Sunday 4 August 2013


~~শৈশব স্মৃতি~~


আমদের সেই নদী দেয় হাতছানি
নীল নয় ছিল সেথা সাদা ঘোলা পানি।
তা’তেই মেতেছি মোরা দিয়েছি সাঁতার, 
জলকেলি করতেই গিয়েছে প্রহর।
চোখে মুখে দেখা যেত ময়লার রেখা,
মা’য়ে দিতো কানমলা পেয়ে একা একা।
উদ্ধত হয়ে মা’য়ে ক’রতো শাসন, 
পরদিন নদীতে যাওয়াই বারণ।
তবু সেথা ছুটে গেছি কী যে এক টানে,
সবার সামনে বকা খেয়েছি উঠানে।

আম চুরি, পেঁপে চুরি, চুরি নানা পদ
পাড়াজুড়ে আমরাই ছিলাম আপদ।
দুপুরে ফাঁকি দিয়ে ছেড়ে লোকালয়, 
বনে জঙ্গলে গেছি অজানা নেশায়।
শ্রাবণের বৃষ্টিতে হয়ে কাক ভেজা,
যত মজা তার চেয়ে ছিল বেশি সাজা।

নগরীর বস্তিতে(!) দিন গুজরায়,
শৈশব স্মৃতি গুলো শুধু হাতড়ায়। 
===========================================
~~বারে বারে~~


তুমি আমার মনের ঘরে
একটা বাবুই পাখির মত
বাসা বেঁধে আছ।
কত ঝড়-ঝঞ্চা এসেছে,
যাওনি ছেড়ে...!
সাইক্লোন এসে কতবার
ভেঙেছে এই ঘর,
তবুও যাওনি ছেড়ে...!!
এসেছো ফিরে বারে বারে উড়ে উড়ে।
============================================

~~তোমার অহংকার ও লণ্ডভণ্ড শরীর~~

অন্যরকম রোদে পুড়ে যায় তোমার শরীর
অথচ আমাকে ছুঁয়ে যায় উষ্ণ প্রোটিন মাখা নিঃশ্বাস
সস্তা বুদ্ধি বিক্রি করে
গোটা শহরে চলছে ফান্ডামেন্টাল পৈশাচিকতা
ঘুটঘুটে অন্ধকার গিলে খাচ্ছে অক্ষিগোলকের বিস্ফারিত হিংস্রতা
তবুও তুমি বেলকুনিতে বসে একা
প্রয়োজনে মিটাছো অযথাই টবে গোলাপের চাষ করে ৷

আমার চেহারা কারোই পছন্দ হয়না জানি
অথচ আমি দিয়েছি সকল শান্তি,
তোমার মনের চিলেকৌঠায় উড়িয়েছি শাদা কবুতর
নিজেই ভুলে নিজেই পুড়েছি
আগুনে ঝলসানো রুটির মতন দিনের পর দিন
দেখতে ভাল্লাগেনা নষ্ট সম্পর্কে খুন হয়ে যাওয়া ক্রুশিয়াল রক্তে ভেজা মুখ
এই জীবন আর ভাল্লাগেনা ,সত্যি সত্যি ভাল্লাগেনা
এত সস্তা নিরুদ্দেশ ভাল্লাগেনা আর অচেনা ছলছল বয়ে চলা
কোন এক জলডুমুরের ঘুমেরদেশে দাঁড় টানা ময়ূরপক্ষি ৷

ক্রমশঃ আলো নিভে আসছে সন্ধ্যার ভিতর দিয়ে হেঁটে যায় চেনা শব্দ
চিকচিক গোধূলি মায়া ও আমার বিগত সুখ...
আহ কি নির্লজ্জ মুগ্ধতা
আজ আমি একা পড়ে আছি গেরুয়া বাউলের চিরায়িত লজ্জার আশ্রমে
দিকভ্রান্ত উদ্ধত ছুরি হাতে
বিষণ্ণ উপত্যকায় খুজি ঘৃণার সুখের উল্লাস
বিধ্বংসী আলোর ঔজ্জল্যে
ঘূর্নায়মান চো্‌খে আমার বিস্তৃত সমস্ত বাগান ৷

আমার বিষের বাঁশির বিষ
নাকে ঢুকে যায় তোমকে সৃষ্টি মাতালিয়া ঘ্রাণে
আমার সারাজীবনের খুন হওয়া দোয়েলের শিস দেওয়া ঠোঁট আর বাজেনা ,
তবুও তুমি একবার দখিনা হাওয়া হয়ে এসো
প্রেম জাগিয়ে দিয়ে যাও চঞ্চল উচ্ছলতায় ,
আমি তোমার নরম মোমের শরীরে
ঝড় হয়ে লণ্ডভণ্ড করে ভেঙ্গে দিবো তোমার অহংকার ৷
==========================================

''~~~জীবন~~~''

জীবন হল একটা নদীর নাম।
সুখ আর দুঃখ তার দুটি কূল।
জোয়ার ভাটার টানে '
কখনো সুখ ভেঙ্গে দুঃখ আসে।
কখনো দুঃখ ভেঙ্গে সুখ আসে।
আর এর নাম হচ্ছে জীবন।
=============================================

~~“চিহ্ন নেই পূর্ব পুরুষদের”~~


আমাদের আঙ্গিনায় কখনো কবিতারা
শব্দ করেছে কিনা জানি না।
তবে ডোরাকাঁটা অন্ধকার ভেদ করে
আমার শরীরে কবিতার শব্দরা
বিজয়ের আস্ফালন গেঁথে চলে প্রতিনিয়ত।

আমি পাহাড়া দিয়ে যাচ্ছি বড় সংশয়ে
আমার রঙ্গশালার চৌকাঠ জ্বেলে।
অই অনন্ত স্বপ্নের সোনালী মাছটার জন্য
আমার প্রচন্ড আত্মচিৎকার হয়ে যায়
এক একটা ইতিহাস।

তবু সেখানে নেই জন্মদাতার
কিংবা পূর্ব পুরুষদের চিহ্ন মাত্র।

হয়তো স্বপ্নে আমি চিত্রল হরিণীর কণ্ঠ শুনে
অন্ধকার কোঠরটা হতে উঠবার প্রয়াসে ব্যস্ত।
অজস্র নিবিড় অন্ধকার পথ ফেলে যাচ্ছি প্রতিক্ষণ
শুধু জমা হয় কবিতার জন্য শব্দ,উপমা,চিত্রকল্প।

কালের দৌরাত্বে রাত্রির প্রগাঢ়তা ছুঁয়ে যায়
আমার জাগ্রত অকারণ আবেগকে।
অনাবিল কষ্টের চিহ্নটুকুও
আমাকে পথ দেয় চিনিয়ে আরেক পথে।

তবু স্বতন্ত্র আমি এবং
স্পষ্ট ফারাক আমার জন্মান্তরের রক্তে।

তাই
আমি
হাঁটি
আর
হাঁটি।
হাঁটতে
হাঁটতে
আমি অতিক্রম করি
আমার পূর্ব পুরুষদের……।
===========================================
~~চাপা সমগ্র-১~~

কাপড়ের দকানীঃ

নেন আপা, কমন না; ‘ওয়ান পিস মেড’
এক পিস মেড করে ‘কারিগর ডেড’।

এফবি ললনাঃ

ইনবক্সে এতো বেশি মেসেজ জমা হয়
উত্তর দিতে হ’লে দম ফেটে যায়।
প্রপোজে, প্রপোজে মোর জান ছারখার
সামনে তো দেখি আমি অকুল পাথার।

অসৎ প্রেমিকঃ

শোন জানু, কথা শোন, বেশ দেরি হ’ল,
জ্যামে পড়ে গাড়ীটার ক্লাচ ফেঁসে গেলো।
গাড়িটাতো নতুন ই, ড্রাইভার বেটা,
কি যে ক’রে সারাদিন, নাড়ে এটা সেটা। 
==========================================
~~চাপা সমগ্র-২~~

ফুটপাতের হকারঃ

লাখ টাকা জরিমানা
দিতে আছি রাজী,
ওষুধে না হলে কাজ
জীবনটা বাজী।

চেইন স্মোকারঃ

সিগারেট ছাড়া কিন্তু
সহজ ব্যাপার,
গতমাসে ছেড়ে দিছি
তিন চার বার।

অসৎ সরকারী আমলাঃ

বেশ ধনী ছিল মোর
শশুর মশায়,
গুলশানে কিনি ফ্লাট
উনার টাকায়।

কাক প্রজাতির কিশোরীঃ

রেপ্লিকা নয় এটা
ব্রান্ডের মাল,
আমেরিকা থেকে বাবা
এনেছেন কা’ল।
===========================================

~~কেউ কেউ কবি, সবাই নয়~~


কবিতার পাতায়
স্বত্ব ভোগের অধিকার শুধুই কবির
কোন অকবির নয়;
সাহিত্যের সুলেখা অংকনে যিনি পটু,
পর্দার সামন ও পিছনের চিত্র
যিনি অনায়সে ফুটিয়ে তুলতে পারেন;
পাঠক হৃদয়ে যিনি
আনন্দ-বেদনার ঝড় বইয়ে দেন
তিনি আর কেউ নন-
তিনি যে কবিতার লেখক- কবি।
লিখতে পারলে-
লেখক হওয়া যায় এটা চিরন্তন।
এই ধরুণ-
দলিল লেখক, তাবিজ লেখক,
সংবাদ লেখক;
ক্যাটাগরি অনুযায়ী আরও কত কি ?
কিন্তু কবিতা- কবিতা লিখলেই
কবি হওয়া যায় না;
এর জন্য প্রয়োজন-
ভাব, ভাষা ও ছন্দের উপকরণ।
তাইতো কেউ কেউ কবি। কিন্তু
সবাই নয়……… 
===========================================
~~আজ কোন উষ্ণতার বিষন্নতা নেই~~

তোমার শাড়ির মধ্য মুখ লুকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে,
জলজ জ্বলন্ত তবুও বরফের মত বুকের ভিতরে জমে আছো
তোমার তন্দ্রাচ্ছন্ন বীভৎস স্বপ্নের নিরব নিষ্ঠুরতা
আমাকে ক্ষত-বিক্ষত করে তোমাকে বলা মিথ্যাগুলো
তোমার মোহ-তৃষ্ণা নখের আঁচরকাঁটা অভিমান আমাকে ঘুমতে দেয়না
বিছানায় পড়ে থাকা আদরমাখা চোখ দু’খানি ব্যকুল নি:শ্বাষের ঘ্রান
বড় সর্বনাশ হয়ে যায় তোমার স্পর্শের শীতল শিহরনে,
আমার নিঃসঙ্গ দরজায় পড়ে থাকে তোমার লজ্জার দৃষ্টিহীনতা
আমি প্রতিটি মুহূর্তে আতংকে আতংকে উঠি ,এই বুঝি নগ্ন খুন হবো
মনে হয় সমস্ত শহরের বাতি নিভিয়ে দিয়েছে কোন এক আঁতোতায়ী ৷

আমার চিন্তার শৃঙ্খলে পকেট ভর্তি বারুদ
শেষরাতে বাক্যহীন দুইয়ের ভেতরকার দ্বন্দ্বে -বড় জড়িয়ে পড়ি
আমি বৃষ্টির মতো ঝ'রে পড়ি কান্নায় ,আতঙ্কের আঁচল মুখে টেনে ধরে
আমার ব্যথ জীবন-যাপনে বৃষ্টির জলে স্নান করছে শহর
তোমার চোখে ভরা পূর্ণিমার মধ্যরাতের কষ্টের গৃহত্যাগী জোছনা খুজেছি
তোমার চোখ বেঁধে খেলা করেছে নষ্ট অতীত ,
কৌশলে স্তব্দ চারদিক আমি বুঝেও বুঝতে পারিনি ,
পুরো রাতের অন্ধকারের তোমার অশরীরি ছলাকলার উলঙ্গ বর্ণমালায়
এক গুচ্ছ রজনীগন্ধা হাতে করুনা করেছো স্নিগ্ধ এক ভোরের প্রতিক্ষায়
আমি আলো হাতে ফিরে আসবো বলে মুঠোভর্তি জোনাক জেলেচ্ছিলাম
অথচ তুমিই শিখালে স্পন্দন বাড়িয়ে কিভাবে চতুর মেঘের ছুরি হতে হয় ৷

আমার নাগরিক ঘড়ির কাঁটায় শব্দ ভাঙা-গড়াতেই দিন চলে যায়
আমি দীর্ঘ পথের দুপাশে পরিভ্রমণ শেষে পরিযায়ী পাখিদের কাছে
প্রাথনা ভিক্ষা করি ভালোবাসার সীলমোহরে জড়ানো একটি খাম;
সেই হলুদ অক্ষরের পাড়-বোনা ক্যানভাসে একমাত্র সঙ্গী নৈ:শব্দের আবেশ
তবুও আগের লেখাগুলোর মতই সতেজ ছিল,আমার উদারতার প্রবেশ....পথ,
আমায় আজন্ম শান্তি দেয়নি
সুদীর্ঘ রোমান্টিক কবিতার মত উদভ্রান্ত হয়ে ফিরে আসা
ইচ্ছের প্রদীপে পুড়া বিছানার রুদ্র নীল হয়ে যাওয়া আকৃষ্টতায় মত্ত ঠোঁট
গভীর ভালোবাসা লুকানো গোপন নেশার মত তোমাকে না পাওয়া কষ্টগুলো
আমি ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির বুকে কান পেতে নেশায় বুঁদ হয়েছিাম কতকাল
তবুও বন্ধুত্বের দাবী করিনি একটিবারের জন্য ,অথচ তুমি চাইলেই
ফেরাতে পারতে আমাকে এই হঠাৎ জ্বলে উঠা তুঁষের আগুন থেকে ৷
===========================================

~~একটি রাত~~


আজ রাতে শহর বুজেছে চোখ
মেঘ দিচ্ছে তার শীতল বারিধারা,
বৃষ্টির জলে স্নান করছে শহর
নেচে চলেছে জল স্রোতের আওয়াজ
চাঁদ গিয়েছে ফিরে মেঘদলের ভিড়ে।

গলির ভাজে লেগেছে নিরবতা,
অন্ধকারে সিগারেটের ধুঁয়াগুলো
খুঁজে চলেছে অপেক্ষা ভাঙার পথ,
গভীর থেকে আরও গভীরে
প্রবীন ভাবনাগুলোর প্রবেশ....

বহু প্রতিক্ষা শেষে দরজার ওপাশে
তোমার পায়ের আওয়াজ,
ঘরে ভিরতেই...
তোমার আদরমাখা চোখ দু’টি
ভেজালো আমার হৃদয়।

হৃদয় স্পন্দন বাড়িয়ে দিল তার ক্রিয়া
আমার বোতাম খোলা ভেজা বুক,
তোমার নয়নে অস্থিরতার আবেশ
নগ্নতায় জড়ানো তোমার বৃষ্টিস্নাত শরীর।

ইচ্ছের প্রদীপে পুড়লো বিছানা
দ্বিধা-রা সব হারালো জ্ঞান,
নখের আঁচরগুলো সব আকৃষ্টতায় মত্ত
ডিমলাইটের আলোগুলো লজ্জায় দৃষ্টিহারা
সৃষ্টির উল্লাসে মেতে উঠলো পুরোটা রাত।

তোমারই বুকে মাথা রেখে
দিলাম স্বপ্নরাজ্য পারি,
সকালের আলো বিছানায় পড়তেই
পাশ ফিরে দেখি; তুমি নেই,
ফিরলে না আর কোনও দিন.....
===========================================

আমি তোমাকে চাই
কল্পনাতে নয়
বাস্তবে
আমি তোমাকে চাই
ছলনাতে নয়
ভালোবাসায়
আমি তোমাকে চাই
তোমার মত করে নয়
আমার মত করে
আমি তোমাকে চাই
খনিকের জন্য নয়
চিরদিনের জন্য..... 
===========================================

~~নিশীগন্ধাঁ~~ 


কত শত রাত কেটেছে 
গন্ধ বিলাতে
বড় বড় বাবু সাহেবদের
মন ভরাতে।

সস্তা জরি ফিতা আর গন্ধ তেলের ব্যাবহার
দাড়াতে হয়েছে লাইনে
দেখাঁতে হয়েছে শরির আমার।

নিষিদ্ধ এ পল্লিতে ছুটে এসেছে কত দেহকামি
নোংড়া মনের নাগর
আর আমি নিশিগন্ধা 
=============================================

।।~~দহন~~।।
.
আমি কষ্টিত দুঃখিত
দীর্ঘশ্বাসটাই জীবন
হিংস্রত রূক্ষতা পশুত্বে তোমার
আহত সভ্যতা কুঁকড়ে কুঁকড়ে কাঁদে
ছটফটে খুঁজে পরকাল
চাঁদ জ্যোৎস্না নদী
ভেতরে ভিতরে সাগর এতটা
অতল গভীর
ঠাঁইহীন গিরিখাত
হিমশীতল নির্মল প্রস্থান
নিঃশব্দ ব্যুৎক্রমে অদৃশ্য ভন্ডুল
প্রিয় প্রিয়তম প্রিয়তমা বধু
অনিবার্য শঙ্খিনীর শঙ্কিত শবদহন
নির্বাক জ্যোৎস্নারোদে সন্তত সন্ত্রস্ত সহন ।।
=========================================

~~যা ছিল অন্ধকারে সুন্দর~~


শুকনা রাত্রি পড়ে আছে বুকের উপর
যে ভাবে অধীক তৃপ্তি লোভে
কোন ফুলে মাথা রাখে পরপুরুষের মতো ভ্রমর ?

চাঁদের ঠোঁটে শুকিয়ে গেছে তৃষ্ণা
যে ভাবে লোকলাজে কখনো শুকায় মানুষের নিঃশ্বাস
তবু কেন জানিনা আমাকে ছিন্নশত করে
আজকের এই অবেলা অন্ধকার !

লোভের ফসল খুব করে দুজনের চেনাজানা
অন্ধকার ঢাকে মাটির মন্দির, মসজিদের মিনার,
শশ্মান, কবর, অবলার মুখ, লোভের পংখিরাজ,
শ্বাস-প্রশ্বাসে মানুষের নিয়ত ।

মাটি নীরবে রোদ পোহায়
তার উপর আজ একটি হাত লিখছে প্রেমের আয়াত
আমি তখন সিজদায় মগ্ন অমর সর্বাঙ্গীণ ।
=========================================
'' ~~স্বপ্ন~~ ''

'' মাসুম আহমেদ,মাহবুব ''
'' আমি আগে স্বপ্ন দেখতাম ''
'' আমি হয়ত একদিন তোমাকে পাব ''
'' আমি এখন স্বপ্ন দেখি হয়ত একদিন ''
'' আমি তোমাকে ভুলতে যেতে পারব ''
=========================================

~~শুনি তোমার একান্ত গুঞ্জন~~

ভালবাসা গুছিয়ে বসে আছি সেই কবে সকাল বেলায়
তোমার কথা, তোমার নেশা লুকয়ে রেখেছি অন্তরে
ভেতর কথা ভেতর ব্যথা৷ ধুয়ে মুছে পরস্পর হয়েছি সুজন৷
দিনশেষে যখন আরতি জাগায় হৃদয়৷ মন জমা হয় নির্মাল্য ডালায়
তখন কোথায় পাব তারে, এক পাশে সযত্নে থাকো তুমি
মনের ভেতরে, ঠোঁটের আধারে৷শুনি তোমার একান্ত গুঞ্জন৷৷
=========================================
বত্রিশ খান ই গুটি, 'দাবা' তে
এতোটুকু বোর্ড, কোথা রবে কে
বত্রিশ চালে বল্‌তো দেখি !
বত্রিশ দাতে হাসছিস্‌ একি !
দাঁত টা ঢাকিস্‌ ।

বিশ্ব দাবা 'তে অনন্ত বোর্ড
অসীম গুটি চালেন যে জন
কোন্‌ চালে তাঁর কি থাকে কারণ
ধরার মতন বুদ্ধি রাখিস্‌ ?

কোন্‌ চালে কেনো মন উচাটন
কোন্‌ চালে কাঁদা, কেনই হাসিস্‌
দুখ্‌ সুখ্‌ ব্যথা হাসি ও কান্না
সকলেই সেই খেলার আশীষ !

খেল্‌ছে, কাঁদিস্‌ ? জন্মেছিলি
দাবাঘরে তাঁর জায়গা নিলি
এ সুখ্‌ও কি কম ? না জন্মাতি !
হতো সেই ভালো ? ভাব্‌ নিরিবিলি ।

খেল্‌ছে যে, যার গুটি হয়েছিস্‌
হাতে যার তুই নড়িস্‌ চরিস্‌
দিচ্ছে গুটিতে হাত, ছোঁয়া, তাঁর
সেই সুখেতেই প্রাণ টা ভরিস্‌ !

বাঁচবিও সুখে্‌ , সুখেই মরিস্‌ !!
============================================
~~শরীর খারাপ~~

শরীর টা আজ ক্লান্ত ভারি,
ক’রছে গা ম্যাজম্যাজ,
ঠিক করেছি বিশেষ কিছুই
খাব না তাই আজ।
সকাল বেলায় চায়ের সাথে-
গামলা খানেক মুড়ি
তেল,লঙ্কা মাখিয়ে,সাথে
পেঁয়াজ ঝুরি ঝুরি।

সকাল,ধরো নয় টা নাগাদ,
থাকলে মুখে রুচি,
খেতে পারি ঘি-য়ে ভাজা
গণ্ডা দশেক লুচি।
সঙ্গে ভাজা তিন চার পদ,
আচার,আলুর দম,
রসগোল্লা,গোটা দশেক
সন্দেশ,চমচম।

দুপুরেতে কি আর খাব ?
শরীর ভাল নয়!
ভাতের সাথে কাতলা মাছের
টুকরা গোটা ছয়।
কচি পাঁঠার মাংস কষা
বড় দু-চার বাটি,
মিষ্টি দই আর চাটনি হ’লে
চলবে মোটামুটি।

সন্ধ্যা বেলায় ফল,পানীয়
বহু দিনের স্বভাব,
তার জন্য লাগতে পারে,
গোটা দশেক ডাব।
আপেল,কলা,পেয়ারা,শশা,
খেজুর,আঙুর কালো,
বেশী তো নয়,ফল লাগে মোট
তিন থেকে চার কিলো।

রাত্রি বেলায় গুরু ভোজন,
চির দিন ই মানা,
ঘন দুধের ক্ষীর মেখে খাই
রুটি কুড়ি খানা।
সবার শেষে ছানার পায়েস
হলে বড়ই ভালো,
শরীর খারাপ,এর বেশী কি
খেতে পারি বলো ?

শরীরে আজ পাচ্ছি না জুত,
নাড়ীর গতি ক্ষীণ,
অল্প খেয়েই কাটিয়ে দেবো
না হয় সারা দিন।
এমনি তে ও খাওয়া আমার
কম ই একেবারে,
দেখলে পরে পেটুক মানুষ,
লজ্জ্বাতে যাই ম’রে।
===========================================
 ~~সহজ জীবন জটিল জীবন~~

প্রত্যেকটা
রাতের চোখেই
একটা নিঃঝুম নদী থাকে।..

হাসে
কাঁদে
গান গায়
নেশা করে

পানপাত্রে দেখে
প্রেয়সীর পানপাতা মুখ

নদীর কান্না পেলে রাতে জোয়ার আসে
উঠোনময় পলি

লোকে এটাকেই উর্বরতা বলে...!!
=======================================
~~আত্মকাব্যঃ~~

স্তব্ধ বিনাশের কানে সারঙ্গ ঝরায় চোখের জল
অথচ কি অদ্ভুত বর্ণনা-
চোখের জলের নিজস্ব কোন কণ্ঠ নেই ।

খুব বেহিসাবি জুয়াড়ির মতো নিজেকে
ধরেছি খেলারদানে, একথা জেনেও যে
শেষে একমাত্র নিজেই হেরে যাবো,
একদিন যেভাবে তোমাকে খুব আপন ভেবে
দিয়াছিলাম বিশ্বাস আর বড় অবিশ্বাসের ছোবল
তুমি বুকে রেখে ফিরিয়েছিলে আমাকে একা ।

ভাসমান তাণ্ডব দেখে দুরন্ত বাতাস
তাপী আগুনের কাছে জবান রাখে,
দূরবর্তী অধিকারের কণ্ঠস্বরকে তবু
জড়িয়ে ধরে পৃথিবীর ঔরস ।

আজ আমি হীরক পাথরে চুম্বন করছি
তুমি সুখের পাহাড়ে মাথা রেখে ঘুমাও ।
==========================================
~~একটি নিষ্পাপ জন্ম~~



একটি শিশুর জন্ম হয়েছে
অন্য সব শিশুর মতই

প্রথম আলোর বন্যায়
তার দুটো চোখ ভরে গেছে

মায়ের সুরক্ষিত আবাস থেকে
বেরিয়ে এসেছে ধুলা,
অক্সিজেন, নাই ট্র জনে ভরা
বাতাসের সমুদ্রে

তার ক্ষুদ্র ফুসফুস ভরে গেছে
এই সজীব বাতাসে

এতদিন তার ক্ষুদ্র শরীর মায়ের
থেকে খাবার নিয়েছে
নিরবে , নিভৃতে

এই পৃথিবী সে দেখেনি বলে
তার এটা নিয়ে মাথা বাথাও
ছিল না এতদিন

আজ নতুন আবাসনে
সে একেবারেই আনাড়ি

তার জন্ম প্রক্রিয়া অন্য সবার মত হলেও
আসলে সে সাধারণ শিশু নয়

অন্য শিশুদের জন্ম যেমন
ঘর আলোকিত করে

আনন্দের বন্যায় ভরে যায়
পৃথিবী

কিম্বা নবজাতকের কানে
আজান দেওয়া হয়

অপেক্ষায় থাকে বাবা
কপালে চুমু দেওয়ার জন্য

এমন বরণ করবার আয়োজন নেই
তার জন্য

শুধু আছে এক রাশ ঘৃনা

বাবার নাম জানা হয় না তাদের
মা জন্ম দিয়েই মায়োই হয়ে যায়

যেন পাপের ফসল তাকে
দেহ থেকে বের করেই বাঁচে

নিষ্পাপ জন্মটি
সারা জীবন বয়ে বেড়ায়
কলংক কপালে নিয়ে

অথবা নাড়ী ছেড়ার আগেই
ছাড়তে হয় পৃথিবী
ডাস্টবিনের ময়লার সাথে
একেবারে মিশে যেয়ে 
========================================
~~রক্তাত্ত শাপলা চত্তর থেকে বলছি~~

আসছে ঈদ; চলছে প্রস্তুতি
মাংশ, পোলাও; নতুন জামা
ভালো-মন্দ; দামে তুলোনা !
আজকে ঈদের খুশির দিনে নেই যাদের বাবা, মা
তাদের চোখের কান্নার খবর
তোমরা কি রাখবে না ?
============================================
~~এই তো সেদিন~~


এই তো সেদিন পথে দেখা
চলছেন মন্থর পায়ে,
ভর-দুপুরে যাচ্ছেন কোথাও
গাছের ছায়ে ছায়ে ।

কাঁধে একটা ব্যাগ ঝুলিয়ে
এই মানুষটি হাঁটতেন,
হাতের কড়া গুণে গুণে
মুখে ছড়া কাটতেন ।

কোথায় কখন সভা হবে
সেটাই শুধু খুঁজতেন,
নিত্য নতুন ছড়া লিখে
সেথায় তিনি ছুটতেন ।

সহজ দোলায় ছড়া লিখে
মনের কথা শুনাতেন,
কা'রো কোন ভ্রান্তি পেলে
তিনি রুখে দাঁড়াতেন ।
==============================================
কে আসে এই সকালবেলার
বাদল আধারে,
ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ঝরে
এখন শ্রাব...
কি বারতা যে আনে
সে এমন দিনে।
ঝরে পড়া কেতকিরা
বিদায় হাসি হাসছে এবার
অবাক কেন জুঁইয়ের রাশি
আজকে বিহনে,
কেগো তুমি এলে দ্বারে
শ্রাবণ দিনে।।
============================================
~~উল্লাস(ছড়া)~~


দিন ভাসি আর গান ভাসি মন’, তেপান্তরের মাঠ
উল্লাসে আর উৎসবে, মন’, আকাশ ছোঁয়ার ফাঁদ।
হিল্লোলে আর কল্লোলে মন’, ঢেউ তোলা ওই পাল
গুঞ্জনে আর কুঞ্জনে মন’ , নির্ঝঞ্জাট প্রাণ ।

সুর-ছন্দ, তাল –রঙ্গ ,মন যে ছন্নছাড়া
লয়কারীর ,রুপ- বর্ণে, মন’ যে আত্মহারা।
ধা তেরে কেটে,ধা তেরে কেটে ,ধা তেরে কেটে ধা,
ধা ধি না , না তি না, ধা ধি না, না তি না , ধা ধি না ,না তিনা ধা।

ঝিরি ঝিরি ওই ঝর্না ঝরে মন’ যে তুষার কন্যা
নির্মল প্রেমে নাচছে যে মন’,
মত্ত মুক্ত বহ্ন্যা ।
মন’ বিহঙ্গ গায় যে তারানা
তানাদেরেনা ,তানাদেরেনা ।

নাচছে ময়ূর মন’ বাসরে
রবীন্দ্র –নৃত্য বঙ্গ
সাবলীল মন ‘ কবিতা লেখে তাই
অমৃতাক্ষর ছন্দ ।

রূপ নগরীর ক্যানভাসে মন
আঁকছে চিত্র তুলির টানে
যন্ত্র - ধ্বনির মন ‘ তরঙ্গ
বাজছে সরোদ ঝঙ্কারে ।
সুর -তাল আর রুপ - গন্ধে
উজান হয়েছে মন -
ভবঘুরে এই মন ‘ টা আমার
হয়েছে যে আজ মউবন 
==========================================

~~বিজাতীয় পূর্ণ~~

কাগজের বউ
ছবি আঁকে মন , জ্যোত্‍স্নার ঘরে
পালে বাতাস বহে মুক্ত করতলে
তুমি আর আমি শূন্য এক সম্রাজ্য ৷

তথাপি ঈশ্বরের গড়া হাতে
অলস দেহ পড়ে থাকে রঙীন খাঁচায়
ঘরে ফিরে দুজন বর্ণিল সংসারে
পোষা প্রার্থনায় তুমি কাছে থাকলে
আমি সহসা পূর্ণ হই
অধিকাংশ কালোর আড়ালে ৷
========================================
~~মষি হাতে~~ 


মষি হাতে অগ্রস হয়ে লিখতে গিয়ে মোর
ভাষা যায় ঝরে,
যে ছিল মোর অনুপ্রেরনায়
সেই গেছে হারিয়ে ....
দূর অজানায় ...

*নেই তুমি সামনে*
আছো তুমি
সাদা চোখের অপেক্ষায়,
ছন্দ হারা কবিতায়,
আহত হৃদয় আঙ্গিনায়,
স্মৃতির পাতায়'
আমার অন্তর মোহনায় !!
==========================================

~~হারালো ললনারা~~

বন্দী জীবন কাটিয়েছি অনেকদিন,
ছড়িয়েছে ডালপালা যাতনার বৃক্ষরা প্রতিক্ষণ
তনুমন জুড়ে সবখানে আমার।
পায়ের নখ থেকে মাথার চুল
পোশাক, হাটা-চলা
এমন কি হাসি, কান্না, কথাবলা সবকিছুতে।

সংস্কারের সুতোর জালে বাঁধা ছিলো
ইচ্ছের মুনিয়া পাখীগুলো,
ডানা ঝাপটাতেও পারেনি কোন ক্ষণে
কৈশোর আর যৌবনের সোনালি সপ্ন গুনে।
শুকিয়ে যাওয়া চৈত্রের কাদামাটির মতো
হয়েছে ধুলোয় ধূলিসাৎ।

মাঝে মাঝে হৃদয়ের আয়নায় দেখেছি নিজেকে,
বন্দীর মতো গুটিয়ে রেখেছি তারে
মূল্যবোধের ডাণ্ডাবেড়ী পরা।
সেই মূল্যবোধের কারাগার
আজ খোলা গড়ের মাঠ
হারিয়ে গেছে সেই সব সুন্দরী ললনারা
জীবন থেকে আমার
কারাগার থেকে মুক্ত হবার অনেক আগেই……।।







No comments:

Post a Comment