Monday 5 August 2013

~~মুক্তো মেয়ে মুক্তো মেয়ে~~



মুক্তো মেয়ে মুক্তো মেয়ে
থাকো অনেক দূরে
কেমন করে সারাটা ক্ষণ
যাচ্ছ মনে ঘুরে

মুক্তো মেয়ে মুক্তো মেয়ে
এখন আমি জানি 
ঝিনুক মাঝে কাঁদছ তুমি
সাগরে তাই পানি

মুক্তো মেয়ে মুক্তো মেয়ে
সাগর ভরা পানি
সাধ্য কি আর সাগর সেঁচে 
মুক্তা তূলে আনি

মুক্তো মেয়ে মুক্তো মেয়ে
মুক্তা ছোঁয়ার সাধে
সাগর পানে চেয়ে থাকি
মনটা ব্যাকুল কাঁদে

মুক্তো মেয়ে মুক্তো মেয়ে
ঝিনুক ডালা খোলো
চোখের জলের সাগর তলে
ডুবতে যে সাধ হল !
=============================================
কলমের ডাল এক্স (X) হতে মোর
বৃক্ষেরে কহো 'সম আমি তোর' ?

পাঁজরের হাড় ক্রোমোজোম এক্স (X)
সায়েন্স, কোরান পড়ো না ?

ধার করে এক্স(X) ক্লোন সুন্দরী
বৃথা বিতর্ক করো না !
=============================================
~~বৈশাখ যাবে কোথা তুমি?~~
 

এই বৈশাখে নেই তুমি নেই
এই সকালে তুমি পলাতক,
এই সব দিন রাত্রি এখন
শোক-কাঁদা সুর গলা’তক।
গলা ভিজেছে, বুক ভেজা তাই
স্মৃতি-বিবরণ খোলাখোলি,
রঙিন জামাতে রং আছে তবে
রাঙা হাসিহীন কোলাকুলি।
আমি চেয়েছিলাম এবারও বৈশাখে
ভোরে দেখব মুক্ত আকাশ,
আমি চাইনি মরুর বুকে বিধ্বস্ত
অবেলার বৈরি বাতাস।
এই বৈশাখে নেই, মেলাতেও নেই
কবিতা-গল্পে কিছুতেই,
কামরান বা সেজুতী হয়ে আর
থাকবে না কেউ পিছুতেই।
বৈশাখি মেলা ছিলো তোমার মেলা
ইলিশ-পান্থার বীর জন-
মানূষের শেষ মেলা আছে এক-
নির্জন মেলা, নির্জন।
দিবা-রাত্রির ওপাশে ও মেলা
পরিজনহীন স্থানে,
বসন্ত গেছে বৈশাখ যাবে কোথা তুমি?
নন্দিত সেই খানে।
===========================================
~~ভালোবাসার বৈপরীত্য~~ 



হেঁটে চলে সে
হেঁটে চলি আমি
খানা খন্দে ভরা ভাঙ্গা রাস্তায়
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে জীবনের পথ চলা



দৌড়োয় সে
দৌড়ৌই আমি
বহমান সময় ফুরোয় নিমিষে
জীবনের বাস্তবতা



ধুঁকে চলে সে
ধুঁকে চলি আমি
রোগশোক যখন আসে
অস্থির মনটা



ধেয়ে আসে সে
পালাতে চাই আমি
মরণে হাত থেকে
ফাঁকি দেবার উপায় নেই জানা



অপেক্ষার পাল্লায় থেমে থাকে
সময়ের নিক্তি
অসহ্য মনে হয়
প্রতীক্ষার দিনরাত্রি



স্থবির হব আমি
সমাপ্তি ভবঘুরে পথ চলা
যেদিন হাত ধরবি বুকে চেপে
ভালোবেসে কাছে টানে



আর নয়তো সমাপ্তি মরণে
নিষ্ফল জীবন যাপন
শুধু এক টুকরো ভালোবাসার আশায়
তোর কাছ থেকে যা ছিল আমার পাওনা



এখনো চুপচাপ বসে থাকা
পেছন ফিরে দুজন দুজনে
এখনো বৈপরীত্যের পথে চলা
যে যার উল্টো পথে

এখনো অভিমানের কান্না
ভেজানো দুটি চোখে
এখনো ক্ষরণ
দুটি হৃদয় থেকে;

এ কেমন ভালোবাসা?
===========================================
~~তুমি কাদা বর্ষা জল~~

 
তুমি ছাড়া বর্ষা বিষণ্ণ প্রতি রাতে
কিংবা নির্জন নির্বাসিত দিন,
দেখতে পাও কাদা পথ অন্ধ গলি
কল্পনার চলন্ত সময় বর্ণহীন।

মনে পড়ে যাকে ফেলে এসেছি-
ফাগুন বা ফুটন্ত গ্রীষ্ম রোদ,
এখন বল, সেই ভালো ওরাই হাসুক
আবার বল, নিলে নিক প্রতিশোধ।

তুমি ছাড়া বর্ষা চোখের জল
অন্ধকারে যেন মরা বর্ণহীন সুখ,
অনেক প্রেম দিয়ে গড়েছিলে
এই দেহখানি আর মায়াময় মুখ।

তোমার নুন আনতে পানতা শেষ
এবার ভাবো, আমি করবো কী!
ঘরের মেঝেতে পাতা শূন্য পিঁড়ি,
জীবন অনন্তে বর্ষা কি নমস্যি!

সুখের ঢেঁকুরে তুমি কাদা বর্ষা জল
আয়ুহীন এক জীবনের পাশে,
এমন বর্ষার দিনে তোমাকে ছাড়া
একাকিত্বে কবিতা কি আসে?

রোদ ডোবে, মাঠ ডোবে, পথ ডোবে
ডোবে স্বপ্নের শস্য লোকালয়,
নির্ঘুম রাতে আমার তো বর্ষাখানি
কিছুতে হলো না আর মোহময়।

তুমি সেইখানে থাকো যদি সুখ দুখ
কোন স্বপ্ন চাও বা আর না চাও,
অনন্তা! বর্ষার মতোই তুমি প্রিয় হও
আবার জীবনে ফিরে কবিতা বানাও।
============================================

~~বিস্মৃতি ও প্রার্থনা~~

আজ ভুলে যেতে চাই...
আমি কখনও অসহায় ছিলাম,
বন্দি ছিলাম কোন আঁধারের প্রাসাদে।
আমি শুধু অনাগত দিন দেখি...
আলোর পথ কবে দেখাবে সে আমাকে ,
নতুন ভোরের মত নিষ্পাপ কোন দিবসে।

আজ ভুলে যেতে চাই....
ভুলের কত মাসুল কোনদিন দিয়েছিলাম,
ভুল আমাকে তাড়িয়ে নিত গভীরে আমাতে।
আমি শুধু ভুলকে ফুলের মত দেখি....
ভুল আমাকে শেখাবে অনেক কিছু ,
কি করে শুদ্ধ করতে হয় নিজেকে।

আজকে ভুলে যেতে চাই ....
যন্ত্র ভেবেছিলে তাই পুতুলের মত নেচেছিলাম,
মানুষ নয় কোন আবর্জনা ভেবেছিলে সরবে।
আমি শুধু সম্মেুখের দিনগুলি দেখি....
তুমি আমাকে হয়ত স্বরূপ চেনালে,
আমিও খুঁজে নিলাম মুক্তির পথ মিছিলে।

আজ ভুলে যেতে চাই....
এ ধরার বুকে কখনও সুখী হয়েছিলাম,
সুখের বন্যায় এড়িয়ে গিয়েছিলাম দায়িত্ববোধ।
আমি শুধু পাশে দাড়াব আজ....
পৃথিবীর সকল বঞ্চিত আর নির্যাতিতের,
ভয় দূর করে অধিকার আনব ছিনিয়ে।

হে প্রভু, শক্তি দাও আমি ভেঙে পরার আগে,
আর কোন অপমৃত্যুর আগে।
হুশে আনো, সময় ফুরোবার আগে,
আমি দায়িত্বহীন ভাবে চলে যাওয়ার আগে।

গ্রহণ কর প্রভূ বান্দাকে আজ,
রয়েছে যে বাকি আমরন কাজ।
==============================================
~~লেনা দেনা~~
 

কিভাবে ভালোবাসলে?
সোনার কাঁঠি ছোঁয়ালে পদতলে 
রুপোর বাঁশি বিষাদ সুরে
অবহেলার নিষ্ঠুর অট্টহাসি
লজ্জায় মুখ লুকোয় হো হো ঝড়ের তাণ্ডব
ঘন কুয়াশা হয়ে জ্যোৎস্না কাঁদে
নীলাভ হয় না আকাশের তারা
মিটমিট করে তাকিয়ে দেখে
লজ্জায় মুখ লুকোয় মেঘের আড়ালে
তোমার তীব্র ভালোবাসার স্বরূপ দেখে
আসলে কিভাবে ভালোবাসলে? তারা বুঝলো না;
আমি বুঝেছি, খুব ভালো করে
ছিল যে মনেতে প্রেমের সাধ
ধুতুরার বিষের চেয়ে মিঠে কড়া স্বাদ
মৌমাছির হুলে মধু চেখেছি
তোমার ফুটন্ত কামনার কড়াইয়ে
মাখামাখি ভালবেসেছি।

কি দাও নি আমায় তুমি? ভালোবেসে;
কয়লার অঙ্গার ঢেলেছ গায়ে
ফোস্কা পড়েনি তোমার মনের মত
পুড়ে ছাই হয়ে গেছে
তীব্র ভালোবাসার দহনে
গ্রীষ্মের রৌদ্র দাহে মাঠে ফেলে
দিয়েছ গা জুড়ানো তপ্ত-বালুর লু হাওয়া
শিমুলের রঙ দেখো নি তুমি
দেখিয়েছ আমায়, হল্কা আগুন লাল
আমার কঙ্কাল দেহের ডালে ডালে
শিমুল ফুটিয়েছ, খুব ভালো;
কাঠঠোকরার নিষ্ঠুর ঠোকর
ক্ষয়ে যাওয়া রক্তাক্ত হৃদপিণ্ডে, মন জুড়ালো;
চরম ভালোবাসার প্রকাশ? সে যাই হোক
তবু মন থেকে একবারও করলে না ক্ষমা;
সয়ে যাচ্ছি সবই আজ প্রাণ হীন দেহে
অবিচ্ছিন্ন ভাবে ভালোবাসার আবেগে
এখনো তোমাকে;
আবার কোনো একদিন শুনবো ভেবে
তোমার মাতানো কথাকলি, ভ্রমরের গুঞ্জনে
হয়তো অনুতাপের লজ্জায় পলাশ রাঙা হবে
আর নয়তো চুকে যাবে মৃত্যুর সাথে সাথে
অপরিণামদর্শী ভালোবাসার সব লেনা দেনা।
===========================================

~~কেউ কিছু বলে না~~


 
শূন্যতাও নীল হয়ে ধরা দেয়
স্বচ্ছজল গভীরতা পেলে নীল,
ওই যে শূন্যতা, ওই শূন্যতার বুকে
আকাশ ঘুমিয়ে আছে, সুনীল।
শূন্যতার স্তর নিয়ে জ্ঞানও নিশ্চুপ
কেউ কিছু বলে না,
শূন্যতার স্তর, তবে ধর্মগ্রন্থ বলে
সাতটি আকাশের কথা।
এক একটি আকাশ কতটা দীর্ঘ?
স্তরে স্তরে আছে,
ঘড়ির কাঁটার গতি পথ ভুলে
নিশচুপ রয়েছে।
আকাশের শরীরেই মহাকাশ
শিকড় বিছিয়ে বেড়ে ওঠে,
মহাকাশ মহাশূন্যেই ডালপালা মেলে
ফুল তার ডালে ডালে।
মহাশূন্যের পাতা অপূর্ব সুন্দর কালো।
অফুরন্ত নেয়ামত সৃষ্টির,
আমাদের চেনা গাছ গভীর সবুজ হলে
যতটা সুন্দর দৃষ্টির।
সেই মতো মহাশূন্যের পাতাগুলো সব
দেখ কী সুন্দর মহাশূন্যের ফুল,
অন্ধকার পাতার আড়ালে ফুটে আছে
ওদিকে তাকাও দেখ বুলবুল।
দেখ কী গভীর কালো দু’টি চোখ
ভুরু পল্লবের নিচে,
মহাশূন্যের ইশারায় কথা বলে
ইশারার চোখে চোখে।
এমন ঘনিষ্ঠ রাতে অসংখ্য তারার ফুল
পৃথিবী নামের মেয়েটির চোখে ছায়া মেলে,
ওই চোখে মহাশূন্যের গভীরতা দেখেছি
নিশ্চুপে। ধরা দেয় স্বচ্ছজল গভীরতা পেলে।
============================================
~~বদলের হাওয়া যতোই লাগুক~~
 

অন্ধ ভিখারি, প্রন্তরে তার 
শিরিষ-শাখায় নৃত্য.
করে কতো পাখি,নিয়ে আসে
খড়কুটো সাথে করে মত্ত।
আবেগী-নীড়ের স্বপ্ন- মোড়ানো
আহ্বান নিয়ে নিত্য,
তাকেও ফেরায় অন্ধ ভিখিরি
কেননা সে জানে সত্য।
লাগুক ,তবুও পুরনো বটের
ছায়ার নিচে সে বন্ধি,
গভীর প্রাপ্তি- তার কাছে আঁজো
সেগুলোই প্রিয় গন্ধী।
সেই তার সুখ,বেঁধে বুক,
পচা বাসি ঘ্রাণে সিক্ত,
নাগাল বিহীন আঙুরের থোকা-
সেই সব অতিরিক্ত।
তার বুকে আছে আঁধার কুঠুরি,
ইস্পাত-মোড়া শক্ত,
বদলের হাওয়া যতোই লাগুক,
আঁধারে সে অনুরক্ত।
===========================================
~~তেলাপোকা, রাজাকার আর ঘৃণা~~
 



পশু প্রাণীর মাঝে সবচেয়ে বেশি করি ঘৃণা
তুচ্ছ এক প্রজাতি নাম তার তেলাপোকা
ঘৃণায় গা রি রি করে
ঘৃণার পরিনামে মনে কেমন এক ক্রোধ জাগে

দেখলেই আরশোলা
পায়ে পিশে মারি যখন দেখি তখনই
যেখানে পাই সেখানেই

স্যান্ডেল পায়ে না থাকলে খালি পায়ে পিষে
ক্রোধের আগুন বাতাসে যায় মিশে
এ যেন আসলে ঘৃণা নয় ক্রোধেরই আরেক ধরণ
কেন এমন হয়, ঠিক জানি না
তবে এটাই আমার নিয়তি করেছি বরণ।



মনুষ্য প্রজাতির মাঝে
এক প্রকার দানব বাস করে
নাম দেয়া হয়েছে তাদের রাজাকার
ওদের নাম শুনলেই ঠিক আমার
মনে ক্রোধ ভর করে তেলাপোকা দেখার;
ইচ্ছে করে পায়ে পিশে মেরে ফেলি তাদের
ঐ তুচ্ছ তেলাপোকার মত করে।



মনেরে অনেক ভাবে শুধাই
কোনোভাবেই জবাবটা মেলে না রে ভাই
কেন আমি কোনো পার্থক্য করতে পারি না
আরশোলা আর রাজাকারের মাঝে
একটা তুচ্ছ ডানায় ভর করা প্রাণী
বসবাস তার আবর্জনায়, কমোডের চিপায় চাপায়
আরেকটা বিশাল এক দানব

মন ভরা পুতি দুর্গন্ধ যুক্ত ডাষ্টবিনের ময়লা
মনুষ্য সমাজ থেকে পালিয়ে বেড়ায়;
দুটোকে দেখলেই ক্রোধ ভর করে মনে
একটাকে পদদলিত পায়ের স্যান্ডেলে
আরেকটাকে পুড়িয়ে মারতে ইচ্ছে করে

কেরোসিনের আগুন জ্বেলে পুড়িয়ে করতে গনগনে কয়লা
কিংবা ঝুলন্ত ফাঁসি কাঠে মনে মনে
প্রতিদিন প্রতিক্ষণ ঝুলিয়ে রাখি ঘৃণার আবেশে।



ঘৃণা আর ঘৃণা মিশ্রিত ক্রোধের মধ্যে
আসলে কি কোনো পার্থক্য আছে
আমি তো আমার মনের ভেতর থেকে কোনো
পার্থক্য খুঁজে পাই না
যেমন পাই না
তুচ্ছ তেলাপোকা আর রাজাকারের মাঝে।


তোমরা কেও পার কি? পার্থক্য করতে
এ দুটো প্রাণীর মাঝে
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।
==============================================
~~আজীবন এক অন্ধ~~

 
জাগেনা কখনো, কুয়াশা-পাথর 
চেপে আছে তার বক্ষে,
সারা প্রান্তরে গভীর কুয়াশা,
কিছুই দেখে না চক্ষে।
তন্ত্রেমন্ত্রে ঝালাপালা কান
তবুও তার মনে দ্বন্ধ,
মাছি উড়ে চলে আশপাশে তার,
আজীবন এক অন্ধ।
নেই উন্মুখ চোখ মেলবার
সুদুরপ্রসারী দৃষ্টি,
নেই কোনো কথা, নেই মতামত
যতোই নামুক বৃষ্টি।
সে ভালোতেও নেই,মন্দেও নেই
নেই বিপরীত দ্বন্দ্বে,
নেই মুক্তির পথের আভাসে
নেই সুবাসিত গন্ধে।
অন্ধ সে আজো জেগে আছে একা,
পুরনো লাঠিতে ন্যুজো,
চাঁদের মাটিতে পা পড়ুক আর
প্রগতির পালে খুব জো।
ঝড়ে-বৃষ্টিতে, বিপুল জোয়ারে
একাকী ধ্যানেই মগ্ন,
পাতারা ঝরুক,খুলুক বস্ত্র,
হোক তা যতোই নগ্ন।।
============================================
~~নীল সন্ধ্যায়~~
 

প্রতিদিন নীল সন্ধ্যায়
আমি বিষাদের বীজবুনি চলি
এখুনি ঝড়ো হাওয়া সন্ধ্যা উড়বে দিগন্তে
স্বপ্ন কবেই বিনষ্টের দখলে ।

এলো-মেলো দিন
অগোছালো চিন্তন
শ্রাবণের রাতে জলের নিনাদে
ভাঙ্গে আমার রঙ্গিন দর্পণ
হাহাকার কি ক্ষণিকের যন্ত্রণা্র চেয়েও দীর্ঘ ?
বিছানার চাদরে বিরহের দাগ বড়ই অর্থবহ
জোৎস্নার রঙ হুমায়ূন স্যারের মতো আমারো প্রিয়
মাঝে মাঝে হিমু হতে হয়,
হিমু হয়ে যাই
এই আমি ক্ষয় হতে হতে ছাঁই
নীহারিকা চুম্বন মানবী জানো কি
জানো কি-
এই ক্ষীণ আত্তায় মানুষ আর কত ক্ষয় হয়?

প্রতি নীলসন্ধ্যায়-
ডানা ঝাপটায় আমার হারানো ওম
আমাকেই ধুলো দেয়,কোথায় যেনো
এক নি:স্ব শীতেলা মাঠে
পরদেশী পাখি রৌদ্রের স্বাদ নিয়ে বৈতালিক গান ধরে
সেই তুমি;
তুমিই আমার ক্ষণকালের স্মৃতি-বিস্মৃতি
আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জড়ানো অনুভূতি ধূসর হয়ে গ্যালো
অভিসার প্রাঙ্গনে
সে তুমি কতটুকুইবা জানো!
যে জানে,
সে আমার নিদ্রাহীন চোখ,বিদগ্ধ পাঁজর.
তুমিহীন দিনের পর দিন কেটে যাওয়া শহুরে রাত
ফুটপাতে চায়ের দোকান,
রাতজাগা শ্রমিক, উলঙ্গ যাযাবর শিশুটি,
বুনো বাতাসের সজীব ফুলের বেপনতোলা মাদকিসৌরভ
নিশিপ্রহরীর লালদুটি আঁখি,
বেশ্যাদের ক্ষুধার্ত যৌনাঙ্গী,
শহরের বুকে দ্রুত চলে যাওয়া মালবাহী চালকের মাদকাসক্তি ঘুমচোখ
তোমাকে খোঁজার জন্যে,
কোন এক বিষন্ন দিনে বেরিয়ে পরা শ্রমিক চরণদুটি
এখন বড়ই ক্লান্ত !

কতটুকু হলে খুঁজে পাবো
তোমাকে, তোমার অপ্সরীমুখ!

আড়ালে-আবডালে হাতছানি ডাকে
এক অশরীরি অমায়িক সুতীব্র আত্তা,

ইদানীং স্মৃতির ক্যানভাসে বিভ্রমঘটে
কালের আয়নায় অক্ষত বিষাদের দিনগুলি নক্ষত্র হয়ে ফুটে
শোনো, প্রতি নীল সন্ধ্যায়-
বড়ই ইন্দ্রিয়তাড়নায়
আমি বীজ বুনে যাই
আজো ভুল অভ্যাসবশত

আজও জানোনি,
জানবেনা কখনো হে সর্বগ্রাসী উর্বশী
নীল দিনগুলো কেন যে লাল হয়ে যায়?
প্রতিনিয়ত !
===========================================
~~শৈশব স্মৃতি~~
 

আজো আমি বার বার ফিরে যাই
ফিরে যাই আমার অতীতের সেই দিনগুলোতে
ফিরে যাই আমার স্মৃতিঘেরা সেই শৈশব কৈশোরে
কি দারুন দুর্বার ছিল সেই বাল্য বয়স
অকারণ অভিমান,গলা ছেড়া গীত গান
মনে পড়ে আজো ভীষণ মনে পড়ে ।

সেই ধানশাঁলিকের বিস্তীণর্ মাঠ-খোলা আকাশ
মাঠে প্রান্তরে সবুজের শস্যক্ষেত
দক্ষিণা মৃদু বাতাসে দূর থেকে ভেসে আসা
হাস্না হেনার পরিশুদ্ধ স্নিগ্ধ ঘ্রান
আজো নিখাদ দোলা দেয় প্রাণে সেই শৈশব ।

পড়ন্ত বিকেলে ঘুড়ি লাটাই হাতে নিরুদ্দেশ্যে
ছুটে যাওয়া,বষর্ার হাঁটু জলে কাগজের নৌকা,
কানামাছি নিত্যদিন,ঝড়ের শেষে আম কুড়ানো
ছোট বোনের পুতুল বিয়েতে কি দারুন হৈ চৈ
কখনো বা নদীরপাড়ে তুমুল আড্ডা
ধলেশ্বরীর বুকে পালতোলা সারি সারি নৌকা ।

বিলেঝিলে শাপলা শালুক,কাশ বনের মুগ্ধ চিত্র,
কোথায় যে হারালো সেই দিনগুলো !
বৈশাখী মেলার সেই অবুঝ আবদার,বাবার কাছে,
গ্যাসের বেলুন,মাটির হাড়ি,আরও কত কি......
দিন বদলের পালায় স্মৃতিরা আজো অমলিন
যদি আবার ফিরে পেতাম সেই শৈশবের দিন ।
=============================================
হৃদয়ের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক, 
হয়না যেন অবিচ্ছিন্ন,
ললাটে জ্বলে জ্যোৎস্না,
সুবিন্যস্ত উচ্চাটন মন,
প্রভাতে মন থাকে না গৃহে,
খোঁজে প্রাপক জাগ্রত শিহরিত নয়ন ।
===============================================

~~তবু স্বাধীনতা জাগ্রত জনতায়~~
 

সেঁজুতি তুমি কার টানে এতটা ব্যস্ত সারাক্ষণ
কার চোখে নিবিড় তাকাও নৈঃশব্দের চোখে এখন
বিজয়ী গোলাপ খোঁপায় পরোনে আজ
বুকের গভীর অলিন্দে যত্নে গেঁথে রাখ
স্মৃতিবহ প্রাণের প্রতীক একাত্তর! সেঁজুতি।
আগুন ফিরে যায় দৃশ্যকে একা রেখে!
কোথা থেকে আসে আবার কোথায় যায় চলে
দর্শন-ফুল ফুটে মানবজমিনে
চলে জীবননির্মাতা,ধীরে ধীরে,
সব কিছু পুড়ে তছনছ হয়ে যাচ্ছে
যা কিছু অর্জন যা কিছু সুকৃতী! সেঁজুতি।
মেঘ তুমি মন নেবে কি? দিতে পারি কথা
যদি তুমি ভিতর থেকে ভাঙো নীরবতা
ভিজেছে সমাধি-মাটি,
মাটি ছুঁয়ে হেসে আছে বেদনার ঘ্রাণ-
অন্ধকার-সে-ও আজ ভুলে গেছে স্বভাবের খ্যাতি
মাটি কি জটিল কিছু!
খুলে দিক অবিশ্রান্ত হৃদয়ের ঝোপ,
তখনও অসংখ্য রাত মেঘের পয়ার শুনে
জেগে ছিলে একা এখনও রয়েছ একা,
বৃষ্টিকণ্ঠে শোন তবে পৃথিবীর গান, সেঁজুতি।
যারা কথা বলে, দেয় মোহময় সুবেশ ভাষণ,
ধারালো ছুরির মতো কথা দিয়ে কেড়ে নেয় মন!
আকাশের নীল ছাউনি
কালো বিষধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে
কোথাই ফেরারী তুমি? শুভবুব্ধি জাগো-
মুছে যাওয়া পথের দাগ তুলে ধরো
ভস্মস্তূপ ভেদ করে, সেঁজুতি।
তাজা লাল উলঙ্গ শরীর ফোঁটা ফোঁটা উর্বর শোণিতে
মাটির ধমনী শিরা কোষে কোষে রেখে গেছে
আকাঙ্কিত নতুন জন্মের নিষিদ্ধ স্পন্দন রেশ
আগন্তক দিন অথই রক্তের নদী-
অন্ধকার দূরন্ত সাঁতারে পার হয়, সেঁজুতি।
জাগো ! ভিতরের গভীর মানুষ জেগে ওঠো
শুভবুদ্ধি! জাগো ভিতরের শুভবুদ্ধি
জেগে ওঠো অপরাজেয় শাশ্বত মানুষ,
অনন্ত ঘুমের শান্তি অনিঃশেষ ছুঁয়ে আছে
তোমার ভোর আমাদের জেগে থাকা কিছু সত্য
অনেক মিথ্যামূঢ় ঘুমে যে রাত্রি-
‘বৃষ্টির রাত’ সহজই ছিল দীর্ঘ, সেঁজুতি
মানুষের বেদনায় কেঁপে নিশ্চল হিমালয়
মানুষেরা আজ বড় অসহায়
তবু স্বাধীনতা জাগ্রত জনতায়
শ্রধ্বায় মাখা প্রতিটি শহর গাঁয়, সেঁজুতি।
=============================================
~~কাব্য-কণা ~~


প্রথম দেখা লাজুক চোখের, লাজুক সন্তরণ,
জোছনা রাতের উদাস মেঘের,প্রণয় শিহরণ!!
============================================
~~কাউ কে কাঁদিয়ে কেউ সুখী হয় না~~
 

তোমাকে যখন দেখি ঐ দূর গগনে অপ্রস্ফুটিত
এ হৃদয়ের গহীনে থমথমে শুরু হয় বিস্ফরণ
বিমূতর্ ভাবনায় গুমড়ে কাঁদে সমস্ত ইন্দ্রিয়,
যে দ্বীপ একদিন নক্ষত্রের মেলায় ভেসেছিলো
যেখানে ঝোঁনাক জ্বলার কথা ছিল অবিরত...
সেখানে আজ অপরাহ্ন বেলাভূমি নিভু নিভু ।

তোমার মনে স্বার্থান্বেষী ভাবনা ছিলো-সুখী হবে
ভেবে আমাকে অকূল দরিয়ায় ভাসিয়েছো !
তোমার দেওয়া অম্লান স্মৃতি বুকে-
আমি তো বেশ আছি দুঃখ সুখের পাশাপাশি,
তবে তুমি কেন আজ বড় অসুখী অন্য ভুবনে ?
কেন তোমার চোখে বরফগলা নদী অতৃপ্ত মনে !

অবুঝ মনের সবুজ ভালোবাসার ছাঁয়াতলে
যে অগ্নিগিরি তুমি জ্বালিয়েছো অনশ্বর ,
সুখ-সুখের অন্বেষণে আপন করেছ পর !
ভুলে যেওনা, সরল প্রেম শশ্মানেও জ্বলেনা
তুমুল ঝড় হাওয়ার ঝড়বেগেও ভাঙ্গেনা;
ফেলে আসা স্মৃতির দহনে সুখী হতেও দেয় না ।
===============================================
~~কাব্য-কণা ~~


করুণ রোদনে লুটাইলো বাঁশী, বুঝিলনা কেউ তায়-
‘দেহ’ ‘প্রাণ’ দোঁহে,দোঁহের মাঝারে, প্রাণ নাহি দেখা যায়!!
=============================================


No comments:

Post a Comment