Wednesday 7 August 2013

~~আপনি কি গাছ?~~



এই যে ! একটু শুনবেন?
হ্যাঁ আপনাকেই বলছি !
আপনি কি বটগাছ ?

সব পুড়ে যায় এমন রোদে
যার নীচে গাঢ় ছায়া জোটে
শীতল বাতাস অকারণ ছোটে
গোঁড়ায় জমা আগাছার মাঝে
হয়তো কোথাও লাল ফুল ফোটে
আকুল ব্যকুল হৃদয় মাঝে
হয়তো আপনি বট গাছই বটে
গাঁয়ের বধূর সদ্য শুকানো
শাড়ির পটে, তাইতো রটে-

কি বললেন ! বট গাছ নয় ?
শিমুল গাছ ?

চৈত্র মাসের সর্বনাশ ?
অথবা অকালে বনবাস!
মৃতপ্রায় সেই দেবদাস
মরচে পড়া দীর্ঘ হতাশ
যুবকের মুখ অবোধ উদাস!
অবোধ উদাস! অবোধ উদাস!
কেবলই নয় চৈত্রমাস
যুগান্তরের সর্বনাশ !

কি বললেন? শিমুল নয়?
ক্যাকটাস !

ক্ষত বিক্ষত কাঁটায় কাঁটায়
রুক্ষ দেহ সজোরে লুটায়
শক্ত দেহের কোমল পাতায়
কান্নার জল ফোঁটায় ফোঁটায়
ক্যাকটাস তুমি পালাবে কোথায় ?
পালাবে কোথায়! পালাবে কোথায় !

কি বললেন? আপনি মানুষ ?
গাছ নন ?
ছিঃ ! আগে বললেই হতো !
=============================================
~~অবদমন~~


অনাকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নেরা
বিরহের মালা গাঁথে।
পরিচিত মুখ
ভিন্ন কাপড় পরিধেয়
বড় অচেনা লাগে।

আর্তনাদ ছড়িয়ে আকাশের সীমানায়
নীলিমায় মিশে আশার আলো,
তুমি মেঘ হলে আকাশে
স্মৃতিরা বৃষ্টিতে ভিজে।

রাতের শূন্যতা ভাঙ্গে
শুকনো পাতার ঠুনকো শব্দে।
হাত বাড়িয়ে-
নাগাল না পাওয়ার দুরত্বে,
তুমি আমি হালকা বিশ্বাস।

তুমি নেই! আছে
স্মৃতি বিজড়িত হতাশার আহাজারি।
তবুও আবার দেখা হলে বলবো-
এই বেশ ভালো আছি।
========================================
বারিষের পরে মেঘেরা হারিয়ে গেলে নীল
স্বচ্ছ কাঁচে জেগে রয় অলীক জানালা
খোলা বাতাসে খেলা ডানামেলা
নীরবতায় ভেসে থাকা পলকহীন...
===============================================
~~অসামাজিক~~

চোখের সামনে ঘড়িটা চলছে থেমে থেমে,
ঘড়ির টিক টিক আওয়াজটা শোনা যাচ্ছে না !
সময় তো ঠিকই চোখের সামনে ভাসছে ,
চেনা সুর কেন এভাবে বিলীন হয়ে যাচ্ছে?
দূরত্ব বাড়লেই কি সবকিছু দূরে সরে যায় ???
চোখের সামনে থাকা শূন্যস্থানটুকু কি দেয়াল হয়ে যায়??
উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।
===========================================
~~উড়ুমনের পংক্তিমালায়~~

এ কেমন রোদ দেখে 
রোদে রোদে পুড়ে
যাচ্ছে সময়

নীরব পাখি, ডানা খোলা
আকাশের ডাকে
উড়ে
পাহাড়ের পরে পাহাড়ে

বেলা মিলিয়ে
নিহিত
জেগে থাকা অনিয়ম ঘুমে
দেখি একফালি মোলায়েম
জড়িয়ে থাকা তুই মনে।।
==============================================
~~বিশ্ব প্রেমিক হব~~

আমি একদিন সন্ধ্যা তারা হব,
দূর আকাশে মিটি মিটি জ্বলব
তুমি দেখবে কষ্টর আগুনে পুড়ে
আমিও সুখের দেখা পাব
তুমি আমায় কাঁদিয়েছ তাই কাঁদি,
দেখবে আমার কান্নার শেষ হবে

তুমি মন ভেঙ্গেছ বলে রক্তক্ষরণ,
শুনবে আমার সুখের চির বসন্ত রবে
তুমি ছলনা করেছো বলেই এই আমি প্রেমহীন শূন্য
অবাক হবে আমিও যেদিন বিশ্ব প্রেমিকে হব গন্য
===========================================
~~পাণ্ডুলিপি~~


কতদূর কোথায়,
যেতে হবে জানা নেই।
দেবতারা আসে যায়
আমিও এসেছি, তবে দেবতা নই।

পথে পথে অগনিত ঢেউয়ের মত ভুল বিছানো,
ধোঁয়া সব ধোঁয়া মরুভূমি আর মরীচিকা।
যুবতীর দেহ কোষে কোন এক রক্তিম সন্ধ্যা,
আত্মিক দেবতা মিশে যেতে চায়।
নিশি রাতের নিশিথে যুবতীর দেহে
বীজগণিতের হিসাব বোঝাতে বিধাতা তখন ব্যস্ত।

তিলে তিলে গড়া কিছু ভুল,
মৃত দেহের দুর্গন্ধের মত
অন্ধকারে ছড়িয়ে যায়।

সুনামির মত আছড়ে পড়ে কিছু ভুল।
বোকা সময়ের তখন দিক-বিদিক ছুটোছুটি,
পৃথিবীর অলিগলি বেঁয়ে চলে রহস্যময় আত্মা।
মগজের গতি পথে কাল পুরুষের গতিস্লথ,
পৃথিবীর চেয়ে বড় শিকারীর চোখ,
ছলনার পাণ্ডুলিপি হাতে মানুষের ধারে
পৃথিবীর উপারে গহীন মাটির গর্ভে
কিছু মানব মানবী,
তাকিয়ে আমার কিংবা আমাদের দিকে।

বিধাতার পদচিহ্ন এসে পরে,
ধূল মাখানো ভুলের উপর।
বিধাতার কণ্ঠে,
তুমিতো বলেছিলে
ধোঁয়া সব ধোঁয়া মরুভুমি আর মরীচিকা,
তাহলে আমি কে !!
===========================================
~~মরীচিকার ঘর~~


নিশী রাত ব্যালকনিতে দাড়িয়ে একা
ভাবনায় এলো তোমার স্মৃতি
মনের মাঝে ভেজে উঠেছে সেই
বিরহের গাঁথা করুন গীতি
মেঘে ঢাকা আধো চাঁদ
নিমিশে যেন করবে গ্রাস
রাত জাগা গাছ গুলো 
মনে হয় বিভীষিকার লাশ
মাঝে মাঝে মৃদু বাতাস
স্পর্শ করে চলে যায়
জোনাকী গুলো জ্বলে নিভে
কাহার পানে হাত বাড়ায়
এমনই বুঝি জীবনে প্রেম
অনাকাঙ্খিত হয় পর
এক চিলতে স্বপ্ন নিয়ে
মরীচিকায় বাঁধে ঘর।
===========================================
~~নদীয়ার নদী~~


পাহাড়িয়া স্রোতস্বিনী মাতামুহুরী
বালুকণায় সুখ–দুঃখের স্থাপত্য
মিরিঞ্জা থেকে দীর্ঘতম জলধি 
সবুজ জীবনের চিত্র
১৩ জাতির সংস্কৃতি
আমার প্রথম ১৪ ।।

আলোকিত নাগরিক নগরে
আলো আর যান্ত্রিক শব্দে
মাধ্যমরা নির্লিপ্ত দৃশ্যে
দক্ষরা দায় নির্মুক্ত
আশাবাদী তরুন প্রজন্ম ।।

কর্পোরেট আর সাইবার ক্রাইম
যান্ত্রিকতা নিয়ন্ত্রন আইন
কীবোর্ডেই বিশ্ব পার
২০১২ আনলো অবতার
ঐক্য মিলাবে ২০১৩ সাল ।।

সময়ের শব্দ আর আচরণে
ভক্তি সুরে সাধুর স্বভাবে
লালন পালন করি ভাবে
নদী আর নদীয়ার ভাষায়
বাংলা বিশ্ব মাতৃভাষা
বিশ্বভাষার মায়ের গ্রাম ।।
============================================
~~আমি অন্ধকার থেকে বলছি~~


তোর কাছে যাই নাই কত দিন
বেলা ভুলে ঘোরে আনমনে,
পাশে বসে কিছু না কিছু নিয়ে কথা বলা
বলে যাওয়া, যাই নাই কত দিন 

আজকে বৃষ্টি হয়েছে তুমুল
আর্দ্র মাটিতে পায়ের ছাপ মিলিয়ে যায় দ্রুত--
ঘর থেকে দেখেছি মেঘকালো আকাশ
এসব তুইও দেখেছিস খুব,
তুমুল বৃষ্টি ঝড়ে বাদলের আনাগোনা

সন্ধ্যার কাছে বিভোর তন্দ্রাচ্ছন্ন
দিন-রাতের তফাৎ কিছুই বুঝে উঠা হয় না;
একা থাকার মানেও একা থাকা হয় না, কি বলি না থাকার কথা?
অনেকদিন হলো জানিস, আলো আমার চোখে আর ধরা পরে না।।
===========================================
~~বিবেক মুকুর~~

কবে হবে শেষ
হিসেব নিকেশ
খসে পড়বে
এ ছদ্মবেশ
নিপুণ চতুর !

ত্যাগের অংক
মেলেনা কখনও
সংখ্যা তত্ত্বে
রুগ্‌ণ এখনও
বিবেক মুকুর !

এসো ভুলে যাই
নগ্ন বিবাদ
মুছে ফেলে দেই
যত অপবাদ
এসব কিছুর।
==========================================
~~বিদীর্ণ~~


ভয়ানক নীরবতা আফসোসে
শিকড় গজিয়েছে
ভেদ করে পাঁজর।
দিশেহারা হয়ে আসে বিশ্বাস।
সময়ের পায়ে ফোঁড়া
থমকে যায় যুবকের পথচলা!
বাঁধ ভেঙ্গে যায়
বাকহীন অপলক দৃষ্টি,
নির্লজ্জ হাসিতে গোমট ভাব
ভাবনাহীন মানুষের ঢলাঢলি।
আক্রোশে ফেটে পড়ে জবাব দিহিতা,
ছড়ানো ছিটানো অসঙ্গতি
যুবকের অস্তিত্তে পাহাড় সম দীর্ঘশ্বাস।
হাহাকার আকাশে গর্জে উঠে
ব্যর্থতার দায় বাহুতে চাপে।
অপ্রত্যাশিত পাওয়া
ফ্যাঁকাসে অভয়বে মিশে ম্লান
ক্লান্ত সময়, ক্লান্ত যুবক
আহত প্রশ্ন বুকে
অদৃশ্যর অন্তরালে আর কত ?
========================================
~~অন্ধ স্রষ্টা যখন রক্ষাকর্তা~~


বিষন্ন বিকেল ,তুমি ঘরে ফিরছ 
অফিস অথবা ইউনিভার্সিটি শেষে ,
জনস্রোতে মিশে,
তোমাকেও বাড়ি ফিরতে হয় 
পায়ে হেটে অথবা বাসে ঝুলে ঝুলে 

হটাৎ তোমার বাস থেমে যেতে পারে 
টুকরো টুকরো ইটের আঘাতে ভেঙ্গে যেতে পারে 
জানালার কাঁচ ,তোমার মাথা আর সব কিছু

আমি তারপরেও বলবো, তোমার কপাল ভালো
যতক্ষণ না তুমি বাসের মাঝে পুড়ে হচ্ছো বেওয়ারিশ লাশ
গান পাউডার নাকি পেট্রোল দিয়ে জালানো আগুনে

পোড়া কপাল ! তা কেন ?
এখনো তো পত্রিকা আর টিভি ওয়ালারা বাঁকি ,
তোমার পরিচয় জানার জন্য নয় |কত খানি বিভত্স সেটাই দেখাবার জন্য

তারপর সব নিশ্চুপ ...সুনসান
তুমি চলেছ তোমার অন্ধ রক্ষাকর্তার কাছে
আর আমরা তখন ও জানিনা যে সে কিছুই দেখে না চোখে
============================================
~~ইচ্ছে~~

আমি না হয় হলাম নতুন,
সুতোর মতন জড়িয়ে থাকিস তুই।
গরম চায়ে আস্তে চুমুক দিস,
উল্টে রাখিস আমার ছেঁড়া বই।

আমি না হয় হলাম পাতা,
পিছু নেওয়ার শব্দ পাবি তুই।
ভোরের দিকে বারান্দাতে যাস;
উল্টে রেখে আমার ছেঁড়া বই।

আমি না হয় হলাম আকাশ,
রাত্রিবেলা গুনবি তারা তুই।
আজ অন্য হাওয়ায় এলোমেলো চুল;
শুধু দিসনা ফেলে আমার ছেঁড়া বই।
============================================
~~তবু উড়বেই তুমি শঙ্খচিল~~

তুমি যখন হারিয়ে যাও
আমায় ছেড়ে উড়ে যাও শঙ্খচিলের মত
আমি তখন আমার বুকের ঠিক মাঝখানে
খানিকটা আঘাত দিয়ে দেখি
একেবারে শূন্য হয়ে গেছে?
নাকি কিছুটা সিক্ত অভিমান গেছে রয়ে।

আসলে তুমি যখন উড়বার জন্য ডানা মেলো
আমার শরীর মন শ্বাস একসঙ্গে হয়ে ওঠে বিদ্রোহী
উষ্ণ হয়ে ওঠে হৃদয়ের মাঝখানটা
বিস্তীর্ণ মাঠের ঠিক যেখানটায় বাদামি ঘাসের ছোপ
ঠিক সেখানটায় আমি দাঁড়াই,আর দেখতে পাই
পায়ের কাছে চিৎকার করছে অসম্ভব নিষ্পাপ সব ইচ্ছে।

রাঙ্গা মাটির দেশের মেঠো পথে হাত ধরে হাঁটবার ইচ্ছে,
ছোট্ট বাড়ি মোহর এর খোলা ছাতে
বিছানা পেতে আকাশ দেখবার ইচ্ছে,
তিন বেলা দুমুঠো খেতে পাবার ইচ্ছে,
বই বই আর বই এর মাঝে ডুবে থাকবার ইচ্ছে,
যখন ইচ্ছে সীমাহীন ভালোবাসা-বাসির ইচ্ছে,
আর মন প্রাণ দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে
একই সমাধিতে সমাহিত হবার ইচ্ছে।

রাঙ্গা মাটির দেশ, মেঠো পথ, খোলা ছাত
তারা ভরা আকাশ, দুমুঠো খাবার
বইয়ের সারি,ভালবাসার নীল ফরাস,
সমাধি, সব কিছুই ঠিক জায়গায় রয়ে গেছে।

শুধু তুমি, কোন এক অমোঘ টানে
উড়ে যাও , হারিয়ে যাও, ডুবে যাও
হয়ে ওঠো দুর্দান্ত শঙ্খচিল।
উড়তে উড়তে নিষ্পাপ ইচ্ছে গুলো
ক্ষুদ্র হয়ে আসে তোমার চোখে
তুমি শূন্য আকাশে,
নীচে লোলুপ হায়েনার দল স্থির শীতল
অপেক্ষা করে তোমার পতনের।

আর আমি ভাবি তুমি নীড়ে ফিরবে
আমায় জীবন দেবে
দেবে আরও নিষ্পাপ ইচ্ছের জন্ম।
==============================================
~~অপেক্ষা~~


আমার ছোট্ট খেলার মাঠ,
মধ্যেখানে চারটি,দুটি ঘাস।
কোনের দিকে বুনো ফুলের হাট;
তোর ইছে হলে ফুল কুড়োতে যাস।

আমার ছোট্ট খেলার ঘর,
দরজা গড়ায় কুঁজোয় রাখি জল;
শুনতে পাবি মাতাল হাওয়ার স্বর,
তুই আমার বাড়ি কবে আসবি বল।

আমার সানে বাঁধানো ছোট্ট পুকুর আছে,
ওদিকে কি কেউ কখনো যায়?
রাস্তা গিয়েছে পুকুর ঘাটের কাছে,
আমি ছিপ ফেলেছি তোর অপেক্ষায়।
==========================================
~~তুমি আসবে~~


আমি কত কত মাঘী পূর্নিমা
একাকী দেখেছি নারী ,তুমি আসনি |
আমি কত শত শ্রাবণ সন্ধা
একাকী ভিজেছি নারী ,তুমি আসনি |
আমি একাই দেখেছি শরতের তুলো মেঘ
ছিড়েছি কাশ ফুল ,তুমি ছিলেনা |
আমি অপেক্ষা করেছি অনেক |
এক সমুদ্দুর ভালবাসা
আর এক আকাশ আবেগ নিয়ে |
অথচ তুমি এলে না |
আমি জানি তুমি আসবে ,
হয়ত তখন আকাশে পূর্নিমার চাদ থাকবে না |
হয়ত শ্রাবন থাকবে না |
হয়ত থাকবে না শরতের নিল আকাশ ,
আর মেঘ বরণ কাশ ফুল |
হয়ত ভালবাসার সমুদ্র লোনা হয়ে যাবে
কামনার তিক্ত লবনে |
হয়ত আবেগের আকাশে জমবে
বিষাক্ত মেঘ
আর তখন তুমি
আসবে, পৃথিবীর প্রতি তীব্র ক্ষোভ ,
প্রেমিকের প্রতি ঘৃনা ,
প্রেমের প্রতি আস্থাহীনতা নিয়ে
আমি জানি তুমি আসবে
তুমি আসবে ,
একরাশ ক্ষোভ ,ঘৃনা আর অনাস্থা নিয়ে |
যখন সময় অপবিত্র ,
যখন সত্য মুছে গেছে ,
যখন পৃথিবী হতাশায় ডুবে গেছে ,
আর তখন তোমার আশার সময় হবে |
==============================================
~~রক্তে লেখা চিঠি~~

এখান থেকে বহু দূরে,
কোন সুখের ঘরে,
তোমার বসবাস

চেয়ে দেখো একা আমি,
দুখের কাঁথা বুনি,
কাটাই বারো মাস

নির্জনে ভালোবাসা হল শেষ,
ফেরারী সুখগুলো,
স্মৃতি করেছে শয়ন,
তবু ছুটি তোমার পথে,
পায়ে কাঁটা ফুটে,
অশ্রু সিক্ত নয়ন

তাই রক্তে লেখা চিঠি,
উড়িয়ে ছিলাম বাতাসে, পৌছেনি তোমার কাছে?
তোমার যত ছিল প্রেম,
যত ছিল স্বপ্ন,
বুঝেছি আজ সবই মিছে|
==========================================
~~দুঃখ ও দীর্ঘশ্বাস কবিতায় মুক্তি পায়~~


অনিরুদ্ধ তোমাকে প্রেম নিবেদন করবার অনেক আগেই
তোমাকে ভালবেসেছিলাম আমি তবু 
অনিই তোমাকে জানাল ভালবাসা প্রথম, 
আমি কোন আবেদন নিবেদন জানাবার আগেই 
অনিরুদ্ধ তোমার কাছে পৌঁছে গেল-মহুয়া
কেউ কেউ সংসারে থাকে এমন
সব কিছুতেই তাদের দেরি হয়ে যায়- 
যুদ্ধে যেতে তাদের দেরি হয়ে যায়
ছেলেবেলা কাটতে তাদের দেরি হয়ে যায়
সংসারী হতে তাদের দেরি হয়ে যায়
বিবাগী হতেও তাদের দেরি হয়ে যায়
জগতে এমন আমার মত অদক্ষ প্রেমিক পুরুষ থাকে-
মাতালের মত ভালবেসেও তাদের প্রেম নিবেদনে দেরি হয়ে যায়,
আর দেরি হয়ে যায় বলেই দুঃখ ও দীর্ঘশ্বাস কবিতায় মুক্তি পায়।
===========================================
~~নান্দনিক ও ধ্রুব সত্যের কথামালা -৬~~

আমরা দু'জনে এখনও কোনো বর্ষা পাই নি
আমরা দু'জনে অলস দুপুরে হেঁটে যাই নি
চাঁদের আলোয় মাখামাখি হয়ে কবিতা পড়ি নি
পুষ্পিত হই নি ফুলেল সৌরভে কোনোদিনই।

আমাদের পথচলার শুরুই হয়েছে যুদ্ধের মাঠে,
শাহবাগের আন্দোলন জড়িয়ে গেছে আমাদের সাথে।
তবু আমরা আলো পেয়েছি, ঝড় পেয়েছি;
সেই ঝড়কে দু'জনে একসাথে রুখেছি...
আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়েও পরস্পরকে অসম্ভব ভালোবেসেছি।
============================================
~~বাতায়ন খোলা রেখ~~


তোমাকে হারানোর পর কোন কিছুই আর মনে নেই-
তোমার টেলিফোন, ফেসবুক আইডি এমনকি চিঠি লিখবার কোন ঠিকানা,
কোন পুরুষের কেয়ার অফে পাঠাব আমি জানিনা - 
তাই বহুদিন পর মন বারতায় খবর পাঠালাম মনে মনে, 
আর কি আশ্চর্য, তুমিও দিলে তার উত্তর সেই পথে
ঘুম ঘোর স্বপনে এসে । 
মহুয়া- তুমিও কি কাল রাতে টেলিপ্যাথি করেছিলে আমাকে !!! 
বিচ্ছিন্ন হবার পর এই প্রথম সাক্ষাত আমাদের।
=========================================
~~তোমার চামেলি চোখ~~


যাবার বেলায় কেন ফিরে তাকাতে হয় 
যেতে যেতে কেন ফিরে তাকাতেই হয়
তুলসী তলায় যে সুবাস আমি রেখে এসেছি
তার গন্ধ কেন আমার অন্তরে নাকে বুকে
তার গন্ধ কেন আমার অন্তরে নাকে বুকে
সবসময় ঘুরে ফেরে, প্রসন্ন ও মাতাল করে
কেন তাকে পারিনা এড়াতে ? 
যা ফেলে এসেছি তা ফেলে এসেছি
থাক সব ওভাবেই দূরে ।
তার পরও দ্বিধা জাগে-
পিছনে তাকালেই দেখতে পাব জানি
অন্ধকারের রং মেখে
চামেলি চোখ নিয়ে তুমি দাড়িয়ে ওখানে ।
============================================

আলো ছায়ার বৃত্তে যখন নামি
আলো তুমি, ছায়া হলাম আমি। 

মন খারাপ ,
খারাপ মনে আলো !
বললে যখন
কেমন আছো, ভালো?
========================================
~~নীল উপকূল ছেড়ে সমাধির পথে যাত্রা~~


তোমার এই নীল উপকূল ছেড়ে চলে যাচ্ছি পাহাড়ের ঐ চুড়ায়।
উদ্ধত উন্মত্ত তোমার ঢেউ দেখব পাহাড়ের চুড়া থেকে।
যে ঢেউ ভেঙ্গেছে আমার সাজান অজস্র বালিঘর।
এখন আমি পাহাড়ের ঐ চুড়া থেকেই ধীরে ধীরে ডুবতে থাকবো তোমাতে
হাহাকার করবে তুমি, আরও ফুঁসে উঠবে তোমার ঢেউ।
কিন্তু আমি ক্রমশ অবিচল অনড় ঐ পাহাড়ের সাথে একাকার হয়ে
তোমার পাশেই স্থির হয়ে থাকব অনন্ত কাল।
=============================================
~~পাগলী~~


শোন ! একজোড়া ডানা দিতে পারবে? উড়বো,
বড্ড উড়তে ইচ্ছে করে।
আর শোনো একটা নীল আকাশও দিও সাথে
নইলে উড়বো কোথায় ?
ডানা যদি না দিতে পার তবে আকাশটাই দিও, সাথে সাদা মেঘ।
মেঘে মেঘে ভেসে বেড়াব, বড্ড ভাসতে ইচ্ছে করে !
ডুব সাঁতারে চলে যেতাম জল পরীর দেশে,
যদি একটা সাগর দিতে, দেবে তুমি?
তোমার একটা আঙ্গুল যদি দিতে
তবে বুকের ভেতরের জমিয়ে রাখা ব্যথা গুলো দিয়ে
একটা আংটি বানাতাম,
পরিয়ে দিতাম তোমার ঐ আঙ্গুলে।
তারপর জ্যোৎস্নার আলোতে, আগুন লাগা রাতে
তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখতাম
পাগলী !
=========================================
~~যৌবন~~


তুমি এতো শুকনো কেন?
নদীর মতো তোমার কেন জল নেই?
তোমার সেই ভরা যৌবন কোথায়?

জনতার মঞ্চ কাঁপানো সেই যৌবন

তাহলে কী তুমি নুয়ে পড়েছো বয়েসের ভারে? 
তার কাছে কি হার মেনেছো?
যদি তাই হয় বৃথা ছিল কি তোমার অহংকার?
===========================================
~~আই-ডি কার্ড~~


বুকের বাঁদিকটাতে উষ্ণ কাল রঙের একটা জিনিসের খোঁচা,
পরিচয় কি? আইডি দেখি......
আইডি নেই স্যার,আমি ছাত্র।
একদলা থুতু ফেলে স্যার বললেন ,
ছাত্র?হাহ !শালা ভাগ এখান থেকে,দৌড়া কুত্তার বাচ্চা।

ছেলেবেলায় একবার দৌড়ে হেরে গিয়ে অনেক কেঁদেছিলাম,
তা দেখে বাবা আমায় একটা দুরবিন কিনে দিয়েছিলেন।
সেটা দিয়ে অনেক দুরের উড়ে চলে যাওয়া পাখিগুলোকে দেখতাম,
আর উড়তে না পারার গভীর যন্ত্রণা অনুভব করতাম।
বাবার কথা মনে পড়ে চোখটা ঝাপসা হয়ে এলো আজ হঠাৎ,
নাহ! চশমাটা পালটাতেই হবে এবার,
শুধু শুধু চোখে পানি চলে আসে ।

ছেলেবেলার সেই দৌড় প্রতিযোগিতার উন্মাদনা,সেই উত্তেজনা
আবার,আরেকটাবার অনুভব করতে লাগলাম;
আজ জিততেই হবে আমায়,যেভাবেই হোক আমি জিতবই।
ছুটতে লাগলাম আমি প্রাণপণে,ঊর্ধ্বশ্বাসে......আমাকে জিততেই হবে আজ।
ওইতো,রাস্তার শেষ প্রান্তের ল্যম্পপোস্টটা ক্রমঃশ এগিয়ে আসছে।
এইত্ত আর একটু !

হঠাৎ ! পিঠের মাঝ বরাবর কি যেন একটা বিধল,
প্রচণ্ড যন্ত্রনায়,তীব্র ব্যথায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল আমার ৫'-৫'' এর দেহখানি।
প্রিয়তি যখন আমায় ছেড়ে চলে গিয়েছিল,সেদিনও এতটা ব্যথা করেনি বুকের বাঁ দিকটাতে।
দৌড়ে যেবার হেরে গিয়েছিলাম সেবারও না।
পিঠে হাত বুলাতেই এক প্রকার লাল রঙের উষ্ণ তরলে ভিজে উঠল হাতটা।
যাক! ভালই হয়েছে,তরলগুলো ২৩টা বছর ধরে ছুটে ছুটে ক্লান্ত।
আজ তাদের নিস্তার দেয়া গেল।
উরে চলে যাওয়া পাখিগুলোর মত তারাও আজ স্বাধীনতা পেল।

গরম ধোয়া উড়ছে এখনও স্যারার কাল জিনিসটা থেকে।
মাটিতে লুটিয়ে পরবার আগ মুহূর্তে বুঝতে পারলাম;
আইডি- কার্ড নেই বলে স্যার হয়ত রাগ করেছেন।
শেষ প্রান্তের ল্যাম্পপোষ্টটাতে পৌঁছান হল না আমার।
আজ আরেকটিবার হেরে গেলাম আমি দৌড়ে।

ল্যাম্পপোস্টটা কেন যেন ঝাপসা হয়ে আসছে ক্রমঃশ...
ঝাপসা ! ঝাপসা ! ঝাপসা !
===========================================
~~ঝুমকি-১~~


কত পথ পেরুলাম ঝুমকি
তবু মানুষ চেনা হলো না!
বারো প্যাচের নারী, চোখে জড়িচুমকির খেল্ দেখালো
অমলেশ সেই দেখে দেখে শেষে উন্মাদের খাতায় নাম লেখালো
পত্রিকার শেষ পাতায় ওকে নিয়ে কতো ফিচার হলো
তবুও অমলেশকে কেউ ভালোবাসলো না।
=========================================
~~নান্দনিক ও ধ্রুব সত্যের কথামালা- ৮~~


জগতের সবাই এখন আমার পাশে আছে
পুরো পৃথিবীর কাছে আজ আমি কৃতী
আজ তুমি দূরে থাকো, ক্ষতি নেই।
যেদিন দেখবো সবাই সরে গেছে;
আমার দু'চোখের নদীতে ভেসে উঠবে ভীতি,
সব কথা হারিয়ে ফেলবো যেদিন,
সব আশ্রয় আমাকে ছেড়ে যাবে যেদিন, 
সব ব্যস্ততা উধাও হয়ে যাবে যেদিন,
আমার একাকী হয়ে পড়া শূন্য দু'হাত
তুমিই শুধু ধরবে সেদিন।
==========================================
~~অস্তিত্ব~~

আমার মধ্যে কে থাকে
আমার মধ্যে কে থাকে
আমার রক্ত মাংস জিন এবং তারও
গভীরে আমার মধ্যে কে থাকে 
কথা হয়, হয় না । 
মনেরও গভীরে তার সাথে 
কথা হয়, হয় না । 

আমার মধ্যে কে থাকে
আমার মধ্যে কে থাকে
আমার রক্ত মাংস জিন এবং তারও
গভীরে আমার মধ্যে কে থাকে
কথা হয়, হয় না ।
মনেরও গভীরে তার সাথে
কথা হয়, হয় না ।

বুঝি আমারও আমি তুমি বুঝি ।
===========================================
~~নির্বোধ প্রেমিক~~


প্রতিক্ষারত যুবক আমি
সদ্য প্রেমে পড়া নির্বোধ প্রেমিক।
চিন্তাকোষে অভাবনীয় ভালোবাসার উপচে পড়া ঢেউ।

প্রথম গর্ভবতী নারীর মতো গর্ভিত শব্দকোষ।
নবজন্মের প্রতিশ্রুতি
বাহুবগলে আগলে রাখে স্বপ্নমুখ।
মিছিলের ভিড়ে অগ্রগামী যুবকের মতো
উন্মাদনা সম্মুখে।
বিশুদ্ধ কল্পনা বিভোর দুপুরে,
চির হরিতের মেলায় মুখখানি তুলে ধরে বধির মুখ।
দৃষ্টির সীমান্তে অসীম সংকেত
নির্বিঘ্নে প্রহর বুনে বীজ।

অগোছালো কবিতার বর্ণমালাই তোমার বর্ণনা।
রোদ্দুর বিহীন রাতে ভবঘুরে মন
লোকালয়য় ছেড়ে স্বপ্ন খুঁজে তোমার অরণ্যে।
সীমাহীন ভালোবাসা খুঁজে, নির্বোধ প্রেমিক
স্পর্শকাতর তোমার আকাশের নিচে
প্রতীক্ষারত যুবক আমি।।
=============================================


No comments:

Post a Comment