প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে
মোরে আরো আরো আরো দাও প্রাণ।
তব ভুবনে তব ভবনে
মোরে আরো আরো আরো দাও স্থান ॥
আরো আলো আরো আলো
এই নয়নে, প্রভু, ঢালো।
সুরে সুরে বাঁশি পুরে
তুমি আরো আরো আরো দাও তান ॥
আরো বেদনা আরো বেদনা,
প্রভু, দাও মোরে আরো চেতনা।
দ্বার ছুটায়ে বাধা টুটায়ে
মোরে করো ত্রাণ মোরে করো ত্রাণ।
আরো প্রেমে আরো প্রেমে
মোর আমি ডুবে যাক নেমে।
সুধাধারে আপনারে
তুমি আরো আরো আরো করো দান ॥
রাগ: খাম্বাজ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৯
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ৩ জুন, ১৯১২
রচনাস্থান: লোহিত সমুদ্রবক্ষে জাহাজে
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী, দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
===========================================
ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে
ও বন্ধু আমার!
না পেয়ে তোমার দেখা, একা একা দিন যে আমার কাটে না রে ॥
বুঝি গো রাত পোহালো,
বুঝি ওই রবির আলো
আভাসে দেখা দিল গগন-পারে--
সমুখে ওই হেরি পথ, তোমার কি রথ পৌঁছবে না মোর-দুয়ারে ॥
আকাশের যত তারা
চেয়ে রয় নিমেষহারা,
বসে রয় রাত-প্রভাতের পথের ধারে।
তোমারি দেখা পেলে সকল ফেলে ডুববে আলোক-পারাবারে।
প্রভাতের পথিক সবে
এল কি কলরবে--
গেল কি গান গেয়ে ওই সারে সারে!
বুঝি-বা ফুল ফুটেছে, সুর উঠেছে অরুণবীণার তারে তারে ॥
রাগ: বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২০ পৌষ, ১৩২৪
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1918
রচনাস্থান: কলকাতা
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
ও বন্ধু আমার!
না পেয়ে তোমার দেখা, একা একা দিন যে আমার কাটে না রে ॥
বুঝি গো রাত পোহালো,
বুঝি ওই রবির আলো
আভাসে দেখা দিল গগন-পারে--
সমুখে ওই হেরি পথ, তোমার কি রথ পৌঁছবে না মোর-দুয়ারে ॥
আকাশের যত তারা
চেয়ে রয় নিমেষহারা,
বসে রয় রাত-প্রভাতের পথের ধারে।
তোমারি দেখা পেলে সকল ফেলে ডুববে আলোক-পারাবারে।
প্রভাতের পথিক সবে
এল কি কলরবে--
গেল কি গান গেয়ে ওই সারে সারে!
বুঝি-বা ফুল ফুটেছে, সুর উঠেছে অরুণবীণার তারে তারে ॥
রাগ: বাউল
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২০ পৌষ, ১৩২৪
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1918
রচনাস্থান: কলকাতা
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
==========================================
কেটেছে একেলা বিরহের বেলা
আকাশকুসুম-চয়নে।
সব পথ এসে মিলে গেল শেষে
তোমার দুখানি নয়নে।
দেখিতে দেখিতে নূতন আলোকে
কি দিল রচিয়া ধ্যানের পুলকে
নূতন ভুবন নূতন দ্যুলোকে
মোদের মিলিত নয়নে।
বাহির-আকাশে মেঘ ঘিরে আসে,
এল সব তারা ঢাকিতে।
হারানো সে আলো আসন বিছালো
শুধু দুজনের আঁখিতে।
ভাষাহারা মম বিজন রোদনা
প্রকাশের লাগি করেছে সাধনা,
চিরজীবনেরি বাণীর বেদনা
মিটিল দোঁহার নয়নে॥
রাগ: মিশ্র দেশ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৫ মাঘ, ১৩৪২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৯ জানুয়ারি, ১৯৩৬
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
আকাশকুসুম-চয়নে।
সব পথ এসে মিলে গেল শেষে
তোমার দুখানি নয়নে।
দেখিতে দেখিতে নূতন আলোকে
কি দিল রচিয়া ধ্যানের পুলকে
নূতন ভুবন নূতন দ্যুলোকে
মোদের মিলিত নয়নে।
বাহির-আকাশে মেঘ ঘিরে আসে,
এল সব তারা ঢাকিতে।
হারানো সে আলো আসন বিছালো
শুধু দুজনের আঁখিতে।
ভাষাহারা মম বিজন রোদনা
প্রকাশের লাগি করেছে সাধনা,
চিরজীবনেরি বাণীর বেদনা
মিটিল দোঁহার নয়নে॥
রাগ: মিশ্র দেশ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৫ মাঘ, ১৩৪২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৯ জানুয়ারি, ১৯৩৬
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
============================================
তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি ধাই--
কোথাও দুঃখ, কোথাও মৃত্যু, কোথা বিচ্ছেদ নাই ॥
মৃত্যু সে ধরে মৃত্যুর রূপ, দুঃখ হয় হে দুঃখের কূপ,
তোমা হতে যবে হইয়ে বিমুখ আপনার পানে চাই॥
হে পূর্ণ, তব চরণের কাছে যাহা-কিছু সব আছে আছে আছে--
নাই নাই ভয়, সে শুধু আমারই, নিশিদিন কাঁদি তাই।
অন্তরগ্লানি সংসারভার পলক ফেলিতে কোথা একাকার
জীবনের মাঝে স্বরূপ তোমার রাখিবারে যদি পাই ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1307
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1901
স্বরলিপিকার: কাঙ্গালীচরণ সেন
কোথাও দুঃখ, কোথাও মৃত্যু, কোথা বিচ্ছেদ নাই ॥
মৃত্যু সে ধরে মৃত্যুর রূপ, দুঃখ হয় হে দুঃখের কূপ,
তোমা হতে যবে হইয়ে বিমুখ আপনার পানে চাই॥
হে পূর্ণ, তব চরণের কাছে যাহা-কিছু সব আছে আছে আছে--
নাই নাই ভয়, সে শুধু আমারই, নিশিদিন কাঁদি তাই।
অন্তরগ্লানি সংসারভার পলক ফেলিতে কোথা একাকার
জীবনের মাঝে স্বরূপ তোমার রাখিবারে যদি পাই ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1307
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1901
স্বরলিপিকার: কাঙ্গালীচরণ সেন
==========================================
আমার যাবার বেলায় পিছু ডাকে
ভোরের আলো মেঘের ফাঁকে ফাঁকে॥
বাদলপ্রাতের উদাস পাখি ওঠে ডাকি।
বনের গোপন শাখে শাখে, পিছু ডাকে॥
ভরা নদী ছায়ার তলে ছুটে চলে--
খোঁজে কাকে, পিছু ডাকে।
আমার প্রাণের ভিতর সে কে থেকে থেকে
বিদায়প্রাতের উতলাকে পিছু ডাকে॥
রাগ: আশাবরী-ভৈরবী
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ভাদ্র, ১৩৩০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1923
ভোরের আলো মেঘের ফাঁকে ফাঁকে॥
বাদলপ্রাতের উদাস পাখি ওঠে ডাকি।
বনের গোপন শাখে শাখে, পিছু ডাকে॥
ভরা নদী ছায়ার তলে ছুটে চলে--
খোঁজে কাকে, পিছু ডাকে।
আমার প্রাণের ভিতর সে কে থেকে থেকে
বিদায়প্রাতের উতলাকে পিছু ডাকে॥
রাগ: আশাবরী-ভৈরবী
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ভাদ্র, ১৩৩০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1923
=========================================
বঁধু, কোন্ আলো লাগল চোখে!
বুঝি দীপ্তিরূপে ছিলে সূর্যলোকে!
ছিল মন তোমারি প্রতীক্ষা করি
যুগে যুগে দিন রাত্রি ধরি,
ছিল মর্মবেদনাঘন অন্ধকারে,
জন্ম-জনম গেল বিরহশোকে।
অস্ফুটমঞ্জরী কুঞ্জবনে,
সংগীতশূন্য বিষণ্ন মনে
সঙ্গীরিক্ত চিরদুঃখরাতি
পোহাব কি নির্জনে শয়ন পাতি!
সুন্দর হে, সুন্দর হে,
বরমাল্যখানি তব আনো বহে,
অবগুণ্ঠনছায়া ঘুচায়ে দিয়ে
হেরো লজ্জিত স্মিতমুখ শুভ আলোকে॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৩ আশ্বিন, ১৩৪১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৪
স্বরলিপিকার: শান্তিদেব ঘোষ
বুঝি দীপ্তিরূপে ছিলে সূর্যলোকে!
ছিল মন তোমারি প্রতীক্ষা করি
যুগে যুগে দিন রাত্রি ধরি,
ছিল মর্মবেদনাঘন অন্ধকারে,
জন্ম-জনম গেল বিরহশোকে।
অস্ফুটমঞ্জরী কুঞ্জবনে,
সংগীতশূন্য বিষণ্ন মনে
সঙ্গীরিক্ত চিরদুঃখরাতি
পোহাব কি নির্জনে শয়ন পাতি!
সুন্দর হে, সুন্দর হে,
বরমাল্যখানি তব আনো বহে,
অবগুণ্ঠনছায়া ঘুচায়ে দিয়ে
হেরো লজ্জিত স্মিতমুখ শুভ আলোকে॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৩ আশ্বিন, ১৩৪১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৪
স্বরলিপিকার: শান্তিদেব ঘোষ
==============================================
তোমার দেখা পাব ব'লে এসেছি-যে সখা!
শুন প্রিয়তম হে, কোথা আছ লুকাইয়ে--
তব গোপন বিজন গৃহে লয়ে যাও ॥
দেহো গো সরায়ে তপন তারকা,
আবরণ সব দূর করো হে, মোচন করো তিমির--
জগত-আড়ালে থেকো না বিরলে,
লুকায়ো না আপনারি মহিমা-মাঝে--
তোমার গৃহের দ্বার খুলে দাও ॥
রাগ: গৌড়মল্লার
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1292
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1886
শুন প্রিয়তম হে, কোথা আছ লুকাইয়ে--
তব গোপন বিজন গৃহে লয়ে যাও ॥
দেহো গো সরায়ে তপন তারকা,
আবরণ সব দূর করো হে, মোচন করো তিমির--
জগত-আড়ালে থেকো না বিরলে,
লুকায়ো না আপনারি মহিমা-মাঝে--
তোমার গৃহের দ্বার খুলে দাও ॥
রাগ: গৌড়মল্লার
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1292
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1886
==========================================
মোর হৃদয়ের গোপন বিজন ঘরে
একেলা রয়েছ নীরব শয়ন-'পরে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রুদ্ধ দ্বারের বাহিরে দাঁড়ায়ে আমি
আর কতকাল এমনে কাটিবে স্বামী--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রজনীর তারা উঠেছে গগন ছেয়ে,
আছে সবে মোর বাতায়ন পানে চেয়ে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো।
জীবনে আমার সঙ্গীত দাও আনি,
নীরব রেখো না তোমার বীণার বাণী--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
মিলাব নয়ন তব নয়নের সাথে,
মিলাব এ হাত তব দক্ষিণহাতে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো।
হৃদয়পাত্র সুধায় পূর্ণ হবে,
তিমির কাঁপিবে গভীর আলোর রবে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1321
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1914
রচনাস্থান: সুরুল
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
একেলা রয়েছ নীরব শয়ন-'পরে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রুদ্ধ দ্বারের বাহিরে দাঁড়ায়ে আমি
আর কতকাল এমনে কাটিবে স্বামী--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রজনীর তারা উঠেছে গগন ছেয়ে,
আছে সবে মোর বাতায়ন পানে চেয়ে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো।
জীবনে আমার সঙ্গীত দাও আনি,
নীরব রেখো না তোমার বীণার বাণী--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
মিলাব নয়ন তব নয়নের সাথে,
মিলাব এ হাত তব দক্ষিণহাতে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো।
হৃদয়পাত্র সুধায় পূর্ণ হবে,
তিমির কাঁপিবে গভীর আলোর রবে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1321
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1914
রচনাস্থান: সুরুল
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
==========================================
চক্ষে আমার তৃষ্ণা, ওগো তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে।
আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখী দিন, সন্তাপে প্রাণ যায় যে পুড়ে॥
ঝড় উঠেছে তপ্ত হাওয়ায়, মনকে সুদূর শূন্যে ধাওয়ায়--
অবগুণ্ঠন যায় যে উড়ে॥
যে-ফুল কানন করত আলো
কালো হয়ে সে শুকাল।
ঝরনারে কে দিল বাধা-- নিষ্ঠুর পাষাণে বাঁধা
দুঃখের শিখরচূড়ে॥
রাগ: বৃন্দাবনী সারং-আড়ানা
তাল: ঝাঁপতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ভাদ্র, ১৩৪৪
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1938
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখী দিন, সন্তাপে প্রাণ যায় যে পুড়ে॥
ঝড় উঠেছে তপ্ত হাওয়ায়, মনকে সুদূর শূন্যে ধাওয়ায়--
অবগুণ্ঠন যায় যে উড়ে॥
যে-ফুল কানন করত আলো
কালো হয়ে সে শুকাল।
ঝরনারে কে দিল বাধা-- নিষ্ঠুর পাষাণে বাঁধা
দুঃখের শিখরচূড়ে॥
রাগ: বৃন্দাবনী সারং-আড়ানা
তাল: ঝাঁপতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ভাদ্র, ১৩৪৪
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1938
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
===========================================
যদি প্রেম দিলে না প্রাণে
কেন ভোরের আকাশ ভরে দিলে এমন গানে গানে?।
কেন তারার মালা গাঁথা,
কেন ফুলের শয়ন পাতা,
কেন দখিন-হাওয়া গোপন কথা জানায় কানে কানে?।
যদি প্রেম দিলে না প্রাণে
কেন আকাশ তবে এমন চাওয়া চায় এ মুখের পানে?
তবে ক্ষণে ক্ষণে কেন
আমার হৃদয় পাগল-হেন
তরী সেই সাগরে ভাসায় যাহার কূল সে নাহি জানে?।
রাগ: সাহানা
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1344
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1938
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী, দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
কেন ভোরের আকাশ ভরে দিলে এমন গানে গানে?।
কেন তারার মালা গাঁথা,
কেন ফুলের শয়ন পাতা,
কেন দখিন-হাওয়া গোপন কথা জানায় কানে কানে?।
যদি প্রেম দিলে না প্রাণে
কেন আকাশ তবে এমন চাওয়া চায় এ মুখের পানে?
তবে ক্ষণে ক্ষণে কেন
আমার হৃদয় পাগল-হেন
তরী সেই সাগরে ভাসায় যাহার কূল সে নাহি জানে?।
রাগ: সাহানা
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1344
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1938
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী, দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
============================================
এতদিন যে বসেছিলেম পথ চেয়ে আর কাল গুনে
দেখা পেলেম ফাল্গুনে॥
বালক বীরের বেশে তুমি করলে বিশ্বজয়--
এ কী গো বিস্ময়।
অবাক আমি তরুণ গলার গান শুনে॥
গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী,
কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরী।
তরুণ হাসির আড়ালে কোন্ আগুন ঢাকা রয়--
এ কী গো বিস্ময়।
অস্ত্র তোমার গোপন রাখ কোন্ তূণে॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৪ ফাল্গুন, ১৩২১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯১৫
রচনাস্থান: সুরুল
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
দেখা পেলেম ফাল্গুনে॥
বালক বীরের বেশে তুমি করলে বিশ্বজয়--
এ কী গো বিস্ময়।
অবাক আমি তরুণ গলার গান শুনে॥
গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী,
কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরী।
তরুণ হাসির আড়ালে কোন্ আগুন ঢাকা রয়--
এ কী গো বিস্ময়।
অস্ত্র তোমার গোপন রাখ কোন্ তূণে॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৪ ফাল্গুন, ১৩২১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯১৫
রচনাস্থান: সুরুল
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
===========================================
যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙল ঝড়ে
জানি নাই তো তুমি এলে আমার ঘরে ॥
সব যে হয়ে গেল কালো, নিবে গেল দীপের আলো,
আকাশ-পানে হাত বাড়ালেম কাহার তরে?।
অন্ধকারে রইনু পড়ে স্বপন মানি।
ঝড় যে তোমার জয়ধ্বজা তাই কি জানি!
সকালবেলা চেয়ে দেখি, দাঁড়িয়ে আছ তুমি এ কি,
ঘর-ভরা মোর শূন্যতারই বুকের 'পরে ॥
রাগ: বাগেশ্রী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৩ ফাল্গুন, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ৭ মার্চ, ১৯১৪
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
জানি নাই তো তুমি এলে আমার ঘরে ॥
সব যে হয়ে গেল কালো, নিবে গেল দীপের আলো,
আকাশ-পানে হাত বাড়ালেম কাহার তরে?।
অন্ধকারে রইনু পড়ে স্বপন মানি।
ঝড় যে তোমার জয়ধ্বজা তাই কি জানি!
সকালবেলা চেয়ে দেখি, দাঁড়িয়ে আছ তুমি এ কি,
ঘর-ভরা মোর শূন্যতারই বুকের 'পরে ॥
রাগ: বাগেশ্রী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৩ ফাল্গুন, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ৭ মার্চ, ১৯১৪
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
===============================================
আমার এই পথ-চাওয়াতেই আনন্দ।
খেলে যায় রৌদ্র ছায়া, বর্ষা আসে বসন্ত ॥
কারা এই সমুখ দিয়ে আসে যায় খবর নিয়ে,
খুশি রই আপন মনে-- বাতাস বহে সুমন্দ ॥
সারাদিন আঁখি মেলে দুয়ারে রব একা,
শুভখন হঠাৎ এলে তখনি পাব দেখা।
ততখন ক্ষণে ক্ষণে হাসি গাই আপন-মনে,
ততখন রহি রহি ভেসে আসে সুগন্ধ ॥
রাগ: খাম্বাজ-কীর্তন
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৭ চৈত্র, ১৩১৮
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1912
রচনাস্থান: শিলাইদহ
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
খেলে যায় রৌদ্র ছায়া, বর্ষা আসে বসন্ত ॥
কারা এই সমুখ দিয়ে আসে যায় খবর নিয়ে,
খুশি রই আপন মনে-- বাতাস বহে সুমন্দ ॥
সারাদিন আঁখি মেলে দুয়ারে রব একা,
শুভখন হঠাৎ এলে তখনি পাব দেখা।
ততখন ক্ষণে ক্ষণে হাসি গাই আপন-মনে,
ততখন রহি রহি ভেসে আসে সুগন্ধ ॥
রাগ: খাম্বাজ-কীর্তন
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৭ চৈত্র, ১৩১৮
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1912
রচনাস্থান: শিলাইদহ
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
==========================================
আমার সকল দুঃখের প্রদীপ
জ্বেলে দিবস গেলে করবো নিবেদন
আমার ব্যথার পূজা হয়নি সমাপন
যখন বেলা শেষের ছায়ায়
পাখিরা যায় আপন কুলায় মাঝে
সন্ধ্যাপূজার ঘন্টা যখন বাজে
তখন আপন শেষ শিখাটি জ্বালবে এ জীবন
আমার ব্যথার পূজা হবে সমাপন
অনেক দিনের অনেক কথা
ব্যাকুলতা , বাঁধা বেদন ডোরে
মনের মাঝে উঠেছে আজ ভরে
যখন পূজার হোমানলে
উঠবে জ্বলে একে একে তারা
আকাশ পানে ছুটবে বাঁধন হারা
অস্তরবির ছবির সাথে মিলবে আয়োজন
আমার ব্যথার পূজা হবে সমাপন
জ্বেলে দিবস গেলে করবো নিবেদন
আমার ব্যথার পূজা হয়নি সমাপন
যখন বেলা শেষের ছায়ায়
পাখিরা যায় আপন কুলায় মাঝে
সন্ধ্যাপূজার ঘন্টা যখন বাজে
তখন আপন শেষ শিখাটি জ্বালবে এ জীবন
আমার ব্যথার পূজা হবে সমাপন
অনেক দিনের অনেক কথা
ব্যাকুলতা , বাঁধা বেদন ডোরে
মনের মাঝে উঠেছে আজ ভরে
যখন পূজার হোমানলে
উঠবে জ্বলে একে একে তারা
আকাশ পানে ছুটবে বাঁধন হারা
অস্তরবির ছবির সাথে মিলবে আয়োজন
আমার ব্যথার পূজা হবে সমাপন
============================================
কত অজানারে জানাইলে তুমি,
কত ঘরে দিলে ঠাঁই দূরকে করিলে নিকট, বন্ধু ,
পরকে করিলে ভাই ।
পুরানো আবাস ছেড়ে যাই যবে মনে ভেবে মরি কী জানি কী হবে,
নতুনের মাঝে তুমি পুরাতন সে কথা যে ভুলে যাই ।
দূরকে করিলে নিকট, বন্ধু ,
পরকে করিলে ভাই ।
~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
============================================
খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি আমার মনের ভিতরে।
কত রাত তাই তো জেগেছি বলব কী তোরে॥
প্রভাতে পথিক ডেকে যায়, অবসর পাই নে আমি হায়--
বাহিরের খেলায় ডাকে সে, যাব কী ক'রে॥
যা আমার সবার হেলাফেলা যাচ্ছে ছড়াছড়ি
পুরোনো ভাঙা দিনের ঢেলা, তাই দিয়ে ঘর গড়ি।
যে আমার নতুন খেলার জন তারি এই খেলার সিংহাসন,
ভাঙারে জোড়া দেবে সে কিসের মন্তরে॥
রাগ: মিশ্র কেদারা-খাম্বাজ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৮ মাঘ, ১৩২৯
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৩
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
কত রাত তাই তো জেগেছি বলব কী তোরে॥
প্রভাতে পথিক ডেকে যায়, অবসর পাই নে আমি হায়--
বাহিরের খেলায় ডাকে সে, যাব কী ক'রে॥
যা আমার সবার হেলাফেলা যাচ্ছে ছড়াছড়ি
পুরোনো ভাঙা দিনের ঢেলা, তাই দিয়ে ঘর গড়ি।
যে আমার নতুন খেলার জন তারি এই খেলার সিংহাসন,
ভাঙারে জোড়া দেবে সে কিসের মন্তরে॥
রাগ: মিশ্র কেদারা-খাম্বাজ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৮ মাঘ, ১৩২৯
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৩
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
==========================================
কেন চোখের জলে ভিজিয়ে দিলেম না শুকনো ধুলো যত!
কে জানিত আসবে তুমি গো অনাহূতের মতো ॥
তুমি পার হয়ে এসেছ মরু, নাই যে সেথায় ছায়াতরু--
পথের দুঃখ দিলেম তোমায় গো এমন ভাগ্যহত ॥
তখন আলসেতে বসে ছিলেম আমি আপন ঘরের ছায়ে,
জানি নাই যে তোমায় কত ব্যথা বাজবে পায়ে পায়ে।
তবু ওই বেদনা আমার বুকে বেজেছিল গোপন দুখে--
দাগ দিয়েছে মর্মে আমার গো গভীর হৃদয়ক্ষত ॥
রাগ: পিলু-ভীমপলশ্রী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৪ চৈত্র, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1914
রচনাস্থান: কলকাতার পথে রেলগাড়িতে
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী, দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
কে জানিত আসবে তুমি গো অনাহূতের মতো ॥
তুমি পার হয়ে এসেছ মরু, নাই যে সেথায় ছায়াতরু--
পথের দুঃখ দিলেম তোমায় গো এমন ভাগ্যহত ॥
তখন আলসেতে বসে ছিলেম আমি আপন ঘরের ছায়ে,
জানি নাই যে তোমায় কত ব্যথা বাজবে পায়ে পায়ে।
তবু ওই বেদনা আমার বুকে বেজেছিল গোপন দুখে--
দাগ দিয়েছে মর্মে আমার গো গভীর হৃদয়ক্ষত ॥
রাগ: পিলু-ভীমপলশ্রী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৪ চৈত্র, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1914
রচনাস্থান: কলকাতার পথে রেলগাড়িতে
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী, দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
============================================
No comments:
Post a Comment