিবেলায়।

শুরু করেছিলাম বয়োঃসন্ধিক্ষণে।
 নতুন পৃথিবী, ঘোরলাগা চোখ। 
আনাড়ি হাতে প্রথম ছোঁয়া। উল্টিয়ে গেছি পাতার পর পাতা।
 হয়েছিলো কি প্রথম সর্গ পাঠ! 
হায় কোথায় যে হারিয়ে গেল সে!

কিশোরের চোখে কিশোরী ঝিলিক।
কিশোর, কিশোরী তোমরা গ্যালা যে কোথায়!

স্বপ্নেরা আজো যে খেলা করে মনোভূমে।
=============================================

~~আকাশে মেঘ সোনা জমছে~~
 

আমি ভুলেই আছি তোমাকে আজ
না!ভাবছি না তোমার কথা আর,
মনে পড়ছে না তোমার অনুপস্থিতি
খুব বেশি রোদ উঠছে আজ আবার।
বৃষ্টি নাই আবহাওয়ার পূর্বাবাসেও
দু’একটা ফোটাও নাই ঝকঝকা দিন,
এত কেন গরম বর্ষাকালে?প্রতি বছর
ভিজুক আমার যত শরমগুলো সারাদিন।
কেবল তোমাকে ভাবা যায় বৃষ্টিতে
বৃষ্টি নেই তো নেই তোমার ভাবনা,
আমার শরম ওড়ছে মেঘের সাথে
মাথার ঘিলু তেতে উঠছে, প্রিয়তমা।
যদি বৃষ্ট আসে তুমি এসো সঙ্গে রাখব
আকাশে মেঘ সোনা জমছে গন্ধ পেলাম,
বৃষ্টি ঝরো,পড়ো পড়ো,বৃষ্টি থেমে গেছে
আহা! আবার আজ তোমাকে হারালাম।।

============================================
~~দেবী~~

আমার খুব ইচ্ছে করে
সবকিছু ছেড়ে-ছুঁড়ে
নৌকার মাঝি হয়ে
পদ্মার বুকে নৌকা চালাই

এই জটিল জীবন আমার
একটুও ভাল লাগে না দেবী
ইচ্ছে করে
এই ভারতবর্ষের প্রতিটা
মাজারে ঘুরি
ইচ্ছে করে কুষ্টিয়া গিয়ে
লালনের মাজারে
বাকীটা জীবন কাটিয়ে দেই.… 
।।
===========================================
~~নারী চোখ পাঠ~~

"প্রেমিক করে পাঠ প্রেমিকার চোখ, বুঝে তো ছাইপাশ কচু"।
প্লীজ, ভুল বুঝবেন না আমাকে, প্রপঞ্চটি আমার নয় কিংবা
সতর্ককারী প্রেরিত পুরুষের চটকদার পবিত্র বাণীও নয় এটি।
বস্তুতঃ আমরা জানি স্বয়ং ঈশ্বরও নারাজ নারী চরিতপাঠে।

জানি, আপনাদের কৌতুহল হচ্ছে । প্রমিথিউস মশালে জ্বলে উঠা
পাথর নিরেট এ সত্য তবে কার! হিমালয় গুহায় ধ্যানমগ্ন কোন
নাঙ্গা ফকিরের কিংবা এত্ত্বেকাফে বসা কোন নুরানী হুজুরের?
না, তাও নয়। বিশ্বাস করেন, শব্দবোমাটি ফাটিয়েছে এক নারী ।

না, খনা জিহ্বা নেই আমার তরুনী বান্ধবীটির। বরং জ্যোছনামাখা
শব্দেরা খেলা করে তার জিভে। সে চৌকষ, বুদ্ধিমতি এবং শিক্ষিত।
ওর নখদর্পনে আইনস্টাইন, হাইসেনবার্গ, স্টিফান হকিং ভেসে উঠে।
গল্পের মত সে শুনিয়েছিলো একদিন বোস আইনস্টাইন সংখ্যায়ন।

মোটেই রসকষহীন নয় বান্ধবী আমার। কবিতার অলিগলিতে
অবাধ বিচরণ তার। আমি জানি, প্রেমরসে তার চোখেও লাগে ঘোর-
আছে যে তারও এক প্রেমিক কবি। ফাঁকতালে প্রশ্ন করি আমি, 'কবি?
কবি কি পড়তে পারে নারী চোখ?' রহস্য হাসিতে থাকে সে নিরুত্তর ।

কবি পুরোহিত শ্বেতাঙ্গ ওকাম্পোর চোখে চোখ রেখে উঠেছিলো গেয়ে,
'আমি চিনি গো চিনি তোমারে, ওগো বিদেশীনি', তবে কি শেষবেলা
ঋদ্ধ কবি পেয়েছিল দিব্য চোখ, করেছিল পাঠ পিঙ্গল চোখ দুটো! ধন্দ লাগে!
'আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে তোমারে করেছি রচনা।' ওকাম্পো কি ব্যত্যয়!

সহসা বিদ্যুৎ চমক, আমাকে অবাক করে প্রত্যয়ী বান্ধবী বলে উঠে
'আমিও নারী, আমি জানি আমাদের কথা তোমাদের চেয়ে ঢেঢ় গুণ।
প্রেমিক কখনো বুঝে না প্রেমিকার চোখ। কবিও না'। ফিসফিসিয়ে বলে
সে, 'কামুক পুরুষ এবং কামুক পুরুষই করে নারী চোখ সহীহ পাঠ।'

=========================================

~~প্রশ্ন~~

কোনো এক দুপুরবেলায়
চারিদিকে চোখ ঘুরিয়ে
এক কিলোমিটার অন্ধকার
তৈরী করে
চুপচাপ বসে আছি
চা পানের নড়াচড়ায় আমার শরীর
থেকে
রূপালি আলো উড়ে যায়
কালো আকাশের দিকে
তখন বাতাসের বুকে বিস্ফোরিত হয়
তোমার হাসির বুদবুদ
শব্দ দৃশ্যগুলো।
তারপর অনুভূতিগুলোকে সম্পূর্ন
আহত করে
সময়ের সুগন্ধ সূতোগুলো
হৃদয় ছুঁয়ে কোথায় যে পালায়?
প্রশ্নটা ঝুলিয়ে দিলাম
মহাকালের বুকে।
==========================================

আমার ধর্মটাও তোমার কাছে জিম্মি হয়ে গেলো
আমি মুসলিম তবু তোমার স্বার্থে নাস্তিক আমায় বলো

আমি রাজাকারের বিচার চাইলে বল আওয়ামীলীগ
আর বিশ্বাজিতের গানটা গাইলে বিএনপি ঠিক ঠিক
আমার দেশপ্রেম নিয়ে এতো নোংরা খেলা কেন খেলো
তুমি বাংলাদেশী না পাকিস্থানি স্পষ্ট করে করে বলো

তিরিশ লক্ষ প্রাণ আর দু লক্ষ সম্ভ্রম
তোমার মন্ত্রী প্রধান পদের চাইতে তার দাম কি কম ?
কেন খুনির বিচার চাইলে আমায় দেশদ্রোহী বলো
আর ভোটের মাঠে ধর্ম নিয়ে নোংরা খেলা খেলো

==============================================

~~কথোপকথন --পুর্ণেন্দু পত্রী~~

- যে কোন একটা ফুলের নাম বল
- দুঃখ ।
- যে কোন একটা নদীর নাম বল
- বেদনা ।
- যে কোন একটা গাছের নাম বল
- দীর্ঘশ্বাস ।
- যে কোন একটা নক্ষত্রের নাম বল
- অশ্রু ।
- এবার আমি তোমার ভবিষ্যত বলে দিতে পারি ।
- বলো ।
- খুব সুখী হবে জীবনে ।
শ্বেত পাথরে পা ।
সোনার পালঙ্কে গা ।
এগুতে সাতমহল
পিছোতে সাতমহল ।
ঝর্ণার জলে স্নান
ফোয়ারার জলে কুলকুচি ।
তুমি বলবে, সাজবো ।
বাগানে মালিণীরা গাঁথবে মালা
ঘরে দাসিরা বাটবে চন্দন ।
তুমি বলবে, ঘুমবো ।
অমনি গাছে গাছে পাখোয়াজ তানপুরা,
অমনি জোৎস্নার ভিতরে এক লক্ষ নর্তকী ।
সুখের নাগর দোলায় এইভাবে অনেকদিন ।
তারপর
বুকের ডান পাঁজরে গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে
রক্তের রাঙ্গা মাটির পথে সুড়ঙ্গ কেটে কেটে
একটা সাপ
পায়ে বালুচরীর নকশা
নদীর বুকে ঝুঁকে-পড়া লাল গোধূলি তার চোখ
বিয়েবাড়ির ব্যাকুল নহবত তার হাসি,
দাঁতে মুক্তোর দানার মত বিষ,
পাকে পাকে জড়িয়ে ধরবে তোমাকে
যেন বটের শিকড়
মাটিকে ভেদ করে যার আলিঙ্গন ।
ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত হাসির রং হলুদ
ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত গয়নায় শ্যাওলা
ধীরে ধীরে তোমার মখমল বিছানা
ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে, ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে সাদা ।
- সেই সাপটা বুঝি তুমি ?
- না ।
- তবে ?
- স্মৃতি ।
বাসর ঘরে ঢুকার সময় যাকে ফেলে এসেছিলে
পোড়া ধুপের পাশে 

==========================================
দেবীকে
কতোকিছু বলতে
ইচ্ছে করে আমার কিন্তু কিছুই
বলা হয় না
ইচ্ছে করে সেই
মেঘলা দিনের কথা
দেবীকে বলি, আমি আমার শৈশবের কথা বলি
ইচ্ছে করে
দেবীর খুব নিকটে গিয়ে
বারো বছর আগে খাওয়া ছ্যাঁকাটার কথা
আরো একবার
জ্বলতে জ্বলতে বলি
আমি
আমার মায়ের অসুখের কথা
দেবীকে
বলতে চাই
দাদার কথা বলতে চাই
নানার কথা বলতে চাই
দেবীর খুব নিকটে বসে
আমি আমার
পুরো জীবনের কথা
বলতে চাই
দেবীকে বলতে ইচ্ছে করে
ছোট ছোট সুঃখ দুঃখ
গোপন অশ্রুর কথা
আমার কখন
কার জন্য মন কাঁদে
তাও আমি
দেবীকেই জানাতে চাই 

==========================================

~~বৃষ্টির ছাই~~

 
হালিশহরের খোলা বুকে;
কাক উড়ে, কাক উড়ে
মুন্সী পাড়ায় রৌদ্রদগ্ধ দুপুরের
বুক বিদ্ধ হয়,
কাকের কা কা স্বরে।
তখন তোমার হাত ছেড়ে দেই
নাহার ভিলার বারান্দায়
একা একা ঘুরি।
হঠাৎ একটা পোড়া গন্ধ পাই।
আকাশে তাকিয়ে দেখি
সূর্যের পাশে পড়ে আছে
বৃষ্টির ছাই।
==========================================
~~লাভ ইন হাসপাতাল-একবিন্দু ভালোবাসা~~
 

নার্সের সাদা পোশাকে মেয়েটাকে
এত সুন্দর কেন লাগে-
আমি ঠিক ভেবে পাই না।
সারা জীবন আমি চেয়েছি
পড়াশোনায় ভাল করতে
তারপর রাজনীতি এবং সমাজনীতিতে।
নেতা এবং কর্মী হিসেবে সেরা হতে
সব সময় যেমন কঠিন পরিশ্রম করেছি
তেমনি প্রেমিক হবার চিন্তা-ভাবনা বা উদ্যম
তার কিছু কমই ছিল চিরটা কাল।
নাকি সময় মেলেনি?
হাসপাতালে শুয়ে-বসে তার কি কিছু ফুরসৎ মিলেছে
এই সেবিকা মেয়েটিকে চোখ মেলে দেখবার?

একটু উঠুন, আপনাকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে,
মা খিন কুয়ি এ্যাম্পুলে তরল ভরে;
উফ...আমার মুখ বিকৃত করি।
এই তো হয়ে গেল,
মেয়েটা খুব যত্ন ভরে আমার বাহুর উপরিভাগ
ঘষে দিতে থাকে তুলা আর স্পিরিট সহযোগে,
আমি নিজেই বুঝি আমি আরক্ত হয়ে উঠছি।

নার্সদের সাথে মৈত্রী গড়ার মাধ্যমে
এক সুন্দরীর দেয়া কিছু উপহারে আমি
পাল্টা মানসিক ব্যথায় বিমূঢ় হয়ে যাই,
ওরা এমন কেন?
ওই কম বয়সী সুন্দরী
আমাকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে কেন?
আমি হতভম্ব হয়ে ছিলাম হাসপাতালে।

একেই বলে বিদেশী মানের হাসপাতাল
নার্সরা কঠোর প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে
কমান্ডিং অফিসারের নির্দেশে মৈত্রীর নিদর্শন করছে
না বুঝে হয়ে গেলাম মূর্তিমান বিভীষিকা।
হাসপাতালে মহিলা সার্ভিস ট্রলিতে খাবার আনে,
সব্জি আর মুরগী মেশানো স্যুপ,
ঐ খাবারে রুচি হয়না আমার।
সুন্দরী মা খিন স্নেহভরে বকাদেয়,
একটু আপনাকে খেতেই হবে,
বসুন,মায়া ভরা হাতের খাবার
আহা! না খায় কে?
এসব ভাল লাগেনা আমার
তোয়াজ মানুষকে নষ্ট করে,জানেন তো?

মেয়েটা বালিশে মাথা উঁচু করে দেয় আমার,
চামচে অল্পকরে স্যুপ খাওয়াতে থাকে,
একটু একটু করে ঠিকই খাওয়া চলছে,
আমাকে সেবা দিতে একটু ঘাম হয় তার
চোখের নীচে ওর নাকে ঘামের শিশির জমছে
অথচ তার নজর শুধু আমার দিকে।

আমাদের জীবনটা ভয়ঙ্কর অনিশ্চয়তায় ভরা
এমন বিশ্রী একটা জীবন যে,এমন জীবন!
আসলে একা কাটানোই সবচেয়ে ভাল।
এত উদ্বেগ ভরা পথে কাউকে পাশে হাঁটতে
বলাটাও একটা অন্যায়..........
এটুকু বলতে আমি বুঝি মেয়েটি ভীষণ ভাবে ঘামছে।

মেয়েটি মাথা নিচু করে কাছেই বসা। সে তার হাতের
স্যুপের শূন্য বাটি তখনো টেবিলে নামিয়ে রাখেনি,
আমি কি বলছি আপনি বুঝেছেন? মেয়েটি বলল!
ও মুখ তুললে দেখি তার দু’চোখ স্পষ্টঃ ভেজা।

আমি সামান্য নার্স,আপনার সেবিকা মাত্র
আমি সামান্য আপনি অসামান্য
আপনি বড় মাপের মানূষ
আমি সামান্য নারী
আপনার কথা সারা জীবন মনে রাখবো
মাকে বলেছি,আপনার ছুটি হলে নিয়ে যাবো বাসায়
যাবেন না? মা ভীষণ খুশি হবেন আপনাকে দেখে।

এই আপনার শেষ খাবার
সাথে মা-র কিছু বিশেষ পদের খাবার
বৃষ্টি হওয়ায় বের হতে দেরি হলো,
এই নিন হাসপাতালে আমার হাতের শেষ খাবার
কোনদিন হয়তো দেখা হবেনা আর
আমিও প্রেমে পড়ি,কিন্তু প্রেম সামান্য সময়ের
আমি ভুলে যাই সবাইকে,
কিন্তু আপনাকে কি করে ভুলবো ?
যদি মনে পড়ে মাকে দেখতে আসবেন।।
===========================================

~~সময়ের খন্ড কাব্য-১~~ 


 
বুক পকেটের ভাঁজে হলদে চিঠি উঁকি মারে 
সুবাতাস এলে পড়ে নেব ভেবে 
গভীর সংশয় চেপে রেখেছি বহুদিন ধরে; 
পুরনো জামার বারেন্দায় নগ্ন সুতো সুকৌশলে ঢেকে
জোড়াতালির পাদুকা হেঁটে গেছে বহুবার নগ্ন আঙ্গুলে ভর দিয়ে
ঘর্মাক্ত দিনের কপোল ছুঁয়ে ঢলে পড়া সন্ধ্যায় ম্রিয়মাণ কোলাহলে
বারংবার ভেবেছিলাম কর্মের সাথে সখ্য হলে কিনে নেব সুখ
তোমার ওষ্ঠ ছোঁয়ানো সন্ধ্যা, জুগলবন্ধি হাতের দুপুর।
=============================================
~~এখনই সময়~~
 
সময় আসে না কখনোই, 
সময়কে আনতে হয় টুটি ধরে, মুঠি ধরে 
বশ করে নিতে হয় দারুণ দ্রোহে, 
বিদ্রোহ অথবা ক্ষিপ্রতার সংশয়হীন একাগ্রতায়;

আজ যদি ঘুম না ভাঙ্গে, ভাঙনের গান শুরু হবে
জাগরণের গল্প শেষ হয়ে যাবে
মিথ্যে হয়ে যাবে সব শিহরণ
বিস্ময় আর প্রাণের দহন। 

==========================================

~~সে-দিনগুলো~~
 

আমার ঘুম এখন এমনিতে ভাঙ্গে
তোর ফোনের অপেক্ষায় থাকতে হয় না
আর এই শেষসকালে তুই ফোন করবিই না সে তো জানি!

অবহেলা-অনাদরে মরিচিকা ধরেছে আমার ভালোবাসায়
ভালোবাসার উষ্ণতা অনুভব করতে পারছি না কিছুতেই।
জং ধরেছে স্বপ্নতে,
ভাবনার পাহাড় গড়ছে দিনকে দিন
আর সেই পাহাড়ের পিচঢালা পা পিছলে পড়ছি বার বার!

মনে পড়ে- সেই দুপুর বেলায় ঘুম থেকে জাগাতি,
ভাত খাওয়ার জন্য তাড়া করতি,
শর্ত; আগে চা নয়, ভাত খাবি...।

জীবনের প্রয়োজনে-সময়ের ব্যবধানে আজ বদলেছে অনেক কিছুই
জীবন তার নিজ গতীতে চলছে
লাগাম টেনে ধরার শক্তি নেই আমার
জীবনটা নিয়ে অনেক খেলেছি, আরও খেলার স্বাদ রয়ে গেছে।
নিজেকে নিজে ধ্বংসের মাঝে এক ধরনের আনন্দ উপভোগ করা যায়,
তাইতো নিজের জীবনকে ধ্বংসস্তুপে ডুবে রাখি রাত-দিন...
.।

=============================================

!! ~~বাবাও কি মায়ের মতো~~ !!
 

ঘুমহীন রাতের আঁধারে প্রায় আমি অতন্দ্র ভাবি
অশ্রুসিক্ত নয়নে বাবার ছবি আঁকি,
আপ্রাণ চেষ্টা করি আঁকবো বলে বাবার মুখচ্ছবি
আমি ব্যর্থ হয়ে যাই বার বার !
আঁকতে পারিনা ভুলে যাই, নিজেকে জিজ্ঞেস করি
আচ্ছা আমার বাবা কেমন ছিলো?
কালো, সাদা, নাকি ছিলো মসৃণ?
বাবা যখন মারা গেল,তখন আমার বয়স মাত্র তিন ।

আমি নিজেকে বুঝাতে পারিনা বাবা কেমন হয় !
বাবার আদর কি জিনিস চোখে দেখিনি !
আচ্ছা তোমরা কি কেউ বলতে পারো?
বাবাও কি মায়ের মতো?
তাহলে মা" কেনো বলতেন আমিই তোর বাবা
আমিই তোর মা"?
সেদিন আমি মাকে বলেছিলাম মা" মাগো-
তুমি শুধু একটি বারের জন্য আমার বাবাকে এনে দাওনা
আমি শুধু একটিবার আমার বাবাকে দেখবো-
আর কোনোদিনও তোমাকে জিজ্ঞেস করবো না ।

জনম দুঃখী মা" সেদিন নিরবে দু'চোখের মুছলেন
আর একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন
বাপরে তুই আর আমাকে এমন করে ব্যথার-
সাগরে ভাসিয়ে দিস না, আমি যে আর সইতে পারিনা
ওখান থেকে কেউ কখনো ফিরে আসে না !
মায়ের চোখের অশ্রু দেখে-
সেদিন আমিও কেঁদে ছিলাম অবুঝের মতো ।
তারপর থেকে আমি আর কোনোদিন মায়ের কাছে-
এমন প্রশ্ন তুলে ধরিনি !
বাবার কোনো স্মৃতি ছবি আমার কাছে নেই,
তাই আজো আমি নিরবে বাবাকে খুঁজি
রাত্রি গভীরে আকাশ পানে তাকিয়ে দু'চোখ বুঝি
যদি কোন একদিন সেখানে খুঁজে পাই বাবার ছবি ।

=============================================
~~ক্ষয়িত প্রণয়~~
 

আমি আর কতোটা ভালোবাসতে পারি বলো !
আমার বুকের সবুজায়নে ভালোবাসা অতি সীমিত
খরাবুকে তবুও তো একবার নয় বহুবার বলেছি
ভালোবাসি, ভালোবাসি নন্দিনী !
তুমি তখন তোমাতেই ছিলে নিমগ্ন,
বুঝতে চাওনি অবোদের ভালোবাসা কতোটা ছিলো সত্য,
অতঃপর তোমার কোনও প্রত্ত্যুর না পেয়ে
চালচুলোহীন আজ আমি বাউন্ডেলে ।
সাদা বলাকার মতো ভালোবাসারা সারি সারি-
মেঘের হাতধরে উড়ে গেল,
কতো কাঁদলাম, কতো মিনতি দু'হাত জুড়ে
ফিরলোনা সে, ভেসে গেল অচিনপুরে,
আমি আর কতোটা ভালোবাসতে পারি বলো !
আমিও তো তোমার মতোই জলপদ্মস্নাত মানুষ,
কোলাহল শূন্য রাতের আঁধারে-
আমার অবুঝ ভালোবাসা কে তুমিই করেছ ক্ষুন্ন ।
আমি আর কতোটা ভালোবাসতে পারি বলো !

এ হৃদয়ে একদিন সাত সমুদ্র ভালোবাসা ছিলো
ফাগুন ঝরা দিনের মতো সুখগুলো ছিলো মুক্ত বিহঙ্গ
আর আমিও তখন তোমার প্রেমে দেওলিয়া ছিলাম
উন্মাদ পাগলের মতো, তুমি বোঝনি নন্দিনী,
তুমি তখন অবহেলা অবজ্ঞায় অনাদরে আমাকে-
দূর দূর করে ভিক্ষারীর মতো তাড়িয়েছো
এ হৃদয় আজ শুন্য, অথচ তুমি ফিরে এসেছ
এ হৃদয় আজ তোমার দেওয়া কষাঘাতে রিক্ত,
অথচ তুমি এখন ভীষণ ভালোবাসতে শিখেছো
বলো নন্দিনী, এবার তুমিই বলো-
শূন্য রিক্ত হৃদয় নিয়ে কতোটা ভালোবাসা যায় বলো !
==============================================
~~এইখানে রাত~~
 
এইখানে রাত নামে
নারীর মতো
পায়ে তার বন্দরের নূপুর
দুই হাতে চাঁদের চুড়ি,
পরনে জলের শাড়ী
শাড়ীর জমিনে
জাহাজের কাজ
আঁচলে জেলেদের বাড়ী
এইখানে রাত পুরোপুরি নারী।

=========================================
~~দেশাদেশ বাংলাদেশ~~
 

প্রতিটি গ্রাম প্রত্যেক অপরুপা মায়ের মমতা উপমা৷
মায়ের লম্বা আঁচল ফেলা আচুম্বি মমতা ভিতে মা আসে 
পাশে বাপ মা মরা ছেলেকে করুনা আঁচল দিতে৷
প্রতিটি গ্রাম শান্তি প্রতীক—যেন দিগন্ত বড় উৎসব নমুনা ।

সেই একবার সব কিছূ ফেলে রেখে আসা রেশ
বারবার অপরুপ দেশাদেশ৷সেই বাংলাদেশ৷


ফেলে আসা দেশ৷ ফেলে আসা স্মৃতি বেড়ে ওঠা গল্প৷
প্রতিবেশী শৈশব পরিজন৷কিশোর পরিযায়ী হরমোন৷
কিশোর বেহিসেবী পাখী৷ করতোয়া নদী জলে শঙ্খ উলঙ্গতা
ভালোবাসা বেশ,আধুরী স্মৃতি উন্মেষ
সব কিছু ফেলে রেখে আসা দেশাদেশ৷সেই বাংলাদেশ৷

কিশোরীর হাঁটু মোড়া বসা লক্ষে অলক্ষে
ফ্রকের সীমানা ঘেরাটোপ ছোট হয়ে এলে
সযত্ন শাড়ীর শরীরে কোমড় বাঁধা উন্নত বুক৷
উন্নিত আঁচলে ঢেকে রাখা অহঙ্কার সুখ-মুখ
চোখে এক অজানা ভাষা যেন এক এক শব্দকোষ৷
কত কথা৷না বলে যাওয়া না বলা কথা
কিছু অস্ফুট অটুক্তির মেলমশা হর্ষ স্বর
হ্রেষার মতো সারা রাত জাগায় সকালের প্রতীক্ষায়
সব কিছু ফেলে রেখে আসা দেশাদেশ৷সেই বাংলাদেশ ।

সেই সব অবহিত অকথিত অবনমন ক্ষন
বট গাছের ঝুড়ি করোতোয়া নদী জল ছুঁয়ে ফেলে৷
ছাঁচা বাঁশের বেড়ার ফাঁক দিয়ে চোখের আধারে
ঢুকে পড়ে দুপুর নুপুর নব বরবধুর মধুর আপন৷
রাত ফুরালে আবার ভাল লাগা ফরসা ভোর
উঠোনে শালিক চঁড়ুই ডাকাডাকি৷ চিক চিক
দেশভাগা দেশ৷স্মৃতি কান্না স্তব্ধতা
সব কিছু ফেলে আসা দেশাদেশ৷ সেই বাংলাদেশ ।
============================================

~~কারা যেন চলে গেছে।~~

ঘুম ঘুম চোখে তরল রাত্রির ভিতর
নদীটা মাছের মতো নড়ে নিঃশ্বাস
বুকের কাছে আসে যায়
জোসনা থেকে ছুটি চায়
সীমিত সবুজ
কাছে দূরে কবরস্থান প্রানের
আলো উড়ায় জোনাকির
দেহে
সাদা সাদা শঙ্খগুলো
তীরে বসে অজু করে
পানির শব্দ হয়
তসবিহ টুপি জায়নামায সব
আছে শুধু আল্লাহর জিকির
করতে করতে কারা যেন চলে গেছে.… 
=======================================
একটু হলেও ভালোবাসা পেতে 
কান্না, কষ্ট, আকুতি বোঝায়, 
প্রত্যেকে কত একা -
অসহায় !
=====================================

প্রাণে মোর একী বাদ্য বাজে
কে বাজাও?
হে মাতা-
প্রাণদায়িনী হে মাতা ,একী !

নিমিষেই ফুরাইবে মোর এ হতাশা
অতঃপর সে দিনের আলোক নাশা,
রাত্রির ঘুটঘুটে অন্ধকারের শান্তি
শেষ রাতে আসিবে ঘুম মহাশান্তি ।
তবু একী মাতা চলো বাজিয়ে
কে বাজাও?
হে মাতা-
একী বাদ্য বেজে চলে একী !

ঝরা শেফালী পুষ্প অন্দর জ্যোতি
নির্ঘুম বন্ধু আর নাহি গীতি,
ল ও মোরে আলিঙ্গণে ক্ষণিকের তরে
ঘুম ঘুম জ্যোতি দেখি ফুরোয় এ রাত্রি |
============================================
মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে প্রার্থনা খুব কমই করি।
আমি মানুষটা পাপী। লজ্জা করে-পাপ করেছি,
 করছি তারপরও কিভাবে কিছু চেয়ে তাঁর দরবারে প্রার্থনা করি!
সৃষ্টিকর্তার কাছে চাওয়ার শেষ নেই। 
অতীতে অনেক কিছুই চেয়েছি। বিফল হয়নি বিনা ধ্যানের প্রার্থনা।
 আজ চাইবো অনেক কিছু।
 আজ আমাকে অনেক কিছুই চাইতে হবে। 
অনেক প্রত্যাশা আমার, অনেক চাওয়া।
 তিনি ছাড়া এই প্রত্যাশা পূরণ হবেনা আমার কখনো...

============================================

মরলে মানুষ ওজনে বাড়ে ? 
জন-শ্রুতি ! 

মন মরে গেলে দেহ ভারী লাগে
এটা সত্যি !

নিজ 'মনলাশ' বয়ে
এ আমার অভিজ্ঞতার রত্তি !
=============================================
~~খুঁজে দেখো~~ 

দিগন্ত রেখার পরে কী আছে ?
জীবনের পরে কি জীবন থাকে! 
কবির পরে যেমন কবিতা থাকে 
খোকার প্রশ্নের পরে কি প্রশ্ন থাকে ?

হৃদয়ের পরে যদি হৃদয় থাকে
খোকার প্রশ্নের পরেও প্রশ্ন থাকেই !
উত্তরের পরেও উত্তরও থাকে
খুঁজে দেখো সবই পাবেই !

আজ রাতে হৃদয়ের কথা গুলি
বলতে চাই হৃদয়েরই কাছে ।
আছে কোন হৃদয় এই রাতে
শুনবে কথা একান্ত কাছে ! 
======================================
~~তোমার-আমার সাত রঙ~~ 


স্মৃতিতে জমানো কমলা রোদের ক্যানভাসে বেগুনী রঙের বেনারসী কোলাহল ছেড়ে উড়ে যায়;
 উড়ে যাবে প্রতি গল্পের শেষে, 
অবকাশের খণ্ড আকাশ থাকে শুধু অপেক্ষায় রঙ বদলানোর ক্ষণ বদলানোর...
 তবু প্রতিবার বর্ষা এলে সবুজ হতে চায় হলুদ ধরা পাতার আলাপ; 
গোলাপের লাল হয়তো একটু বাড়ে। 
হাতড়াতে হাতড়াতে ঝাপসা অন্ধকার- ঝিম ধরা সন্ধ্যায় জীবনের গল্প আসে;
 থৈ থৈ গন্ধে পুরনো মোমবাতি- আয়েসি গুড়ি বৃষ্টি; 
সময়ের স্রোতে ভেসে উঠি তুমি আর আমি...... 
সাত রঙ গল্পে তুমি লাল বৃত্তীয় হৃদপিণ্ড;
 আমি নীল বিষ- দংশনে অস্থির নিজের ভিতরে 
ছন্নছাড়া প্রলাপে ডুবে ডুবে ভাসি দহনের জলে; 
ভালোবাসা তবু থেকে যায় চিতার অমোঘ চিতোরে 

.....তোমার-আমার সাত রঙ !    

============================================

~~থেকে যায় শুধু অনুরণন~~

স্মৃতির তেপান্তরে ঘোড়ার ঘুরের শব্দ 
ঘুড়-ঘুড় করে; কাশিতে রক্তের উদ্গরন মধ্যরাতের 
নিস্তব্ধতা ভাঙ্গে, আলাপনে আসো তুমি; ঝালাতনে কিছু টুকরো সময়
শিরায় শিরায় শিহরণ তোলে; কোলাহল নিঃস্ব নদীর দেহে...
এই ভাবেই সহে যায়, বয়ে যায় সময় আমার
তোমার দিকে দিক- দিগন্ত; ভাঙ্গনে অভিমানে অবিশ্রান্ত বোধের
বাষ্পীয় বাসনায় ভেসে থাকো রক্তরাঙ্গা মেঘে;
এই ভেবেই কী ভালোবাসা জমে ছিল
ধূসর বিবর্ণ ধূলির গোধূলির শেষে
অজানা অন্ধকারে; নিরুদ্দেশে হারাবার অভিলাষে

জানতো স্নায়ু কোষের ক্রমশঃ ক্ষয় রোগে
স্মৃতিতেও গোধূলি নামে
ঝাপসা হয়ে আসে আলোর পরিচয়
কি করে বলি; দারুণ গোপনে রাখা
তোমার মুখটাও ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে আজকাল।

স্বপ্নের শেষে অস্তাচলের ডাকে থেকে যায় শুধু অনুরণন
জানি ভাঙ্গনে আর ডাকবে না আমায় কখনোই
কাব্য শেষে তোমার ওষ্ঠ ব্যাকরণ ।।
==========================================
~~আমি ঠিক আমার মতো~~
 
আমি ঠিক আমার মতো করে খুঁজি তোমাকে 
বুঝি তোমাকে 
সোহাগে কিম্বা আদরে 
চাই কাছে স্পর্শ চাদরে।

আমি ঠিক আমার মতো করে ডাকি তোমাকে 
আমার ভাষায়; ভাঙ্গা অথবা জোরালো গলায় 
আমার আঙ্গিনা অথবা চায়ের কাপে 
নীরবতা অথবা প্রখর মৌনতায় ।

আমি ঠিক আমার মতো করে ভালোবাসি তোমাকে
আমার মতোই ভাবি
আমার মতোই ছিড়ি-কাটি
ঘেন্না করতে শিখি । 

আমি ঠিক আমার মতো করে আঁকি তোমাকে 
ঢাকি তোমাকে ওমের আড়ালে 
পর ভেবে অনুরাগে দূরে সরে 
বিরহ পোড়াতে শিখি। 

আমি ঠিক আমার মতো করে দেখি তোমাকে 
আলো কিম্বা অন্ধকারে 
ঘরের দুয়ার বন্ধকরে 
দারুণ গোপনে অথবা পচন্ড প্রকাশ্যে। 

আমি ঠিক আমার মতো করে বন্ধু ভাবি তোমাকে
দ্বন্দ্ব করি ছন্দ করি 
গোছানো কাজ মন্দ করি 
অনুভব করি নিঃশর্ত প্রত্যয়ে । 

আমি ঠিক আমার মতো করে বৃষ্টি দেখি 
সৃষ্টি দেখি; ভাঙ্গনের সুর গুনতে শিখি 
বোধের পচে জাওয়া ক্ষত উগলে ওঠা পুঁজে 
কুশীলবদের মুখ চিনতে শিখি । 

বস্তুতঃ সবারই থাকে নিজস্ব ভাষা
নিজস্ব ঢং 
মস্তিষ্কের অবুঝ টং টং 
কেউ কেউ পোষে খাপ ছাড়া ছন্নছাড়া উল্টো লেলিহান.... .  । 

===========================================
~~অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে ~~
 
এই পথ দিয়ে তুমি আসবে বলে ডাল ভাঙ্গা কদমেরা উঁকি মেরে ছিল 
অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে চুপচাপ ছেঁড়া স্যান্ডেল অপেক্ষায় ছিল
মগ্ন কোলাহল শেষে কাঁদা মাখা বালকেরা ফিরে গেলে পরে 
ঝড়ো -বাতাসে উড়ে আসা পাতার আঁচড় এঁকেছিল ত্বকে দারুণ শিহরণ ।
সংসার মুখ হাটুরেরা টুকরো গল্প নিয়ে ফিরে গেলে
নিভু নিভু পিদিমের আলোর তলে
আটপৌরে খুনসুটির আঁচলে মগ্ন মধুর অন্ধকার নেমে এসেছিল;
ধমনীতে বয়ে গিলেছিল উত্তাল অপেক্ষা
প্রার্থিত সময়ের অনুরাগে জল ফড়িঙের জলজ কাব্য বুনে রেখেছিলাম
চোখের অধারা আধারে; তুমি আসবে বলে গৌন্য ছিল ঝড়ের আর্তনাদ
জুগলবন্ধি হলে হাত ভেবেছিলাম খুঁজে নেব নিরাপদ আশ্রয়.........

এখনো দারুণ অপেক্ষায় পথ দেখছে জানালার কাচ
ভিতরে কেউ একজন পৌঢ় বয়স তার ত্বকে-মুখে আজো বৃষ্টির ভাঁজ । 
===========================================
~~দহনে কাছে দারুণ অল্প তবু হতে পারে পৃথিবীর প্রথম ও শেষ প্রণয়ের গল্প~~
 
প্রত্নতত্ত্ব নগ্ন করে দেয় পাথরের ঘুম
জেগে ওঠে কাটাকুটি দাগ অস্পষ্ট দৃশ্যের ছাপ 
ধ্বসে যাওয়া নগরের দুষ্পাঠ্য ধুসর আলাপ 
বুঝেছিল শুধু দুই প্রাণের দহন
পৃথিবীর প্রথম প্রেমের চিঠি গুহার অন্ধকারে
ভাষা খুঁজে খুঁজে হয়রান ব্যাকরণ অভিধান
সময়ের অভিযানে মৃত সে গান;
ক্ষরণের জল উড়ে গেছে দারুণ দহনে
মৃত্তিকার গহীনে ফসিলের অন্তর্ধান
তবু আজো প্রেম অনুভবে- শিহরণে
পৃথিবীর প্রথম যুগলের ক্ষরণের মতো
প্রকাশেই পার্থক্য লুকানো যত......


প্রিয়তমা
চেনা মৃত্তিকার গন্ধ উড়ে গেলে
খসে গেলে সহস্রাব্দীর পলেস্তরা
পৃথিবীর মেকাপি গালে আমারও ঢেকে যাব
চিরতরে দুষ্পাঠ্য হব কালের আঁধারে

দহনে কাছে দারুণ অল্প তবু হতে পারে পৃথিবীর প্রথম ও শেষ প্রণয়ের গল্প 

===============================================
~~অনুতপ্ত~~


নিরবে নিভৃতে, একাকী নির্জনে 
সহস্রবার কেঁদেছি,
ঘুমহীন নিশুতি রাতের আঁধারে
স্মৃতির দহনে পুড়েছি,
প্রতিটা মুহূর্তে দৃষ্টির সীমানা জুড়ে
তোমাকে শুধু খুঁজেছি,
জানি না তুমি চলে যাওয়ার পর
কত রাত জেগেছি,
ভুল করেছি, ভুল মানুষের প্রেমে
জীবনের সুখ খুঁজেছি,
তুমি বিশ্বাস করো, নাই বা করো
আজো আমি তোমার-
অপেক্ষায় রাত্রি দ্বি-প্রহর গুণছি !

==============================================
তাকেই বিশ্বাস করুন,
 যে কিনা আপনার
হাঁসি দেখে আপনার কষ্ট বুঝে নেয়....!!
 যে কিনাআপনার নিরবতায় কান পেতে আপনার
কথা গুলো শুনতে পায়.....!! 
এবং যে আপনার রাগ অভিমান দেখে আপনার
ভালোবাসাকে বুঝতে পারে.....!! 
কারন,,, নিঃসন্দেহে সে সত্যিই আপনার...!!

===========================================
~~অচিন পাখি~~
 

চলে যাবেই যদি, তবে যাওনা চলে
নাফেরার দেশ থেকেও বহুদূরে,
কেন শুধু শুধু এ সুদীঘর্ পথ চলা !
মিথ্যে ভালবাসার জয় পরাজয়ে-
পাপেতাপে এ জীবন যাচ্ছে ক্ষয়ে ।
অনেক'তো হলো, আর কি বা বাকি
হিসেবের খাতা আজো শূন্য দেখি,
অন্ধত্ব লোভ লালসায় নিত্যানন্দ !
মিথে্য,সবি মিথে্য মায়ার জলছবি
ও মন,মন'রে আমার অচিন পাখি ।
=====================================
~~মানুষ নামের সবাই পাপী~~

কি যে এমন ভংধরেছ
গুপ্ত রঙে সং সেজেছ ,
চোরকে ডেকে ঘরে নিয়ে 
মনি মুক্তার খোঁজ দিয়েছ ?
শয়তানি আর ধোঁকা বাজী
মানুষের মগজে বসে
চোরের মতো চুরি করো !
সত্য সত্য চিল্লা পাল্লা
মহা জ্ঞানে সত্য পথে
মানুষ নামের সবাই পাপী!
==========================================
~~আমার ধর্ম~~

অন্তহীন পথে আজন্মের মুক্তি কামি মানুষ খোজাই আমার ধর্ম !
পথের বাকে বাঁকে অনিয়ম আর অবহেলার যা কিছু 
তীব্র যন্ত্রণাই মানুষ কে কষ্ট দেয় তাই আমার সৃষ্টি !
নগণ্য আমি নিয়মের অপারগতাই কোন নিয়ম মানিনা ।
শুধু চুপটি করে খুবনিরবে শাসকের পায়ে পৃষ্ট হওয়া
অসহায় মানুষের নির্মল মুক্তি খুজি ! 
=========================================

~~এখন ঘুমে~~

চৈতন্য নাহি আজি
দেহ মন প্রাণে ,
অবচৈতন্যে থাকি আজি
অঙ্গ মাঝে আনে -
ওরে তোরা চলরে জীবনে জীবনের জোয়ারে ভাসি
বাজারে তোরা জীবন বাঁশী;বাজারে বাঁশী ।

সুখ স্মৃতি জাগুক মনে
মন ভরায়ে গানে ,
ভুলে গেলে তারা এ জীবনে
ছুটলো দূর পানে-
ওরে তোরা গাও আজি জীবন গানে , চৈতন্য ফিরুক ঘরে
ও জীবন ঘরে লাগুক হাওয়া এসো জীবন দুয়ারে ।

ও চৈতন্য আজি নাহি জাগুক ঘরে
নাহি তোরা স্মরণি রাখগো মোরে ,
মনঃ রূপের রঙ্গ পারা হইলে হারা-
ও জীবন দুয়ারে , জীবন দুয়ারে ।
আগাগোড়া পুরোপুরি রাখিয়া ঘরে
মনরূপের সাড়া জাগালি দুয়ারে .
জীবন তরী ভাসাইলে অবচৈতন্যে
মনঘরে মনঃ থাকে নাহি অন্যে ।
এবার তাই ঘুম ছাড়ি জাগো জাগো
বেভোল গানের সুর মাগো মাগো,
জীবন মাঝে ঘর বানায়ে , থাক -
ঘরের দুয়ার লাগাইও রে নাক ।
এথায় থাকি জীবন মাঝে গভীরে
স্বাতন্ত্র্য রাখিরে জীবন দুরারে,
দুখানি তাহার কপাট একখান ঘর
এক দিয়া আসি যায় খুলি অন্যদোর ।

ওরে তোরা আসি ফিরি
ঘুরি ফিরি চলোরে ঘর ছাড়ি -
জীবন কাননে নাহি গানে
সুরের লয়ে মন নাহি মানে ;
আজি এই ক্ষণে তোরা
অনন্ত ঘুমের মাঝে হও হারা ।
============================================

No comments:

Post a Comment