ওরে জাগায়ো না, ও যে বিরাম মাগে নির্মম ভাগ্যের পায়ে।
ও যে সব চাওয়া দিতে চাহে অতলে জলাঞ্জলি॥
দুরাশার দুঃসহ ভার দিক নামায়ে,
যাক ভুলে অকিঞ্চন জীবনের বঞ্চনা ॥
আসুক নিবিড় নিদ্রা,
তামসী তুলিকায় অতীতের বিদ্রূপবাণী দিক মুছায়ে
স্মরণের পত্র হতে।
স্তব্ধ হোক বেদনগুঞ্জন
সুপ্ত বিহঙ্গের নীড়ের মতো--
আনো তমস্বিনী,
শ্রান্ত দুঃখের মৌনতিমিরে শান্তির দান॥
রাগ: কেদারা
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৯ ফাল্গুন, ১৩৪৫
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৩ মার্চ, ১৯৩৯
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
===========================================
যেতে দাও যেতে দাও গেল যারা।
তুমি যেয়ো না, তুমি যেয়ো না,
আমার বাদলের গান হয় নি সারা ॥
কুটিরে কুটিরে বন্ধ দ্বার, নিভৃত রজনী অন্ধকার,
বনের অঞ্চল কাঁপে চঞ্চল-- অধীর সমীর তন্দ্রাহারা ॥
দীপ নিবেছে নিবুক নাকো, আঁধারে তব পরশ রাখো।
বাজুক কাঁকন তোমার হাতে আমার গানের তালের সাথে,
যেমন নদীর ছলোছলো জলে ঝরে ঝরোঝরো শ্রাবণধারা ॥
রাগ: পিলু
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1332
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1925
স্বরলিপিকার: অনাদিকুমার দস্তিদার
তুমি যেয়ো না, তুমি যেয়ো না,
আমার বাদলের গান হয় নি সারা ॥
কুটিরে কুটিরে বন্ধ দ্বার, নিভৃত রজনী অন্ধকার,
বনের অঞ্চল কাঁপে চঞ্চল-- অধীর সমীর তন্দ্রাহারা ॥
দীপ নিবেছে নিবুক নাকো, আঁধারে তব পরশ রাখো।
বাজুক কাঁকন তোমার হাতে আমার গানের তালের সাথে,
যেমন নদীর ছলোছলো জলে ঝরে ঝরোঝরো শ্রাবণধারা ॥
রাগ: পিলু
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1332
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1925
স্বরলিপিকার: অনাদিকুমার দস্তিদার
=========================================
মোর ভাবনারে কী হাওয়ায় মাতালো,
দোলে মন দোলে অকারণ হরষে।
হৃদয়গগনে সজল ঘন নবীন মেঘে
রসের ধারা বরষে॥
তাহারে দেখি না যে দেখি না,
শুধু মনে মনে ক্ষণে ক্ষণে ওই শোনা যায়
বাজে অলখিত তারি চরণে
রুনুরুনু রুনুরুনু নূপুরধ্বনি॥
গোপন স্বপনে ছাইল
অপরশ আঁচলের নব নীলিমা।
উড়ে যায় বাদলের এই বাতাসে
তার ছায়াময় এলো কেশ আকাশে।
সে যে মন মোর দিল আকুলি
জল-ভেজা কেতকীর দূর সুবাসে॥
রাগ: গৌড়মল্লার
তাল: ত্রিতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৭ ভাদ্র, ১৩৪৬
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৯ অগাস্ট, ১৯২৯
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
============================================
এবার তোর মরা গাঙে বান এসেছে, 'জয় মা' ব'লে ভাসা তরী ॥
ওরে রে ওরে মাঝি, কোথায় মাঝি, প্রাণপণে, ভাই, ডাক দে আজি--
তোরা সবাই মিলে বৈঠা নে রে, খুলে ফেল্ সব দড়াদড়ি ॥
দিনে দিনে বাড়ল দেনা, ও ভাই, করলি নে কেউ বেচা কেনা--
হাতে নাই রে কড়া কড়ি।
ঘাটে বাঁধা দিন গেল রে, মুখ দেখাবি কেমন ক'রে--
ওরে, দে খুলে দে, পাল তুলে দে, যা হয় হবে বাঁচি মরি ॥
রাগ: সারিগান
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1312
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1905
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
ওরে রে ওরে মাঝি, কোথায় মাঝি, প্রাণপণে, ভাই, ডাক দে আজি--
তোরা সবাই মিলে বৈঠা নে রে, খুলে ফেল্ সব দড়াদড়ি ॥
দিনে দিনে বাড়ল দেনা, ও ভাই, করলি নে কেউ বেচা কেনা--
হাতে নাই রে কড়া কড়ি।
ঘাটে বাঁধা দিন গেল রে, মুখ দেখাবি কেমন ক'রে--
ওরে, দে খুলে দে, পাল তুলে দে, যা হয় হবে বাঁচি মরি ॥
রাগ: সারিগান
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1312
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1905
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
============================================
কেন সারা দিন ধীরে ধীরে
বালু নিয়ে শুধু খেলো তীরে॥
চলে গেল বেলা, রেখে মিছে খেলা
ঝাঁপ দিয়ে পড়ো কালো নীরে।
অকূল ছানিয়ে যা পাও তা নিয়ে
হেসে কেঁদে চলো ঘরে ফিরে॥
নাহি জানি মনে কী বাসিয়া
পথে বসে আছে কে আসিয়া।
কী কুসুমবাসে ফাগুনবাতাসে
হৃদয় দিতেছে উদাসিয়া।
চল্ ওরে এই খ্যাপা বাতাসেই
সাথে নিয়ে সেই উদাসীরে॥
রাগ: পিলু
তাল: রূপকড়া
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1308
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1901
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
বালু নিয়ে শুধু খেলো তীরে॥
চলে গেল বেলা, রেখে মিছে খেলা
ঝাঁপ দিয়ে পড়ো কালো নীরে।
অকূল ছানিয়ে যা পাও তা নিয়ে
হেসে কেঁদে চলো ঘরে ফিরে॥
নাহি জানি মনে কী বাসিয়া
পথে বসে আছে কে আসিয়া।
কী কুসুমবাসে ফাগুনবাতাসে
হৃদয় দিতেছে উদাসিয়া।
চল্ ওরে এই খ্যাপা বাতাসেই
সাথে নিয়ে সেই উদাসীরে॥
রাগ: পিলু
তাল: রূপকড়া
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1308
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1901
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
==========================================
কেটেছে একেলা বিরহের বেলা আকাশকুসুমচয়নে।
সব পথ এসে মিলে গেল শেষে তোমার দুখানি নয়নে॥
দেখিতে দেখিতে নূতন আলোকে কি দিল রচিয়া ধ্যানের পুলকে
নূতন ভুবন নূতন দ্যুলোকে মোদের মিলিত নয়নে॥
বাহির-আকাশে মেঘ ঘিরে আসে, এল সব তারা ঢাকিতে।
হারানো সে আলো আসন বিছালো শুধু দুজনের আঁখিতে।
ভাষাহারা মম বিজন রোদনা প্রকাশের লাগি করেছে সাধনা,
চিরজীবনেরি বাণীর বেদনা মিটিল দোঁহার নয়নে॥
রাগ: মিশ্র দেশ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৫ মাঘ, ১৩৪২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৯ জানুয়ারি, ১৯৩৬
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
সব পথ এসে মিলে গেল শেষে তোমার দুখানি নয়নে॥
দেখিতে দেখিতে নূতন আলোকে কি দিল রচিয়া ধ্যানের পুলকে
নূতন ভুবন নূতন দ্যুলোকে মোদের মিলিত নয়নে॥
বাহির-আকাশে মেঘ ঘিরে আসে, এল সব তারা ঢাকিতে।
হারানো সে আলো আসন বিছালো শুধু দুজনের আঁখিতে।
ভাষাহারা মম বিজন রোদনা প্রকাশের লাগি করেছে সাধনা,
চিরজীবনেরি বাণীর বেদনা মিটিল দোঁহার নয়নে॥
রাগ: মিশ্র দেশ
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৫ মাঘ, ১৩৪২
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৯ জানুয়ারি, ১৯৩৬
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
========================================
ভেঙেছ দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়, তোমারি হউক জয়।
তিমিরবিদার উদার অভ্যুদয়, তোমারি হউক জয় ॥
হে বিজয়ী বীর, নব জীবনের প্রাতে
নবীন আশার খড়্গ তোমার হাতে--
জীর্ণ আবেশ কাটো সুকঠোর ঘাতে, বন্ধন হোক ক্ষয় ॥
এসো দুঃসহ, এসো এসো নির্দয়, তোমারি হউক জয়।
এসো নির্মল, এসো এসো নির্ভয়, তোমারি হউক জয়।
প্রভাতসূর্য, এসেছ রুদ্রসাজে,
দুঃখের পথে তোমারি তূর্য বাজে--
অরুণবহ্নি জ্বালাও চিত্তমাঝে, মৃত্যুর হোক লয় ॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৩০ আশ্বিন, ১৩২১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৭ অক্টোবর, ১৯১৪
রচনাস্থান: এলাহাবাদ
স্বরলিপিকার: সুধীরচন্দ্র কর
তিমিরবিদার উদার অভ্যুদয়, তোমারি হউক জয় ॥
হে বিজয়ী বীর, নব জীবনের প্রাতে
নবীন আশার খড়্গ তোমার হাতে--
জীর্ণ আবেশ কাটো সুকঠোর ঘাতে, বন্ধন হোক ক্ষয় ॥
এসো দুঃসহ, এসো এসো নির্দয়, তোমারি হউক জয়।
এসো নির্মল, এসো এসো নির্ভয়, তোমারি হউক জয়।
প্রভাতসূর্য, এসেছ রুদ্রসাজে,
দুঃখের পথে তোমারি তূর্য বাজে--
অরুণবহ্নি জ্বালাও চিত্তমাঝে, মৃত্যুর হোক লয় ॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৩০ আশ্বিন, ১৩২১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৭ অক্টোবর, ১৯১৪
রচনাস্থান: এলাহাবাদ
স্বরলিপিকার: সুধীরচন্দ্র কর
==========================================
খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি আমার মনের ভিতরে।
কত রাত তাই তো জেগেছি বলব কী তোরে॥
প্রভাতে পথিক ডেকে যায়, অবসর পাই নে আমি হায়--
বাহিরের খেলায় ডাকে সে, যাব কী ক'রে॥
যা আমার সবার হেলাফেলা যাচ্ছে ছড়াছড়ি
পুরোনো ভাঙা দিনের ঢেলা, তাই দিয়ে ঘর গড়ি।
যে আমার নতুন খেলার জন তারি এই খেলার সিংহাসন,
ভাঙারে জোড়া দেবে সে কিসের মন্তরে॥
রাগ: মিশ্র কেদারা-খাম্বাজ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৮ মাঘ, ১৩২৯
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৩
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
কত রাত তাই তো জেগেছি বলব কী তোরে॥
প্রভাতে পথিক ডেকে যায়, অবসর পাই নে আমি হায়--
বাহিরের খেলায় ডাকে সে, যাব কী ক'রে॥
যা আমার সবার হেলাফেলা যাচ্ছে ছড়াছড়ি
পুরোনো ভাঙা দিনের ঢেলা, তাই দিয়ে ঘর গড়ি।
যে আমার নতুন খেলার জন তারি এই খেলার সিংহাসন,
ভাঙারে জোড়া দেবে সে কিসের মন্তরে॥
রাগ: মিশ্র কেদারা-খাম্বাজ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৮ মাঘ, ১৩২৯
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৩
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
===========================================
যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙল ঝড়ে
জানি নাই তো তুমি এলে আমার ঘরে ॥
সব যে হয়ে গেল কালো, নিবে গেল দীপের আলো,
আকাশ-পানে হাত বাড়ালেম কাহার তরে?।
অন্ধকারে রইনু পড়ে স্বপন মানি।
ঝড় যে তোমার জয়ধ্বজা তাই কি জানি!
সকালবেলা চেয়ে দেখি, দাঁড়িয়ে আছ তুমি এ কি,
ঘর-ভরা মোর শূন্যতারই বুকের 'পরে ॥
রাগ: বাগেশ্রী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৩ ফাল্গুন, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ৭ মার্চ, ১৯১৪
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
জানি নাই তো তুমি এলে আমার ঘরে ॥
সব যে হয়ে গেল কালো, নিবে গেল দীপের আলো,
আকাশ-পানে হাত বাড়ালেম কাহার তরে?।
অন্ধকারে রইনু পড়ে স্বপন মানি।
ঝড় যে তোমার জয়ধ্বজা তাই কি জানি!
সকালবেলা চেয়ে দেখি, দাঁড়িয়ে আছ তুমি এ কি,
ঘর-ভরা মোর শূন্যতারই বুকের 'পরে ॥
রাগ: বাগেশ্রী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৩ ফাল্গুন, ১৩২০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ৭ মার্চ, ১৯১৪
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
=========================================
"আমি তখন ছিলেম মগন গহন ঘুমের ঘোরে,
যখন বৃষ্টি নামল তিমিরনিবিড় রাতে.....।"
~রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
~রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
==========================================
এতদিন যে বসেছিলেম পথ চেয়ে আর কাল গুনে
দেখা পেলেম ফাল্গুনে॥
বালক বীরের বেশে তুমি করলে বিশ্বজয়--
এ কী গো বিস্ময়।
অবাক আমি তরুণ গলার গান শুনে॥
গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী,
কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরী।
তরুণ হাসির আড়ালে কোন্ আগুন ঢাকা রয়--
এ কী গো বিস্ময়।
অস্ত্র তোমার গোপন রাখ কোন্ তূণে॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৪ ফাল্গুন, ১৩২১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯১৫
রচনাস্থান: সুরুল
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
দেখা পেলেম ফাল্গুনে॥
বালক বীরের বেশে তুমি করলে বিশ্বজয়--
এ কী গো বিস্ময়।
অবাক আমি তরুণ গলার গান শুনে॥
গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী,
কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরী।
তরুণ হাসির আড়ালে কোন্ আগুন ঢাকা রয়--
এ কী গো বিস্ময়।
অস্ত্র তোমার গোপন রাখ কোন্ তূণে॥
রাগ: ভৈরবী
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১৪ ফাল্গুন, ১৩২১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯১৫
রচনাস্থান: সুরুল
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
============================================
আমার যাবার বেলায় পিছু ডাকে
ভোরের আলো মেঘের ফাঁকে ফাঁকে॥
বাদলপ্রাতের উদাস পাখি ওঠে ডাকি।
বনের গোপন শাখে শাখে, পিছু ডাকে॥
ভরা নদী ছায়ার তলে ছুটে চলে--
খোঁজে কাকে, পিছু ডাকে।
আমার প্রাণের ভিতর সে কে থেকে থেকে
বিদায়প্রাতের উতলাকে পিছু ডাকে॥
রাগ: আশাবরী-ভৈরবী
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ভাদ্র, ১৩৩০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1923
ভোরের আলো মেঘের ফাঁকে ফাঁকে॥
বাদলপ্রাতের উদাস পাখি ওঠে ডাকি।
বনের গোপন শাখে শাখে, পিছু ডাকে॥
ভরা নদী ছায়ার তলে ছুটে চলে--
খোঁজে কাকে, পিছু ডাকে।
আমার প্রাণের ভিতর সে কে থেকে থেকে
বিদায়প্রাতের উতলাকে পিছু ডাকে॥
রাগ: আশাবরী-ভৈরবী
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ভাদ্র, ১৩৩০
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1923
==========================================
এই করেছ ভালো, নিঠুর,
এই করেছ ভালো।
এমনি করে হৃদয়ে মোর
তীব্র দহন জ্বালো।
আমার এ ধূপ না পোড়ালে
গন্ধ কিছুই নাহি ঢালে,
আমার এ দীপ না জ্বালালে
দেয় না কিছুই আলো।
যখন থাকে অচেতনে
এ চিত্ত আমার
আঘাত সে যে পরশ তব
সেই তো পুরস্কার।
অন্ধকারে মোহে লাজে
চোখে তোমায় দেখি না যে,
বজ্রে তোলো আগুন করে
আমার যত কালো।
রাগ: ইমনকল্যাণ
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৪ আষাঢ়, ১৩১৭
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1910
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভীমরাও শাস্ত্রী
এই করেছ ভালো।
এমনি করে হৃদয়ে মোর
তীব্র দহন জ্বালো।
আমার এ ধূপ না পোড়ালে
গন্ধ কিছুই নাহি ঢালে,
আমার এ দীপ না জ্বালালে
দেয় না কিছুই আলো।
যখন থাকে অচেতনে
এ চিত্ত আমার
আঘাত সে যে পরশ তব
সেই তো পুরস্কার।
অন্ধকারে মোহে লাজে
চোখে তোমায় দেখি না যে,
বজ্রে তোলো আগুন করে
আমার যত কালো।
রাগ: ইমনকল্যাণ
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ৪ আষাঢ়, ১৩১৭
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1910
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভীমরাও শাস্ত্রী
===============================================
কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া
তোমার চরণে দিব হৃদয় খুলিয়া
চরণে ধরিয়া তব কহিব প্রকাশি
গোপনে তোমারে, সখা, কত ভালোবাসি।
ভেবেছিনু কোথা তুমি স্বর্গের দেবতা,
কেমনে তোমারে কব প্রণয়ের কথা।
ভেবেছিনু মনে মনে দূরে দূরে থাকি
চিরজন্ম সঙ্গোপনে পূজিব একাকী--
কেহ জানিবে না মোর গভীর প্রণয়,
কেহ দেখিবে না মোর অশ্রুবারিচয়।
আপনি আজিকে যবে শুধাইছ আসি,
কেমনে প্রকাশি কব কত ভালোবাসি॥
রাগ: বিলাতি ভাঙা
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1291
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1885
তোমার চরণে দিব হৃদয় খুলিয়া
চরণে ধরিয়া তব কহিব প্রকাশি
গোপনে তোমারে, সখা, কত ভালোবাসি।
ভেবেছিনু কোথা তুমি স্বর্গের দেবতা,
কেমনে তোমারে কব প্রণয়ের কথা।
ভেবেছিনু মনে মনে দূরে দূরে থাকি
চিরজন্ম সঙ্গোপনে পূজিব একাকী--
কেহ জানিবে না মোর গভীর প্রণয়,
কেহ দেখিবে না মোর অশ্রুবারিচয়।
আপনি আজিকে যবে শুধাইছ আসি,
কেমনে প্রকাশি কব কত ভালোবাসি॥
রাগ: বিলাতি ভাঙা
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1291
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1885
=======================================
আমি কেবলি স্বপন করেছি বপন
বাতাসে--
তাই আকাশকুসুম করিনু চয়ন
হতাশে।
ছায়ার মতন মিলায় ধরণী,
কূল নাহি পায় আশার তরণী,
মানসপ্রতিমা ভাসিয়া বেড়ায়
আকাশে।
কিছু বাঁধা পড়িল না শুধু এ বাসনা-
বাঁধনে।
কেহ নাহি দিল ধরা শুধু এ সুদূর
সাধনে।
আপনার মনে বসিয়া একেলা
অনলশিখায় কী করিনু খেলা,
দিনশেষে দেখি ছাই হল সব
হুতাশে!
আমি কেবলি স্বপন করেছি বপন
বাতাসে।
বাতাসে--
তাই আকাশকুসুম করিনু চয়ন
হতাশে।
ছায়ার মতন মিলায় ধরণী,
কূল নাহি পায় আশার তরণী,
মানসপ্রতিমা ভাসিয়া বেড়ায়
আকাশে।
কিছু বাঁধা পড়িল না শুধু এ বাসনা-
বাঁধনে।
কেহ নাহি দিল ধরা শুধু এ সুদূর
সাধনে।
আপনার মনে বসিয়া একেলা
অনলশিখায় কী করিনু খেলা,
দিনশেষে দেখি ছাই হল সব
হুতাশে!
আমি কেবলি স্বপন করেছি বপন
বাতাসে।
=========================================
মোর হৃদয়ের গোপন বিজন ঘরে
একেলা রয়েছ নীরব শয়ন-'পরে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রুদ্ধ দ্বারের বাহিরে দাঁড়ায়ে আমি
আর কতকাল এমনে কাটিবে স্বামী--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রজনীর তারা উঠেছে গগন ছেয়ে,
আছে সবে মোর বাতায়ন পানে চেয়ে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো।
জীবনে আমার সঙ্গীত দাও আনি,
নীরব রেখো না তোমার বীণার বাণী--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
মিলাব নয়ন তব নয়নের সাথে,
মিলাব এ হাত তব দক্ষিণহাতে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো।
হৃদয়পাত্র সুধায় পূর্ণ হবে,
তিমির কাঁপিবে গভীর আলোর রবে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1321
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1914
রচনাস্থান: সুরুল
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
একেলা রয়েছ নীরব শয়ন-'পরে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রুদ্ধ দ্বারের বাহিরে দাঁড়ায়ে আমি
আর কতকাল এমনে কাটিবে স্বামী--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রজনীর তারা উঠেছে গগন ছেয়ে,
আছে সবে মোর বাতায়ন পানে চেয়ে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো।
জীবনে আমার সঙ্গীত দাও আনি,
নীরব রেখো না তোমার বীণার বাণী--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
মিলাব নয়ন তব নয়নের সাথে,
মিলাব এ হাত তব দক্ষিণহাতে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো।
হৃদয়পাত্র সুধায় পূর্ণ হবে,
তিমির কাঁপিবে গভীর আলোর রবে--
প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥
রাগ: বেহাগ
তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1321
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1914
রচনাস্থান: সুরুল
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
===========================================
না বুঝে কারে তুমি ভাসালে আঁখিজলে।
ওগো, কে আছে চাহিয়া শূন্য পথপানে--
কাহার জীবনে নাহি সুখ, কাহার পরান জ্বলে॥
পড় নি কাহার নয়নের ভাষা,
বোঝ নি কাহার মরমের আশা,
দেখ নি ফিরে--
কার ব্যাকুল প্রাণের সাধ এসেছ দ'লে॥
রাগ: ইমন-ভূপালী
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): অগ্রহায়ণ, ১২৯৫
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1888
রচনাস্থান: কলকাতা, দার্জিলিং
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
ওগো, কে আছে চাহিয়া শূন্য পথপানে--
কাহার জীবনে নাহি সুখ, কাহার পরান জ্বলে॥
পড় নি কাহার নয়নের ভাষা,
বোঝ নি কাহার মরমের আশা,
দেখ নি ফিরে--
কার ব্যাকুল প্রাণের সাধ এসেছ দ'লে॥
রাগ: ইমন-ভূপালী
তাল: কাহারবা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): অগ্রহায়ণ, ১২৯৫
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1888
রচনাস্থান: কলকাতা, দার্জিলিং
স্বরলিপিকার: ইন্দিরা দেবী
===========================================
ওগো আমার চির-অচেনা পরদেশী,
ক্ষণতরে এসেছিলে নির্জন নিকুঞ্জ হতে কিসের আহ্বানে॥
যে কথা বলেছিলে ভাষা বুঝি নাই তার,
আভাস তারি হৃদয়ে বাজিছে সদা
যেন কাহার বাঁশির মনোমোহন সুরে॥
প্রভাতে একা বসে গেঁথেছিনু মালা,
ছিল পড়ে তৃণতলে অশোকবনে।
দিনশেষে ফিরে এসে পাই নি তারে,
তুমিও কোথা গেছ চলে--
বেলা গেল, হল না আর দেখা ॥
রাগ: পিলু-ভীমপলশ্রী
তাল: অর্ধঝাঁপ
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1344
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1937
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
ক্ষণতরে এসেছিলে নির্জন নিকুঞ্জ হতে কিসের আহ্বানে॥
যে কথা বলেছিলে ভাষা বুঝি নাই তার,
আভাস তারি হৃদয়ে বাজিছে সদা
যেন কাহার বাঁশির মনোমোহন সুরে॥
প্রভাতে একা বসে গেঁথেছিনু মালা,
ছিল পড়ে তৃণতলে অশোকবনে।
দিনশেষে ফিরে এসে পাই নি তারে,
তুমিও কোথা গেছ চলে--
বেলা গেল, হল না আর দেখা ॥
রাগ: পিলু-ভীমপলশ্রী
তাল: অর্ধঝাঁপ
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1344
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1937
স্বরলিপিকার: শৈলজারঞ্জন মজুমদার
===========================================
নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে। ( নয়নের নয়ন ! )
হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে, হৃদয়ে রয়েছ গোপনে। ( হৃদয়বিহারী ! )
বাসনার বশে মন অবিরত ধায় দশ দিশে পাগলের মতো,
স্থির-আঁখি তুমি মরমে সতত জাগিছ শয়নে স্বপনে।
( তোমার বিরাম নাই, তুমি অবিরাম জাগিছ শয়নে স্বপনে।
তোমার নিমেষ নাই, তুমি অনিমেষ জাগিছ শয়নে স্বপনে। )
সবাই ছেড়েছে, নাই যার কেহ, তুমি আছ তার, আছে তব স্নেহ–
নিরাশ্রয় জন পথ যার গেহ সেও আছে তব ভবনে।
( যে পথের ভিখারি সেও আছে তব ভবনে।
যার কেহ কোথাও নেই সেও আছে তব ভবনে। )
তুমি ছাড়া কেহ সাথি নাই আর, সমুখে অনন্ত জীবনবিস্তার–
কালপারাবার করিতেছ পার কেহ নাহি জানে কেমনে।
( তরী বহে নিয়ে যাও কেহ নাহি জানে কেমনে।
জীবনতরী বহে নিয়ে যাও কেহ নাহি জানে কেমনে। )
জানি শুধু তুমি আছ তাই আছি, তুমি প্রাণময় তাই আমি বাঁচি,
যত পাই তোমায় আরো তত যাচি– যত জানি তত জানি নে।
( জেনে শেষ মেলে না–মন হার মানে হে। )
জানি আমি তোমায় পাব নিরন্তর লোক-লোকান্তরে যুগ-যুগান্তর–
তুমি আর আমি মাঝে কেহ নাই, কোনো বাধা নাই ভুবনে।
( তোমার আমার মাঝে কোনো বাধা নাই ভুবনে। )
রাগ: যোগিয়া-কীর্তন
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1293
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1887
হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে, হৃদয়ে রয়েছ গোপনে। ( হৃদয়বিহারী ! )
বাসনার বশে মন অবিরত ধায় দশ দিশে পাগলের মতো,
স্থির-আঁখি তুমি মরমে সতত জাগিছ শয়নে স্বপনে।
( তোমার বিরাম নাই, তুমি অবিরাম জাগিছ শয়নে স্বপনে।
তোমার নিমেষ নাই, তুমি অনিমেষ জাগিছ শয়নে স্বপনে। )
সবাই ছেড়েছে, নাই যার কেহ, তুমি আছ তার, আছে তব স্নেহ–
নিরাশ্রয় জন পথ যার গেহ সেও আছে তব ভবনে।
( যে পথের ভিখারি সেও আছে তব ভবনে।
যার কেহ কোথাও নেই সেও আছে তব ভবনে। )
তুমি ছাড়া কেহ সাথি নাই আর, সমুখে অনন্ত জীবনবিস্তার–
কালপারাবার করিতেছ পার কেহ নাহি জানে কেমনে।
( তরী বহে নিয়ে যাও কেহ নাহি জানে কেমনে।
জীবনতরী বহে নিয়ে যাও কেহ নাহি জানে কেমনে। )
জানি শুধু তুমি আছ তাই আছি, তুমি প্রাণময় তাই আমি বাঁচি,
যত পাই তোমায় আরো তত যাচি– যত জানি তত জানি নে।
( জেনে শেষ মেলে না–মন হার মানে হে। )
জানি আমি তোমায় পাব নিরন্তর লোক-লোকান্তরে যুগ-যুগান্তর–
তুমি আর আমি মাঝে কেহ নাই, কোনো বাধা নাই ভুবনে।
( তোমার আমার মাঝে কোনো বাধা নাই ভুবনে। )
রাগ: যোগিয়া-কীর্তন
তাল: একতাল
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): 1293
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1887
==============================================
No comments:
Post a Comment