Monday 5 August 2013


~~পাগলের প্রলাপ~~

 
মানুষের মুখ সবচে জটিল,
নাকি পানির মতো স্বচ্ছ, সহজ?বলুন,
নির্ঘাৎ বিভ্রান্ত হবেন
এই বিভ্রান্তি টুকু নিয়ে ভাবতে থাকুন,
না হলে সময় কিভাবে কাটাবেন?

ওই দেখুন না, দু’জন নারী
খুব তো বকবক করে হাসছে,
মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝছেন না
আপনার দিকেই হেঁটে আসছে
কেন আবার দুশ্চিন্তা করছেন?

একজন গ্রামের আরেকজন শহোরে,
একজন সখিনা, আরেকজন নমিতা,
আবার দুশ্চিন্তা তাদের কে দেখে
এসব ছেড়ে ভাবোন নিজের কথা
একটি সুখী মুহূর্তের কথা ভাবুন!

ভানুমতির খেলা দেখেছেন?
কিংবা মেলার বায়োস্কোপ? কখনো!
এর পরেতে কী হইলো ?
কুতুব মিনার আইস্যা গেলো...
নাহ্! ভারী মুসকিল হলো দেখছি!

জগতে এতো বেরসিক লোকও থাকে!
একটু ভাবুন এবার নিজেকে নিয়ে।।
=============================================
~~সফলতা-ব্যর্থতা~~
 

স্রোতস্বিনীর বুকে সাঁতার কেটে,
খালে-বিলে-জলাশয়ে মাছ ধরে,
খোলার মাঠে ফুটবল-হাডুডু খেলে,
গাছের ডালে চড়ে পাকা ফল খেয়ে
ইচ্ছা ছিল অনেক কিছুই অন্তরে,
মুক্ত বুদ্ধির চর্চা ছিল পরিবারে
প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠার কামনা
আদর্শই ছিল জীবনের অনুপ্রেরণা।
আমারও ভবিষ্যত্ স্বপ্ন একটাই
আরও ভালো কিছু লিখতে চাই
লেখায় মানুষের হূদয় ছুঁয়ে যেতে
চাই এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে
ভাঙ্গা পায়ে অন্ধের কী বা উপায়
জ্ঞানের নিবিড় চর্চায়, কবিতায়।
মেধা, পরিশ্রম এবং সততার সমন্বয়ে
আজ অধিষ্ঠিত কতজন সফলতার শিখরে,
ভূমিকম্পের অনিশ্চিত দুর্যোগ মোকাবেলায়
নির্মাণ করি বাড়িটা যেন ফেটে না যায়।
একা থাকতে থাকতে জীবনটা বেড়ে ওঠা,
সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে 'কালের উজানে চলা।
চিন্তা চেতনায় মনষ্কের অনেক সম্ভাবনাময়
সাফল্য অর্জনের পথ কিন্তু কোমল নয়।
প্রান্তিক মানুষের কাছাকাছি কাজের সুযোগে
কিছু করার তাগিদ বোধ করছিলো ভিতরে।
দৃষ্টির নতুন মাত্রা নিয়ে না আসলে
অগ্রগতির সকল ধারণা মিথ্যে হবে
থাকবে শুধু অন্ধকার আর অমানুষিকতা
স্নেহের দ্বার বন্ধ করো না হে স্নেহ দাতা।।
==============================================
"~~অস্থির সময়ের কাব্য~~"




বিষময় প্রেমে, প্রনয় উল্লাসে
খুন করি পথ। গুম করি পাথারের জল।
অস্পষ্ট সীমানার পানে ছুটে চলি-
অদৃশ্য ভাগ্যের টানে।
অস্থির সময়ের কাব্যগুলোও বড় অযৌক্তিক মনে হয়!

যেথায় মুক্তির চুক্তি হবে। যেই ঘরে
সংলাপের আয়োজন।
গোল টেবিলের চারিপাশে বসা
একদল নগ্ন মানুষ। এবং আমি।
জানি, আজ আমাকেই প্রয়োজন তাদের!

প্রেমিকার স্পর্শে ঘোর কাটে।
নিজেকে পরখ করি।
গলাতে কলমি মালা-
বগলে গুজে দেয় কেউ, শুদ্ধমানব সনদ।

আমি কবি,
সনদের প্রয়োজন আমার না!
==============================================
~~সেইসব অনাবিল ক্ষনে~~
 


যদি সাতসমুদ্র তের নদী মন্থন করে সবটুকু গরল শুষে নেই,
যদি আসমুদ্র হিমাচল চষে ফেলি তন্ন তন্ন করে,
জানি তবুও তোমাকে পাবো না।
তবু সেই তোমাকেই খুঁজি কুয়াশা ভোরে সীগালের ডানায়,
পাতার মর্মরে, পাখিদের কলতানে, ফুলের সুবাসে।
খুঁজি তোমায় জনারণ্যে, কবিতার পংক্তিতে,
নাটক-সিনেমা-গানের ভাবালুতায়, সাহিত্যে্র পাতায় পাতায়।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই নিঃশব্দে পাতা ঝরার ক্ষনে,
প্রজাপতির পাখায় পাখায়, গোধূলি লগনে।

তারা ভরা রাতে জোছনা যখন মেঘেদের সাথে কথা কয়,
সূর্যের আগমনে শুকতারা যখন ফিকে হয়ে যায়,
যখন গভীর অরণ্যে নাম না জানা ফুলেরা চোখ মেলে চায়,
দিনশেষে পাখিরা যখন নীড়ে ফিরে আসে,
যখন তমসা ঘন রাত্তিরে অমাবস্যায় আঁধারে ঢাকে দিক-দিগন্ত,
নাবিকের তৃষিত চোখ যখন খুঁজে পায়
বিস্তীর্ণ জলরাশির শেষে সবুজ দিকচক্রবালের,

সেইসব অনাবিল মুহূর্তে খুঁজে ফিরি শুধু তোমাকেই।
নিশ্চিত ব্যর্থতার উপহাসটুকু মেনে নিয়েও
শুধু খুঁজে যাই তোমাকে--তোমাকেই।।

==========================================
~~জীবন ও আগুন~~
 


ঝড়ো হাওয়া বইছে মনে করুন
প্রতি মুহূর্তে ধেয়ে আসছে আগুনমুখা গোলা
ঘনিয়ে আসছে জীবন!
পরস্পরের নিকটবর্তী হচ্ছে দুই বন্ধু,
দুই সহোদর— জীবন ও আগুন।

খুনখুনে আওয়াজ করছে প্রস্তরিত হাড়
মানে গান, খাণ্ডব দাহন!
সেই তো আমাদের জীবন-জীবিকা
কথাগুলো জটিল নয়। শুনুন,
নিজেকে উন্মুক্ত করার এটা একটা কৌশল।

কোনো জটিলতা থাকার কথা নয়
উসখুস করছেন কেন? কথাগুলো শুনুন
একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে মারা গেছে কিছু জন
এমন বীভৎসভাবে থ্যাঁতলে গেছে
‘তাদের’ মানুষের মৃতদেহ বলে মনেই হয় না।

একজন বৃদ্ধকে শনাক্ত করা গেছে
মৃত বৃদ্ধের মুখে যন্ত্রণার তীব্র! একটা ছাপ
দেখলেই বুঝতে পারতেন এবং কাঁদতেন
কী, চুপ হয়ে আছেন? কোনো প্রশ্ন নেই?
জানতে চান না, বৃদ্ধের যন্ত্রণার ছাপ, তার কী মানে?

শুনুন, হাসবেন না আপনি বোকা নন
সুস্থবুদ্ধির একজন সংসারী মানুষ
কথাগুলো কানে তুলছেন না। না?
মৃত্যুকে ভয় পান আপনি? কিংবা, প্রতিদিন
একটু একটু করে জরাগ্রস্ত হচ্ছেন, টের পান?

==============================================

~~অদৃষ্টের বংশধর~~
 


আরে, আপনি দেখি অস্থির হয়ে পড়েছেন!
আপনার মতো লোকদের দেখে আমার হাসি পায়
আপনারা আমাকে ভাবেন পাগল, বদ্ধ-উন্মাদ
বলেন, ওকে পাবনায় পাঠানো উচিত
কিন্তু আমি হাসি আপনাদের নিয়ে।

আপনার ঘরে কালো একটা বেড়াল থাকে
আর থাকে খাঁচাবন্দি পাখি
বেলকনির নিঃসঙ্গতায় পাখিটা কাঁদে
আত্মহত্যার প্রচেষ্টায় থাকে
ডানা ঝাপটানি মারে দিনরাত।

বাতাসের ধাক্কায় এদিক-ওদিক থেকে
উড়ে আসে বেওয়ারিশ লাশ
মানে গাছের মৃত পাতা
এই তো জীবন আপনার আমার
দিব্যি বেঁচে থাকার! কিন্তু মুখের ওই যন্ত্রণার ছাপটা!

আপনারা এতো বোকা, বোকার হদ্দ, খেয়াল করছেন?
মাত্র পাঁচ মিনিট পর কী ঘটবে জানেন না
কিন্তু আমি যে অদৃষ্টের বংশধর, সব জানি
আপনার সবকিছুই জানি আমি
আপনার আত্মহত্যার প্রচেষ্টার কথা মনে আছে?

এ পর্যন্ত বার তিনেক আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন, হায়!
তাই আপনার মতো লোকদের দেখে আমার হাসি পায়।।
=============================================

~~হিপোক্রেটিক স্বপ্ন জগৎ~~
 

অলস দুপুর আলসে রাজপথ
কেমন যেন ঝিম ধরে আছে 
একা একা পথ চলি ধুলোমাখা পথে স্যান্ডেল ঘসে ঘসে
তারি মাঝে তোর কথা হাঠাৎ করেই মাথায় চলে আসে
ইশশ, শুধু তুই যদি থাকতি আজ আমার সাথে
বড্ড মিস করি রে তোকে; বাস্তব জগতে।

খুব মাঝে মাঝে বাতাসে গুলির শব্দ ভেসে আসে
আমি কান পেতে তোর হাসির শব্দ শুনতে শুনতে এগোই দিবাস্বপ্নের দেশে
থেকে থেকে জানি টায়ার পোড়ার গন্ধ নাকে আসে
আমি তোর গায়ের গন্ধটুকু নাকে নিয়ে পথ হাটি সবকিছু অবহেলায় ফেলে হেসে
কিছু যায় আসে না আমার হরতালের রাজনীতিতে
সারাটাক্ষণ তুই যেন থাকিস আমায় বুকে ধরে জড়িয়ে
আমার বাস যে তোকে নিয়ে স্বপ্ন জগতে
হয়তো বড্ড ঠুনকো কাঁচের গ্লাসের মত
তবুও তাতে মনের মাধুরী মিশিয়ে স্বপ্নের বুদবুদগুলো যাই উড়িয়ে।

দিবাস্বপ্নের ধ্রুপদী বুদবুদগুলো মিলিয়ে যেতে থাকে সন্ধ্যে নামার সাথে সাথে
ধুসর কুয়াশার চাদর পরে যখন রাত্রি নেমে আসে
অনেক কষ্টগুলোকে বুকে চেপে পথ চলি তবু আমি ঠুনকো ঐ স্বপ্ন জগতে
মনের সাথে যুদ্ধ করে তোকে নিয়ে থাকি মেতে, ঐ স্বপ্ন জগতে;

ভাব ধরি ভালো আছি, সুখে আছি – চারিদিক মাতিয়ে রাখি
আসলে কি জানিস? এক ঘোরের মধ্যে স্বপ্ন বাস গড়ি তোকে বুকে ধরে রাখি
আসলে বাধ্য হয়ে হিপোক্রেটিক এক সাগরে জীবনের তরী ভাসাই
চারিদিকে লোকজনকে দেখাই
এসো দেখো আমি ভালো আছি – অনেক অনেক ভালো
(আসলে আমি নিজেই জানি কি এক অসহনীয় বেদনায় হয়ে আছে চারিদিক কালো)
মানুষ দেখে, আমি কোজাগরী পূর্ণিমায় রাত জাগি সুখের ভেলায় ভেসে
(আসলে তোর যাতনায় নিদ-পরী এসে বসে না আমার চোখে)
হয়তো এভাবেই বাকিটা জীবন সন্ন্যাস কেটে যাবে, পায়ে হেঁটে হেঁটে
(ধুলো মাখা পথে দিবাস্বপ্নে ইতস্তত ধীর চরণ ফেলে ফেলে)
তবুও মনের কোনো এক কোণে রয়ে যাবে তোকে পাবার আশা
(যদি চোখে পড়ে সেই চরণচিহ্ন গুলো, তবে চিনে নিস আমার অম্লান ভালোবাসা)।

বড় কঠিন রে এ কাজ
প্রতিনিয়ত হিপোক্রেসির সাথে বসবাস
জগতের কোথাও নিত্য কিছু নয়, তবু করে যাই ছলনা আর অভিনয়
তোকে হারিয়ে কষ্টের ধ্রুব সত্যির সাথে হয়েছে আমার পরিচয়।
==================================================

~~সত্যের সংকল্প~~

তোমরা মাতিয়াছ এই কোন খেলায়।
আমি অপ্রতিরোদ্ধ পারিবেনা রোখতে।
উজ্জলে আমি বার বার আসিব ফিরিয়া।
যতই হ্যাকিং করিবা ততই মঙ্গল।
হিংসার পতন ঘটিয়াছে বারংবার ।
সত্য অবধারিত রহিয়াছে চির অম্লান।
আমি সেই সত্যের ধারক করিতেছি বহন।
নিশানায় আছি আমি বলিয়ান সবারই তরে।
একুত্রিশে মার্চ রুখিবে এমন সাহস কার।
পহেলা মে বুঝাইয়া দিবার সংকল্প তার।
জাগিয়াছে মন করিয়াছে জাতিতে বন্ধন
পারিবেনা তার করিবার রণেতে ভঙ্গন।
তুমি যাই কর আর করিবা হ্যাকিং।
পারনি আমার মনকে করিবার ব্যাকিং।
শান্তির বাণীতে আমি জাগিয়াছি রহিয়াছে
আমার সংকল্পে আছে সততায় শত জনতা।
আমি অগ্রজ তোমাদের মাঝে বহমান
দৃঢ়তায় আগাইয়াছি করিতে সম্মান।
==========================================

~~কবিতার আদিক্রন্দন~~

 
পাখির সুর ম্লান হয় মানুষের গানে
পাথর এবং পাহাড়ের শরীরে
রোদবৃষ্টি হয়ে নামে।
আমি মানুষের চোখে দেখতাম
একদা ইশ্বরের রুপ।

এই শহরে সতত মানুষ মরে
শুন্যতার স্তব্ধ চরাচরে
জীবন্ত কবিতার আদিক্রন্দন।
অন্ধকার সমুদ্রের কলস্বরে বাজে
কবির আমরণ উচ্চারণ

ইশ্বর! একবার নেমে এসো
মানুষের চোখে

~~একা~~
 

অগ্লুৎপাত আর অমাবশ্যায় কেটেছে প্রতিজ্ঞার ঢের প্রহর
যতোটা উল্লাসে ছুঁয়ে ছিলো মন
আজ দেখি বিরাণ পরাণে ক্ষরণ ভাসে তার দিগুণ...

বিশাল জনসমুদ্রের ঢেউ আছড়ে পড়া এপাড়ায়
তবু কেউ রয়ে যায় একা একা বারোমাস
যেমন নিভৃতে একা থাকে আনমনা নীলাকাশ।

~~ব্যস্ততা দূরত্ব বাড়ায়~~
 

তোমাকে লিখব লিখব করে
লিখা আর হয়ে উঠে না
কাজের চাপে খুব ব্যস্ত থাকি
সময়গুলো আর আগের মতো না

তুমিও অনেক পাল্টে গেছ
ছয় মাসেও যায় না তোমায় দেখা
আসবে বলে ভূলে যাও
ক্যালেন্ডারের পরিচিত পতা

এভাবেই মাস যায় বছর যায়
ক্রমাগত সময় চলে নিজস্ব ধারায়
ব্যস্ততা কমিয়ে দিয়ে হৃদয়ের টান
তোমার আমার মাঝে দূরত্ব বাড়ায়...
===============================================

~~আঁচলে আগুন বেঁধে রাখা যায় না~~


 
যতোই পরাও এ পায়ে শিকল,
দুয়ারে কপাট, মনে শৃঙ্খ্ল।
যতোই হানো বজ্র আঁখিতে,
মেঘ বিদ্যুতে পারে না ঢাকিতে।
যতোই জড়াও ক্ষনিকের মোহে,
ছলনা জালে দ্রোহে-বিদ্রোহে।

যতোই বাঁধো না কপট কথাতে,
চাঁদনী প্রহর মায়াবী নীশিথে।
যতোই ভোলাও ঘুম-পাড়ানী সুরে,
শীত-বসন্তে প্রহরে প্রহরে।

নিষেধে জড়াও ক্ষোভে-বিক্ষোভে,
শোক-সন্তাপে আর বিত্ত-বৈভবে।
যায় না, যায় না, বেঁধে রাখা যায় না,
আঁচলে আগুন বেঁধে রাখা যায় না।।
===========================================

~~সুখ নেই আমার~~ 


কখনো ভাঙবো না আমরা আমাদের মন,
সুখে দুখে থাকবো সাথে সারা জীবন।
এই বুকে হাত রেখে বলে ছিলে হেসে,
বিশ্বাস হারিয়ে চলে গেছ মেঘলুপ্ত বেশে।

কেনো এতো ব্যথা তুমি দিয়েছো আমায়,
আমিতো শুধু ভালবেসেছিলাম তোমায়।
কেনো তুমি কেডে নিলে সুখ সব আমার,
মেনে নিতে পারিনা দূরে থাকা তোমার।

বল কি ভুল ছিলো কি দোষ আমার,
যেভাবে কাঁদালে তুমি সয়তে পারিনা আর।
এক একদিনের নির্বাসন কত যে অন্ধকার,
চারিদিকে খুশির বন্যা সুখ নেই আমার।

জানিনা কোন কারনে আজ তুমি আমায়,
বিরহের সাগরে বাসালে বুক ফেটে যায়।
যতদিন বুকে নিঃশ্বাস থাকবে অপেক্ষায় রব,
তোমারি পথ চেয়ে তোমাকে ভালোবেসে যাব।।
=============================================

~~অধরা আঁধার~~



তুমি আমার সকালের রোদে ঝিকিমিকি প্রথম বসন্ত বেলা,
দখিনা বাতাসে মনের আকাশে মৃদুমন্দ দোলা।
তুমি আমার না বলা কথার লাজরাঙা শিহরণ,
তোমার প্রেমেতে হয়ে যাই আমি অনন্য অসাধারন।
তুমি আমার চকিত চোখের মায়াবী সজল চাহনী,
তোমার মনেতে আমি চঞ্চল চপলা বনহরিণী।
তুমি আমার সুর ভরা গান, কথা কবিতার ছন্দ,
ক্ষনেকেতে পাই, ক্ষনেই হারাই, নিজেরই সাথে দ্বন্দ।

তুমি আমার শান্ত কুটির, সন্ধ্যায় ঘরে ফেরা,
তোমার কাছেই ছুটে যায় মন অনিমেষ বাঁধনহারা।
তুমি আমার জীবন-মরণ, পূজায় মঙ্গল শাঁখ,
আমি কে তোমার? সেকথা জানিনা, না হয় এখন থাক।

তুমি আমার হৃদয়ের মাঝে একখানি ফোটা পদ্ম,
মিলন মেলায় কপোত-কপোতী, মান-অভিমান চদ্ম।
তবুও তোমারে পাইনা আমি আমার হিয়ার মাঝে,
অধরা আঁধারে পেয়েই হারাই সকাল-দুপুর-সাঁঝে।।
===========================================
~~সভ্যতা-প্রতিশোধে~~
 


মন জোগাতে নয় মন জাগাতে
লাঙ্গুলের বেয়াদপি ধরি ডান হাতে
মাজার ব্যথা বাড়ছে বয়সের ভারে
শরীর ছেড়ে দিয়েছে যেতে হবে ওধারে
রাতে ঘুম হয় না হলেও কম
খুব জ্বালা জ্বালা আর সয়না একদম।

আমি যে সামান্য একজন একলা হাঁটি
সঙ্গীহীন মনে হয় তবো বেশ সুখে আছি
মানুষের প্রতি মন কেবলই ফিকে হয় না
রাগ, ঘৃণা, চোখে জল আসা ভালোবাসা
কী করে যে ধাক্কা মারে বুকে
তবু সে ক্ষুদ্র বাড়িয়েছে ভিখিরির হাত সুখে।

কতজন গেল চলে এই চোখের সামনে
আমি এখনো রয়ে গেলাম যেন কেমনে
ক্ষণিক যৌনতা ছাড়া কিছুই জানিনা
শব্দ যোগে সারা পেতে করি কবিতা
মেতেছি ধ্বংসের উল্লাসে!হিংসা, ক্রোধে
গড়েছি ভয়াবহ বিপুল সভ্যতা-প্রতিশোধে।।
===========================================

~~শান্তির শ্লোগান~~
 

এসো স্রষ্টার সন্তুষ্টি মুক্তির পথে
এসো আগামীর পথে
এসো সুন্দর পৃথিবীর তরে
এসো ভালোবাসার নিগুঢ় বন্ধনে
এসো মিলে হাতে রেখে হাত
এসো বিগত দিনের ক্লান্তিক্লিষ্ট ভুলে
এসো সকল ঈষর্া বিদ্বেষ পিছু ফেলে
এসো দ্বিধা দ্বন্দ্ব মৃত্যু ঘোষণা দেই
এসো সবাই মিলে একটি শান্তির পতাকা উড়াই
এসো ঐক্যবদ্ধতায় দেশ গড়ি
এসো মানবের তরে জাতিগোত্র ভুলে যাই
এসো পথেরধারে নীরহ মানুষের মাথায় হাত বুলাই
এসো আজ সবাই এক সাথে শপথ করি
এসো হে বীর বাঙালীর দামাল তরুণ
এসো শক্ত হাতে লাঙ্গল ধরি
এসো সবাই স্বউচ্চ কন্ঠে বলি-
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি ।
=============================================

~~সংকল্প~~


রাত পোহালে সেই জাগ্রত পাখির কলরব নেই।
শুরুতে সকাল হাহাকার আছে শৃংখলা কোথায়।
কখন কে কি করিবে দিশেহারা থাকে সবায়।
ভাবিতে পারেনা সিদ্ধান্ত নিতে পেটের জ্বালায়।
সচেতনতা বিঘ্নিতে করিতেছে সমাজের অবনতি।
কেন আর আসবেনা করিবার মত গতি সবাইকি
আমরা মোখ রুচক বাণীতে বলিতে কথায় মাতি।
সমাজের অবক্ষয় রোধে দেখোনা তোমরা পার কি
আমাদের পাশে কাঁদে কাঁদ মিলিয়ে আগোয়ানে সম্মান।
পৃথিবী আজ এগিয়েছে পিছুতে হটিয়াছে আমরা জাতি।
ক্ষুদ্র থেকে শুরুতে তাহা বৃহত্ত্বে পৌছে রাখিলে ওয়াদা
পারিবে যতই আসিবে বাধা মুষ্টি বদ্ধে সবার একতা।
লজ্জার না হারিবারো না সংকল্পে থাকিলে হবে উদ্ভেলিত
তোমরা পাবে উন্নতি কৃতিত্বে থাকিবে সম্মানীর ফুলদানি।
একতা মাঝে সততাই পারিবে সংকল্পে অটুট থাকিলে মন।
মিথ্যা নয় সত্যি একদিন হবে সকল কিছুর অবসানে
জাগ্রিতে বিবেকের তারনার সমষ্টিতে সবেতে তাহার মুক্তি।
===============================================
~~~মানুষ মরছে মানুষ~~


মানুষ মরছে মানুষ,
মানুষ মারছে মানুষ..

অন্ধ হে ,আলো ঢালো
চেতনায় !
এতো রক্ত এতো রক্ত মাটি বন্ধ্যা হয়ে যাবে নৃশংসতায়!

চোখ খুলে দেখ যার
প্রান যায় ,
যার বুকের রক্তে রাঙা হাত দুখানা ,
সে প্রিয় তোমার ,
সে আপন তোমার অনেক দিনের চেনা!

আজ রাস্তা শুনশান
পাড়া নিঝুম . . . !
এই কী কবির ,
বড় সাধের , "একই বৃন্তে দুইটি --- "
==========================================

~~চুড়ির শখ~~


 
চুড়ি সংগ্রহ আমার শখ
নানা মানুষের নানা শখ
শ্বশুরবাড়ির অনেক গয়না
সোনার চুড়ি ভালো লেগেনা।

চুড়ির জন্যে মেলায় মেলায়
পা দু’টি মোর ঘুরে বেড়ায়
ছোট থেকেই সব মেলাতে
ছুটে যেতাম চুড়ি কিন্তে।

আমার শখ চুড়ি কুড়াতে
চুড়ির জন্য ঘুরে বেড়াতে
হোকনা দূরে বহু দূরে
নাছোড়বান্দা যাবো উড়ে।

সালোয়ার-কামিজ শাড়ি,
যাই-ই আমি পরি
সঙ্গ মিলিয়ে পরি চুড়ি
দু’হাত ভরে পরি।

কাচের চুড়ি প্লাস্টিক চুড়ি
শব্দ করে মুগ্ধ করি
লাল কাচের রেশমি চুড়ি
ভালো লাগে তাইতো পরি।

প্যাঁচের চুড়ি, চুড়, বালা,
মোটা চুড়ি,সোনা, রুপা,
ডায়মন্ড, কাঠ, স্টিল, মাটি
সংগ্রহেতে আরো কত কী।

এমন কোনো রং নেই
যা আমার চুড়ির নেই
মনে করি চুড়ি ছাড়া
সাজ আমার পূর্ণ হয় না।

গি্লটার, চুমকি, পুঁতি, পাথর,
কাতান, সিল্ক,জামদানি,
তসর কাপড় লাগান, ঝুরি,
চুড়ি যেন ঘণ্টি দেওয়া চুড়ি।

চুড়ি পরি পরিবেশ মেপে
পোশাক পরি চুড়ি দেখে
যেখানে যাই পছন্দের চুড়ি
ব্যাগে ভরে সাথি করি।

আমার প্রিয়ের এই কাহিনী
চুড়ি প্রেমের তার জীবনী।।
==============================================
~~মাউলিননং গ্রামের কথা~~

 
(এটি আসামের অত্যন্ত প্র্ত্যন্ত এলাকার একটি গ্রাম)

লোকালয় থেকে বহুদূরে সবুজ বন-বনানী ঘেরা
খাসিয়া গ্রামের নাম মাউলিননং। অনেক নদী, ঝরনা,
সবুজ প্রান্তর, কয়লাখনি পেরিয়ে যেতে যেতে যেতে
পথের শেষপ্রান্তে বসতি। পরিশ্রমী মানুষেরা ঘর
বেঁধে থাকে পাহাড়ী উপত্যকায়, তাদের সবজি ক্ষেতে
ফলে কেবলই পাতাকপি আর ঝালমরিচ। ঝরনার পাশে পাতার
রেকাবীতে বসে এই দিয়ে তারা ভাত মেখে খায় গোগ্রাসে।

গহীন পাহাড়ী জঙ্গল থেকে তুলে আনে নাম না জানা অর্কিড,
সাজিয়ে তোলে তাদের আঙিনা আর বাগান। কাঠকূটো জ্বেলে
আগুন জ্বালায়, সে আগুনে ফুঁ দিতে দিতে ধোঁয়ায়
লাল হয়ে ওঠে তাদের চোখমুখ। পরিচ্ছন্ন
বেতে বোনা বারান্দায় শিশুরা খেলা করে।
পোষা মুরগী আর বনমোরগ রান্নার সুগন্ধে
তাদের সারা বাড়ি মঁ মঁ করে। বাঁশ আর
বেত কেটে সারাবেলা কেটে যায়।

মেয়েরা পাহাড়ের জঙ্গল থেকে বস্তায় ভরে
তেজপাতা কুড়োয়। পথে একটি দুটি বুনোফুল
তুলে গুঁজে নেয় খোঁপায়। ছোট্ট দোকানঘর থেকে
কেনা চিরুনীতে সাজিয়ে তোলে কেশকুন্তল।
বালক-বালিকারা সকাল হতেই যায় গাঁয়ের ইস্কুলে।
তার সাথে লাগানো গীর্জার ঘন্টা থেকে থেকে
করুণ সুরে বেজে ওঠে। প্রতি রবিবার প্রার্থনার সকাল।

সভ্যতা তার সফরে এখনো এখানে এসে পৌছা্যনি।
তাই পাহাড়ের গায়ে বেড়ে ওঠা কমলার বাগান
পাহারা দিতে দিতে নিশ্চিন্তে বুনোসুরে
গান গায় কিশোরী, ধারালো দা দিয়ে
বাঁশবনে কোপ দিতে দিতে গাঁওবুড়োর দল
পাতার বিড়ি ফোঁকে আয়েশ করে।
কলার কাঁদি ভেট দিয়ে তারা হঠাৎ আসা
কোন ভিনদেশীকে আরও দু'টো দিন
থেকে যাবার আকুতি জানায়।

----------এই রকম বুনোজঙ্গলে ঘেরা
শান্ত পাহাড়ী গ্রামে অনায়াসে
কাটিয়ে দেয়া যেতো একটি নিশ্চিন্ত
গোটা জীবন।।
==============================================

~~ওরা করা। ওরা, তারা!~~

 
ওরা এসেছে ফিরে
আমাদের সবার ধড়ে
প্রাণ ফিরে পাওয়ার মতো
একটা অনুভুতি হলো,
এ যেন দ্বিতীয় জন্মের অনুভুতি।
দিনের পর দিন,
রাতের পর রাত, এখানে থেকে
পরিত্রাণের সব আশা যখন-
ত্যাগ করছি, তখনো ডুবন্ত মানুষের
খড়কুটো আঁকড়ে থাকার মতো
ওদের অপেক্ষা করছি।
ওরা আমাদের এভাবে দেখেও যেন
না দেখার ভান করে থাকবে না,একদিন
সুসজ্জিত হয়ে তারা আসবে।ওরা,
যাদের আমাদের ঘৃণ্যতম জীব ছাড়া
আর কিছুই মনে হয়নি।
ওদের চোখকে মনে হয়েছে
পৃথিবীর তাবৎ বিবর্ণতম বস্তুর অন্যতম।
সবচেয়ে কঠিনতম ওদের অস্ত্র!
আর তার চেয়েও অসহনীয়
সেই অস্ত্রের প্রয়োগ।
ওরা করা। ওরা, তারা!
যাদের কানে সহজে সাধারণ মানুষের
আর্তনাদ পৌঁছে না। অথচ
ওরা মানুষের সেবা করার উদ্দেশ্যেই
বেতন ভাতা ভোগ করছে,
পক্ষান্তরে ভোগ করে অনেক কিছু।
সেই ওরা যেন কিভাবে
প্রকৃত বিষয়টা এত দিনে
আঁচ করতে পেরেছে।
================================================

~~অচেনা ফুলের গন্ধ~~

ভেবো না তোমরা
আমি এক দৌড়ে পৌঁছে যাবো
এক দৌড়ে রৌদ্র ছোঁব
দেখতেই পারছো বৃষ্টির দিনগুলি
রৌদ্র বন্দনায় ট্রেনের সাথে
ছুটছে
দরজা খুললেই ঘর ভরে যায়
মাছের গন্ধে
তখন আত্মার ভিতর চকচক
করে জাগতিক আয়না
আমি সেই আয়নায় পৃথিবী দেখি
আর নিজের লভ্যাংশ হিসেব করে
জুয়ারীর মতো লুকিয়ে লুকিয়ে
হাসি
তোমরা কি জানো
এখন প্রতিদিন পর্দায় লেগে থাকে
রাত্রির আলো এবং
অচেনা ফুলের গন্ধ উঠোনে দাঁড়িয়ে
আমাকেই ডাকে …
==============================================



No comments:

Post a Comment