Monday 5 August 2013


~~প্রলাপ~~
 

ফারুকহীন চায়ের দোকানে এখন শপিং কমপ্লেক্স জমকালো
ফেলে আসা স্মৃতিগুলো ইট-কাঠে কংক্রিটে বিকোচ্ছে নাগরিক আলো
জনশ্রুতি আছে এখানে নাকি এককালে কিছু শালিকের বাস ছিল
শাদা-ধূসর-কালো বকাটে-মন্দ-ভালো শালিকের ঝাঁক ছিলো
একটা শালিক পড়ুয়া ভীষণ, একটা শালিক খ্যাপাটে
একটা শালিক প্রেমে তোড়ে দারুণ দারুণ বকাটে
একটা শালিক নেশার ঘোরে চরম স্বপ্নবাজ
একটা শালিক গল্প বলতো থামিয়ে দিয়ে কাজ
একটা শালিক আকাশ আঁকত আকাশের ক্যানভাসে
একটা শালিকের আজন্ম ক্ষত ছিল শব্দ উচ্চারণে

আজো ফিসফাস ফিসফাস জনশ্রুতি আছে
জমকালো ইট কাঠ আর কংক্রিটের চাপা দীর্ঘশ্বাসে ...
খ্যাপাটে শালিক ক্ষ্যাপাই হয়েছিলো নাকি বাউলের গানে
কে জানে, কোন বাতাস ছিনিয়ে নিয়েছে তারে নিরুদ্দেশের টানে ।
স্বপ্নগুলো স্বপ্ন হয়েই রয়ে গেছে তবু স্বপ্ন শালিকের চোখে
অনুভূতিগুলো সব ডুবে গেছে শুধু রঙ্গিন নেশার ঝোঁকে ।
গল্প শালিক এখনো গল্প হয়ে ভাসে রৌদ্রদগ্ধ পথে অধিকার-বিদ্রোহ-চিৎকারে
বাস্তবতার নিদারুণ আশ্বাসে মাঝে মাঝে সে ফিরে আসে ক্ষুধার্ত শিশুর হুংকারে ,
কেউ কেউ আজো ঘুম ঘুম মাঝ রাতে পুড়ে যাওয়া অষ্টমী চাঁদের পাশে
বকাটে শালিককে দেখে ফেলে হুট করে বিষণ্ণ প্রেমের ঝুলন্ত লাশে
শব্দ শুন্য শালিকের কাছে শব্দ আসেনি কোন দিন
নিঃশব্দে তাকে গিলে ফেলেছে ধাতব ট্রেনের বীণ
অন্ধত্ব ধরেছে পড়ুয়া শালিকে, সেখানে আলো খুব ক্ষীণ
জাগতিক চেতনার কাছে জাগরণ আসে নি, দারিদ্রের কাছে ফেরে নি সুদিন

একটা শালিক ছবি আঁকছে ক্ষত জড়ানো হাত আর সবুজ পোড়ান মৃত নদীর বাঁক
একটা শালিক ছবি আঁকছে এখন দীর্ঘ রাত ক্যানভাস জুড়ে হতভাগা সব শালিকের ঝাঁক
একটা শালিক ছবি আঁকছে জনশ্রুতি ছিল এককালে ...... এখন নিঃসঙ্গ নিদারুণ এক চর
প্রিয় পৃথিবী আমার গাঁয়ে এখন ভীষণ জ্বর |
=========================================

~~দুজন দুজনার নিরিবিলি বুকে~~


অদ্ভূত ভূমিতে সে হাঁটে
স্পর্শ করেনা তবু আমাদের মাটি
তবুওতো আমাদের কোথাও সে থাকে
তোমার দু-চোখে আমি
খেয়ালের খেলা খেলে
শিলকড়ায়ের ডালে পশমের মত যেন
আচানক ফুল হয়ে ফুটে
আর্দ্রতা ছায়ামেশা মাটির মখমলে
ঝ'রে যাই।

যেন তার নিরাকার ছায়ার ছোঁয়ায়
না থেকেও আছি---যেন ভালোবাসা
দেখিবার কিছু নয় তবু লেগে থাকে
বুকের দেয়ালের তাকে।

তুমি জাগো আমি জাগি
দুজন দুজনার নিশিদিন নিরিবিলি বুকে
আমরা প্রজাপতি ফুল আর পাখি যেন
নিখিল বৃক্ষের বিস্মিত বিকাশে।
===========================================

আমার ক্ষিদেটা ভীতি ডেকে 
আনে। এখানে বৈচিত্র কিছু নেই। এর চেয়ে 
রোমহর্ষক, তোমাকে 
খুন করে প্রতিরাতে কালজয়ী স্বপ্ন। 
যেখানে বিবর্ণ লতাপাতা 
মেলে কেউ খেতে দেখে না অভূক্ত দ্বন্দ্ব।

একটি রাতের জন্য স্বপ্ন
দিয়ে দেখ আমি
মৃত্যু খেয়ে নেব। বাস্তবতায় কবর
খুঁড়ে বদলের পরিত্রাণে যাব।
===========================================

নির্বাচিত ছিপি প্রতিদিন খুলি। 
পক্ষপাত নিঃসরণে বিশ্বাস জন্মানো 
স্বর ভালবাসি। 
ফরমাশ গ্লাসের কাঁচে জাহির করি 
নির্বাণ। নেশাটা চড়ে গেলে 
আমিতো মাতাল।
মিথ্যে বলা হয়ে ওঠে না। তোমার
আছে অংশীদার।
=============================================

আনন্দের আতশবাজীর শব্দে আমি কেঁপে ওঠি,
এই বুঝি মিসাইল এসে আঘাত করল গাজার বুকে।
মধ্যরাত্রের ঘুমন্ত শিশুর চোখবুঝা কান্নাকে
ফিলিস্তিনী শিশুর মৃত্যু যন্ত্রনা ভেবে ভুল করি বারবার।
বাবাহারা মেয়ের আর্ত চিত্‍কার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রে মত আমার বিবেকে আঘাত করে।
নিজেকে প্রশ্ন করি,
এই পৃথিবীতে বেচে থাকার জন্যেই কী,
এত সংগ্রাম এত যুদ্ধ।
============================================

~~আমি ইশ্বরে বিশ্বাসী~~ 


আমার সঙ্গে আছেন ঈশ্বর,তাঁর দূত আর 
যুধিষ্ঠিরের সঙ্গে যাওয়া সারমেয়
কি তার দেব নাম...
ধরা যাক .. "মিসি "

চলা...চলা...চলতে ...চলতে
এখানে ওখানে দেখি পড়ে আছে জলের ত্রিভুজ
আমরা ছারপোকা গতি নিয়ে..হেঁটে চলেছি...হেঁটে চলেছি..
লাভ নেই..
বেসামাল হলে ছারপোকা জলন্ত অঙ্গার হয়
মিছরির ছুরির মতো ত্রিভুজ জল পেছনে বিধ্ধ করে !

চলা...চলা...চলতে ...চলতে

আমরা কুত্সীত পৃথিবীর দুই স্তনের নদীতে স্নান সেরে ক্লান্ত..
মনে মনে কথা বলা জল....আহা জল কখন ঠান্ডা হারিয়ে একাকার
পৃথিবীর বুক আর ত্রিভুজ জল পচন ধরায় সেই শুন্য গর্ভ জ্যোতিতে
যেন এক একটা কুমারী..আসছেন সেই ত্রিভুজ জলের সঙ্গ দিতে !!

চলা...চলা...চলতে ...চলতে

তুমি কি নিজের মনের সঙ্গে কথা বলো
সুনীল (গঙ্গ ) বলেছিলেন......
প্রকাশ্য উচ্চারণে যে কথা বলা যায় না..স্ত্রী পুত্র স্বামী কন্যাকে
যে সবই মনের আনাচে কানাচে ত্রিভুজ ছুরির মতো খোঁচা মারে
রক্তাক্ত স্তবির থেকে বিন্দু বিন্দু ঝরে রক্ত জল ভালবাসা চুইয়ে ধুয়ে যায় সাগরে
না রাখে রক্ত দাগ...কলসে...মাটিতে বা...মনে !!

তুমি কি জানো...সুনীল (গঙ্গোপাধ্যায়) বলেন *.....
" অমি তো যখন তখন মনের সঙ্গে কথা বলি !কখনো মনের মধ্যেই তর্ক
যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় ! অনেক চিন্তাই ....নিছক একমুখী হয় না ! নানান শাখা প্রশাখা বিভক্ত হয়ে গোলমাল পাকায় !
তারপর ঘুম আসে..তারপর স্বপ্নের মধ্যে এসে যায় অন্য জীবন...."

চলা...চলা...চলতে ...চলতে

কৌতুহল হয়...সবাই কি এক ভাবে !
এই যেমন আমি ভাবি বঙ্গ-ভঙ্গ নিয়ে নেপালী-বাঙালি একক রাজ্য পশ্চিম বাংলার সীমানায় ........
সাহসিক..
সাহসিক...
সাহসিক....
তুমি কি জানো গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ নেবেছিলেন প্রতিবাদে !
অসভ্য ইংরেজদের সাথে সভ্য ব্যবহারে ,১৯০৫ সালে খালি পায়ে হেঁটে জেহাদ জানিয়েছিলেন....
যখন অসভ্য প্রতিভূ সভ্য প্রকৃতি ভাঙ্গতে চেয়েছিলেন বঙ্গ-ভঙ্গ'র নামে !!

চলা...চলা...চলতে ...চলতে

কি হয় জানো এই সব অস্থিরতা....নিশ্বাস চুপ..স্বপ্ন এবং অভেদ্য নীরবতা
হে শান্তি...তুমি প্রবল..তুমি জয়ী
থামিয়ে দাও শত্রুর বুকে শলা ষড়যন্ত্র....এঁটে দাও বিশাল ঢেউ'র মালা
যেন নিদ্রাবতী স্বর্ণশস্য ছায়া সমর্পনের হিংস্র বিশ্রাম সাজে দন্দ্ব উপহারে !
যাতে.....
--হরিনী ঘুমায় সাহসে নিদ্রা ঘুম ঘুম চোখে গহিনী অরন্যে
-- এক রাশ দুরন্ত মাছ স্থিতিশীল ভেসে বেড়ায় কুমীর চোখে দুপাশে
-- নধর ছাগল নির্বিবাদ ঘুরে বেড়ায় কষাই দোকানের চারপাশে

চলা...চলা...চলতে ...চলতে

তুমি জানো---
আমার সঙ্গে আছেন ঈশ্বর তার দূত
যুধিষ্ঠিরের ভালবাসা সারমেয়...মিসি

আমি এসব নিয়েই থাকি
আমি ঈশ্বর বিশ্বাসী !
========================================

~~শীর্ণ হৃদয়~~
 


অন্তরীক্ষ সোনালী স্বপ্নের মর্মর শব্দে তন্দ্রাহীন রাত
বালুকার বিদীর্ণ ভুমিপটে স্পৃহাহীন ভাসমান বুনিয়াদ
অগুন্তি চাওয়া পাওয়ার শুভ্রতর নিরুপম হাতছানি
কোলাহল শূন্য ধূসর গাঢ় অন্ধকারে বয়ে চলা জীবন
অস্থির মনের নিরুত্তর ভাবনার বিশালতর সমীকরণ,
অপ্রাপ্তির পীড়াপিড়িতে অপেক্ষমান নৈষ্ঠিক প্রহরا

অগাধ নির্ভেজাল বিশ্বাসের ঘরে আজি শুধুই শূন্যতা
নিষ্প্রভ বন্দী কয়েদীর শ্বাসরুদ্ধ জীবনে অপরাজিতা,
সুক্ষ্ণ বৃক্ষের ঝরা পাতার মতো অমর্যাদাহীন মনোদ্যান
পথ থেকে পথে যোজন দূরে ভ্রান্তিক ভুলের আত্ম দহা
জন্মান্তরে একান্তবৃন্তে নিরন্তর খুঁজি সুপ্রভাত অপ্রময়
প্রতিদানে অপ্রত্যাশিত গ্লানীতে অভিমুখী প্রত্যাবর্তনا

হৃদয়কুঞ্জের সবুজায়নে বসন্তের অনাগত সদ্য পদ্মরাগ
বিমূর্ত ভাবনায় অমিয় আত্মাসত্তা,বিষাদময়ী উপকরণ
পার্থিব পৃথিবীর অশালিনতর স্লোগানে দৈনন্দিন জীবন
অধরা বসুধার রণাঙ্গনে ক্রমাগত মৃত্তিকান্যয় নব প্রাণ,
বিন্যাস অন্বেষণে আহ্নিক নিরুচ্চার স্বপ্নে ঘূর্ণিবর্ষণ মমি
বিরূপ ভাবনার মোহে জন্মান্তরে আমি ধ্বংসযজ্ঞ ভূমিا
==========================================

~~হেমন্ত এসেছে~~


কার কণ্ঠোদ্যানের গান
হেমন্তের চোখ আজ ধরে আছে
সে তোরণ খুলেছে কি
নগরের দ্বারে এসে দাঁড়িয়েছে সবে
তারে দেখিবারে

তারা সবে বেতারে শুনেছে
প্রেম রোদ সমভিব্যাহারে আসবে সে
সিঁদূরিত বিধি আর একটানা সিঁথি তার
তৃষিত রেখাখানি ললাটের নিয়ে
পৃথিবীতে এসে হেসে বিষন্ন জনগণে রেখে
পূণরায় চ’লে যাবে

পৃথিবীর কণ্ঠ বাগানের মত নয় তবে
আর কারও চোখও নয় হেন্তের মত
হৃদয়গুলিও বুঝি পৃথিবীর কোনো মানুষের তরে মানুষের নয়
পাখিদেরও নিরাপদ নীড় নয় তারা
স্বপ্নের পাখিসব মৃত পালকের মত
মলিনতামাখা ধূসরিত

হেমন্ত এসেছে বুঝি আপাতত তাই
তুমি আমি তার চোখে গান
মলিনতা গায়ে নিয়ে যেন অভিভূত।
==============================================
বিষাদে অবিষহ্য, নিত্য এ অবিলাস
উপহত মনে উপলভ্য জন্মাবধি
কাঙ্ক্ষিত না মেঘে মেঘে সজ্জিত আকাশ
চাই নীলে ঘেরা অসীম শূন্য পরিধি
বিষাদে অবিষহ্য, কষ্টরা উপাসীন
জীর্ণ দেহে নিরন্তর চলা পদব্রজে
কাঙ্ক্ষিত না কুয়াশাচ্ছন্ন শীতল দিন
চাই মিষ্টি মাখা রোদ-অনন্ত সবুজে।
উড়ন্ত মনে পড়ন্ত ক্ষণে সঞ্জীবন
আঁধার কেটে ভোর, দীপ্ত আশার নুর
গানে গানে আত্নানন্দে সিক্ত আপ্যায়ন
পুষ্প, পুষ্পাসবে বসন্ত নহে বিদূর
শাশ্বত প্রেমের অবিশ্রান্ত বহমান
দুঃখ-কষ্টেও নহে ক্লান্ত হৃদয় যান।
============================================

~~বৃষ্টি ও তুমি~~

 
আবারও দিন ভর বৃষ্টি অবিরাম
টিনের চালে বাতাসের সে-কি শব্দ
পরাধীনতায় নিশ্চুপে ব্যালকনিতে
নিস্তব্ধ আমি, বসে আছি ভাবনার
অথৈ জলে, হারানো দিনের পানেا

মনে হয় এইতো সেদিন,গেল জৈষ্ঠে
দুজনে এক সাথে, বৃষ্টির জলে ভিজে
আম কুড়িয়ে নিলাম খেলার ছলে;
রাতে ভীষণ জ্বরে গা' পোড়ছিল
আমি জ্বরের তীব্রতায় থর থর কাঁপছি
তুমি শিয়রে বসে জলপট্টি করে দিলেا

এমনি হাজারও স্মৃতির মুক্তাঙ্গনে
হৃদয় অতলে বাঁধ ভাঙ্গার সুর
আজ তুমি রয়েছো কত দূর,
তোমার প্রিয় সেই নকশী কাঁথাটি
সুক্ষ্ণ চিরল বর্ণের চিঠি,রেখেছি স্বযত্নেا

মনের ক্যানভাসে তাই বৃষ্টি এলেই
তোমাকে নিয়ে সাজাই,পুরনো সব স্থিতি
বহুদিন তোমায় দেখিনি যে!
স্মৃতির আয়নায় তোমার প্রতিচ্ছবিটা
বৃষ্টি এলেই ভীষণ কাঁদায় আমাকে......।

মাঠ ঘাট তেপান্তরের নির্গুম পথ পেড়িয়ে
একমুঠো অন্নেরদায়, কঠিন দগ্ধতায়
জলাঞ্জলি দিয়েছি আপন যত সুখ,
এই দূর প্রবাসে বৃষ্টির জড়তা গায়ে মেখে
বিষন্নতায় আজ,তোমাকে মনে পড়ছে খুবا
===========================================

~~মন ভালো নেই~~


 
নিস্তব্ধ বিকেল জনশূন্য পথ ঘাট
কিঞ্চিৎ কোলাহল নেই বাতাসে
বৈরীতায় ছেয়ে আছে গগন,
মরুর পথে অগন্তব্যহীন যাত্রী আমি
আজ আমার মন ভালো নেইا

বিষাদের নীল রঙে তপ্ত খাঁখাঁ বুক
অসীম ক্লান্তিতে ডুবো ডুবো আঁখি
পাঁজর ভেঙ্গে দীর্ঘশ্বাস বেদুইন,
গাংচিল হয়ে উড়ে যাচ্ছে পুষিত সুখ
ভ্রান্ত পথের পথ ভোলা পথিক আমি
আজ আমার মন ভালো নেইا

তৃষ্ণার্ত চাতক নয়ন, তন্ময় তাকিয়ে থাকি
দিগ্ভ্রান্ত উন্মাদের মতো ঘুরি বৈকি,
ক্ষণিক সুখের অন্বেষণে বেলা বয়ে যায়
অবেলায় আমি যেন আজ নিঃস্ব একাকী,
ক্ষয়িত জীবনের নিসঙ্গতায় বিমূর্ত রজনী
আজ আমার মন ভালো নেইا
===========================================
আকাশের নীলে
সাগরের জল নীল,
দেখেছো!কত মিল দুটিতে।
আবার সূর্যের আলোয় হয়
ঝলমলে চাঁদ, পূর্ণিমায়
ভাসে রাত।
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বে
প্রকৃতি হয় সৌন্দর্যময়।
অথচ দ্যাখো!নারীপুরুষে
ব্যবধান কত?
পৃথিবীর সমস্ত সৌন্দর্য
নারী পুরুষের মিলনেই
উত্‍স হত; যদি
অহমিকার ব্যবধান ভুলে
তারা পরিপূরুক হত
একে অপরের।
যেভাবে রাত দিনের
অথবা আলো আধারের।।
============================================
~~আত্নার মিনতি~~



সুখের ক্ষরণে সদা বিরহের আভা
মনের ব্যথা অজান্তে ভাষাহীন কথা
বিচ্ছেদেই বিবর্ধন প্রজ্বালিত বিভা
এক জীবনেই দুই জীবনের প্রথা!
প্রকৃত কাননে কেন সে কৃত্রিম রণ?
অনিত্য স্বরূপে নিত্য সংঘাতে ধূসর,
সংগোপিত আনন্দনে বিষম রোদন
ইচ্ছে শক্তির ইচ্ছেতে আত্ন-সুখ-ঘর।

‘অকৃত্রিম ভাললাগা’-আত্নার মিনতি
পরম আনন্দে তব পুলকিত ভাবি
মনের সাথে মনের দারুণ বসতি
মিলন মেলায় সদা, আর্দ্র সুখ-দেবী!
আত্নার মিনতি হয় জলে সুখ তরী
অন্যথায় স্থলচরে মোরা পাদচারী।। 
==========================================

~~একজন হুমায়ূন আহমেদ~~

 

ছিলে না একক গুণে গুণান্বিত জন
সর্ব গুণ নিহিতে, নিদ্বন্দ্বে নিরুপম 
সাধারণ বেশেতে এক অসাধারণ
সাহিত্যে ছিলে অনুপ্রাণনে অনুপম
জীবনের জীবিকায়, হাসি কী কান্নায়
চেতনায় নিরন্তর চিন্তার উদ্ভেদ
হিল্লোল আনীত মনেতে যার লেখায়
তুমি একজন হুমায়ূন আহমেদ।

এসেছিলে নীরবে, ছিলে শুধু স্বজনে,
জানিত কী অজস্র জন এই তোমাকে?
মেধা বিকাশে সাহিত্যাকাশে পদার্পণে
দেশ ছেড়ে ক্রমায়াত বিদেশের বুকে
শত কোটি হৃদয়ের মধ্য মণি হয়ে
চলে গেলে নীরবে সবাইকে কাঁদিয়ে। 
===========================================
আমার আলস্য বেলা, সযত্নে এ খেলা
শান্ত মাটির ঘরেই সে সুখের তাড়া
হারিয়ে হারিয়ে আত্ন মন সবি ভুলা
পবনে হানা, ক্লান্তি অলসতায় ভরা
আমার দুঃখের জ্বালা, অযত্নে এ বলা
ক্লান্তি যদি হয় ক্ষান্তি, তারি পথ ধরা
ক্ষয়ে ক্ষয়ে শূন্য পরে, মনে দিবে দোলা
স্বজনে স্বজন এলে দুঃখ হবে সারা।
===========================================

~~মানুষ~~

না, না, অতটা বেসোনা ভালো আমাকে
আমাকে চেনোনা বুঝি 
আমি সেই কেউটের ছানা
স্বাগত জানাতে পারি তুলে ফণা।
================================================
~~জহুরি~~

ভালোবেসো শুধু পাওয়ার জন্যে--
পাওয়া যদি কাকে বলে জানো
অহেতুক না পেয়ে উদ্বায়ী ভালোবাসা আমাকে বেসোনা
তোমাকে ভালোবাসা কর্পূরের মত আমি দেবনা নেবনা।
===============================================
দুচোখ শুকিয়ে রোগ্ন,পিপাসিত মন
বালুকার বিদীর্ণ ভূমিতে অনাদি জীবন
নিখিল বসুধার চতুরাংশে আহারার্থী
মরিয়া ক্রমশ নিরুত্তর শুস্ক জলকীর্ণ,
প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির ঘনাঘটায় দূর্জয় বিষণ্ণ
ভ্রান্তিক পথিক উৎ‍কন্ঠিত সিক্ত
জন্মাদিপথে আজন্ম দুঃস্বপ্ন স্পর্শ
নীলনদ পিরামিড সৌধ বৃথা বৈষম্য!!
===============================================
~~ও শেফালী…..এ কি কম বড় প্রেম!~~


ও শেফালী,
তুই কি রোজ নিজের ঝরে পড়ার শব্দ শুনে যাস
সে শব্দ শোনে রোজ সকালে আপন মনে দীর্ঘ সবুজ ঘাস
...দু হাত বাড়িয়ে তোকে পাবার আশায়
রোজ সকালে শিশির জলে নিজের শরীর ধুয়ে রাখে
ও শেফালী, তুই বল না …… 
এ কি কম বড় প্রেম !

ও শেফালী, তুই কি জানিস …
সে ব্যথা মধুর ব্যথা, সবুজ ঘাসের শব্দ শোনা উত্ফুল্লতায়
একাগ্রতা নিবিড় নিমেষ শব্দ কথায় …শব্দ কথায় ।
নীলাকাশ থমকে দাঁড়ায় সাদা মেঘে ঈশান কোনে
চমকে বাতাস দাঁড়িয়ে পড়ে নীরবতায় বিশাল কোনে ।
ফিস ফিসিয়ে সবাই বলে..
কোন শব্দ নয় …কোন শব্দ নয়
শব্দের আধারে নিঃশব্দ নিপুন
কোন অঙ্গন যেন না সাজে
কোন ব্যন্জন যেন না বাজে
কোন পরিসর যেন না রাজে ।

ও শেফালী, তুই শুধু ভালবাসা নিবন্ধ শব্দ কর ।
দ্যাখ, তোর শব্দ পেয়ে রোজ সকালে
শরত্ শিশির মুগ্ধ স্নানে ঘাসের শরীর পূন্য হয়
তোর গন্ধ পাগল ঘাসের শরীরে সশব্দ ভালোবাসা জাগে ।

ও শেফালী……
ঘাসের শরীর সবুজ রাজে…তোর সাদা জাফরানী রং তুলতুল সাজে
আহা, নরম সরল গন্ধ বিধুর….আহা, কি সুন্দর…কি সুন্দর
ও শেফালী, বল না…..
এ কি কম বড় প্রেম!
===============================================

~~পোকা মারার~~


ঠাণ্ডা তুলি বাতাসের দুঃখ আমাকে লিখছে আজ
হয়েছে সে কবি
শীতের হাঙ্গরের করাতের দাঁত
খুলছে গিঁটে গিঁটে কাব্যিক শব্দের
ম্যাশিনারী দেহ।

আমি তার কবিতার দুঃখের পতাকা হয়ে উড়ি।

আজ তাই লিখছিনা
সাপের জিহবায় কনকনে লিখছে সে আমাকে।
ছোবলে ছোবল মেরে
হেঁসে হেঁসে
বীভৎস কেশে কেশে।
===========================================
নয়ন মেলে হৃষ্ট, হিলমিল স্বপনে
হিয়ার মাঝে হূতি, হিল্লোল আগমনে
অসংখ্য সুখ বিছিয়ে রয়েছি যে বসে
একটি মাত্র সুখ এসে আনন্দ কিসে?
কাঁদিয়া কহিতে লাগি হিয়ার সম্পাশ
অতি সমাচ্ছন্নে, করো না এ উপহাস
দিঙমূঢ় হতেই পারে, সুখ পিছনে
সানন্দেও সম্পাত জানি, নিখিল ভূবনে।
===========================================

~~তিনি এবং আমি~~


উনি বেশ বিস্মিত
'ভালোইতো ভালোইতো'--
যেইনা বলেছি 
ঘাড় চেপে করলেন অমনি অবনত
তারপর বললেন, 'অত নত ভালোনা।'
বললাম,'কত?'

'এতো তর্ক! বরাবর মুখে মুখে!'

তারপর চুপ, একদম চুপ।

বললেন, 'জানি তোর ভেতরে কূরূপ।'
জানি আমি তিনি নন কিছুতেই খুশী
আমিও হবনা আর তার পোষা পুশি।
=============================================
অখন্ডিত চিত্তচাঞ্চল্যশূন্য অব্যয়
অভগ্ন ঝর্ঝরিকেই শুধু চিত্ত ক্ষয়
এই তো জীবন, নিসূদন-নিস্তরণ
বরিষা মনেতে এ নিমগ্ন নিবেশন 
শত পরিবাদে পরিব্রাজক এ জন
পরিপূর্ণ প্লুতে জীবন পরিবেষ্টন।
=============================================
চাওয়া যেন পাওয়া হয়,
আশা যেন পুরণ হয়,
সুখ যেন সাথী হয়,
দুঃখ যেন দুর হয়,
জীবন যেন সুন্দর হয়।
=============================================
অসাড়ে অসাধ্য অস্তি, অসিধারা-ব্রত
ইন্দ্রিয়সংযমে ঈপ্সু, ভোগাদিতে রত
কর্মে জীবলোকে প্রাপ্ত, প্রীতে প্রীতিপদ
শত জুগুপ্সায়ও হৃল্লেখহীন মদ
‘শূন্যপাত্র’, দেখে শিণীকরে পূর্ণ ভরা
নৈষ্কর্মে ন্যায়পরায়ণতা, রিক্ত ধারা
কর্ম ক্ষেত্রে বিপথগামী না হোক কর্মী
কর্মবিপাকে চিরস্তায়ী উল্লাসী ঊর্মি।
জন্মিয়া-সুতনু সন্নিভ শরীরধারী
সদাতন হৃষিত, হোক রিকথহারী
শূন্যতায় গচ্ছিত একাকীনি গগন
দুস্তর পথে দুর্বার, দুস্তিত এ মন
অর্জিয়া শত গুণ, হিরণ্য পায় মন
সোল্লুন্ঠ সে কন্ঠে ধ্বনিত না হোক জন।
=========================================
~~আজ রাতে আমি লিখতে পারি~~

 

আজ রাতে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বিষন্নতম পংক্তি লিখতে পারি

লিখতে পারি
লীল তারাগুলো দুরে কাঁপে বরাভয় রাত্রির ভয়ে

লিখতে পারি
বাতাস নিমগ্ন ঘরে আকাশে আর গায় গান

আজ রাতে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বিসন্নতম পংক্তি লিখতে পারি

আমি তাকে ভালোবেসেছি
কখনো পাখির পালকের মতো কতবার তার ভালবাসা গেঁথেছে আমার হৃদয়
আমার পুলকিত হৃদয় নেচেছে আনন্দে
যেন 'আইফেল টাওয়ার'এ নেচেছে জোড়া শালিক
লাগেনি তাদের ফ্রেন্চ এয়ার লাইনস'এর দুরন্ত নীল টিকেট বা
বীভত্স সেকুরিটি চেকইন.. ..প্রায় উলঙ্গ করা এক কালো অধ্যায়

আজ রাতে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বিসন্নতম পংক্তি লিখতে পারি

লিখতে পারি
ভাবনায় তাকে পাইনি
অনুভবে তাকে হারিয়েছি

লিখতে পারি
আমি চুমোয় ভরিয়ে দিয়েছি তাকে
সীমাহীন আকাশের অসংখ্য সময়ের ব্যবধানে

আজ রাতে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বিসন্নতম পংক্তি লিখতে পারি

চিন্তায় তাকে ঘন হয়ে পাবার অনুভবে তাকে বুঝেছি হারানো চিরন্তন স্বাদ
কিছু ভালবাসা অকিঞ্চন রোজ......কিসে এসে যায় কার
ভালবাসা আমার হারিয়েছে আজ
'পাবলো নেরুদা'র স্পানিশ কবিতার অপরাজিতা ফুলে থোকা থোকা লীল
যেন পঞ্চবটি বনে সেজে আছে সীতা দেবী ঠিক লক্ষণ বাবুর নিষেধের অপেক্ষায় !

আজ রাতে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বিসন্নতম পংক্তি লিখতে পারি

প্রশ্ন জেগেছে আজ মনে,রাতের গভীরতা ঘিরে তার অগভীর শরীর ছায়ায়
হয়ত এ কবিতা ঝরে যাবে বনাঞ্চলে রাতভর এক বিন্দু শিশির অনুকম্পায়
সূর্য্য এসে উড়াবে উত্তাপ শুকিয়ে দিয়ে রেখে যাবে একান্ত জলছাপ
সেকি তবে অন্যের হবে......?
যেমন আমার প্রথম চুম্বনের ঠোঁটে তার রক্ত মিষ্টি স্বাদ
তার হাস্কি কন্ঠস্বর .........
তার উন্নত উজ্বল শরীর বেয়ে নরম তুলতুলে চামড়া বিতান....
তার দীর্ঘ তাকিয়ে তার চোখ অপলক....
সবই কি দিয়ে যেতে হবে আমায় !!

আমি কি ভালবাসি তাকে এখনো
ভালবাসা কি ক্ষনস্থায়ী ...যেন ক্ষমা দীর্ঘ হয়ে যায়

আজ রাতে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বিসন্নতম পংক্তি লিখতে পারি

কারণ...কাল রাতের গরজে তার বহু আলিঙ্গনে অতৃপ্তির ছায়া পড়েছে মনে
আমি জানি এটাই আমার শেষ বেদনা
যা তার দীঘল চোখ... নরম তুলতুলে শরীর চ্নুয়ে জানাবে আমায়
চুম্বনের রক্ত উষ্ণ হারানোর বেদনায় ..............
আমি জানি....তার সমস্ত বেদনা ঘিরে এই হবে আমার শেষ কবিতা !!!
============================================
~~কালী পুজো~~
 

বুম করে বোমা ফাটে
দুম করে পটকা
এসে গেল কালী পুজো
চাঁদা দেবে ছোটকা !

চাঁদা নিয়ে ছোটাছুটি
কেনা হবে দিনবাতি
পটকা তুবড়ি যত
ঝিরঝির তারাবাতি!

ও পাড়ার শ্যামলা
গত কালী পুজোতে
হাসপাতালে মারা গেল
বোম পটকা ফাটাতে!

তা শুনে কাকা বলে
বোম কেনে হবে না
রকেটে আগুন দিলে
নীচে তো ফাটবে না !

দুম ড্রাম শব্দে
তালা লাগে কানে
তুবড়ি ছুটতে দেখে
দম ধরে মনে !

হায় হায় কালী পুজো
দেবী দুর্গার মতো
চারদিন হলে পরে
আরো ভালো হতো !
============================================

~~ব্যবচ্ছেদ বিরহ~~

 
অমাবস্যারন্যায় বিমূর্ত নিস্তব্ধ কালো রাত 
অবিরাম শ্রাবনের বর্ষণ-
পুনাঙ্গ অবয়বে কষ্টরোহিত ছাপ প্রস্ফুটিত
ব্যালকনিতে তোমার স্মৃতিজড়িত আমি!
নিশুতি এই রাত যেন অফুরান্ত তন্দ্রাহীনا

বিদূরিত বিহনে দ্বিগভ্রান্ত উন্মাদ আমি
চাতক নয়নে তন্ময় তাকিয়ে থাকি-
ঐ সুদূরে তোমার সমাধি,
নির্দয় ঘোরব্যাধি ক্ষমা,করেনি তোমায়!
ভাবনায় হই ধ্বংসপ্ত নিঃশ্বাসে কাঁদি
শত জনমের বাঁধন কি করে ভুলে থাকি?

তুমিহীন স্মৃতিপটে আজ বেদনায়পূর্ণ সাঁজ
আমার অঙ্গের সফেন ভূমিতে ললিত-
তোমারই মুগ্ধ কারুকাজ
মন মন্দিরে,আত্মবিশ্বাসে তোমারই বিরাজ,
তুমি নেই যেন আঁধার পৃথিবী,অকন্ঠ ঝরা মন
আমার অতলে থাকবে বেঁচে তুমি সারাটি জীবনا
===============================================



No comments:

Post a Comment