Wednesday 7 August 2013



~~বন্ধু~~



বন্ধু মানে মেঘলা দুপুর, শিশির ভেজা ভোর,

বন্ধু মানে ফেবুতে
কমেন্ট আড্ডার আসর।
বন্ধু মানে অনেক খুশি
একটু অভিমান,
মনের মাঝে কোথায় যেন
একটু খানি টান
বন্ধু মানে নীল সাগারে
উছলে পরা ঢেউ,
বন্ধু মানে মনের মত
খুজে পাওয়া কেউ।
বন্ধু মানে দুরে থেকেও
আসা কাছা-কাছি
সকাল বিকেল জানিয়ে দেওয়া
" বন্ধু তোমায় ভালবাসি"
=============================================
মেঘালো রোদ-দুপুরে কারসাজি,
হালকা রঙ্গিন ছোঁয়া,
 মন-নৌকার পালতোলা,
 তার স্বচ্ছ ঢেউয়ের উপরে, 
খেলছে ফানুস, ঘুম আয়েশে, 
অলস বেলায় সকল তাঁরা,
 চুপকথাদের ভীড় জমেছে, 
একলা সবাই নিজের সুরে,
 দোলে দোলে সরে যাচ্ছে আপনমনে...|
==============================================
ছায়ারা যেমন ডানা মেলে দিতে থাকে,
 অদৃশ্য হাতছানি- মন রেখে দিও,
পাশে শুয়ে নীরব স্পন্দনে রোদেলা, 
পিছুটান জন্মেছে বাঁধনে নীল সুতো,
 মৌণতায় সার বাঁধা মিছিল শেষে, 
এখানে দাঁড়ালে সূক্ষ বিষাদে,
হ্রদ জুড়ে দেখো পানি কালো পানি, 
রেলিং থেকে টুপ করে এক ফোঁটা,
 গড়িয়ে পড়ে অঝোরে শূণ্যতা,
 নেমে এলো যখন ডানা মেলে দিতে...|
=====================================================
ঘুম মিলিয়ে যাওয়া রাত-বিষাদে কল্পদিনের সুর,
ভেবে নাও ধোঁয়ায় মোড়ানো নির্মল কোনো সময়,
দিশাহীন স্বপ্নখোরের গান,
ঘুম যাও, ঘুম যাও, 
ধূসর চিন্তার নকশা বুনে ঘুম যাও,
 যারা ঘুমে নেই তারা খুঁজে নিবে সূর্য উপাসকের ঠিকানা।
==========================================
লাল চোখ দিকভ্রান্ত হিংসা জ্বলে থাকা প্রাচীন, 
উল্কি আঁকা নিশাচর, জমিনে কেউ নেই কাছাকাছি ,
আড়াল -দূর গাছপাতাদের ভীড়, ভেসে যাওয়া ডানাময়, 
তার বুক বরাবর ঈশ্বর, টানটান পেশীতে,
প্রলাপঘন শিকার, অস্থির পায়ের ছাপ ধরে,
 চলে গেছে সকল ধীর, ধীরে অবশেষে, 
ছিন্নভিন্ন কাঁটাতারে ঝুলে থাকা অংশবিশেষ,
 শান্ত চোখের কোণে ঝরে পড়তে থাকা,
 বিশ্বাসঘন কালো রঙ্গে এখনো উষ্ণ ।।
=============================================

কত তুষারকণা নির্মল ঝরে মিলিয়ে যাওয়া চুপচাপ,
অস্থির বিন্যাসে গতিপথ বদলায় ধীর,
 বিক্ষেপণে এঁকে দেয়া মৌণ দিনের কত না বলা কথা...|
=============================================
নীলাকাশে ধবধবে সাদা
একজোড়া উড়ে যাওয়া
বাড়ি ফেরা

খাটে কাঁধ দিয়া
কাঁধে খাটিয়া

চিৎ হয়ে মুখ ঢাকা
সাদার মাঝে ঈষৎ কালো
বাদামি মানুষের মাথা নুয়ানো

কাঁধে খাটিয়া
খাটে কাঁধ দিয়া

দোল দোলিয়া বাড়ি ফেরা
ফুলশয্যা ভ্রমরে ঢাকা।।
=============================================
রং ধুঁয়ে গেলে সকলেই ছায়া হয়ে যায় অবুঝ /
 ফ্যাকাশে চামড়ার ভাঁজে লবণের আস্তর পড়ে /
 নিস্পৃহ চোখ দেখে /
 দেখে টুকরো মাপের বেঁচে থাকা /
 পলিথিন ব্যাগ ভরা কিউবিক আকারে /
 লোভ ঝুলে থাকা কসাইখানার দেয়াল জুড়ে / 
কেজি দরের রক্তমাংস, যত্নে সাজানো / 
কারো খাবার পাতে খুঁজে পাওয়া এসবের মানে /
 মূলতঃ হজম হয়ে যাওয়াতেই শুক্রিয়া ঈশ্বর।।
==========================================
গির্জার পাশে টিকেটঘর / 
মলিন পর্দায় অবিন্যস্ত মানুষের মুখ / 
উৎফুল্ল উৎফুল্ল পোশাক // 
অনির্দিষ্ট আলো নিবে যাওয়া চোখ / 
অবশ শরীরের চৌরাস্তা / 
এলিয়ে পড়া গন্তব্যের ছায়া / 
সোডিয়াম পোস্টে ফ্যাকাশে চামড়া / 
জীবন - চেতনা, চেতনা, চেতনা -মুক্তি...শূণ্যতা।।
===========================================
ঘুরে নেমে যাচ্ছে রোদমাখা / 
মাটি বরাবর / 
শুয়ে আছে পলকহীন ইশারা / 
সফেদ ঘরের মানুষ /
 তার ডাক শুনে পাথরের ঘর / 
ভেঙ্গে পড়া বেড়ার ফাঁক গলে রুগ্ন হাতেরা / 
খুঁজে ফেরে আশ্রয় যেখানে / 
শীতলতা জড়িয়ে শাখাময় /
 পরিচিত স্পর্শ আগলে /
 প্রাচীন কোনো আবেগের জমে উঠা /
 কাঁপা কাঁপা বুকে / 
এইসব ভীড়, ভুল ঠিকানা / 
লাশেদের কাছাকাছি নিয়ত বেঁজে যাচ্ছে জেগে উঠার কান্না ।।
============================================

সে ফিরে যায় অবাধ্য শহরে /
 মনকল্পে আঁকা দূর যত বাড়িঘর, সারি দেয়া / 
নিঝুম, ঘুমে গেছে মানুষেরা সকল / 
অবুদ্ধ প্রহরে খুঁজতে থাকা // 
হেঁটে যাই, দাঁড়িয়ে পড়ি / 
আবারও চলতে থাকি / 
নির্মাণাধীন প্রকল্প গড়ে উঠতে থাকা মাথার ভেতরে / 
এগিয়ে যায় নতুন নতুন পথ /
 প্রতিটি চৌরাস্তাই দ্বিকভ্রান্ত লাল-বাতিময়...
==========================================
উড়াল দেয়া যেমন ডানা ঝাপটায়
সূর্যের নীচে তার মোমালো দেহ
ধনুকের বাঁকানো পিঠ
ক্রমশ চিৎকার- দানা বাঁধে বুকে
সে আলোধীর উঠে যায়
নীলছাদে তারাময় শূণ্য
দেহভ্রম পাথরের উপত্যকায়
ফুলেল বেদী
ঠোঁট ব্যবধি লেগে থাকা ডাক।।
=========================================
ব্যস্ত মেঘকিনারা ছোঁয়ে আসা উজ্জলপ্রভা /
 চোখের আলোতে নাই বা থাকো / 
দিন-প্রদীপজ্বলা সন্ধ্যাঘন /
 ভীষণ ছায়াতে দেখো অস্থির মন //
 কেনো দূরের ঠিকানায় / 
বলো বৃষ্টি যদি না হয় সেদিন / 
শীতল হাওয়াময় একলা রাত /
 চাই না /
 চাই না / 
নীরবতায় রেখে যাওয়া এমন শূণ্য শেওলের ডাক।।
===========================================
ধোঁয়াউড়া ঘূর্ণিমাতাল / 
এলেবেলে ছড়ানো / 
দেহউল্কি অস্থির বিন্যাস / 
অবোদ্ধ সংকেত সময় / 
নীড়হীনের প্রলাপঘন শ্বাস / 
হালকা নেশার মতোন খনিত উপলব্ধি / 
বিরাজমান সকল দেহপ্রাণ /
 নিষ্পাপ কান্নার থেমে যাওয়া দাগ...|
==========================================
কোনোদিন বাঁকহীন পথে হেঁটে এলে / 
মধ্যবর্তী ছায়াযুগল / 
বিনম্র দৃষ্টি মেলে দেখো / 
কাজলের রং ধুঁয়ে গেছে // 
সোঁদামাটি থেকে উঠা / 
গালিচাময় ঘ্রাণ /
 বুকে নাও আর চোখে রাখো / 
দূরন্ত নীলে বিমূর্ত প্রাণ।।
==========================================
দূর নীল উঁকিঝুঁকি খেয়াল / 
ঘর, জানালা ছেড়ে উড়াল / 
দুলে দুলে সরে যাওয়া / 
নৌকা, ছাউনিতে লালকাঁথা / 
যত্নে তোলা কারো মায়া /
 সূঁচতীব্র ব্যাথা / 
জলাকাশের দোরগোড়ায় / 
ক্ষুদ্র মানুষের মুখ / 
বিমলানন্দে এদিক-ওদিক হাওয়া /
 মাতাল, মনপিয়াসী খুঁজ / 
ধীর আকাশে রংবদলের খেলা /
 গর্জনে, ক্রোধে, জেগে উঠা মনপদ্মার অস্থির ধারা...
================================================
অর্থহীন বেঁচে থাকা ভাবলে /
 দু-হাতের শিরায় শিরায় নেমে আসা শ্লথ / 
এক ছুরি ধাঁরে ছোঁয়া বোধ / 
গড়িয়ে নামা বেঁচে থাকা এইখানে /
 শুয়ে খুব আরাম করে বিছানা / 
কোমল চাদরে নরম / 
মাথা রেখে দিলে আলতোভাবে আয় / 
অবশ বেলায় রাতপাখি ডানামেলা / 
শীতল ঘূর্ণি আয়...
===========================================
শীর্ণনদী -ভ্রমে বয়ে যাওয়া উন্মত্ত স্রোতস্বিনী / 
কখনো ছিলোনা কেউ এমন রোদেলা দুপুরে / 
বালিময় তীর ঘেঁষে সবু্জে কাঁশবন / 
সফেদ মেঘের দিকে দূষ্টি ফেরানো আয়নায় ফলিত সালোক / 
অস্থির জংলা ফুলের কেঁপে কেঁপে যাওয়া বাতাসে / 
উড়ন্তযুগল ফিরে দেখা ধীরে বিস্মৃত ধারাময় শীতল / 
ধুঁকে ধুঁকে ম্লান রেখাবিশেষ/ 
আগ্রাসী বিস্তীর্ণ ইট-কাঠের চোরাবালি /
 বুকে ম্লান তাঁর ঘোলাটে ছবি ।।
======================================
মেঘালো রোদ-দুপুরে কারসাজি / 
হালকা রঙ্গিন ছোঁয়া / 
মন-নৌকার পালতোলা / 
তার স্বচ্ছ ঢেউয়ের উপরে / 
খেলছে ফানুস, ঘুম আয়েশে / 
অলস বেলায় সকল তাঁরা / 
চুপকথাদের ভীড় জমেছে / 
একলা সবাই নিজের সুরে /
 দোলে দোলে সরে যাচ্ছে আপনমনে...
============================================
~~ভয়~~

চোখের কোণ দিয়ে আবছা দেখা যায়
দাঁড়িয়ে আছে; পাতা সরে গেলে কিছু সরসর
তাঁর নিচে ফাঁদ, শ্বাপদে শিথিল চেয়ে থাকা
মাটিতে নরম। বাতি ঘিরে প্রজ্জ্বলিত আগুনেশিখা

ছুঁয়ে আছে পরিত্যক্ত বিছানায় ডুবে 
উঁচু কাঁধ, লম্বা দু'টি হাত পাশে
মৃত শরীরের গন্ধ জড়ায়ে
প্রাণহীন খোলা চোখ, ইশারাবন্দি সিলিং,
হালকা পায়ে নেমে যাওয়া মসৃণ নীরবতায়
রক্তমানুষের ধাবিত পদক্ষেপ ।।
=======================================
~~স্বাধীনতা আমি~~ 

স্বাধীনতা আমি-
গান গাই উল্লাসে
"জয় বাংলা,
বাংলা'র জয়"

স্বাধীনতা আমি-
অবাধ বিচরণ
শিরোনাম
জাতীয় দৈনিকে

স্বাধীনতা আমি-
পঁয়ত্রিশ বছরের
অশ্লীল গালিগালাজে
অপমান মুক্তির

স্বাধীনতা আমি-
খেয়ে না খেয়ে
প্রায় পনেরো কোটি
স্বাধীন অক্ষমতা

স্বাধীনতা আমি-
চেতনায় কখনোবা
দেহপসারিণী হাঁটে
বিকি-কিনির রাত-দুপুর

স্বাধীনতা আমি-
স্বাধীনতার ভাষায়
পরাধীন বিপরীতে
যাপিত
একহাত উপরে
উচ্চবর্ণ শৃঙ্খল!

স্বাধীনতা আমি-
সত্যিকারের
মুক্ত ছিলাম
পূর্বদিগন্তে-র
হারানো আভা
আজ খাতা-কলমে

(ক্ষত আছে অনেক
তার গভীরতার মতোই
গুনছি এখনো
-ক্ষতি নেই...)
==============================================
হাতেরা বাঁধা ছিলো, সকলে নির্বাক ছিলো; 
সাহসে মাথা তুলে উঠে নাই কোনো। 
ভালোবাসা- এতো ভালোবাসার বিষ-অর্জন করে নাই দাপটে!
মূক-বধির সামাজিকতা
হিংস্রমানবের আদর্শমূর্তিতে উলঙ্গই রয়ে গেছে
=============================================
মুখোশ বেঁধে নিয়েছি হ্রদপিন্ড
দেখি
সব এখনও
দেখি
পরচুলার মতোন খুলে আসা
পরজীবি গাছেদের মায়া
নতমস্তক অধীনতা আর
আমার চোখ দুটো দিব্বি 
ডোবে যায় কোটরে
শূণ্যতা খুঁজে
ক্রমশ...
==========================================
 " আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো
খুব ছোট একটি স্বপ্নের জন্যে
খুব ছোট দুঃখের জন্যে
আমি হয়তো মারা যাবো কারো ঘুমের ভেতরে
একটি ছোটো দীর্ঘশ্বাসের জন্যে
একফোঁটা সৌন্দর্যের জন্যে। "
==========================================
" মানুষ বড়ো কাঁদছে, 
তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও
মানুষই ফাঁদ পাতছে,
 তুমি পাখির মতো পাশে দাঁড়াও
মানুষ বড়ো একলা, 
তুমি তাহার পাশে দাঁড়াও । "
=========================================
চাওয়া হয় নাই নিঃসঙ্কোচে
সফরনামায় যা ছিল একা নিভৃতে
ক্লান্তপথ হারানোর অনুভূতি লেখা শব্দনামা
ফেলে দিলে অবসাদে জানার বাইরে 
দূরে; কিছু কাছে থেকে দেখার ইচ্ছাঘুমে
ক্লান্তশরীর জানে না এইসব আলাপের কথা
কি নীরবে হারায় বাকহীন তোমার ছন্দপতন
মর্মর ধ্বনিত শুকনো পাতায় পাতায় মিশে গেলে
নির্মম থেকে যাওয়া অনেক রঙ্গের প্রলেপ
স্বছচোখে দেখতে থাকা নিজের ছায়ারা
সন্ধ্যার খুঁজে হেঁটে বেড়ানো ঘরবিহীন ঠিকানাময়
আকাশের নীচে নগ্নপৃথিবীর খোলা পথ-প্রান্তর...
=========================================
দেখ কিভাবে সময় ফুরিয়ে আসে
অতিক্রান্ত সূর্যদিনের অবিলাসী ঘামে
হাতের মুঠো থেকে খসে যাওয়া
ছিটানো ভাতের সফেদ দানায় দানায় 
ক্ষুদাক্লান্ত স্বপ্নচারী মন-আসক্তির নেশা
চলে গেলে...
=======================================
এই যে দাঁড়িয়ে থাকা এখানে 
অদ্ভুত সময়ে ফিরে তাকানো
নীরবঘুমের স্বপ্ননীড়
মনসুরে কেঁপে উঠা তোমার কন্ঠ
মোলায়েম ধ্বনিত অনেক শিশিরকণা
জমে থাকা ক্লান্ত--
কম্পনে বাতিভ্রান্ত সড়কের ব্যস্ততা ভুলে 
কত মুখ হারিয়ে যায় 
একফোঁটা আলোর খুঁজে বিষাদীয়
========================================
দেখে নিলে একঝলকে উন্মাদ পৃথিবী
ফেলে যাওয়া হাতের শীতল ছোঁয়া
হত্যাকান্ডের খবর ছাপা হয় নাই
রক্তমনে ছোপ ছোপ লেগে থাকা
গভীর অহঙ্কার। চাঁদ উঠার পরে
বিদ্রূপে, নীলতারারা কেউ না জানে
যতোটুকু দৃষ্টিসীমার মাঝে
দেখে নেয়া অন্ধকারে প্রতিফলনরত 
ভয়নীরব প্রকৃত ইচ্ছাবাণী, ধাঁর ছোঁয়ে
প্রলম্বিত উচ্ছাসে
বাঁকা পিঠ, নুয়ানো মাথার আদল
ঝুকে ঝুকে গাইছে পারাপারের গান।।
============================================
~~স্ট্রীটল্যাম্প~~


সবথেকে কমদামী ঠোঁটজোড়া
অপেক্ষায় থাকে একাকীর,
মথেরা ঘুরপাক খায় মাথার উপরে।

সবকিছু চলে যেতে হবে!
যারা কোন কিছুর যোগ্য নয় তাদের কাছেও,
নীরবকান্না শুনো যখন
মথেরা ঘুরপাক খায় মাথার উপরে।

কবে থেকে হালকা বৃষ্টি
মানে ক্ষুদা'র কান্না,
নিঃস্ফল শ্রম,
অথবা একটি অবদমিত চোখ?

মথেরা ঘুরপাক খায় মাথার উপরে,
প্রতিরাতের মত
তারা ভালোবাসার বি্কৃত দিক দেখে নিয়ে।
===========================================
দেখে নিলে একঝলকে উন্মাদ পৃথিবী
ফেলে যাওয়া হাতের শীতল ছোঁয়া
হত্যাকান্ডের খবর ছাপা হয় নাই
রক্তমনে ছোপ ছোপ লেগে থাকা
গভীর অহঙ্কার। চাঁদ উঠার পরে
বিদ্রূপে, নীলতারারা কেউ না জানে
যতোটুকু দৃষ্টিসীমার মাঝে
দেখে নেয়া অন্ধকারে প্রতিফলনরত 
ভয়নীরব প্রকৃত ইচ্ছাবাণী, ধাঁর ছোঁয়ে
প্রলম্বিত উচ্ছাসে
বাঁকা পিঠ, নুয়ানো মাথার আদল
ঝুকে ঝুকে গাইছে পারাপারের গান।।
===========================================
~~ঈশ্বরের নামে~~


হাজার নামের ঈশ্বর তোদের
ভক্তি-প্রার্থনায় পূজ্য
লাখো মানুষ না খেয়ে মরে
সবই না কি তাঁর কর্ম!

মানুষে মানুষে দ্বন্দ
ধর্ম তোদের বাণিজ্য
নিজের পাল্লা ভরে গেলেই
বিধাতা না কি তুষ্ট!

গেয়ে যা তাঁর গান
শুনবি না মানুষের আর্তনাদ
সবই না কি লীলাখেলা
জমিন-আসমানে তাঁর কল্পভেলা!

নিজের দরজায় দেখ কতো লাশ
পঁচে-গলে গেলে মহামহিম জানে
তোদের নেই কোন পাপ!

পূণ্যশিকারী হায়েনার দল
মানুষ যদি বলি-
অপমান সহস্র মানুষের যারা
পায় নাই মানুষ হওয়ার দাম!

বিলাসী ভগবান জানে সব
পাপের জন্মভূমি
পূণ্য তোদের অভিশাপ জানিস
স্বার্থসুখের দাস।।
=========================================
~~পবিত্র পশু~~


কারো কাছে বলা হয় নাই
কথা শুনে যাবে যে ঈশ্বরের দোহাই
এ ঘরের মানুষ পরের মানুষ; নিজের কাছে
কোন ঘর নাই

না পাওয়ার অনেক পূর্ণতা দেখি
পাওয়াগুলো কেন জানি না পাওয়াই থাকে
সে ঈশ্বর জানে না মৃত-নিয়তি
পালে পালে উড়ে যাওয়া
যেদিকে নিশীথে বাতিময় শহর

এক আঙ্গুল তুলে দিয়ে মাথার উপর
নিশ্চিন্ত বাণিজ্য; দোহাই সে কল্পচেতনার
মানুষগুলো পাষাণ এমন
চোখ বদলেই হায়েনা শিবির
টেনে-হিঁচড়ে খেয়ে যায় নিজেদের
দোহাই সভ্যতার!

সৌন্দর্য ক'জনেই জানে? বিভৎস
চেহারা ক'জনেই দেখে?
নর ছিল যে পশু সে মানুষ নামে পরিচিত
তুমি-আমি-সকলে ঘৃণ্য; মুখোশে ঢাকা
পবিত্রতা ছুড়ে ফেলে দিলে পশুত্বই জেনো শ্রেষ্ঠ।।
============================================
~~চেতনাবৃত~~


নীরবে ঝরে পরছো সকাল
অদ্ভুত আলোকিত দু`টি চোখে

নিজের ছায়া
ভাবছো
আদর্শমহান

নতজানু হ্রদয় স্পন্দিত
মূহুর্ত সকল, জেগে থাকার ইচ্ছা ভীষণ

পলকে তুমিময় পৃথিবী ছেড়ে
দেখো কেমন স্মৃতিবিচূর্ণ কথামালায়
কেঁপে উঠছে বুক থেকে
এখানে থাকার কল্পনা এমনই

কেন যে সকাল এতো দূর
পাজর থেকে অভিশপ্ত নারী?
কত জীবন কেটে যায় অবশ
কষ্টমুখর আকাঙ্খাহীনতায়

এখানে দাঁড়িয়ে
উন্মাদ শহরে
কেউ চিনি না কারো মুখ; আবছায়া
শরীরের ভীড়ে হারানো দ্যুতি
না জানার পাপে ভেসে যাওয়া
সুন্দরতম মায়ামন দৃষ্টি।।
=============================================
~~হাওয়ালেখ~~


লিখছি হাওয়ায় উড়োজাহাজের নাক,
বিমর্ষ বৃক্ষের ছায়াতলে রৌদ্রইকারুস।
লিখছি আসলে পাতালপ্রবেশ আর
অগুন্তি সুড়ঙ্গের মুখ। তবু কারা এত
লিখে পাঠাচ্ছে আমায় সুইসাইড নোট!
হায় সিট্রাস! তোমার অদৃশ্য কালির ওপর
জেগে উঠেছে জগতের সমস্ত মিথ।
তুমি হনন আর মৃত্যুর মাঝখানে বসে রয়েছ।
আমাদের ‘রানওয়ে’ জুড়ে এত চাপ-চাপ
রক্তের দাগ! আমাদের এ্যারোড্রোমগুলো
সৌরপতনের বিকট শব্দে আজ মুখরিত...
=============================================
~~হাওয়ালেখ ২~~

ঘোর লাগে প্রপেলারে। কার গায়ে জেগে থাকে
ওই মেরুন রাত্রিবাস? দ্যাখো মানুষপুতুল,
লৌহকারখানা থেকে উঠে আসে কেমন
সুগ্রীব বিমানের ঝাঁক! আমাদের আশ্চর্য
এ্যারোড্রোমগুলো সব ডানা ভাঙার আর্তনাদে
ভরে ওঠে। মানুষ জেনে গেছে পতনের শব্দ
মূলত জাগতিক সংকেত এক, পুনরুত্থিত হবার।
ফলে বাতাসের গান বাজে, তরঙ্গ লিখে রাখে
আয়নোস্ফিয়ার।
===========================================
~~তরী~~


ঘড়ি থেকে উৎরে যাচ্ছে কল্পিত
উন্মাদ ছবিতে টানছো অনিয়ম চৈতন্য
ঢেউনিবিরে পড়ে থাকা জাগ্রত
দুলছো প্রবল, বিনম্র দৃষ্টিমনে

চোখ মেলে দেখো সফেদ চিল
উড়ে যাওয়া সুকৌশল
আরোপিত ঠিকানার খুঁজে 

নীল-শূণ্যতার দোহাই
পৃথিবীর তটে ক্লান্ত মানুষের পায়ের ছাপ
দাগ কাটছো মানবিক উত্থানের
উপাত্ত বাণিজ্য

অনন্ত কারো নাম নয়

পাড়ি দেয়া সমুদ্ররেখার পড়ে
গহীনতর অনিয়মে ভেঙ্গে পড়া
পাথরের প্রাসাদ; দেহবন্দী মানুষগুলো
সকলেই খুব একলা থাকে।।
==========================================
~~হাওয়ালেখ ৩~~

ফুটেছে হাওয়ার ফুল।
নীল আমব্রেলা।
অসুখের দিকে রাত্রি সরে গেছে।
গ্রন্থ-মলাটের নিচে
বয়ে গেছে রক্তাল্পতা।
আমরা তো দেখিনি আজও
প্রসূনসভ্যতা, আইসিস,
দেখিনি নতমুখী ফুল।
গ্রন্থ-সরণির পাশে কী করে
শুয়ে থাকে নশ্বরতা!
হায় মুদ্রারাক্ষসের দল,
তোমাদের কাছে জমা রাখি
আয়ুর ভ্রমর, সুখ্যাতি,
আত্মখুনের বারতা।
==============================================
~~হাওয়ালেখ ৪~~


এ’ বৈধব্যে পুড়ে যাক মেঘ। হাওয়ার বারতা।
তুমি প্রাচীন পুস্তক নিয়ে কথা বলো।
যার ভাষা অস্পষ্ট। দিকে-দিকে কার এত
গোপন সংকেত আসে! বিদুষিকার লণ্ঠনে
লেগে থাকে নির্জ্ঞান, প্রবুদ্ধ শহরের আলো।
মহাচৈতন্যের মাঝখানে নিশ্চেতন যেই
দেবদারু গাছ আছে; অনুবাদে তারাও সক্ষম।
তারা জানে পৃথিবীর প্রাচীন পুস্তক সব
মেলে ধরা আছে আজ বিদুষিকার দিকে।
যার তৃতীয় নয়নে বিদ্ধ তীর। যার করপুটে
অতীতের লিখনরীতি হাসে।
==========================================
ভাষা নেই যে চিরনবীনা
উন্মুক্ত কন্ঠে মনপাঠ 
স্বপ্নসুরে বাঁধা এ অজানা নীল

ছায়া আঁকি
নিবিড়ে সুন্দর দু'টি চোখ ভাবি
এমনত দিন যায় প্রলাপে বাকহীন 

ধীরে জানি ফুঁটে উঠে
সে ক্যানভাস ছেড়ে 
কত প্রলেপে সূক্ষ কষ্টের মত

কি করে জানি না হারিয়ে যাই
কখনো এমনও বারতায়।।
==============================================
একটু এগোলেই কিনারায় গভীর খাদ
মাটি সরে গেলে পায়ের যে ঠাঁই নেই
কল্পনায় লালন করা সে শূন্যতার ছবি
প্রতিটি দিনের প্রলেপে বিষাদঘন 

এখানে কেউ নেই ব্যস্ততায়
কেউ নেই কেঁদে উঠা আর্তনাদে
প্রিয়জন হারানোর দুঃখমনে; কিংবা
নরপিশাচদের সুখী মুখোশে

শিথিলতায় বয়ে যাচ্ছে বিদায়বার্তা
জানার কেউ থাকে নাই,
কারো জানতে হয় না;
সময় যার কাছ থেকে হারায়
সে না জানায়ই তো মুছে যায়

একটি গাছের খুব কাছাকাছি দাঁড়াই;
যে কালে বিকষিত দীর্ঘশরীরে
পথক্লান্তি যাপিত বেড়ে উঠা শাখাময়
ছন্দনিবিড়ে ব্যপ্ত মহান। সে আকড়ে ধরেছে
মায়ার মাটি অদম্য প্রাণের সুরে;
প্রলম্বিত ছায়া পড়ে আছে যার গভীর খাদে

বেঁচে থাকার স্বাদে বুক ভরে উঠে
লোহিত-উজ্জ্বল নেশা--
তাঁর পাশে নীরব কথপোকথনে
শান্ত পৃথিবীর অঢেল বৈচিত্র;
অগ্রজ সময়ে পা ফেলি, জীবন তোমায় ফেলে।।
===============================================
~~হাওয়ালেখ ৫~~

শেষমেষ গ্যাসোলিনই সত্য, 
গতিনির্ভর এই পৃথিবীতে
আর রাষ্ট্রনায়কেরা পিস্তলেরো। 
ফলে বুদ্ধি ব্যতীত আর
হারাবার কিছু নেই। 
আজ পৃথিবীর ম্যাপ নিয়ে মেতে আছে কারা?
উজবুক, না কোন রাজর্ষী? 
কার নাম লেখা আছে গ্যালিলির সমুদ্রতটে?
সে সত্য সযতনে লুকিয়ে রাখে আজ লৌহ, 
আকরিকের পাখি।
============================================
যা কিছু সব পবিত্র তার নামে
বিশ্বদ্ধায়নে ব্যস্ত নীতিভন্ড পূজারী নর

দুই হাত তুলে কাঁদছো , পেতে চাইছো মানুষ হওয়ার মর্যাদা;
যারা না খেয়ে মরে গেছে তাঁরাও চাইতো -আকুলে
স্বর্গমনে ভ্রষ্ট- দ্বীনভারে নুয়ানো মাথাগুলোর মাঝে
কেউ দেখে না সত্যদিশা, স্বার্থান্বেষী সামাজিক কাপুরুষেরা!

তাদের কাছে পাল্লা আছে, পূণ্যভর্তি পাল্লা;
গুনে গুনে যা কিছু নিজের প্রয়োজন তাই থাকে,
মানুষগুলোর জায়গা হয় না পাল্লায়; কখনো
প্রতিকী দরদ ক্ষুদার্তশিবিরে আনে নাই আলো
যারা মরে গেছে
তাঁদের আলোতে খুব বিভৎস দেখায়

লাশের স্তুপ থেকে অদূরে ঝুঁকে থাকা শরীরগুলো
আসমানে খুঁজে ফিরে বিধাতা, যে প্রতিবারে মরে যায়
মানুষগুলো মানুষ না দেখায় ।। 
=============================================
বৃষ্টি দেখে জানালার কাঁচে 
থেকে যাওয়া ঘোলাটে প্রতিবিম্ব
শরীর রয়ে গেছে; এঁকে যাওয়া 
শুনেনা কেমন অনাহুত ছন্দকারের কল্পবাসে

ঘূর্ণি উঠে
ঘোর লাগে
অবশ কষ্ট নামে অনিবাসী

চেয়ে থাকা মৌনতা ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে
ধীরে স্পন্দিত সে জানে
থমকে যাওয়া সময় কেন
অসীমে হারানোর মাঝে গহীন শান্তিময়
চার-দেয়ালের খেয়ালে নির্বাসিত
কেউ যদিবা বেঁচে থাকে এমনি...
==========================================
নীল থেকে শুনছি মন ভুলানো নৈঃশব্দ প্রপাতে গভীরতা নিটোল
হাওয়ায় উড়ে গেল হালকা সুতোর প্যাঁচে আঁকা দিশা ধরে নামে
মাটি তার নিচে পাথরের দেয়াল আকড়ে ধরে সবুজে ঘ্রাণ
চাই কিছু- চাওয়া থেকে আস্তে করে খসে যাওয়া সময়বোধ ভেবে
এসকল নিয়ত উঠে গেলে চূড়া থেকে খসে পড়ে যে হাসিমুখে 
বেহালায় তার নির্মল ডুবে থাকা স্নিগ্ধরূপ তারুণ্য শুনি অনিয়মে সুন্দর ছায়াবিথী
=============================================
বিকৃত সমাজের লাশ কাঁধে
মৃতস্রঠার বাণী, পঁচেগলে যাচ্ছে পুরাতন
খসে পড়ছে বিশ্বাসঘুমে ঘোর অচেতন

তান্ডবরত নরপশুদের হুঙ্কার শুনি
রক্তময় শিরায় শিরায় বেঁজে উঠা
পবিত্র ঘৃণা'র শহরে তাদের পদধ্বনি

কালোঘরের ছায়ায় জন্ম নেয়া পিতাহীন-
ঘুরে মানুষের বেশে, মানুষগুলো মরে পড়ে আছে
পুণ্যের ভারে।।
============================================
নিরালায় যাই
ভুলে যাওয়া স্বপ্নের খুঁজে
দিগন্তদিশাহীন আলো পড়ে থাকা
নিরবচ্ছিন্ন কাতারে অবদমিত মননশিল্প
বাতাসে উড়ে আসা ধ্বংসের খবর
ফালি ফালি কেঁটে যাওয়া
ঈশানে নেশাময় ঘোরে
কালো দিনে'র জন্মোৎসব আয়োজন
উৎসুক দেখতে থাকি ঝড়ের পূর্বাভাস।।
=============================================

~~ধোঁয়া~~ 

খুলে যাচ্ছে 
খুলিতে ডোবে 
ডোবে 
পিচঢালা রাস্তা এগিয়ে গেছে

মাইলফলক ছুঁয়ে বরাবর
ফুঁটে থাকা থোকায় থোকায়

কে কোথায় স্মরনীর ভীড়ে
পদদলিত গর্বের রক্তফুল দেখে
উন্মাদনায় গর্জে উঠে!

নেশার হাওয়া মর্যাদার প্রতীক
নেশা বইছে অমানবের কষ্টে

শোকগাঁথা প্রহর, মূর্তির সন্তানেরা
ফুল দিয়ে ভুলে লোহিত সাগর
কিনারায় দাঁড়িয়ে যার ভেঙ্গে পড়ছে
মুক্তদিনের ইতিহাস মলিন।।
=========================================
জানতাম বাকহীন ক্ষরণে মলিন
কি জানতাম
চুপচাপ

কতো চলে যাওয়া এইসব দিন 
চোখের উপরে বেঁধে রাখা চোখ
দেখি নাই নিজে এমন ঘোরে
ঝাকে ঝাকে খেলা রোদদুপুরে

অমলিন টানে লুটানো সত্তা 
ছড়িয়ে যাওয়া অন্যমনে
মূলতঃ বাস্তবতায় বেলা গড়িয়ে গেলে
কি করে বলতাম টেক্কা হারিয়ে গেছে?
===============================================
~~উন্মাদ শিবিরে~~


রাত দেখা তারারা খুঁজে তারা
তারারা খুঁজে রাত, না খুঁজে আলো দূরে
না দেখে তারারা দূরে
নিবিড়ে
ছায়া নেই যে স্বপ্নশরীররে
জানি তুই জানি মনে

হালকা হাওয়া ছুঁয়ে প্রদীপে শিখা দোলে
ছায়া পড়ে, আলো দেখে দেখে নড়ে উঠে
বাতি নড়ে ছায়া দোলে, তারারা তারা খুঁজে

জোৎস্নাহীনতায় নীলরাত ভুগে
তুই নেই তোর খুঁজে, মন গেছে নির্বাসনে
ভাবনাকাশের দেয়ালে খেয়ালে
তারারাও বুঝি আজ আলো খুঁজে।।
======================================
বাস্তবতা থেকে এলোমেলো বেড়িয়ে আসা
পাশাপাশি হাঁটে, চোখ তুলে তাকালেই জানি ভুলে
মিলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। ভারী দ্বিধায়, শংকায়, 
গন্তব্যহীন ফেলে যাওয়া স্পষ্ট পায়ের ছাপ- ভ্রমবিভোরে
বালি আসে ধূলিঝড়ে, পাতাঝরা পথে
কর্ণিয়াসমীপে আলো পড়ে জলে
নীল দেখে দেখে বিভ্রান্ত সন্ধ্যা দৃষ্টিতে
কড়িকাঠ, দরজা, চার দেয়ালের ঘর
কল্পনায় হারাতে পারে সকলেই, স্বপ্নের 
মৃত্যু পরবর্তী ধূসরতা দেখে।।
========================================
রেখা টানছি বিজ্ঞচেতনায়
ভাঙ্গা পৃথিবী'র মনচিত্র
উল্লাসে বাজি পুড়ছে আলোকিত জ্ঞানে

লুনাগ্রস্থ কে না জানে আলোতেই ছায়া নামে

পুড়ছে... 

সভ্যতার উল্কি আঁকা জ্ঞানপূর্ণ সমাবেশ
পাপের বন্ধনে উপেক্ষিত ক্ষুদার্ত শরীর

না-মানুষের উল্লাসবোধে গলা মিলিয়ে
তারা তারস্বরে
গাইতে থাকে ঐশ্বর্যের গান;
মঙ্গলের প্রাচীর তুলে যাদের বিধাতা লুটিয়ে দিয়েছেন- মহিমায়,
অসীম করুণায়, শোষণের অধিকার

ভেদাভেদ মানে, ঈশ্বর জানে, মানুষ না চিনে
পুণ্যের অহংকারে গর্বা্ন্বিত জ্ঞানপাপী
রক্তমাতাল নর-নারী
চোখ খুলে মুগ্ধ নয়নে দেখে যায়
না খেয়ে প্রতিদিন মরে মরে যাওয়া দরিদ্রশিবিরে পাপের পরিণাম।।
==============================================
নীল আকাশে দেখতাম
দিনভর রোদপিঠে মুক্ত উড়াল
মেঘ ছুঁয়ে থাকা পাহাড়ের ঢালে
বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলে পরে
জ্বলে উঠা একরাশ
তারাময় রাত, মৃদু বাতাসে
ভেসে আসা রজনীগন্ধা সৌরভে
তোর হাসি মোলায়েম ছন্দমাতাল
বলা না বলা কতো মুহুর্তের কথোপকথনে
ভেবে রাখা নিজের মতো করে সাজানো সুন্দর
এক পৃথিবী নৈসর্গিক বেঁচে থাকার মায়া
কোথাও হারিয়ে যাওয়ার নেই- ঠিকানা থেকে দূরে
এখানেই থাকার কথা ছিল, এখানেই সমাধিস্থ।
============================================
~~সময় দূরত্বের পরে~~


কখনো এমন অন্ধকারে ভেঁজা
রাস্তার উপরে জোৎস্নায় আলোছায়া
সাড়িবাঁধা ল্যাম্পপোস্টের ফাঁকে শূণ্য বাসস্টপ

এসব ছবি হয়ে ভাসা মনের অবস্থান পেরিয়ে
জল নিয়ে ভাবা যায়; হালকা ছোঁয়ায় গড়ে উঠা
অলিখিত বাস্তবতা। তারল্যে কারসাজি এড়িয়ে
মাটি ফুড়ে বেরিয়ে আসা সুদীর্ঘ দালানের অবয়ব

মুখের অভাবে হীন মানুষের ছবি মাথার উপরে
ছড়ানো ধূসর মেঘ দেখে লুকিয়ে গেলেন সকলে
যাদের আলো আজো এখানে পড়ে নাই ভুলে।।
=========================================
~~কিভাবে বলি ভালোবাসি - ২~~


নীলে খুব মানিয়েছে
লুটানো শাড়ির আচল জুড়ে জড়িয়ে থাকা সুখে
আকাশে কেউ নেই বলে উদ্ভাসিত অবুঝের হাসি
কান্নার রং নেই জানো চোখ থেকে মন অনেক দূরে 

স্বার্থের খুঁজে কেউ দেখে নাই কারো চোখের তারায়
জমে উঠা অজানা ভয়ের ছায়া-- হারিয়ে আবার ফিরে আসা
আগামী তোমার দিন থেকে ধূসর জেনে নিও লুটিয়ে থাকা
নীলে কেউ থাকে না একা।। 
===========================================
সচল দু'টি হাত তুলে
ক্ষ্মা চাই ঈশ্বরের কাছে
সচল দু'টি হাত আছে বলে
চাই আরো অনেক কিছুই

যার হাত নেই সেও চায়
অনেক কিছুই। তাঁর হাত নেই,
ঈশ্বরও নেই। 
কাটা পরা হাতেরা
যদি চাইতে পারতো মঙ্গল

ঈশ্বরের ঘাড়ে কর্ম ফেলে--
আমরা সুখি হতাম, প্রার্থনাবোধে,
না দেখা ঈশ্বরে; দিবাস্বপ্নে শুধু
কাজ ফেলে কাজের কথায়
মহানুভবের খেয়ালে যা হয়...
======================================
মা, চেয়ে দেখো, তোমার ঈশ্বর লজ্জিত;
তাঁর আদলে তৈরী নর-পশুরা হায়েনার মতো
ঝাপিয়ে পড়ে কোনো দামিনির উপরে, হত্যা করে
সাজিয়াদের; উল্লাসে মাতে, চিৎকার করে জানান দেয়
পশুত্বের মর্যাদা

মা, তুমি ভয় পাও; অনেক বেশী ভয়ে আড়ালে থাক;
শুকুরের ছানাগুলো মুখোশের পেছনে পুণ্যপাপী; 
তারা মিছিল করে, কান্নার রোলে পশুগুলো মাতম করে, তারপর,
ইবলিসের ঘাড়ে মনুষত্ব্য চাপিয়ে নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়ায় 
আমাদের মাঝে

মা, মেয়েরাই মুখ ঢাকে; লজ্জিত ঈশ্বরও জানে লজ্জাবোধ বলতে
কিছু নেই; তোমার মতোই নাম না জানা হাজারো মায়েরা লাঞ্ছিত হয় প্রতিদিন,
কার নামে লিখি তাদের কথা? কার কাছে ফরিয়াদ রাখি পশুত্ব নিধনের?
এই সমাজ তোমাদের যোগ্য হয়ে উঠে নাই

মা, মাথা নিচু করে পশুরাই ঘুরে বেড়ায়; জেগে উঠো! পর্দার নামে লুকিয়ে থেকো না!
নিপিড়নে, কষ্টে, জানা থেকে অজানায়- সকলের বোধ এখনো মরে নাই; মাথা উঁচু করে
প্রতিবাদে রুখে দাঁড়াও নিজেদের রক্তের সম্মানে
মানুষের কাতারে

আমরা অনেকেই এখনো ভুলে যাই নাই আমাদের মায়েদের মুখ।।

===========================================
বিষ জমে উঠছে শরীরে

মাথার ভেতরে খুলির দেয়ালে ক্ষিপ্ত ছোবল

নির্ভীক চোখ, শক্তচোয়াল, রক্তে পাওয়া প্রবল নেশা

বিভ্রমে নয় এ অশান্ত মন-
অর্থপূর্ণ চাহনিতে দেয়াল জুড়ে ফুটে উঠা ভাঙ্গা নখে আঁকা
মুখোশহীন মানুষের বিকৃত মুখের ঝাপসা ছবি

ভীড় করে আসা- চামড়ায় আদীপিতার বসনহীণতা নয়
এ বণ্য শুকরের গর্ভ থেকে যে সন্তানাদি ছড়ির খেলায়
মানুষ ভেবে নিয়েছে নিজেকে, মানুষের স্বপ্নখুনী
ধিক্কার দেই না তোদের, ঘৃণাভরা একদলা থুথু শুধু।।
===============================================

~~তুমি আমার~~


সুন্দর–অসুন্দর শ্যামল পৃথিবীতে
তুমি শুধুই আমার - 
এই খর রোদ্দুরের দুপুরে
তুমুল তৃষ্ণায় 
এই ভাবনা আমাকে 
তরুণ সম্রাট বানিয়ে দেয় । 

রাজা’র সিংহাসন যখন
নিয়ে যায় বণিক-সওদাগর
অপূর্ব চারুতায়,
কবে হায় কি গেছে হারায়ে
ভেবে ভেবে যখন
ভারি দখিনা বাতাস,
তখন, তুমিই আমার,
এই ভাবনাই আমাকে
তরুণ সম্রাট বানিয়ে দেয় ।

মধ্যবিত্তেরও নিম্ন আমি!
হাতুড়ির বারির শব্দ বুকে নিয়ে
অথৈ যমুনা সাঁতরিয়ে দেখি-
দুঃস্বপ্নের রাত অনেক বাকি,
রাজপথের মিছিলে যোগ দেবো –
কি দেবোনা ভাবতে ভাবতেই
আমাকে ফেলে যায় চতুর মহারাজ,
- তখনো তুমি আমার ।
এই অনুভূতি আমাকে
তরুণ সম্রাট বানিয়ে দেয় ।
============================================
~~দেয়ালঘরের করিডোর থেকে~~


ঘুরে আসা সাদামাটা সাদাকালো চোখ ঘুড়িয়ে দেখা
অস্তিত্বের দরজা, আলতো হাতে খুলে চলেছে মুখোশে চাবি
চিনে নেয়া নিহিত আলাপচারিতায় বৃত্তান্ত

বুঝি নেই, বুঝে কপালে হাত রাখি
ঠান্ডা সরে গেলে কিছু নেই বুঝে নেই চাবি খুলে খুলে দরজার প্রান্তদ্বয়
সম্মুখে বেওয়ারীশ তালাশ; শিবিরে মুখ চিনে নেয়া মুখেরা কতো কথা বলে
একান্ত খোশমেজাজে ঘুরেফিরে চেনা সড়ক ধরে ধীর পদক্ষেপে

এখানে আলো নেই, কারসাজি; কারা চিনে মুখ? অধৈর্য হাতেরা খুঁজছে
খোপ; খোপে লেজ ঝুলিয়ে দোল খায় মুখের আদল, মুখেরা ফণা তুলে
যেখানে চিনে নিচ্ছে নিজেদের ছবি।।
===========================================

~~দেয়ালঘরের করিডোর থেকে ২~~


এক চারের পরে কেউ নেই
অবাস্তব বিশ্বাস ঘুলে মদবোতল শূন্য আসর
পায়ে দড়ি বেঁধে রেখেছি, গলা খুলে চোখ খুলে গুনি
এক চারে ঘড়ি থেমে আছে, ঘরে নেই অন্যদিনপঞ্জী
সূক্ষ কষ্টলেখা; রেখা উত্তীর্ণ মেয়াদে বসবাস

ভদকাজলে নিয়মতান্ত্রিক ক্লান্ত ঘূর্ণিসমেত
আমাকে ঘুরে ছুরি হাতে বসে আছি আমি।
বাধ্য নিঃশ্বাসে ঘোর মেপে মেপে দেয়ালের প্রতি মায়া
এ ঘরে ঘুম নেই, মায়া টানে, ঘর নেই,
দেয়ালশূন্যতা মনকল্পে টেনে যাচ্ছে শুধু রেখা ধার।।
==============================================
~~দিন শেষে~~


গভীর বেদনায় যারা পাশে ছিলেন
ভাষাহীন নীল থেকে বিভোর আলোয়
তাঁদের খুব মনযোগ দিয়ে দেখেছি

প্রতিটি মুখের আদল ছাপ ফেলেছে মনে

আমি দেখেছি- দেখেছি
এক একটি পদক্ষেপ মেপে কাঁধেদের বয়ে নেয়া
ঝুম বৃষ্টিসময়ে পলকহীন চোখেদের উন্মুক্ত দৃষ্টিসীমা
বরাবর

বাঁশের কঞ্চির বেড়া দেয়া ঘর, উঠান ফেলে
বড়রাস্তা ধরে অদূরে- সফেদ মসজিদ
মাথা তুলে দাঁড়ানো বিলাসী মিনারের চূড়া;
ভুখা মানুষের কাতার থেকে খালি গামলার শব্দমুখর
জমিনের আল বেয়ে চাদরেমোড়া মানুষের উঠে আসা অবয়ব

একমুঠো অন্ধকারে জেগে আছি শিশিরের কণায়, দিন শেষে
এখানে দেখা করতে যারাই এসে গেছেন স্মৃতিবদ্ধ ঠিকানায়
তাঁদের কেউই ছিলেন না কখনো মৃত্যুশয্যায়।।
==========================================
~~প্রস্তাবিত ভালবাসা~~


প্রস্তুত থাকো 
যখন ডাক দিব, বাঁধ ভাঙ্গা বানের মত 
সর্বস্ব নিয়ে ছুটে আসতে হবে তোমাকে 
চে’র আহ্বানের চেয়েও তীব্র হবে
আমার সে আহবান, নারী 
শরীরের শিরায় শিরায় আগুন না জ্বালি যদি
এ পুরুষ ডাকবে না কোনদিন আর । 

প্রস্তুত থাকো
যখন ডাক দিব নারী
ভরা অমাবস্যার রাতে, কয়লা কালো অন্ধকারে
বিত্রস্ত বিথান মেয়ে নরম শিথান রেখে
ছুটে আসতে হবে তোমাকে
মজনুর আহ্বানের চেয়েও তীব্র হবে
আমার সে আহবান, নারী
শিরায় শিরায় শিহরণ না দিতে পারি যদি
এ পুরুষ ডাকবে না কোনদিন আর ।
প্রস্তুত থাকো
ও আমার সুতীব্র ভালবাসা !
=========================================

No comments:

Post a Comment